রাসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ ''তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহর দায়িত্ব। এক ব্যক্তি হচ্ছে, যে চারিত্রিক বিশুদ্ধতা বজায় রাখার জন্য বিয়ে করে।
লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ১২ মে, ২০১৪, ০৩:১৯:৩২ দুপুর
সমাজে একটা জিনিষ প্রচলিত হয়ে গেছে যে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করতে হবে। স্ত্রীর জন্য গহনা,বিয়ের পর থাকার জন্য ফ্ল্যাট-বাড়ি এসব না থাকলে মান সম্মান থাকবে না। তার পর আছে এক অনাদায়যোগ্য বাড়াবাড়ি পর্যায়ের দেন-মোহর সিস্টেম যেখানে একজন শিক্ষিত ছেলে বিয়ে করতে গেলে দেনমোহর নূন্যতম পাঁচ লক্ষ না হলে স্টেটাসে আঘাত লাগে। অথচ এটা দেওয়ার মতো তার সামর্থ নেই। ( অথচ হাদিসে আছে লোহার আংটি হলেও দেনমোহর দাও")
এসব কারণে ছেলে মেয়েরা জেনার দিকে ধাবিত হচ্ছে, সমাজ এমন যে লিভ টুগেদার কর সমস্যা নাই, কিন্তু প্রতিষ্ঠিত না হয়ে বিয়ে করবে? জাত যাবে!!!!
আসুন দেখি ইসলাম এ ব্যাপারে কি বলে? এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ আল কুরআনে ঘোষণা করছেন এভাবে:
"তোমাদের মধ্যে যারা একা ও নিসংগ এবং তোমাদের গোলাম ও বাঁদীদের মধ্যে যারা সৎ ও বিয়ের যোগ্য তাদের বিয়ে দাও ৷ যদি তারা গরীব হয়ে থাকে , তাহলে আল্লাহ আপন মেহেরবানীতে তাদেরকে ধনী করে দেবেন, আল্লাহর বড়ই প্রাচুর্যময় ও সবজ্ঞ" -সূরা নূর-৩২
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসির হল এর অর্থ এ নয় যে, যারই বিয়ে হবে আল্লাহ তাকেই ধনাঢ্য করে দেবেন। বরং এখানে বক্তব্য হচ্ছে, লোকেরা যেন এ ব্যাপারে খুব বেশী হিসেবী না বনে যায়। এর মধ্যে মেয়ে পক্ষের জন্যও নির্দেশ রয়েছে। বলা হয়েছে, সৎ ও ভদ্র রুচিশীল ব্যক্তি যদি তাদের কাছে পয়গাম পাঠায়, তাহলে নিছক তার দারিদ্র দেখেই যেন তা প্রত্যাখ্যান না করা হয়। ছেলে পক্ষকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে, কোন যুবককে নিছক এখনো খুব বেশী আয়-রোজগার করছে না বলে যেন আইবুড়ো করে না রাখা হয়। আর যুবকদেরকেও উপদেশ দেয়া হচ্ছে, বেশী সচ্ছলতার অপেক্ষায় বসে থেকে নিজেদের বিয়ের ব্যাপারকে অযথা পিছিয়ে দিয়ো না। সামান্য আয় রোজগার হলেও আল্লাহর ওপর ভরসা করে বিয়ে করে নেয়া উচিত।
অনেক সময় বিয়ে নিজেই মানুষের আর্থিক সচ্ছলতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। স্ত্রীর সহায়তায় খরচপাতির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। দায়িত্ব মাথার ওপর এসে পড়ার পর মানুষ নিজেও আগের চাইতেও বেশী পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। অর্থকরী কাজে স্ত্রী সাহায্য করতে পারে। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ভবিষ্যতে কার জন্য কি লেখা আছে তা কেউ জানতে পারে না। ভালো অবস্থা খারাপ অবস্থায়ও পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে এবং খারাপ অবস্থা পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে ভালো অবস্থায়। কাজেই মানুষের প্রয়োজনের অতিরিক্ত হিসেবী হওয়া উচিত নয়।
এ সূরার পরবর্তী আয়াত হচ্ছে "আরা যারা বিয়ে করার সুযোগ পায় না তাদের পবিত্রতা ও সাধুতা অবলম্বন করা উচিত, যতক্ষণ না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন৷"
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ''হে যুবকগণ! তোমাদের মধ্য থেকে যে বিয়ে করতে পারে তার বিয়ে করে নেয়া উচিত। কারণ এটি হচ্ছে চোখকে কুদৃষ্টি থেকে বাঁচাবার এবং মানুষের সততা ও সতীত্ব রক্ষার উৎকৃষ্ট উপায়। আর যার বিয়ে করার ক্ষমতা নেই তার রোযা রাখা উচিত। কারণ রোযা মানুষের দেহের উত্তাপ ঠাণ্ডা করে দেয়।'' (বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আবু হুরাইরা (রা) বর্ণনা করেছেন, রসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ ''তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহর দায়িত্ব। এক বক্তি হচ্ছে, যে চারিত্রিক বিশুদ্ধতা বজায় রাখার জন্য বিয়ে করে। দ্বিতীয় ব্যক্তি হচ্ছে, মুক্তিলাভের জন্য যে গোলাম লিখিতভাবে চুক্তিবদ্ধ হয় এবং তার মুক্তিপণ দেয়ার নিয়ত রাখে। আর তৃতীয় ব্যাক্তি, যে আল্লাহর পথে জিহাদ করার জন্য বের হয়।'' (তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, আহমাদ।
বিষয়: বিবিধ
১৭২৮ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর ছেলের বয়স ২৭ বছর, যে কি না চাকরি করছে বছর খানেক হল ।
বছর খানেক ধরে চাকরি করা ছেলের সম্পদ কি ২৫ বছর ধরে চাকরি করা লোকের চেয়ে বেশী হবে ?
যে মেয়ে তার বাবার কাছে এই ২২-২৩ বছর যে পরিমান আরাম আয়েশে বড় হয়েছে , সাধ আহলাদ পূরন করেছে ; সেই মেয়ে কি মাত্র বছর খানেক হল চাকরি করা ছেলের কাছে একই রকম ভাবে আরাম আয়েশ আশা করতে পারে । তার উপর সেই মেয়েকে এই ছেলের সংসারের হাল ধরতে হবে যা বাবার সংসারে তাকে করতেই হয় নি সঙ্গত কারণে ।
স্টাবলিশ না হয়ে বিয়ে করলে কিছুদিন পর বউ তালাক দিয়ে চলে যাবে বেটার অপশন পেলে । তখন কি করবে ?
টাকার সাথে সাথে যে প্রচন্ড মানসিক আঘাত ছেলেটি পেল তা কি কখনও দূর হয় ?
আবার যে বিয়ে করবে তার জন্য কি তার মনমানসিকতা থাকবে বা ঐ বিয়েও যে টিকবে তার গ্যারান্টি কি ?
ছেলেদের স্টাবলিশ না হয়ে বিয়ে করাটা পৃথিবী সেরা বোকামি গুলোর মধ্যে একটা ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন