সিবিএফ চট্টগ্রামের চা চক্র
লিখেছেন লিখেছেন আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ ০৫ এপ্রিল, ২০১৪, ০৯:১৮:১০ রাত
কালকে থেকে আমাদের এখানে কারেন্ট নাই। কম্পিউটার তো দূরের কথা, মোবাইলও সিগনাল দিতে শুরু করছে। তাই লেখাটি পোস্ট করতে পারিনি
গতকাল রাতে। ঠিক কয়টার দিকে মনে নেই। তবে দশটার আগেই হবে। ফেইসবুকে ঘুরছিলাম। বন্ধুদের পোস্ট পড়া, লাইক, কমেন্ট করতে করতে ক্লান্ত প্রায়। এমন সময় হঠাৎ মোবাইলে বেজে উঠলো সেই পরিচিত টোনটি- 'টোনটেউ টেউ...' অনেকটা এ রকমই। মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি বাহার ভাইয়ের ফোন। মানে সিবিএফ'র কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক বিশিষ্ট ব্লগার চাটিগাঁ থেকে বাহার ভাই। ওনাকে ভাই বলতে আমার কেমন যেন একটু সঙ্কোচ লাগে। লাল দাঁড়ি, নূরানী চেহারার মানুষটাকে আমার 'আঙ্কেল-আঙ্কেল' মনে হয়। বয়স, চেহারা-চুরত সব মিলিয়ে ওনি প্রায় আমার মেজ চাচার মতই (হা হা হা)। যাই হোক, সালাম দিয়ে ওনি মিষ্টি সূরে বললেন, আলমগীর ভাই কেমন আছেন? আমিও সালাম দিলাম। কুশল বিনিময়ের পর ওনি জানালেন- শুক্রবার বিকাল চারটায়, চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রিতে সিবিএফ চট্টগ্রামের 'চা চক্র', আপনি আসবেন তো? আমি সম্মতি জানিয়ে, আবার সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে কথা শেষ।
শুক্রবার জুমার নামায শেষে সাড়ে তিনটার দিকে আমি রওনা দিলাম চিটাগাং ওয়ার সিমেট্রির উদ্দেশ্যে। প্রতিমধ্যে প্রিয় ব্লগার নজরুল ভাই ফোন দিয়ে বললেন চিটাগাং ইয়ারপোর্টে যেতে। আমি যেতে পারবো না বলে দিলাম, বিকজ আমি আমাদের বাসা থেকে আপুর বাসায় গেলাম। সেখান থেকে প্রোগ্রামের উদ্দেশ্যে...। নজরুল ভাইকে সেটা বুঝাতে পারিনি (সরি নজরুল ভাই)। জ্যামের নগরী চট্টগ্রামের কয়েকটা জ্যামের গিট্টু ছিড়ে কোন মতে এসে পৌঁছলাম আগ্রাবাদে। এরই মধ্যে কথা হল বাহার ভাইয়ের সাথে। ওনারা সবাই ইতোমধ্যে ওয়ার সিমেট্রিতে এসে গেছেন বলে জানালেন। তাছাড়া চট্টগ্রামের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে এখন এত বেশি স্পীড ব্যাগার যে, গাড়ির ঝাকুনিতে আমাদের মত যুবকদেরও মাজায় খবর পৌঁছিয়ে দেয়।
দেওয়ান হাট এসে হঠাৎ দেখি বিশিষ্ট প্রবাসী ব্লগার 'বিদ্রোহী নজরুল' ভাইয়ের ফোন। ওনি দেশে এসেছেন -আমি আগেই জানতাম। আমি কোথায় জানতে চেয়ে, ওনি প্রোগ্রামে আছেন বলেই জানালেন। এরই মধ্যে এসে গেলাম জিইসিতে। গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে লাগলাম গোলপাহাড় মোড়ের উদ্দেশ্যে। মেট্রো হাসপাতালের সামনে পৌঁছতেই ইজিপ্ট১২ ভাইয়ের ফোন। নরম কোমল কণ্ঠে বললেন- ‘সিরাজ ভাই আপনি টাইগার পাসে চলে যান, ওয়ার সিমেট্রি বন্ধ, আমরা ওখানে যাচ্ছি।’ কিন্তু আমি যে প্রায় চলে এলাম? হাসান ভাই বললেন- তাইলে একটা রিক্সা নিয়ে আপনি চট্টেশ্বরী রোড়ের মুখে দাঁড়ান, আমরা ওখানে আসতেছি। ওকেই।
চট্টেশ্বরীর মুখে শ্রী শ্রী কৃষ্ণানন্দ মন্দিরের সামনে আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম। ততক্ষণে দুটি সেন্টার ফ্রুট মুখে দিয়ে জাবর কাটতে লাগলাম। (যারা সেন্টার ফ্রুট খান তাদের জন্য পরামর্শ- একটা কিছুক্ষণ চিবানোর পর আরেকটি ঢুকিয়ে দিবেন, একসাথে দু'টি -মজাই আলাদা।) একটা মুহুর্ত পার না হতেই ওনারা চলে এলেন। সালাম বিনিময়ের পর হাসি মুখে বুকে টেনে নিলেন বাহার ভাই। সাথে ছিলেন বিশিষ্ট ব্লগার সিকদার ভাই (ওনাকে আমার দাদা বলায় উচিৎ), ছিলেন আহমদ মুসা স্যার (ওনাকে ছোট চাচা বলা যায়), রিদওয়ান কবির সবুজ ভাই (খুব ফানি একজন মানুষ, ওনি নাকি বেকার আবার জমিদারও), সালাহউদ্দিন নাসিম ভাই, আবু উবায়দা আরাফাত ভাই (ওনার প্রায় আমার সমবয়সী), মাহমুদুল হাসান ভাই মানে ইজিপ্ট১২ (ওনার সাথে আমার সম্পর্কটাই অন্যরকম, ভাষায় বুঝানো যাবে না), অবশেষে সেই বিদ্রোহী নজরুল ভাই। সাথে আরো দু'জন ছিল, বাহার ভাইয়ের সুইট কিউট আশরাফুল আর মুজাহিদ, হাতে ব্যাট বল। চার, ছক্কা হই হই...
চট্টেশ্বরী রোড় থেকে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলতে বলতে আমরা চলে এলাম জমিয়তুল ফালাহ -বিশ্ব মসজিদে। মসজিদের সামনে সিড়িতে বসেই হয়ে গেল আমাদের অনেক কথা। কথার মাঝখানে বিদ্রোহী নজরুল ভাইয়ের পক্ষ থেকে ছিল- লেমন টি আর দুটি করে বিস্কুট। দারুন হয়েছিল। মাগরিবের নামায পড়ে, একটু হেঁটে আমরা গেলাম সিকদার দাদার দোকানে। ফার্নিচারের দোকান ( আপনাদের কারো লাগলে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনাদের জন্য বিশেষ ছাড় থাকতে পারে।) ওনার দোকানে বসেই হল আমাদের মজার আড্ডা। কথা হল অনেক ব্লগ নিয়ে। টুডের কথা তো ছিলই। টুডের সাহসী সম্পাদক আর মডু মামাদের উপর্যোপুরি প্রশংসার খই ফোটালেন সবাই। বাকশালী সরকারের আগ্রাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে, ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী ব্লগারদের মতপ্রকাশের অনন্য ফ্ল্যাট ফরম টুডে ব্লগকে অক্ষত রাখা ও টিকিয়ে রাখার জন্য টুডে পরিবারকে স্যালুট।
কথা হয়েছিল অনেক জনপ্রিয় ব্লগার ও তাদের লেখা নিয়ে। আহমদ মুসা স্যার আর বিদ্রোহী নজরুল ভাই সামনাসামনি আমার এত্তগুলা প্রশংসা করে আমাকে অনেক লজ্জা দিলেন। নজরুল ভাইতো কয়েকবার বললেন, আমি কবিতার বই বের করলে ওনি নাকি আর্থিক সহযোগিতা দিবেন। নজরুল ভাই আপনার এই কথাটি আমার জন্য অনেক বড় পাওয়ানা, আপনাকে সালাম। কবিতার বই বের করে, পাঠকদের হাতে তোলে দেওয়ার মত কবিতা, আমার মনে হয় আমি এখনো লিখিনি। যাক সে কথা, এরই মাঝে সমাধা হয়ে গেল ডিম ভাজি, পরটা আর কোল ড্রিংক্স পেটে চালান দেওয়ার কাজ। অবশেষে ফেরা, যেই যার গন্তব্যে...
