সুইসাইড

লিখেছেন লিখেছেন আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ ০৯ নভেম্বর, ২০১৫, ০৮:০৬:১৮ রাত





কাগজটা কিসের?

এমন কী লেখা ছিল তাতে?

কাগজটা হাতে পাওয়ার পর সে কেমন যেন স্তব্ধ হয়ে গেলো। বাজ পড়া পথিকের মতো কেমন নির্বাক নির্বিকার হয়ে বসে রইলো অনেক ক্ষণ, সেমি পাকা ঘরের ডিঁয়ালায়। বিরহের অত্রিমাত্রায় আজ ফেটে খান খান হয়ে গেছে, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে অনেক কষ্টে বেঁধে রাখা তার অবাধ্য হৃদয়। বিদীর্ণ হয়ে যাওয়া পাথরের মতো চোখ দিয়ে ঝরঝর ঝরছে অবিরাম বিরহী ঝর্ণা।

এতো বিরহ!

আর কতো সহ্য করা যায়?

মগ্ন দৃষ্টিতে সে চেয়ে রইলো মাটির দিকে। মাটিকে কেন যেন আজ তার বড় বেশি আপন মনে হতে লাগলো। সুযোগ পেলেই যেন সে ঢুকে যাবে মাটিতে। মাটির ভিতরেও কি এতোটুকু সুখ নেই? ভালোবাসা নেই?

ডুবুরীর মতো ডুব দিয়ে সে বিচরণ করে চললো তার অতীত-যাপিত জীবনে। স্মৃতি-বিস্মৃতিতে সে শুধু খুঁজে পায়- অনাদর, অবহেলা, অপমান। নিজেকে আজ তার মনে হতো লাগলো বিশাল নিঃসীম আকাশে যেন এক নিঃসঙ্গ পাখি। তার কেউ নেই, কিছুই নেই।

নীড়?

সঙ্গী?

সীমানা?

সব কিছুই আজ তার কাছে মিথ্যা। ছলনা।

কেন সে আর বেঁচে থাকবে?

কি নিয়ে?

কার জন্য?

এই প্রশ্নগুলো যেন তার মস্তিষ্কে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো একের পর এক। ল্যাদা পোকার মতো কিলবিল কিলবিল করে তার মগজকে যেন খেয়ে ঝোলা বানিয়ে দিবে এরা। নিজের কাছেই আজ কঠিন প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হয়ে উঠলো তার আর বেঁচে থাকা। সমস্ত ভাষা- শব্দ, বাক্যে যেন কোন উত্তর খুঁজে পায় না সে। তবে কি আজ তার বেঁচে থাকা অর্থহীন?

প্রচণ্ড গরমে খাঁ খাঁ পৃথিবী। মাঠ ঘাট শুকিয়ে চৌচির। চৈত্রের অতিষ্ট দুপুরের শেষ ভাগ। খাবার সেরে হালকা বিশ্রামে সবাই। এমন টগবগ বিষন্ন মুহূর্তে সে সিন্ধান্ত নিল তার জীবনের সবচেয়ে নিষ্ঠুর এবং নির্মম কাজটি সেরে নেবার। ঘরের চালের সাথে শাড়ি বেঁধে সে ঝুলে পড়লো, থামিয়ে দিলো তার শিরা উপশিরার প্রবাহমানতা।

মানুষ নিজের প্রতি নিজে এমন নিষ্ঠুর হয় কী করে?

কারো বেঁচে থাকা যখন অর্থহীন হয়ে পড়ে; অবিশ্বাস, আস্থাহীনতা, অন্ধকার যখন চারদিক থেকে তাকে ঘিরে ধরে -প্রবল বেগে কেমন এক দুঃসাহস এসে তার হৃদয়ে বাসা বাঁধে। আর এই দুঃসাহসই মানুষকে এমন পাষাণ্ড, বর্বর হতে উদ্বোধ্য করে। ধীরে ধীরে সে হেঁটে চলে আত্মসংহারের দিকে। মীনাও তাই করলো। যে শাড়ি পরে সে বউ সেজেছিল, সেই শাড়ি পেঁচিয়েই শেষ করে দিলো নিজেকে।

এই আত্মহত্যার আরেক নাম দেওয়া যায় ভীরুতা। ভবিষ্যত জীবন সম্পর্কে প্রচণ্ড ভীরুতা। কিন্তু জীবন সর্ম্পকে এতো অবিশ্বাস, এতো ভয় কেন মীনার?

০৮.০৯.২০৫



সূর্য এখন বিকেলের ঘরে। মানুষের ছায়া প্রায় দ্বিগুণ। রোদে অতিষ্ট অবসর মানুষগুলো হয়তো হালকা বিশ্রাম ছেড়ে ওঠার কাজে ব্যস্ত। খাটে শোয়ে মেয়ের তালাকের ব্যাপারটা চিন্তা করতে করতে রাবেয়া বেগমের চোখে ঘুমঘুম ভাব চলে এলো। আরেকটু হলেই যেন ডুবে যাওয়া সূর্যের শেষে অন্ধকার নেমে আসার মতো ঘুম নেমে আসবে ওনার চোখে।

শাশুড়ী-ননদ না হয় পরের মেয়ে বলে এমন নিষ্ঠুর আচরণ করতো কিন্তু নিজের স্বামীটা কেমন মানুষ, বউয়ের প্রতি কি একটু ভালোবাসা নেই তার? বউয়ের গায়ে হাত তোলতে কি তার একটুুও লজ্জ্বা করতো না? বউয়ের পক্ষ হয়ে মা বোনকে কি দু-একটা কথাও সে বলতে পারতো না? মানুষ এমন নিষ্ঠুর হয় কী করে? এসব ভাবতে ভাবতে তিনি চেতন-অচেতনের ঘোরে প্রায় আচ্ছন্ন।

হঠাৎ মিশুর কান্নায় ওনার ঘুমঘুম ভাবটা ওবে গেলো।

মীনার আড়াই বছরের ছেলে মিশু।

কয়েকবার ডাকার পরও মায়ের কোন সাড়া শব্দ নেই। অদ্ভুতভাবে মাকে ঝুলতে দেখে মিশু কান্না শুরু করে দিলো। নাতির কান্না শুনে, আদর মাখা কণ্ঠে রাবেয়া বেগম ডাকলো, মিশু এদিক আয়। নানির ডাক শুনে সে আরো জোরে কাঁদতে শুরু করলো। মায়ের ঝুলন্ত পা দুটি ধরে টানতে টানতে কাঁদতে লাগলো আম্মু... আম্মু...

কিন্তু কি হলো মায়ের?

মা কথা বলে না কেনো?

এই ছোট্ট শিশুটি হয়তো তার কোন উত্তর খুঁজে না পেয়ে, দুচোখের অশ্রু দিয়ে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে চললো। আর না পেরে, রাবেয়া বেগম উঠে গেলো। একটু বিরক্তির চাপ চেহারায়। গায়ের কাপড় ঠিক করতে করতে গেলো মীনার রুমের দিকে। মীনার বড় ভাইয়ের রুম এটি। বিয়ের ছয় মাস যেতে না যেতেই বউ নিয়ে উঠেছে শ্বশুর বাড়িতে। সেই থেকে মীনা আর মিশুই আপাদত এই রুমের বাসিন্দা।

নাতিকে আনতে রুমের দরজায় গিয়ে রাবেয়া বেগম অবাক। ওনার সমস্ত শরীর জুড়ে যেন ভয়ঙ্কর বিদ্যূৎ ঢেউ খেলে যেতে লাগলো। বিশাল আকাশ যেন ওনার উপর ভেঙ্গে পড়তে লাগলো টুকরো টুকরো হয়ে। ভাবহীন নিশ্চল হয়ে গেলেন ওনি। মেয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখে এক মুহূর্তের জন্য যেন পাথর হয়ে গেলেন রাবেয়া বেগম। বিকট স্বরে আল্লারে... আল্লারে... বলে চিৎকার দিয়ে উঠলেন। পাগলের মতো চিৎকার করে ডাকতে শুরু করলেন বশর, শফিক, রমজানকে।

চাচির আর্তচিৎকার শোনে অপ্রস্তুতভাবে ছুটে এলো বশর, রমজান। চিৎকার করতে করতে ওনি ততক্ষণে অজ্ঞান। এলো রমজানের বউ নাছিমা, বশরের বউ জোবায়দা, শফিকের বউ জান্নাতী। আশেপাশের ঘর থেকে এলো জসিম, মোহসেন, বালি, বৃদ্ধা কুলসুমা। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরাও এসে জড়ো হলো মীনাদের আঙিনায়। কেমন এক কৌতুহল সবার। কী হয়েছে? এমন চিৎকার কেন?

রমজান, শফিক, জসিম ধরাধরি করে নিচে নামিয়ে আনলো ঝুলন্ত মীনাকে। গলায় কালো দাগ পড়ে গেছে। চেহারাও কেমন বিকৃত হয়ে গেছে। বৃদ্ধা কুলসুমা হাত পায়ের শিরা ধরে না সূচক মাথা নাড়তে লাগলো। হায় হায় মেয়ে তো শেষ। মেয়ে তো আর নাই। কি করলো এই বজ্জাত।

নাছিমা, জোবায়দা, জান্নাতীরা রাবেয়া বেগমের মাথায় পানি ঢালতে ঢালতে কোন মতে হুঁশ ফিরিয়ে আনলেন। আবার চিৎকার করতে করতে ওনি বেহুশ হয়ে গেলেন।

স্বামী মারা গেছে আজ চার বছর। মেঝ ছেলে থাকে বিদেশে, বড় ছেলেটা বউ নিয়ে উঠেছে শ্বশুর বাড়িতে। এক বিষাদসিন্ধুকে যেন বুকে নিয়েই তিনি দিন পারে করে চলছেন একের পর এক। এতো বিরহ কেন রাবেয়া বেগমের? কিন্তু এই মেয়ে আবার এ কোন শোক নিয়ে এলো তার জন্য? এক জীবনে এতো শোক তিনি কিভাবে সইবেন?

ঘরে এতো মানুষের আনাগুনো, তার মায়ের এমন উদ্ভট অবস্থা দেখে মিশুর কান্না আরো বেড়ে গেলো। মীনার সমবয়সী সাইমা মিশুকে তাদের ঘরে নিয়ে গিয়ে গেলো। কিন্তু এই ছোট ছেলেটার হৃদয়ে কেমন তোলপাড় চলছে কে তা জানে? আম্মুরে... আম্মুরে... বলে সে কাঁদতে লাগলো অবিরাম। পৃথিবীর কোন ধন দিয়ে এই শিশুকে সান্ত্বনা দেওয়া যাবে, হয়তো কারোর তা জানা নেই। তারপরও সাইমা তাকে এই সেই বলে সান্ত্বনা দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করে যেতে লাগলো।

পাড়া গাঁয়ের মানুষের মাঝে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যুগ যুগ ধরে- পানিতে পড়ে মরলে, সাপে কামড়ালে, গলায় দড়ি দিলে নাকি মানুষের জান তাড়াতাড়ি যায় না। একদিন নাকি জান লুকানো থাকে শরীরে ভিতরে। শফিক বাজারে গিয়ে তাড়াতাড়ি ডাক্তার নিয়ে এলো। ডাক্তার লিটন বাবু। মীনার হাতের শিরা, গলার নিচে হাত দিয়ে অন্যমনষ্ক হয়ে পরীক্ষা করে দেখলো। ডাক্তারও কিছুটা আফসোস করে মাথা নাড়লো। সান্ত্বনাসূচক কয়েকটা কথা বলে অবশেষে বিদায় নিলো।

গ্রামের মেম্বার, চেয়াম্যানকে খবর দেওয়া হলো। থানায়ও হয়তো ততক্ষণে খবরটা পৌঁছে গেছে। কারো মেয়ে পালিয়ে গেলে, কেউ বউ পিটাইলে, বিষ খেয়ে কিংবা গলায় দড়ি দিয়ে কেউ মরলে সেই খবর নাকি বাতাসের আগে সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। মীনার গলায় দড়ি দেওয়ার খবরও সারা গাঁয়ে ছড়িয়ে পড়লো। জনে জনে এসে দেখে যেতে লাগলো তার নিথর লাশ। যে তাকে কখনো চিনতো না, সেও আজ তার জন্য আফসোস করতে লাগলো, কেউবা গোপনে চোখ মুছে ফিরে যেতে লাগলো যার যার মতো।

০৯.০৯.২০১৫



উঠোনের মাঝখানে চেয়ারে নিয়ে বসে আছেন বাড়ির মুরব্বি মৌলানা আব্দুর রশিদ সাহেব। ইতোমধ্যে এসে গেছেন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড মেম্বারও উপস্থিত। গম্ভীর সবাই। মাঝে মাঝে দুএকটা কথা বললেও তেমন কোন কথা নেই কারো মুখে। শ্বশুর বাড়ি থেকে মীনার চলে আসাটা মোটামুটি সবারই জানা। ব্যাপারটা সুরাহার জন্য আগে দুইবার মেম্বার চেয়ারম্যানের শালিশও হয়েছিল। কিন্তু কিছুই হয় নি।

মীনার আত্মহত্যা সবার মাঝে কেমন এক করুণ নিরবতা নিয়ে এসেছে। সেই সাথে উৎকণ্ঠাও। শাশুড়ি ননদের অত্যাচার, তার উপরে কিসিঞ্জারী করে কোর্ট থেকে স্বামীর তালাক দেওয়া সব মিলিয়ে এতো নির্মমতা সহ্য করতে না পেরে মীনা আত্মহত্যা করেছে অথচ কেউ কিছুই করতে পারলো না। বিচার আচার, সমাজ, সবই ব্যর্থ? সমাজে কী ঘটছে এইসব? কোথায় যাচ্ছে আমাদের মানবতাবোধ?

উঠোনের সামনে আমগাছের নিচে বসে আছে বাড়ির মধ্যবয়সী আরো অনেকেই। ঘরের ডিঁয়ালার উপর বসে আছে মীনার মামা, বড় ভাই। আরো আছে নানা-খালা-ফুফুর বাড়ির আত্মীয়রা। উঠোনের একপাশে দাঁড়িয়ে আছে বাড়ির ছোটছোট ছেলে মেয়েরা।

থানায় খবর দেওয়া হয়েছে। আত্মহত্যার আলামত সংগ্রহের জন্য থানা থেকে পুলিশ আসবে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ নিয়ে যাওয়া হবে মেডিকেলে। পুলিশের জন্যই সবার অপেক্ষা।

কিছুক্ষন পর পর ঘরের ভিতর থেকে মেয়েদের করুণ বিলাপের সূর ভেসে আসছে। সবার কান্নাকে ছাড়িয়ে রাবেয়া বেগমের কান্নায় যেন আর্তনাদের তীরে হয়ে বিদীর্ণ করে দিচ্ছে উঠোনে অপেক্ষামান সবার শোকাতুর হৃদয়। ওনার বিলাপে উঠে আসছে মীনার একে একে পুরানো সব স্মৃতি।

দুই ছেলের পর একটা মেয়ে হওয়ায় স্বামী স্ত্রী যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো খুশি হয়েছিল। সবার ছোট হওয়ায় সব সময় আদরের বন্যায় ভেসে থাকতো সে। তার কোন আবদারই কখনো অপূর্ণ থাকতো না। ভালো ঘর দেখে মেয়ের বিয়েও দিয়েছিলেন রাবেয়া বেগম কিন্তু স্বামীর সুখ তার কপালে সইলো না। আত্মহত্যা করে যেন সেই সুখ ছোঁয়ার প্রায়শ্চিত করে যেতে হলো তাকে। এই সব বলতে বলতে হঠাৎ কেমন নির্বাক হয়ে পড়ছেন রাবেয়া বেগম। মা হয়ে মেয়ের মৃত্যু তিনি কী ভাবে সইবেন? এই শোকাতুর হৃদয়টাকে তিনি কী দিয়ে বেঁধে রাখবেন?

নারী নির্যাতন, হত্যা মামলার আসামী করে জেলের ভাত খাওয়াবো তার শাশ্বড়ী, ননদ, জামাইকে। কেমন যেন ক্রোধান্বিত স্বরে বলে উঠলো মীনার বড় ভাই। কি পায়ছে তারা? দেশ কি মগের মুল্লুক? বিচার আচার কি কিছুই নেই দেশে? উপযুক্ত শাস্তি তাদেরকে পেতেই হবে।

সারা বছর তো বোনের কোন খবরই রাখুস না। বউ নিয়ে উঠছুস শ্বশুর বাড়িতে। তাদেরকে জেলে ঢুকিয়ে আর কি হবে? যা হবার তা তো হয়েই গেছে। তাদেরকে জেলের ভাত খাবালে কি মেয়ে ফিরে আসবে? কেমন যেন অভিমান এবং সান্ত্বনার সূরে বলে উঠলো মীনার মামা।

মেম্বার সাহেব কি যেন বলতে চাইলেন কিন্তু হঠাৎ রাস্তায় গাড়ির হর্ণ বেজে উঠায় ওনার আর বলা হলো না। গাড়ির হর্ণ শোনে ছেলেমেয়েরা দৌড়ে গেলো রাস্তার দিকে। উঠোনে অপেক্ষামানদের আর বুঝতে বাকি রইলো না পুলিশ এসে গেছে।

সূর্যও প্রায় নিস্তেজ হয়ে এসেছে ততক্ষণে। অস্ত যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে তার। ধূসরতাও চারদিকে জমাটবদ্ধ হতে শুরু করেছে ধীরে ধীরে। থেমে থেমে শান্ত বাতাসও যেন কেমন এক করুণ আবহ তৈরি করে চলছে চারদিকে।

পুলিশরা এসে মেম্বার চেয়ারম্যানদের সাথে প্রয়োজনীয় কথা সেরে ঘরে ঢুকলো। ঘরের বারান্দায় অগোছালো শাড়িতে ঢাকা মীনার লাশ। নিথর হয়ে আছে। দুএকটা মাছি উড়ছে এদিক সেদিক। পুলিশরা তাদের যথাযথ কাজ সমাপ্ত করে কাগজে কি কি যেন সব লিখে নিলো। চেয়ারম্যান ও আরো কয়েক জনের স্বাক্ষর নিলো তাতে। অতিরিক্ত সময় ব্যয় না করে, বাড়ির মানুষদের সহযোগিতায় মীনার লাশ তোলে নিলো গাড়িতে। আস্তে আস্তে গাড়ি চলতে শুরু করলো থানার পথে।

এদিকে ঘরে কান্নার রোল আরো দ্বিগুণ হয়ে উঠলো। আম্মু আম্মু বলে চিৎকার দিয়ে উঠলো মীনার আড়াই বছরের অবুঝ ছেলে মিশু। কিন্তু সে ডাক আর কখনো তার মায়ের কানে পৌঁছবে না, এই কথা তাকে কে বুঝাবে?

০১.১০.২০১৫

বিষয়: সাহিত্য

১৫৯৩ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

349101
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:২৬
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৫৬
289746
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : সুশীলরা সব সময থাকে, আমরা থাকি না। যাই হোক, কেউ থাকবে কেউ মাঝে মাঝে আসবে...
অনেক অনেক ধন্যবাদGood Luck Good Luck Good Luck Good Luck
349103
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:২৮
আবু সুফিয়ান লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লা।
ভালো লাগলো ধন্যবাদ।
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৫৭
289747
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম ওরাহমাতুল্লাহ। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
349113
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৫৩
শেখের পোলা লিখেছেন : বেশ ভাল হয়েছে৷ তবে 'ডিঁয়ালা'কাকে বলে বুঝলাম না৷ধন্যবাদ৷
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:০০
289748
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই। ডিঁয়ালা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক শব্দ, অর্থ ঘরের চারপাশে মাটি দিয়ে যে পাড় দেওয়া হয় তা। চলিত ভাষায় কী বলে জানা নেই। গ্রামের ঘরগুলোতে সাধারণত ডিঁয়ালা থাকে, শহরে তেমন একটা নাই।
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:২৬
289764
শেখের পোলা লিখেছেন : খুলনার ভাষায় তাকে ডুয়া বলে,কোথাও পোতা বলে৷ ধন্যবাদ৷
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৩২
289766
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ জানানোর জন্য। তার মানে আপনি খুলনাইয়া। চট্টগ্রাম- চাটগাইয়া, খুলনা- খুলনাইয়া!Tongue
349124
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:২৫
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : মাশাআল্লাহ! অসাধারন শব্দের গাঁতুনি। গটনা সত্য নাকি গল্প?
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৩১
289765
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : এটি একটি গল্প। বাস্তাবতার সাথে এই ঘটনার কোন সামাঞ্জস্য নেই, আমার দেখা মতে!
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
349128
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৪১
রফিক ফয়েজী লিখেছেন : মানুষের নির্যাতন আর অবহেলায় এমনিভাবে ঝরে পরে অনেক নিরীহ জীবন। এ ব্যাপারে সবাই সচেতন হলে সমাজের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৪৮
289770
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : শুধু গ্রামে নয়, আধুনিক শহরেও এই নির্যাতন চলে, নিরব নির্যাতন। সবাইকে সজাগ হতে হবে, অর্জিত শিক্ষাকে কাজে লাগাতে হবে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!Good Luck Good Luck Good Luck
349132
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:৪৮
শাহমুন নাকীব ফারাবী লিখেছেন : ভালো লাগলো। তবে মনটা খারাপ হয়ে গেল!
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১০:১৭
289782
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : এই গল্পটা লেখার পিছনে অনেক মজার একটা কাহিনী আছে। আপনাকে বলি-
ফোর্থ ইয়ারে আমাদের পাঠ্য একটি নাটক ছিল, মুনীর চৌধুরীর ‘চিঠি’, এই নাটকের মূল নায়িকা চরিত্র মীনা। নাটকের একটা পর্যায়ে মীনা আত্মহত্যার চেষ্টা করে, পরে তার প্রেমিক সোহরাব এসে মীনাকে আত্মহত্যা থেকে ফিরিয়ে আনে।
আমাদের ক্লাশে একজন মীনা ছিল, মীনার সাথে আমরা ভীষণ দুষ্টমি করতাম। একদিন ঝগড়া করে আমি মীনাকে বললাম, আমি তোকে আত্মহত্যা করাবো।
মীনাকে আত্মহত্যা করানোর জন্যই আমার এই গল্প....
হাহাহাহহা....
349137
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১০:০৯
আফরা লিখেছেন : ইসলাম একটি পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যাবস্থা । আমাদের ব্যাক্তি জীবন , সমাজ জীবন, রাষ্টীয় জীবন কোথাও ইসলাম নেই । আর সেটা নেই বলেই মীনারা নির্যাতীত হয়ে আত্বহত্যা করে ,মিশুরা মা হারা হয় ।

যদি মীনার শুশুর বাড়িতে ইসলাম থাকত তাহলে মীনা নির্যাতীত হত না অন্তত মীনা ও যদি ইসলামকে বুঝত নির্যাতীত হয়ে ও আত্বহত্যা করত না আল্লাহর আজাবের ভয়ে ।

ধন্যবাদ ছোটদা ।

০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১০:২৬
289789
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : এদেশে যারা ইসলামী আন্দোলন করে তারাও খুব কম ইসলাম মানে। কুসংস্কার এদেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে তার বংশকে প্রতিষ্টিত করেছে।
অন্যায়, অশুদ্ধতায় এদেশ ভরপুর। দেশটা চলছে অশুদ্ধতা দিয়ে। এদেশে শুদ্ধতার বড় অভাব, শুদ্ধতাই যেন এখানে আনকমন। অনেক ধন্যবাদ বুবু
349153
০৯ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১১:১৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অতি কঠিন লাগলো!!
১০ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫২
289884
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : কোনটা কঠিন লাগলো?
349175
১০ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০২:৫৭
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআলা'লাইকুম।

অত্যন্ত গুছানো একটি লিখা এবং সমাজের ভয়াবহ নিপীড়িত একটি ঘটনার প্রতিচ্ছবি আছে লিখাটিতে!

একটাই কামনা মানুষ জেগে উঠুক,এভাবে যেনো কেউ প্রাণ না হারায়!

শুকরিয়া Good Luck

১০ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫২
289885
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপুGood Luck Good Luck Good Luck
১০
349197
১০ নভেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:৩৩
কাহাফ লিখেছেন :
আত্মহত্যা আসলেই ভীরুতা!
নিজের প্রতি ভালবাসা নিঃশেষ হলেই মানুষ এমন পরিণতির দিকে এগিয়ে যায়!
পরিস্হিতি সামলে উঠে জীবন কে বাচিয়ে রাখাই উচিৎ সবার!
১০ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৩
289886
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্য, অনেক অনেক ধন্যবাদ রইলো ভাইGood Luck Good Luck Good Luck
১১
349259
১০ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:৫৪
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : সুন্দর পোষ্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ।
১০ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৩
289887
আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ লিখেছেন : আপনাদের কমেন্ট পেলে অন্যরকম অনুভূতি জাগে মনে...
অনেক অনেক ধন্যবাদ রইলোGood Luck Good Luck Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File