কলিমুদ্দি
লিখেছেন লিখেছেন ফেনীর কণ্ঠ ১৩ মার্চ, ২০১৩, ০৮:৫১:৩৭ রাত
কলিমুদ্দি নামে এক
ছিল ভাল ছাত্র,
পড়া লেখার মাঝে সে
কাটায় দিনরাত্র।
বৃথা সময় ব্যয় করেনা
পড়ায় লেখায় মন,
মনের মতো মানুষ হবে
এই ছিল তার পণ।
কলিমুদ্দি বাবা ময়ের
ছিল বুকের ধন,
বড় হয়ে তাদের ছেলে
রাখবে দেশের মান।
তাইনা ভেবে বাবা মা তার
করতো শুধু দোয়া,
বুকের মানিক কলিমুদ্দি
যায়না যাতে খোয়া।
এস, এস, সি তে কলিমুদ্দি
করল ভাল ফল,
দেখতে তাকে ছুটে আসে
ছেলে বুড়োর দল।
কলেজেতে পড়তে হবে
উঠল ঢাকা শহরে,
অবাক হল কলিমুদ্দি
বাড়ী গাড়ির বাহারে।
এসব দেখে কলিমুদ্দি
তাকিয়ে শুধু রয়,
এত টাকা গাড়ি বাড়ী
কেমন করে হয়।
গাঁয়ের ছেলে কলিমুদ্দির
ভাবনার অন্ত নাই।
কেমন করে তাদের মতো
টাকার খবর পাই।
যে করে হোক তাদের মতো
লাগবে আমার টাকা,
তা না হলে এই শহরে
জীবন হবে ফাঁকা।
টাকার চিন্তায় কলিমুদ্দির
মাথা ভরপুর,
পড়া লেখার চিন্তা তার
হয়ে গেল দূর।
ভাবনায় ভাবনায় কলিমুদ্দির
দু‘ চোখে ঘুম নাই।
টাকার জন্য এমন সাহাস
কেমন করে পাই।
অনেক চেষ্টায় কলিমুদ্দি
সাহস খঁজে পায়,
অস্ত্র হাতে থাকলে নাকি
সাহস পাওয়া যায়।
মিলে গেল গড ফাদার
হাতে এল অস্ত্র,
সেরা হবার জন্য এবার
পেল মূলমন্ত্র।
অস্ত্র হাতে কলিমুদ্দি
ফুলিয়ে বুকের ছাতি,
আমিই হব টাকার পাহাড়
মহান অধিপতি।
কলিমুদ্দি নামটা তার
পঁচা পঁচা লাগে,
জব্বর নামটা রাখতে হবে
মনের মধ্যে জাগে।
বাবা মায়ের নামখানাকে
ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে,
মাস্তান হল কলিমু্দ্দি
বুলেট নামটা নিয়ে।
বুলেট দেখে টাকায় টাকায়
ঢাকা ঢাকার ছাদ।
আমার মতো অনেকে তাই
পেতেছে আজ ফাঁদ।
কাউকে মারে কাউকে ধরে
করছে চাঁদা বাজি
টাকার জন্য এমন কীসে
রাখে জীবন বাজী।
বুলেট হল টাকার পাহাড়
হল বাড়ি গাড়ি,
হচ্ছে করলে চন্দ্রলোকে
দিতে পারে পাড়ি।
তাকে দেখলে অনেকের আজ
শুকিয়ে যায় গলা,
পথে ঘাটে পথচারীর
থামিয়ে যায় চলা।
গাঁয়ের মধ্যে মায়ের কথা
বাবার কথা ভুলে
নিজেকে নিয়েই এখন শুধু
আপন মনে চলে।
আমিই বড় আমিই মহান
আমিই শক্তিধর,
আমি এখন মাস্তান রাজা
বুলেট মাতব্বর।
একদিন এক সকাল বেলা
ঘুম থেকে উঠে,
মোবাইফোনে খবর পেয়ে
অস্ত্র নিয়ে ছোটে।
কার আছে আজ এমন সাহস
লড়বে আমার সাথে,
মিটিয়ে যাবে বাঁচার সাধ
অস্ত্র যদি থাকে।
বাস টার্মিনাল রাখবে দখল
করতে হবে লড়াই,
বুলেট যদি হেরেই যায় আজ
মিথ্যে হবে বড়াই।
ফুটল বোমা ছুটল গুলি
ভীষণ বিকট শব্দ,
হয়তো কারো হাঁড় বাঙ্গবে
জীবন হবে স্তব্ধ।
শুরু হল ক্রস ফায়ারিং
বুলেট ঘাবড়ে যায়,
অদেখা আজ গুলির গায়ে
প্রাণটা যদি যায়।
এমন সময় মানুষ পটে
ভাসে মায়র মুখ
নাজানা এক ভয়ের ধাক্কায়
কেঁপে উঠে বুক।
আরও ভোবে বাবার কথা
স্নেহ মাখা হাত,
আদর করে সোহাগ করে
খাইয়ে ছিল ভাত।
কলিমুদ্দি হল বুলেট
শহরতে এসে,
সকল দপ হয়ত আজ
ধুলোয় যাবে মিশে।
ভাবতে ভাবতে কপালে তার
দেখা দিল ঘাম,
নামকরা এক সস্ত্রাসীর আজ
বিধি হয়তো বাম।
চেষ্টা করছে বুলেট কিন্তু
পরছেনাতো আজ
হয়তো কেউ ছিনিয়ে নেবে
তারই মাথার তাজ
হঠৎ করে বিকট শব্দে
ধোঁয়ায় অন্ধকার।
বেঙ্গে চুরে সাজানো সব
হল একাকার।
বন্ধ হর বোমার শব্দ
বন্ধ হল গুলি,
হঠাৎ করে শোনা গেল
বিকট এক বুলি।
চেনা যায়না ভাল করে
চিন্ন ভিন্ন দেহ,
বলছে কে আজ করুন স্বরে
বাঁচাও আমায় কেহ।
এ যে দেখছি আর কেউ নয়
বুলেট মহারাজ
সকল খেলা সাঙ্গ করে
চলে গেল আজ।
কবিতাটি সম্পূন কাল্পনিক চরিত্র কলিমুদ্দি
তবুও কারো জীবনের সাথে যদি মিলে যায়।
তবে নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন।
সবাইকে সালাম জানিয়ে আজকের মত শেষ করছি।
আল্লহ যদি হায়াত দারাজ করে তবে আবার দেখা হবে।
বিষয়: সাহিত্য
১০৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন