আওয়ামী সরকারের নতুন বছরের চমক, গ্যাস-বিদ্যুতের দ্বিগুন দাম !

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৩:৪৯:৫৯ দুপুর

সরকারের বর্ষপূর্তির আগেই বাড়ছে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম। জানুয়ারির বিলের সঙ্গেই নতুন এ দাম গুণতে হবে গ্রাহকদের।

এনিয়ে রাজনীতির ময়দান গরম করার জোগার চলছে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে। বিশেষ করেবিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট কঠোর কর্মসূচি দেবে বলে জানিয়েছে। এমনকিসরকারে থাকা সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও বিদ্যুৎ-গ্যাসের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে।

দাম বৃদ্ধির ব্যাপারেবিদ্যুৎ, জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরিকমিশনের (বিইআরসি) সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ জানান, বিতরণসংস্থাগুলোর মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহের দিকেগণশুনানির আয়োজন করা হবে। শুনানি শেষে নতুন মূল্য জানুয়ারি থেকেই কার্যকরহবে।

তবে এ দুটি সিদ্ধান্তের একটিও চূড়ান্ত নয় বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, সরকারের গত মেয়াদে পাইকারি এবং খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে সাতবার।প্রতিবারই ভর্তুকি কমানোর অজুহাতে মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়কোম্পানিগুলো। কিন্তু সাতবার দাম বাড়িয়েও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)কিংবা অপরাপর বিতরণ কোম্পানিগুলোর ভর্তুকি কমেনি। অন্যদিকে সরকারের গতমেয়াদে গ্যাসের (সিএনজি) দাম বাড়ানো হয় দু’বার।

গত মার্চে গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সময় বলা হয়েছিল বারবার যাতে না বাড়াতে হয়সেজন্য একবারে বেশি করে বাড়ানো হয়েছে। অথচ বছর না ঘুরতেই বিদ্যুতের পাইকারিদামের সঙ্গে গ্রাহক পর্যায়েও দাম বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে।

তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অর্থনীতিবিদ আনুমুহাম্মদের মতে, অতিরিক্ত দরে তেলচালিত কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের কারণেইপিডিবি লোকসান করছে। নিজস্ব যেসব (গ্যাসে) কেন্দ্র থেকে পিডিবি উৎপাদনকরছে তাতে লোকসান নেই। উপরন্তু এসব কোম্পানি লাভজনক অবস্থায় রয়েছে। সরকারেরমধ্যমেয়াদি পরিকল্পনায় যেভাবে গ্যাস এবং কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রউৎপাদনে আসার কথা ছিল তা হয়নি। ফলে এককভাবে জ্বালানি হিসেবে তেল নির্ভরতাবেড়ে লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে।

বিইআরসি সূত্র জানায়, গত অক্টোবরেবিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৮ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় পিডিবি। এতে করেসংস্থাটির প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোকসান কমবে বলে প্রস্তাবেউল্লেখ করা হয়।

পিডিবি সূত্র জানায়, পাইকারি পর্যায়ে বর্তমানে প্রতিইউনিট বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ৭০ পয়সা। এটি বৃদ্ধি করে পাঁচ টাকা ৫১ পয়সাকরার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রতি ইউনিটে পিডিবির খরচ ৬ টাকা ৫৪পয়সা।

পাইকারি পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব জমা পড়ার পর গত ১৭নভেম্বর পাঁচ বিতরণী কোম্পানি গ্রাহক পর্যায়েও দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়।প্রতিষ্ঠানগুলো খুচরা বিদ্যুতের দাম ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাবকরে।

দাম বাড়ানোর পৃথক প্রস্তাব জমা দেয় ছয় গ্যাস বিতরণ কোম্পানিও।আবাসিক খাতে গ্যাসের দাম প্রায় ১২২ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এপ্রস্তাব কার্যকর হলে এক চুলার জন্য চারশ’ টাকার স্থলে ৮৫০ টাকা এবং দুইচুলার জন্য ৪৫০ টাকার স্থলে এক হাজার টাকা হবে।

অন্যান্য শিল্পের জন্যপ্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ১৬৫ টাকা ৯১ পয়সা বাড়িয়ে ২২০ টাকা, বাণিজ্যিক ২৬৮ টাকা ১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০৫ টাকা, চা বাগানে ১৬৫ টাকা ৯১পয়সা থেকে বাড়িয়ে দুইশ’ টাকা, শিল্প-কারখানায় স্থাপিত নিজস্ব বিদ্যুৎ বাক্যাপটিভ পাওয়ারে ১১৮ টাকা ২৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৪০ টাকা, বিদ্যুৎ উৎপাদনেব্যবহৃত গ্যাস ৭৯ টাকা ৮২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮৪ টাকা, সিএনজিতে ৬৫১ টাকা ২৯পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯০৫ টাকা ৯২ পয়সা করার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া সারকারখানার গ্যাস ৭২ টাকা ৯২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়।

বিইআরসিসূত্র জানিয়েছে, প্রতিটি কোম্পানির গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিরপ্রস্তাবের ওপর পৃথক গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। গণশুনানি শেষে বিইআরসিরটেকনিক্যাল কমিটি বিশ্লেষণ করে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ করবে।

সূত্রঃ বাংলামেইল

বিষয়: বিবিধ

৯১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File