৮ দিন.....১৩ দিন..... ১৪দিনের রিমান্ড-অমানষিক নির্যাতন, আইন কি বলে?
লিখেছেন লিখেছেন FM97 ১৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:৫৪:৩৭ বিকাল
হাইকোর্টের নির্দেশনা মানছে না নিম্ন আদালত। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী “কারাগারে ১ম দফা জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য পাওয়া না গেলে ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশক্রমে সর্বোচ্চ ৩ দিন পুলিশ হেফাজতে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে”। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, নিম্ন আদালত জেলখানায় জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ না দিয়ে সরাসরি পুলিশের কাছে রিমান্ডে দিয়ে দিচ্ছে। বিষয়টা এমন যেন, পুলিশ রিমান্ড চাইলেই তাকে দিয়ে দেয়া হচ্ছে। এদিকে ফৌজদারী মামলার ১৬৭ ধারাকে (লেখা আছে- বিচারকের অনুমতি নিয়ে তদন্ত্রের স্বার্থে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তার হেফাজতে নিতে পারবে) ব্যবহার করে যত্রতত্র পুলিশ অভিযুক্তকে নিজের অধীনে নিয়ে নিলেও পুলিশি হেফাজতে নেয়ার হাইকোর্টের যে দিক-নির্দেশনা রয়েছে তা মানছে না পুলিশ।
নির্দেশনা-১/ “পুলিশের হেফাজতে থাকাকালে যেন অভিযুক্তের উপর নির্যাতন করা না হয়। বরং জিজ্ঞাসাবাদের সময় এমন একটা ঘরে যেন তাকে রাখা হয় যাতে অভিযুক্তকে বাইরে থেকে দেখা যায়”। অথচ, লক্ষ্যণীয়- এখানে হেফাজতের নামে চলে নির্মম নির্যাতন।
২/ “রিমান্ডে নেয়ার আগে ও পরে মেডিক্যাল রিপোর্ট পরীক্ষা করবে নিম্ন আদালত”। অথচ দেখা যায়- এই আদেশ নিম্ন আদালত পালন করছে না।
৩/ “পুলিশি হেফাজতে নেয়ার পর তার আত্মীয়স্বজনকে খবর দিতে হবে”। অথচ আমরা দেখছি- খবর দেয়া তো দূরে থাক, দেখা পর্যন্ত করতে দিচ্ছে না। মা জানতে পারছে না তার ছেলে কি অবস্থায় আছে, কি হচ্ছে তার সাথে! পুলিশ ষ্টেশনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয়ে অশুসিক্ত নয়নে, দেখা না পাওয়ার অতৃপ্ত বেদনা নিয়েই চলে যেতে হচ্ছে।
সারাংশ হিসাবে বলতে- বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগ- সবই আজ কুলুষিত। এখানে প্রতিপক্ষের মত দমনের জন্য কখনো গ্রেফতার করা হয়, কখনো বা গুম করা হয়। কারাগারে ঢুকার আগে যতটা মামলার সংখ্যা থাকে, কারাবরণ অবস্থায় মামলার সংখ্যা আসতে আসতে বাড়তে থাকে। এ এক আজব দেশ! এখানে জেষ্ঠ্যতা লঙ্ঘন করে বিতর্কিত ব্যক্তিকে বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়, সিনিয়র আইনজীবীদের প্রতিবাদের মুখে দরজা বন্ধ করে বিচারপতিকে শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়। একদিকে সংলাপে বসার কথা বলে অন্যদিকে গণহারে গ্রেফতার! অভিযুক্ত ব্যক্তি অন্যায় করেছে কি করেনি তাও এখানে প্রমাণ হওয়ার সুযোগ নেই।
দিন দিন নিরপরাধ মানুষের উপর নির্মম নির্যাতনের জন্য আওয়ামী নেতাদের পরিণতি কি হবে তা নিয়ে আমি ভাবি না। বরং এত অত্যাচার ও নিপীড়ন দেখে আমরা যদি চুপ করে থাকি, প্রতিবাদ না করি তাহলে আমাদের যে কি পরিমাণ ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখিন হতে হবে- তা নিয়েই ভাবি। সংঘাত-সহিংসতা প্রিয় মানুষের কাছে শান্তির বার্তা প্রকাশ করাই যেন বোকামি।
বিষয়: বিবিধ
১৪৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন