ক্যাম্পাস যখন ঠুঁটো জগন্নাথ… (একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈলচিত্র)
লিখেছেন লিখেছেন মিথ্যা জবানবন্দি ৩০ মে, ২০১৩, ০৫:৪৮:৫৫ বিকাল
লিখক: অভি মামুন
না আর পারলাম ক্যাম্পাসটার প্রতি সম্মানবোধটুকু ধরে রাখতে! দিন দিন কেমন জানি দূরত্বটা বেড়েই যাচ্ছে! নিয়মনীতির কোনো বালাই তো দূরের কথা উল্টো হেলালিপনা আর অনিয়মতান্ত্রিক স্বৈরতার খপ্পরে পড়ে যাচ্ছে তাই হয়ে যাচ্ছে! কি আর করার! সব ধরনের অনিয়ম আর খামখেয়ালিপনাকে এখানের শিক্ষার্থীরাও আমলকির চামচিকা চিবাচ্ছে! তবে আমার কাছে তাদের এই চিবানোটাকে চিরতাযুক্ত বলে মনে হচ্ছে! ক্ষোভের মাথায় একজন তো আজ প্রায় সরাসরি বলে দিয়েছেন এই ক্যাম্পাসটা হলো ঠুঁটো জগন্নাথ! অবশ্য ঠুঁটো জগন্নাথ বললে ভূল হবে কারণ হরণ্ণাথ বলাটাই বেস্ট! যাই হোক তবু তো প্রাণের ক্যাম্পাস! চারটি খানি কথা নয় কিন্তু! এই আমিও এই ক্যাম্পাসের একজন মেধাবী আবুল! সপ্তাহ দু’একদিন শরীর দেখানো ছাড়া বাকি সব দিন লে ছক্কা! নিরীহ ছাত্র সমাজের লোক বাহিরে কাজ বাজে ব্যস্ত থাকি তাই ঠিক মতো প্রাণের ক্যাম্পাসে যাওয়া ও হয়ে ওঠেনা! তাও যেদিন যাই সেদিন দেখতে হয় মারামারি কিংবা খুন খারাবি, অথবা জ্বালাও পোড়াও বা পাকড়া করো, এ ছাড়া সবসময় রেষারেষি কিংবা রামদা-চাপাতির ঝনঝটানি তো আছেই! নেড়ী কুকুরের কামড়া কামড়ির কথা কি কারো অজানা!
যদিও প্রথম দিকে এই ক্যাম্পাসটিকে আমার কাছে মনে হয়েছে একটা ‘বিহঙ্গ নীড়’! কিন্তু সময় ব্যবধানে আবার মনে হয়েছে, আরে এটা তো দেখছি বিহঙ্গ নীড় না! ‘এটা হলো কুষ্ট সুড়ঙ্গ! তারও কিছুদিন পর মনে হয়েছে যা এটা ও না! বরং এটা হচ্ছে একটা ‘ধ্বজবঙ্গ মোঘল সাম্রাজ্য’! কিন্তু তাও না! গত দু’বছরে কিছু অপ্রীতিকর তান্ডব দেখে প্রায় চুয়ান্তভাবে ধরে নিয়েছিলাম এটা হচ্ছে একটা ‘বেআলি বেগুন’! ও মাই গড! কিন্তু তাও না! গত বছররের শেষের দিকে এখানে কলম ধরতে আসা বিদ্যাপতিদের বন্দুকের খোঁচায় রক্তমাথা (যদিও পরিচিত) বেওয়ারিশ নিথর দেহ দেখে আমি এক বাক্যে ধরে নিয়েছিলাম এটা হচ্ছে ‘নেকড়ে জাদরেল বিদ্যাপতিদের অন্দরমহল’! কিন্তু শেষ সময়ে এসে এখন দেখছি আরো বহুরূপী জাদরেলদের রঙ্গমঞ্চ! শিক্ষাগুরুদের কথা আর কি বলব! এখানের শিক্ষাগুরুদের যে ক্ষমতা ওরে বাবা! বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতিরও সেই ক্ষমতা নেই! নিয়মনীতির মায়েরে বাপ! যখন যা ইচ্ছে তখন তাই হবে! ওনাদের আবার ঠেকায় কেডা! প্রতিবাদের প্রশ্নেই আসেনা! বরং তারেদ বিরুদ্ধে ‘অনিয়ম’ শব্দটা উচ্চারণ করাটাও কাল হয়ে দাঁড়ায় অনেক শিক্ষার্থীর বেলায়! মাঝে মধ্যে কয়েকজন শিক্ষাগুরুর রক্তচুক্ষ এখানের আক্রমনাত্মক ক্যাডারিং শিক্ষার্থীদেরও হার মানিয়ে দেয়! এখানের শিক্ষার্থীরাও কিন্তু কোনো অংশে কম না! যেমন আছে অস্ত্রধারী মেধার হুঙ্কার তেমন আছে গৌরবজ্জল ইতিহাস! তবে যে যাই বলুক কেন তাদের এসব বাহাদুরি আর হুঙ্কার-দুঙ্কার কেবল যে ক্যাম্পাসের গণ্ডির ভিতরেই সীমাবদ্ধ এমনটি নয় বরং গুলিস্তান কিংবা সদরঘাটের লোকজন এদেরকে মহাদেব বলে ডাকতেও বুক কাঁপে! তবে মাঝে মধ্যে এসব ফুটপাতের হকারদের হাতে গণধোলাই খাওয়ার গৌরবজ্জল ইতিহাসও তারা অর্জন করেছে ইতোপূর্বে! এখানের মেয়েদের কথা কি বলব আর! এক একটা চিরহরিত সোনার হরিণ! কবি জীবনানন্দ দাস বেঁচে থাকলে হয়তো তাকে নাটোর যেতে হতো না ‘বনলতাসেনকে’ খুঁজতে! এখানেই পেয়ে যেতেন কয়েক হাজার বনলতা! আমাদের গুটি কয়েকের কথা কি বলব আর!
আসলে আমরদ গাধা আমরা গুটিকয়েক ই থেকে গেলাম! না পারছি কিছু করতে না পারছি ছিঁড়তে! গাধাদের অভয়াশ্রমে থাকলে যা হয় এ আর কি!
বিষয়: বিবিধ
২০৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন