অনিশ্চিত জেনেও নিশ্চিন্তে হেঁটে চলাইতো জীবন!
লিখেছেন লিখেছেন আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ ০৬ এপ্রিল, ২০১৩, ০৮:২৮:২৬ রাত
আত্মচিন্তা (একান্ত আমার -কারো সাথে মিলেও যেতে পারে!)
একটি অচেনা পথ! সম্মুখ ধূসর আঁধারে ঢাকা! সেই কবে থেকে আমি হাঁটছি এই পথে -শুধুই একা! ‘তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ’ শুধু সম্বল। অনাকাঙ্ক্ষিত এই পথচলা তবু চলছি নিরন্তর! কাঙ্ক্ষিত এক গন্তব্যের সন্ধানে। না হেঁটেও উপায় কি? জীবনের তাগিদে আমাকে চলতে হচ্ছে। জানি এ পথের অন্তরায় আছে। একদিন এ পথ শেষ হয়ে যাবে।
তারপরও এক অজানা আশঙ্কায় দূরু দূরু কেপে উঠে অন্তর! আবোল তাবোল কি যেন এসে আমাকে ভাবায়! হতাশার রাঘব বোয়াল আমাকে টেনে নিয়ে যায় দুর্ভাবনার অথৈ সাগরে। আশা নিরাশার দন্ধ মনকে বিষিয়ে তোলে। ভাবতে ভাবতে আমি হাপিয়ে উঠি। ভাজপড়া কপাল থেকে ঝরে পড়ে দু’এক ফোটা সোডিয়াম সমৃদ্ধ ঘাম! হাতের উলটো পিঠ দিয়ে কপালটা মোছে নেয়।
আমার এ পথ কি নির্ভুল নয়? এ পথ দিয়ে গেলে কি আমি খুঁজে পাব না আমার কাঙ্ক্ষিত সেই গন্তব্য? আরো কত শত প্রশ্নের আনাগোনা মনে। শত সহস্র পদচিহ্ন আঁকা আছে এই পথে। আমার পূর্বসুরী যারা এ পথ দিয়ে হেঁটে গেছে তাদের পদচিহ্ন! তারা কি পৌঁছেছিল তাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে? তারা কি পেয়েছিল তাদের হৃদ-অন্দরে লালিত বিবর্ণ সোনার হরিণটির দেখা?
হয়ত পেয়েছিল!
সবাই কি আর পায়? কেউ পায়- আনন্দে মেতে উঠে। কেউ না পেয়ে- বেদানায় বিষন্ন, বিমর্ষ হয়ে যায়। কেউ পেয়ে হারায়- আপসোস করে। না জানি আমার কি হয়? কি ভাবে জানব- আমিতো মানুষ! মানুষের দৃষ্টি সসীম, এই সসীম দৃষ্টি দিয়ে মানুষ কত দূর আর দেখে? তবে কোথাও যেন পড়েছিলাম মানুষ তার ভাগ্যের নির্মাতা। সর্বদ্রষ্টা মহান আল্লাহর কাছে দুই হাত তোলে প্রার্থনা করতে পারি- হে আল্লাহ তুমিতো অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ সব জানো, আমাদের ভবিষ্যৎকে তুমি সুন্দর করে দাও।
পিছনে ফিরে দেখি- অসংখ্য পথচারী! এ পথ দিয়ে হেঁটে আসছে। তারা আমাকে দেখছে না, আমি তাদের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। তবে আমার পদচিহ্ন হয়ত তারা দেখবে। এ পদচিহ্ন কার কেউ খুঁজবে কিনা কে জানে? তাদেরকে দেখে আমি ভরসা পাই! হিম্মত পাই! এ পথে আমিতো শুধু একা নই। হতাশার কালো মেঘ ফুড়ে হৃদয় আকাশে হেসে উঠে আশার সূর্য। দুর্ভাবনার ঘোর আঁধার কেটে যায়। না জানি কত পথচারী হেঁটে গেছে এ পথে? কে জানে কত জন হাঁটছে কিংবা আরো কত জন হাঁটবে?
আমি স্বপ্ন দেখি! হাজারো স্বপ্ন উকি দিয়ে যায় ক্ষণে-বি’ক্ষণে মনে মনে। কত আশা বুকে বাঁধি। সে আশায় ভর করে আমি পথ হাঁটি, এখনো হাঁটছি- হেঁটে যাব। হয়ত কোন এক সময় পৌঁছে যাব কাঙ্ক্ষিত সেই গন্তব্যে! হয়ত পেয়ে যাব সেই ধুসর আঁধারে ঢাকা পথপ্রান্ত! শেষ হয়ে যাবে এই অনাকাঙ্ক্ষিত পথচলা! নয়ত পূর্বসুরীদের যা হয়েছে আমারও তাই হবে। অনুসারীদের কথা আর নাই বলি। আমার মনে হয় ‘অনিশ্চিত জেনেও নিশ্চিন্তে হেঁটে চলাইতো জীবন’।
২৭/০১/২০১৩
বিষয়: সাহিত্য
১৩০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন