আমি বাঙ্গালী, আমি বাংলাদেশী, সবচেয়ে বড় কথা আমি মুসলমান।
লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ০৬ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:১৬:৩২ বিকাল
আমার পরিচয় আমি বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক, তাই আমি বাংলাদেশী। আর আমি বাংলা ভাষাই কথা বলি বলে, আমি বাঙালি। আর বহুধর্মের লোক এই দেশে বাস করে। আমি ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী, তাই আমি মুসালমান। তাহলে বাঙালি আর বাংলাদেশী এর মধ্যে পার্থক্য কোথাই ?
পার্থক্যটা হোল যারা স্বাধীন বাংলাদেশের অধিবাসী ও বাংলা ভাষাই কথা বলে তারা বাংলাদেশের বাঙালি। এছাড়া বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম ( তথা তৎকালীন নবাবী বাংলার অবস্থানরত স্থানসমূহে ) বাংলা ভাষা - ভাষী বাঙালি দেখা যাই, তারা ভারতীয় বাঙালি। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কল্যাণে সুদূর আফ্রিকার দেশ সিয়েরা-লিওনে নব্য বাংলা ভাষাভাষীর দেখা মিলবে।
বাংলাদেশের বাঙালিদের সংস্কৃতি ইসলাম ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত আর ভারতের বাঙালিদের সংস্কৃতি হিন্দু ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত। যে অঞ্চলে যে ধর্মের মানুষ বেশী বাস করে সেই অঞ্চলের সংস্কৃতি ঐ ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত হবে এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের বাঙালিরা ভারতীয় বাঙালিদের তুলনাই অধিকতর অতিথিপরায়ণ, রক্ষণশীল ও স্বাধীনচেতা। এই দেশের বাঙালিরা এক ধর্মের উৎসবে ( ঈদ, পূজা, বড়দিনসহ সকল উৎসবে ) সকল ধর্মের মানুষ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেই। পারিবারিক আনন্দ- উৎসবও সবাই মিলে উপভোগ করে। তবে ০১লা বৈশাখে হিন্দু ধর্মের মঙ্গলযাত্রা বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় উৎসবের মতো পালন করা হচ্ছে যেখানে সকল ধর্মের মানুষ অংশগ্রহন করছে, যা ৯০ এর দশকেও দেখা মিলত না। তাছাড়া সকল ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করে। হিন্দু বাঙ্গালির সংস্কৃতি ধুতি-পাঞ্জাবি, কীর্তন, ঢাক-ঢোল, মহিলাদের শাখা-সিঁদুর আরও অনেক, আবার মুসলিম বাঙালির সংস্কৃতি দাড়ি-টুপি, পাঞ্জাবী, লুঙ্গি, পাইজামা, মহিলাদের কাল নেকাবসহ বোরখা, শাড়ি, ফুল হাতা ব্লাউজ আরও অনেক। মূলত ধর্মের প্রভাবেই এই পার্থক্য গুলো হয়ে থাকে। তাছাড়া নৌকা, মাছ ধরার জাল, মাছ ধরা, কৃষিকাজ, পশু পালন, এলাকা ভিত্তিক গান ( যদিও ইসলাম ধর্মে গান নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও কিছু মুসলমান অংশগ্রহণ করে থাকে ) এই রকম আরও অনেক জিনিস সকল ধর্মের বাঙালির সংস্কৃতির অংশ। এছাড়া পাহাড়ি বিভিন্ন উপজাতি বসবাস করে, তারা ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি বহন করে। এখন আমার কথা হচ্ছে বাংলাদেশে বাস করার কারনে আমি বাংলাদেশী, বাঙালি পরিবেশে বেড়ে উঠাই আমি বাঙালি সংস্কৃতি ধারন করি। কিন্তু আমি মুসলমান, কীর্তন বাঙালি সংস্কৃতির অংশ হলেও তা আমার জন্য নই। এইটা হিন্দুয়ানা বাঙালির সংস্কৃতি।
সবচেয়ে বড় কথা আমি মুসলমান। ইসলাম ধর্ম সার্বজনিন ধর্ম। এই ধর্মের মূল গ্রন্থ আল- কোরআন হইল পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। তাই এর পরিসর বৃহৎ। এর মধ্যে রয়েছে পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় তথা ইহকাল ও পরকালের সকল সমস্যার সমাধান। এই ধর্মের অনুসারী হওয়াই আমি গর্বিত। কলেমার হাকিকত হচ্ছে মুখে বলা, অন্তরে বিশ্বাস করা এবং তা কাজে পরিণত করা। প্রকৃত ইমানদারগণ তাদের উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে সারা দুনিয়াই যে ইসলাম প্রচার করে ছিল তার ছোঁয়াই আমারা আজ মুসলমান। মুসলমানগণ আল্লাহ্র খলিফা বা প্রতিনিধি। সমস্ত দুনিয়াই মহান আল্লাহতালার, তাই তার দায়িত্বও আল্লাহতালার প্রতিনিধিদের (তবে শর্ত প্রকৃত মুমিন হতে হবে)। মুমিন হওয়ার কারণে কত লোককে মাতৃভূমি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছে। স্বয়ং নবী করীম (সাঃ) কে হিজরত করতে হয়েছে। তাই এর থেকে প্রমাণিত হয় জাতীয়তাবাদের থেকে মুসলমান হওয়া জরুরী।
বিঃ দ্রঃ অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি মার্জনীয়।
বিষয়: বিবিধ
১৮২৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন