আল্লামা মাহমুদুল হাসান(দা.বা) ও তার মাদ্রাসার ছায়ায়
লিখেছেন লিখেছেন জাকির ০৩ মার্চ, ২০১৩, ০৪:৩৫:৫৬ রাত
৩০/১২/২০১০ইং-ফজরের পরে আমাদের ফাউন্ডেশন সাবেক পরিচালক মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাহেব কে ফোন করে বললাম কিভাবে যেতে হয় যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসাতে?তখন বললেন যে,এভাবে এভাবে যাও।এই প্রথম জাহাঙ্গীরনগর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে একা একা যাচ্ছি তাও আবার নতুন জায়গাতে যাচ্ছি।গাবতলি পার হওয়ার পর দেলোয়ার হুজুরকে ফোন করে বললাম আর কত দুর?হুজুর বললেন আরও অনেক দুর।এভাবে ৫-৬ বার ফোন করলাম।যাইহোক তারপর অনেক কষ্টে যাত্রাবাড়ি স্ট্যান্ড এ আসলাম।যেতে হবে একদিকে গেলাম আরেকদিকে আমিতো মনে করলাম ঠিক দিকে কিন্তু মাদ্রাসা কোথায়?একটি লোককে জিজ্ঞেস করলাম মাহমুদুল হাসান সাহেবের মাদ্রাসা কোথায়?উনি বললেন ভাই আপনি ভুল রাস্তায় এসেছেন…..এবং আমি ভাবলাম ইশ,আরো আগে এখানকার মানুষদের জিজ্ঞেস করলে হয়তো ভুলটি হত না….এবং লোকটি সামনে এক টা যাওয়ার রাস্তা দেখালেন।এখানে একটি শিক্ষনীয় বিষয় যে,আজকাল আমরা বিভিন্ন পাপ কাজের মাধ্যমে ভুল রাস্তায় যাচ্ছি কিন্তু নিজেরা সেটাকে ভাল কাজ মনে করছি অথচ এটাই ভুল পথ,তাই আগেই থেকেই ভুল পথ থেকে দূরে থাকা উচিত চাই সেটা ্ভাল মানুষদের কাছে থেকে জেনে হউক অথবা অন্য কোন মাধ্যমে হউক।যাইহোক উনার পরামর্শ মত সামনে গেলাম এবং আরেক লোককে জিজ্ঞাসা করে অবশেষে মাদ্রাসায় এসে গেলাম।এসে দেখি যোহরের নামাজের জামাত শুরু হয়েছে জামাতে নামাজ পড়লাম।এখন শুধু মাথায় একটি চিন্তা হযরতের সাথে দেখা করব।কিন্ত কিভাবে দেখা করব?অবশ্য দেলোয়ার হুযুর বলেছেন তার এক বন্ধুর কাছে যেতে এবং সব কিছু খুলে বলতে তার নাম সোলাইমান কবির।যাইহোক দেলোয়ার হুযুরকে আবার ফোন করলাম “হুযুর মাদ্রাসায় তো আসলাম এখন কি করব?” তিনি বললেন আমার বন্ধুর সাথে দেখা কর সে উলুমুল হাদিস এ পড়ে সেখানে যাও আমার কথা বল।এক ছাত্রের মাধ্যমে উলমুল হাদিস বিভাগে গেলাম সেখানে একজন কে বললাম সোলাইমান ভাই এর কাছে এসেছি অবশ্য পাশে বসে আছেন তিনি কিন্তু চিনিনা তো, বলতে না বলতে দেখি সোলায়মান ভাই দাঁড়িয়ে বললেন আমিই সোলাইমান জি বলুন তারপর বললাম আমার বাড়ি ধামরাই দেলোয়ার হুযুর আপনার কাছে পাঠিয়েছেন তারপর মোবাইল টা বের করে হুযুরের সাথে কথা বলার জন্য ফোন দিলাম,দেলোয়ার হুযুর সব বললেন।তারপর আমাকে বললেন আপনি কি করেন?শায়খের হাতে বাইয়াত হতে এসেছেন? আমি বললাম জি,আমি সাভার ল্যাবরেটরী কলেজে পড়ি।দুপুরের খানা খেয়েছেন?না খায়নি।আমাদের সাথে দুপুরের খানায় শরিক হোন।আমি বললাম জি ইনশাল্লাহ।খাওয়ার সময় বললেন আপনাকে আগে ইমাম সাহেবের সাথে কথা বলতে হবে তারপর দেখি উনি কি বলেন।এর আগে থেকেই উনার(ইমাম) সম্পর্কে জানতাম দেলোয়ার হুযুর বলেছেন।খাওয়ার পর জানতে পারলাম ইমাম সাহেব ক্লাসে আছেন তাই অপেক্ষা করতে লাগলাম একটু পড়ে দেখি ইমাম সাহেব সাহেব আসছেন অতি সাধারন একজন মানুষ দেলোয়ার হুযুর যেমন বলেছিলেন তার চাইতেও সাধারন, ইনিই নাকি শায়েখের খলিফা যার সম্পর্কে হাযরত শায়েখ বলেন কেউ যদি আবু বকরের মত নম্র মানের মানুষ দেখতে চাও তাহলে আমার মাসজিদ এর ইমাম সাহেব আহমেদ ঈসা কে দেখ।