এটা কি ক্ষমতায়ন? এনারা ইলেক্টেড না সিলেক্টেড?

লিখেছেন লিখেছেন FM97 ০১ আগস্ট, ২০১৩, ১০:০৭:২৯ সকাল



আমাদের দেশে গুরুত্বপূর্ণ আসনে নারীদের উপস্থিতিকে অনেকেই নারীর ক্ষমতায়ন হিসাবে দেখেন। যদিও প্রশ্ন উঠে- এসব সম্মানিত নারীরা ইলেক্টেড না সিলেক্টেড? নিজের মেধার পরিচয় রেখে তারা এ অবস্থানে আসতে পেরেছেন না তাদেরকে বসিয়ে দেয়া হয়েছে? ব্যাপারটা আরেকটু সহজভাবে বললে- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হোক কি বিরোধীদলীয় নেত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোক বা ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী (পূর্বে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন) বা স্পিকার- এনারা কেউই কিন্তু প্রতিপক্ষের সাথে প্রতিযোগীতা করে এ পর্যায়ে আসেন নি। কেউ তাঁর বাবার সূত্র ধরে, কেউবা স্বামীর সূত্র ধরে দলের সর্বোচ্চ আসনপ্রাপ্ত হয়েছেন। উভয় দলে অন্য কেউ যোগ্য প্রার্থী ছিলো না-এটা বললে ভুল হবে। বরং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও অপরদিকে বিরোধী নেত্রীর, দলের সভাপতি কিংবা চেয়ারপার্সন হওয়াটা সবাই শ্রদ্ধাবনত মেনে নিয়েছে। এই দিক দিয়ে অবশ্য যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশে গণতন্ত্রের জায়গায় পরিবারতন্ত্রই বহাল রয়েছে। আবার বর্তমান সরকারের আমলে দীপুমণি, সাহারা খাতুন, স্পিকার শিরীন শারমীন কেউই কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বর্তমান অবস্থানে আসেননি। হঠাৎ করেই উনাদের আবির্ভাব। তাছাড়া স্পিকার পদে শিরীন ম্যাডামকে বসাতে গিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী তো বলেই বসলেন- “আমার ইচ্ছা ছিলো একজন নারী স্পিকার করার…..”। সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি নারী ক্ষমতায়নের নামে এদেশের সকল নারীকে নয়- বরং কিছু সিলেক্টেড ও পছন্দের নারীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। যাকে নারী ক্ষমতায়ন বলা যায় না। যদিও প্রশ্ন উঠে দেশটা যেহেতু সবার তাহলে এখানে কি কারো ব্যক্তি ইচ্ছা চলবে নাকি সবার ইচ্ছা চলবে? আজকে যেসব নারীরা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন সেই জায়গায় কি অন্য কোনো যোগ্য নারী বা পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসতে পারতো না? নাকি তেমনটি হলে সেটা বিশেষ একটা দলের পছন্দ হতো না? এদিকে অযোগ্য নারীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিলে সেটাকে নারীর ক্ষমতায়ন নয় বরং অপমানই বলা যায়। কারণ তখন এই সমাজ উক্ত আসনের অযোগ্য ব্যক্তিকে (আর সে যদি হয় নারী) আর সম্মানের চোখে দেখতে চায় না। উদাহরণ দিয়েই বলা যায়- দেশের ব্যর্থ ও একমাত্র নিকট প্রতিবেশীনির্ভর পররাষ্ট্র নীতি, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের নামে অপরাধের স্বরাষ্ট্রনীতি- এর কোনোটাই এ দেশের মানুষ ভুলে নি। এদিকে কথায় কথায় চেচিয়ে উঠা কর্কষভাষিনী মতিয়া চৌধুরি ইলেক্টেড হলেও আজও কৃষকের ঘরে ঘরে বিনা মূল্যের সার পৌছায় নি, কৃষকেরা নায্য মূল্য পাচ্ছে না, ভোগ করছে মধ্যস্থতাকারীরা- যেটা মনিটারিং করার কেউ নেই। এদিকে অভিযোগ উঠছে- মননীয় স্পিকার, বিরোধীদলের মন্ত্রীদের বক্তব্য যেভাবে স্পাঞ্জ করেন, মাইক বন্ধ করেন, সরকারী দলের ক্ষেত্রে তেমন করেন না। এমন পক্ষপাতিত্বমূলক নীতি কি দেশের জন্য মঙ্গলজনক?

সুতরাং যে যে পদে নারীদের বসানো হয়েছে- সে সে পদে তেমন যোগ্যতা সম্পন্ন নারীরা আসেনি বলে আজ নারীরা পরোক্ষভাবে অবহেলিত হচ্ছে। যদিও এটা সত্য যে, কিছু নারী এমন ক্ষমতা পেয়ে খুশি হয়েছেন। তবে, এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ্য নারীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসলে সত্যিই এটা নারীদের গর্বের কারণ হতো। কিন্তু তেমন গর্ব আমরা করতে পারছি না। এদিকে, আমাদের দেশে নর-নারী সমঅধিকারের কথা প্রায়ই শোনা গেলেও এখানে চাকরির ক্ষেত্রে নারীর জন্য আলাদা কোটা রাখা হয়েছে। তাহলে কি আমরা ধরে নিবো যে, আলাদা কোটা দিয়ে প্ররোক্ষভাবে নারীদের দূর্বল ভাবা হচ্ছে? তাদের মেধাকে অবমূল্যায়ণ করা হচ্ছে? তারা পুরুষদের সাথে মেধার প্রতিযোগীতায় পারবে না- এমনটিই বলা হচ্ছে? তাছাড়া যেদেশে চরম বেকার সমস্যা সে দেশে চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ কারোর প্রতি এমন পক্ষপাতিত্ব কেনো?

যেহেতু নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা হচ্ছে, তাই বলবো- আজকে আমাদের- নারীদের ভ্রান্ত ধারণা দিয়ে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আমরা ঘরে অবস্থান করলে, ঘরের কাজ করলে আমাদের ছোট করে দেখা হচ্ছে। ‘চাকরি করে হাতে টাকা থাকলে স্বাধীনতা থাকে- তা নাহলে তুমি গৃহবন্দী, অন্যের গোলাম’- এমনটি বলা হচ্ছে। (মেয়েদের চাকরির পরিস্থিতি নিয়ে আরো বিস্তারিত পড়তে পারেন আমার আরেকটা ব্লগের মধ্যাংশে- লিঙ্ক- "নারী যদি ঘরে রয়, জাতির জন্য অন্ধকারময়" )

হ্যা, এটা ঠিক, হাতে টাকা থাকলে স্বাধীনতা থাকে, ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণ করা যায়। কারণ, সবসময় যে একজনের চাহিদা-অন্যের সাথে মিলবে, আপনি যা চাইবেন, তেমনটি আপনার স্বামী চাইবে- এমন নাও হতে পারে। কিন্তু এই যে স্বাধীনতা- সেটা আমরা কিভাবে অর্জন করবো? ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লেই হয়ে গেলো? নাকি পুরুষ যেসব কাজ করে সেসব কাজ করলেই আমি স্বাধীন হয়ে যাবো? অধিকাংশ নারীর অভিযোগ- ‘আমাদের হাতে টাকা থাকে না, এটা ওটা টুক টাক কিনতে পারি না, সবসময় স্বামীর কাছ থেকে চাইতে হয়, কাউকে গিফট দিতে চাইলেও তার কাছে হাত পাততে হয়’। এক্ষেত্রে প্রথমেই বলবো- খরচের মধ্যে একটা হলো মৌলিক খরচ তথা ভরণ-পোষণ-যেটা স্বামী করতে বাধ্য, আরেকটা হচ্ছে স্ত্রীর একান্ত শখ- যেটা স্বামী চাইলে পূরণ করলে ভালো তবে অনেক ক্ষেত্রে এটা নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগে যায়। যেমন- কিছু মেয়ের মাসে কয়েকটা ড্রেস না বানালে হয় না, নতুন যে ডিজাইন বের হয়েছে সেটা কিনতেই হবে, অনেকের শখ তার আপনজনদের প্রায়ই গিফট দেয়া, মাসে মাসে বিউটি পার্লারে যাওয়া-ইত্যাকার মানুষের শখের মনতি নেই। সে ক্ষেত্রে স্বামীর সামর্থ ও দেয়ার ইচ্ছা থাকলে সমস্যা নেই, তবে অনেক স্বামীর এই শখ পূরণের সামর্থ থাকে না। তবে স্ত্রীর চাহিদা থাকে। সেক্ষেত্রে আমি বলবো- মেয়েদের উচিত ইসলাম তাকে আর্থিক যে অধিকার দিয়েছে সেটা আদায় করা। চাকরি নয় বরং ব্যবসা করা। আমরা জানি, বিয়েতে মেয়েদের মোহরানা দেয়া ছেলেদের দ্বায়িত্ব, এখন অবশ্য কিস্তিতে মোহরানা আদায় চলছে। এ পদ্ধতির পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্কে না জড়িয়ে আমি যতটুকু জানি, এককালীন পরিশোধ করাই উত্তম। এক্ষেত্রে একটা কথা বলা জরুরি মনে করি-মোহরানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করাই উত্তম। ‘মোটা অঙ্কের যা নেয়ার এখনই নিয়ে নে’-এমন Provoking type speech মেয়েদের কানে না দেয়াই উচিত। যাই হোক, মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি- এই যে, মোহরানার টাকা, এটা কিন্তু একটা নারী যেকোন লাভজনক ব্যবসায় লাগাতে পারেন। এতে তার স্বামীর সাহায্য থাকলে ভালো, তাহলে সেই নারীকে কষ্ট করে বাইরে যেতে হয় না, ঘরে বসেই মাসিক হাত খরচ চলে আসে। এদিকে অনেক নারী- এটা বলেন যে, ‘আমি শিক্ষিত, পড়াশুনা করেছি , তো জ্ঞানকে কাজে লাগাবো না’? যদিও বাস্তবে দেখি অনেক শিক্ষিত নারী নিজের পড়াশুনাকে কাজে লাগানোর জন্য নয়, কিংবা অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্যও নয় বরং কিভাবে টাকা উপার্জন করে হাই লাইফ স্টাইল লিড করা যায়- সেটার জন্য চাকরি করেন। যাই হোক, এতে আমাদের কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়, বরং আমি বলবো কষ্ট না করে, নিজের ঘরের দ্বায়িত্বকে অবজ্ঞা না করেই কিন্তু সহজ পদ্ধতিতে নারী তাঁর অর্জিত জ্ঞান দিয়েই তার ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন। তার তদারকি করতে পারেন। এদিকে সেই টাকার মালিক যেহেতু সে নিজে আর সাংসারিক অবস্থা যদি স্বচ্ছল হয় তাহলে কিন্তু সেই টাকা সংসারে দেয়ার প্রতি কোনো পিছুটানও থাকে না। বরং তার বেঁচে যাওয়া টাকা দিয়ে পারলে সমাজের জনকল্যাণমূলক কাজেও সে অবদান রাখতে পারে। এভাবে সহজেই একটা নারী সামাজিক ও মানসিক –উভয় দিকেই ক্ষমতায়ন অর্জন করতে পারে। অথচ আমাদের সমাজ, আমাদেরকে নারী হিসাবে না দেখে, পুরুষদের সমকক্ষ বলে, পারলে পুরুষদের মত বেশ ধারণ করে, তাদের মত হাটা-চলা ও তাদের মত কর্মে যোগদানে বাধ্য করছে। অথচ আমার কথা হচ্ছে আমাদের কেনো বাধ্য করা হবে? নারী হিসাবে আমাদের যা প্রাপ্ত সেটা আমাদের দেয়া হোক, একটা স্বামী পুরো সংসারের খরচ চালাতে যে পরিমাণ পরিশ্রম করে আমরা কিন্তু সেই পরিমাণ পরিশম করে গৃহ পরিচালনা করে, পারলে সমাজেও অবদান রাখতে পারি। যেটা অধিকাংশ নারীরা বুঝতে পারছে না। অন্যভাবে বলতে- তাদেরকে বুঝানো হচ্ছে না। বরং উল্টো পুরুষের দায়িত্ব নারীর উপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।

একবার এক নারী (গৃহিনী) আক্ষেপের সাথে আমাকে বলে- ‘তুমি সমাজ পরিবর্তনের কথা বলো, অথচ আমি তো দেখি এখনকার মানুষেরাই চায় না, এর পরিবর্তন। আমরা নারীরা আমাদের জীবদ্দশায় আমাদের উত্তরাধিকার পাই না । আমাদের মা-বোনরাও পায় নি। শেষে মারা যাওয়ার পর ভোগ করে তাদের সন্তান। সব কিছু কাগজে কলমে। ইসলাম যা বলে তা তো জানি, কিন্তু তার প্রয়োগ তো দেখি না। আমরা নারীরা খালি সেবাই দিয়ে যাই-, হাতে কিছু থাকে না”। আমি সেই নারীর মন্তব্যকে সম্মান করি, আর এতে আমি সন্তুষ্ট যে, তিনি ‘ইসলাম কি বলে’- অন্তত সেটা জানেন, যদিও সমাজের অধিকাংশ নারী ইসলামে তাদের অধিকার কেমন সেটাই জানেনই না। অথচ এই অধিকারের জন্য পশ্চিম বিশ্বের নারীরা ইসলাম কবুল করছে। যাই হোক, তিনি প্র্যাকটিক্যাল কথাই বলেছেন। অনেকে নারীর গৃহ পরিচালনার দ্বায়িত্বকে একা স্ত্রীর মনে করেন-যেটাই নারীদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। এটা সত্য- পুরুষদের গুরু দ্বায়িত্ব বাইরে আর নারীদের ভিতরে। তবুও আমরা কি জানি না, যে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাঃ ঘরের স্ত্রীদের কাজেও সাহায্য করতেন (বুখারি হাদিস)। তাই বলবো, পুরুষেরা নারীদের গৃহের কাজে একটু সাহায্য করলে নারীদের আক্ষেপ অনেকাংশেই দূর হবে। এদিকে স্বামীদের এটা ভাবা উচিত- একটা মানুষ সারাদিন ঘরে থেকে হয়ত একঘেয়ামিতায় ভুগতে পারে। তাই তাকে মাঝে মধ্যে বাইরে ঘুড়তে নিয়ে যাওয়া, একদিন বাইরে কোথাও খাওয়া- এগুলো করলে নারীরা গৃহের কাজে মনোযোগী হতে পারবে। আরেকটা বিষয়ে বললে-আমাদের সমাজে উত্তরাধিকার চাইলেই একেক জনের মুখ কালা-কালি অবস্থা হয়ে যায়। মনে হয়- নিজের অধিকার চাই নি, অন্য কিছু চেয়েছি। এদেশের প্রায় ৮০% নারীই তাঁর উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত। আর এই সুযোগ তুলে কিছু প্রভাবশালী নারী সংগঠন নিত্য-নতুন আইন করার চেষ্টা করছে- যেটা অহেতুক ও প্রকৃতপক্ষে নর-নারী উভয়ের প্রতি অবিচারস্বরূপ। বরং সূরা নিসায় যেভাবে স্ত্রীদের উত্তরাধিকার দেয়া হয়েছে সেটা বাস্তবায়ন হলেই কিন্তু নারীদের অর্থনৈতিক মুক্তি হয়ে যায়। অথচ সেই ব্যাপারে আমাদের সমাজে ও নারীদের মধ্যে সচেতনতা তুলে ধরা হচ্ছে না। এ দেশের অন্তত ৫০% নারী যদি তাদের প্রকৃত অধিকারের ব্যাপারে জানত, তাহলে হয়ত একযোগে তা বাস্তবায়নের দাবি তুলতো। সত্য হলো- আমাদের ধর্মই আমাদের প্রকৃত অধিকার দিয়েছে, যেটা প্রতিষ্ঠীত করার মধ্যেই কল্যাণ নিহিত।

বর্তমান সমাজে নারী অধিকারের নাম বলে কিছু এলিট শ্রেণীর নারীদের হাতে ক্ষমতা দেয়া হলেও –এরা আসলে দেশের সমস্ত নারীর প্রতিনিধিত্ব করেন না। তা না হলে রাস্তার ফুটপাতে নীল পলিথিনের ঘরে নারীর মানবেতর জীবন যাপন হত না। তাছাড়া এই সমাজে নারী-পুরুষ উভয়ই কেউ মানসিকভাবে কেউবা শারীরিকভাবে নির্যাতিত, তবে কিছু জিনিস থাকে যা আইন করে হয় না। আবার অনেক ব্যাপার থাকে যেখানে আইন লাগে। তবে এই সমাজ চলছে উল্টো পথে। এখানে ‘নারী অধিকার’কে একটা তিক্ত শব্দে পরিণত করা হয়েছে। এর নামে নারীকে পুরুষের সহযোগী নয়, বরং প্রতিপক্ষ বানানো হচ্ছে। যা কখনোই শুভ নয়।

বিষয়: বিবিধ

১১৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File