বিঃদ্রঃ ছবি তোলার মত মোবাইল লেখকের নেই, সো ছবি দেওয়া যায়নি...তাছাড়া ছবি দিলে আপনাদের লেইস্সোও পড়তে পারে....হা হা হা
বিষয়: বিবিধ
১৬৯০ বার পঠিত, ৫১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সাথে ছিলেন বিশিষ্ট ব্লগার সিকদার ভাই (ওনাকে আমার দাদা বলায় উচিৎ), ছিলেন আহমদ মুসা স্যার (ওনাকে ছোট চাচা বলা যায়), রিদওয়ান কবির সবুজ ভাই (খুব ফানি একজন মানুষ, ওনি নাকি বেকার আবার জমিদারও), সালাহউদ্দিন নাসিম ভাই, আবু উবায়দা আরাফাত ভাই (ওনার প্রায় আমার সমবয়সী), মাহমুদুল হাসান ভাই মানে ইজিপ্ট১২ (ওনার সাথে আমার সম্পর্কটাই অন্যরকম, ভাষায় বুঝানো যাবে না), অবশেষে সেই বিদ্রোহী নজরুল ভাই। সাথে আরো দু'জন ছিল, বাহার ভাইয়ের সুইট কিউট আশরাফুল আর মুজাহিদ, হাতে ব্যাট বল। চার, ছক্কা হই হই...
ব্লগারদের মতপ্রকাশের অনন্য ফ্ল্যাট ফরম টুডে ব্লগকে অক্ষত রাখা ও টিকিয়ে রাখার জন্য টুডে পরিবারকে স্যালুট।
বাহরে ছোট্রদা
আমার আর কিছু বলার নেই ,
আমি দাড়ি না রাখলে ( নাউজুবি্ল্লাহ ) আপনার চাচার মতই লাগত। আপনাদের সাথে কথা বলতে আমারও সমস্যা হয় । আমার ভাতিজারা আপনাদেরই বয়সি । তাই আপনাদের বয়সিদের সাথে কথা বলতে প্রায় সময় তুমি সম্বোধনটা চলে আসে । যদিও ভদ্রতার খাতিরে আটকে রেখে আপনি বলি।
অ্যাঁ অ্যাঁ।
আমি ভাই আসলেই বেকার!!! দেশিয় টেলিকম কোম্পানি গুলি বন্ধ করে আমার মত কয়েকহাজার প্রকেীশলিকে এখন ভিক্ষার থালা নিয়া রাস্তায় বাহির করাইয়া দিয়েছে সরকার।
তাও ভাল আমারেও চাচা বানান নাই। সিকদারর ভাই এর মত ইয়ং মাইন্ডেড মানুষ রে দাদা বানাইলেন!!!
তবে একটা কথা সত্যিই ছোট করে হলেও আপনার একটা বই প্রকাশ হওয়া উচিত।
চালান করে দিলেন?
অনেক লম্বা একটা থেংক্স......
জানিনা রথী-মহারথী এই মিলনমেলা আবারও কবে কখন কোথায় অনুষ্ঠিত হবে।
আধা শিক্ষিত মানুষ চাচা।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও
অনেক ধন্যবাদ বড় ভাই...
বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ জানাতে হয় বান্দরবানের পাদদেশ থেকে আসা প্রবাসী ভাই নজরুল ইসলাম কে । আহমদ মুসা ভাই এসেছিলেন পটিয়া থেকে, আপনি এসেছিলেন পতেঙ্গা থেকে । সিবিএফ এর প্রতি এই ভালবাসা/টান যেন থাকে যুগ যুগ ধরে ।
ধন্যবাদ প্রাপ্য সকলে, ধন্যবাদ প্রাপ্য শিকদার ভাই ।
জানিনা রথী-মহারথী এই মিলনমেলা আবারও কবে কখন কোথায় অনুষ্ঠিত হবে।
আমি স্বপ্ন দেখি হয়তো আবারও কোন এক শুভক্ষণে আপনাদের সাথে মিলিত হতে পারব।
স্পেসালি বাহার ভাইকে স্যালুট জানাই,উনার মত একজন সংগঠক আমাদের সাথে আছেন বলেই আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে পথ চলতে পারছি। <:-P <:-P
আশা করি আবার দেখা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ!
মন্তব্য করতে লগইন করুন