মন্দ স্রোতের প্রবাহিণী
লিখেছেন লিখেছেন আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ ১১ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১২:৩৯:০১ দুপুর
স্বেচ্ছাচারী সম্রাটের মতো এখানে দারিদ্রতা
শার্ট-প্যান্টের পকেটে পকেটে শক্ত আসন গেড়ে আছে।
তার সকল শক্তির অপব্যবহার করে
হৃদয় থেকে বিশ্বাসের শেষ চিহ্নটুকু মুছে দিয়ে
এ জীবনকে সে তিমির আঁধারের গর্ভে সমর্পণ করতে চায়।
কিন্তু এ হৃদয়পটে প্রাচীন শিলালিপির মতো
বিশ্বাসের কালিমা খোদায় করা আছে, কখনো তা মুছবার নয়।
একটা হাদিসে পড়েছিলাম-
‘ঐ দারিদ্রতা থেকে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই,
যা মানুষকে কুফুরির দিকে নিয়ে যায়।’
জীবনের বহুমাত্রিকতা আজ মাকড়শার নিষ্ঠুর হন্তারক বাচ্ছাদের মতো
ভেতরের সবটুকু ছেটেপুটে খেয়ে
এ জীবনকে মাল-মশল্লাহীন খোলসে পরিণত করতে চায়।
মর্মভেদী অতলান্ত বিরহের গাঢ় কালো মেঘে ঢেকে আছে স্বচ্ছ নীলাকাশ,
ধুড়ুম ধুড়ুম আওয়াজে প্রকম্পিত করে নেমে আসতে চায় অঝর ধারা
কিন্তু ‘না না ছি, কান্না তোমাদের মানায় না।
তোমাদের কান্নায় সমাজের অলিখিত শাস্ত্রে মানা আছে। ’
মেঘলুপ্ত সূর্যের ভ্যাপসা গরমে
শরীর থেকে ঝরে পড়ুক দূর্গন্ধের ফোটা ফোটা ঘাম
তবু শীতলকারী বৃষ্টি না।
সদ্য খুন হওয়া ক্ষত বিক্ষত লাশের মতো রক্তাক্ত তোমার ভিতর
তবুও তোমাকে হাসতে হবে।
হাসি না আসুক, অন্তত হাসার অভিনয় হলেও করতে হবে।
জগৎ-সংসার সবছেড়ে কখনো ইচ্ছে হয়
কোন এক দূর অজানায় হারিয়ে যেতে
কিন্তু ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ -এতো ভীরু কাপুরুষদের কথা
পরাজিত সৈনিকের কথা। -এটা আমি বিশ্বাস করি।
তাছাড়া একাকীত্ব মানুষের পরম সঙ্গী হলেও জীবনের জন্য একাকীত্ব না।
একাকীত্ব কতটা যন্ত্রণাময় জীবন মাত্রই তা বুঝে।
তাই এ জীবন ছেড়ে কোথাও পালানোও যাবে না।
কখনোবা আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতে পথের কোন এক ভবঘুরের মতো
প্রাণ খোলে খলখলিয়ে হাসতে ইচ্ছে করে।
কিন্তু ‘যাহ পাগল, সবাই কি মনে করবে?’
তথাকথিত ভদ্রতার অমোঘ শাস্ত্রে তোমার এ হাসিও নিষিদ্ধ।
কারণ এ যে মধ্যবিত্তের জীবন!
আঁধার এখানে চক্রের মতো।
আঁধার আসলেই এখানে ঝলঝল করে জ্বলে ওঠে হাজারো তারা।
কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন!
-দিনের আলোয় তারা হারিয়ে যায়।
আবার আঁধার আসে। আবার জ্বলে ওঠে তারা।
এভাবে এক আকাশ তারাদের বুকে নিয়ে মন্দ স্রোতের প্রবাহিণী বয়ে যায়।
১৪ আগস্ট, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ
বিষয়: সাহিত্য
১২৪৩ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কারণ এ যে মধ্যবিত্তের জীবন!
অনেক ভালো লাগলো । ধন্যবাদ কবি । m/ m/
হাসি না আসুক, অন্তত হাসার অভিনয় হলেও করতে হবে।
একাকীত্ব কতটা যন্ত্রণাময় জীবন মাত্রই তা বুঝে।
একেবারে সঠিক কথা ছোটদা ।
অনেক ধন্যবাদ আফরা বুবু, ছোটদার জন্য দোয়া রাখিও
ভালো লাগ্লো...
২০০৯ সালের এ+ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আজম ওবায়েদুল্লাহ স্যার বলেছিলেন, এখন থেকেই ভুলগুলো করতে শুরু করো, অন্যথায় বড় হলে জমা হয়ে থাকবে। আর এখন যদি বেশি বেশি ভুলগুলো করে ফেল, বড় হলে সব শেষ হয়ে যাবে। তখন আর ভুল হবে না।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর কমেন্ট রাখার জন্য
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
মন্তব্য করতে লগইন করুন