সোলায়মান ভাই বললেন কাছে আসলে সালাম দিবেন।সালাম দিলাম দেখি উনার রুম এর দিকে যচ্ছেন আমরা 2 জন উনার পেছনে পেছনে যেতে লাগলাম উনার রুমের কাছে এসে সোলায়মান ভাই এর দিকে লক্ষ্য করে বললেন”কিছু বলবে সোলাইমান?”জি হুযুর আমার দিকে ইশারা করে বললেন ইনি শায়খ এর হাতে বাইয়াত হতে চান।তিনি বললেন ছোট লাগে না?কথাটা শুনে আমরা দুজন মাথা নিচু করলাম তারপর বললেন আজকে নাতো আগামী সপ্তাহে আসুন আজকে মাগরিবের পড় তাফসির আছে তাফসির শুনতে পারেন।সামনে সপ্তাহে ইসলাহি মজলিসে আসুন তখন তিনি বাইয়াত করেন।আমি বললাম সামনে সপ্তাহে আমার পরীক্ষা শুরু হবে তখন বললেন সমস্যা নেই পরীক্ষার পড়ে আসেন।আমি বললাম ঠিক আছে।তারপর সোলাইমান ভাই এর সাথে এসে পরলাম এবং তাকে বললাম শাইখ এর কিছু বই কিনতে চাই তিনি বললেন চলুন তাহলে লাইব্রেরীতে যাই,৪টি বই কিনলাম যা আমাকে অনেক গোনাহ থেকে বিরত থাকতে সহযোগিতা করেছে।বই গুলোর নাম-জান্নাতি দশ যুবক,দুনিয়া ও আখেরাতের পাথেয়,কোরআন-সুন্নাহ ও আমাদের জীবন,তুহফায়ে সুন্নাহ।জান্নাতি দশ যুবক আমাকে খুবই অনুপ্রেরনা যোগিয়েছে তাছাড়া আমার কিছু পরিচিত মানুষদের সাথে শেয়ার করেছিলাম যা তাদের ও অনুপ্রেরনা যোগিয়েছে।আমদের এক মুরুব্বি কাউকে যদি বই হাদিয়া দেন তাহলে এই বইটা দেয়ার চেষ্টা করেন।বই কেনার পর আসরের নামাজ পড়তে গেলাম,নামাজ শেষে সোলাইমান ভাই উলুমুল হাদিস বিভাগে নিয়ে গেলেন সেখানে শাইখ সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম একটু পরে আমি খুব অবাক হলাম একদিনের পরিচয়ে মুহাব্বত এর সহিত একটি দামি আতর দিয়ে বললেন এটা আপনার জন্য।আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করলাম কারন আলেমদের হাত থেকে হাদিয়া এটাই আমার প্রথম পাওয়া।নিয়ত আছে মাগরিবের পর শাইখকে দেখে চলে যাব তাই মাগরিবের আগ পর্যন্ত সোলাইমান ভাই এর সাথে বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনা করতে লাগলাম।মাগরিবের আযান দিলে মসজিদে গি্যে নামাজ পড়লাম।নামাজের পর সোলাইমান ভাই বললেন এখন তাফসির শুরু হবে সামনে গিয়ে বসুন আমি বললাম ভাই কিচুক্ষন থেকে আমি চলে যাব একটু পিছনে থাকি।আচ্ছা ঠিক আছে তিনি বললেন।আমি বললাম শাইখ কোথায় তিনি বললেন হযরত আসলে আপনি একাই বুঝতে পারবেন।ঠিক তাই হল দেখেই বোঝতে পারলাম ইনিই শাইখ।তখন শাইখকে কেন জানি দেখে একটু ভয় পেলাম।কিন্তু বয়ান শুনে মনে হচ্ছে শাইখ এর কাছে আমি অনেকবার এসেছি কি যে মধুর তা না শুনলে বুঝা যায় না,হাসির ছলে ইসলাহের কথা খুব ভাল
লাগছিল।আরেকটা জিনিস সেটা হল হযরতের কোরান তেলাওয়াত খুব ভাল লাগলো মাঝে মাঝে এরকম তেলাওয়াত করতে চেষ্টা করি যেমন করতেন থানভী(রঃ) এর খলিফা মাওলানা ঈসা খান(রকরতেন ।তার কোরআন তেলাওয়াত শুনে সবাই মনে করত থানভী (রঃ) এর তেলাওয়াত ।শুধু তেলাওয়াত না সব কিছুতে মিল ছিল থানভী(রঃ)ও মাওলানা ঈসা খান(রঃ)এর ।মনে হচ্ছিল সম্পুর্ন তাফসির শুনে যাই অবশ্য সোলাইমান ভাই বলে রেখেছিল রাত ৯ টা পর্যন্ত বয়ান চলবে।কিন্তু আজই যেতে হবে।তাই পোনে ১ ঘন্টা বয়ান শুনে সোলাইমান ভাই এর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।চলবে.....।
বিষয়: বিবিধ
৩২২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন