মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর ইন্তেকালের পরের ঘটনাঃ

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০১:২৮:৩৫ দুপুর



হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর ইন্তেকালে বেলাল (রাঃ) শোকে প্রায় পাগলের মতো হয়ে গেলেন । তিনি ব্যাগ গুছিয়ে চলে যাচ্ছেন । সাহাবীরা তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন :-"যে দেশে মহানবী (সঃ) নেই, আমি সেখানে থাকবো না"। এরপর তিনি মদীনা ছেড়ে দামস্কে চলে যান। কিছুদিন পরে বেলাল (রাঃ) স্বপ্নে দেখলেন যে মহানবী (সঃ) তাকে বলছেন, "হে বেলাল (রাঃ) , তুমি আমাকে দেখতে আসো না কেন ''? এ স্বপ্ন দেখে তিনি মহানবী (সঃ) এর রওজা মুবারক দেখতে মদীনার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। বেলাল (রাঃ) এর আগমনের খবরে মদীনাবাসী আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ল। বেলাল (রাঃ) হলেন মহানবী (সঃ) এর নিযুক্ত মুয়াজ্জিন । মহানবী (সঃ) এর ইন্তেকালের পর বেলাল (রাঃ) আর আযান দেননি । তার কন্ঠে আযান শুনতে সাহাবীরা ব্যাকুল হয়ে আছেন । তারা তাকে আযান দিতে বললে তিনি বলেন যে, তিনি পারবেন না । অনেক জোর করে তাকে বললে তিনি উত্তরে বলেন,"আমাকে অযান দিতে বলো না ।কারণ এটা আমি পারবো না ।আমি যখন আযান দিই তখন 'আল্লাহু আকবর' বলার সময় আমি ঠিক থাকি । 'আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলার সময়ও ঠিক থাকি।'আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ' বলার সময় মসজিদের মিম্বারের দিকে তাকিয়ে দেখি যে মহানবী (সঃ) বসে আছেন । কিন্তু যখন মিম্বরে তাকিয়ে তাকে দেখবো না, তখন সহ্য করতে পারবো না।" কিন্তু তবুও সাহাবীরা জোর করলো । অবশেষে হাসান ও হোসাইন (রাঃ) এসে তাকে জোর করলে তিনি রাজী হন । তার আযান শুনে সকল সাহাবীর চোখে পানি এসে যায় । কিন্তু আযানের মাঝেই বেলাল (রাঃ) বেহুশ হয়ে পরে যান ।তাকে সকলেই ধরে নিয়ে যান । পরে জ্ঞান ফিরার পর তিনি সকলকে বলেন, "আমি যখন আযান দিচ্ছিলাম তখন'আল্লাহু আকবর' বলার সময় আমি ঠিক ছিলাম ।'আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলার সময়ও ঠিক ছিলাম ।কিন্তু 'আশহাদু অন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ' বলার সময় মসজিদের মিম্বারের দিকে তাকিয়ে দেখি যে মহানবী(সঃ) আজ সেখান বসে নেই ।এ দৃশ্য আমি সহ্য করতে পারলাম না। তাই জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলাম।" ......................................................................::::::::

[কতোই না ভালোবাসতো সাহাবীরা মহানবী (সঃ) কে, তিনি এমন মহত ছিলেন বলেই তাকে সকলে ভালোবাসতো । অথচ এই মহৎ নবী (সঃ) কে কেউ যখন গালি দেয়, তাকে এবং তার শাসণ ব্যাবস্থাকে যখন কেউ কটাক্ষ করে, তখনও আমরা চুপ থাকি ।এখন আপনার ঈমান পরিমাপ করুন। কোন অবস্থানে আছি আমি ও আপনি ?]

বিষয়: বিবিধ

৭১৬৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

183252
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:০৫
আমি মুসাফির লিখেছেন :
183299
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:০৯
সালাহ খান লিখেছেন : আসলে আমরা মানুষ যে কত অকৃতজ্ঞ তাতো স্রষ্টা নিজেই বলেছেন - নিশ্চয়ই মানুষ অকৃতজ্ঞ । এখানে নিশ্চয়ই শব্দ ব্যবহার করে স্রষ্টা মানুষ যে অকৃতজ্ঞ বা নিমক হারাম তা ফুটীয়ে তুলেছেন । তবুও বেলাল রাঃ এর সেই পুরনো একটি ঘটনা উঠিয়ে নবী সঃ প্রেমে কিছুক্ষন সিক্ত করার জন্য রইল শুভাশা আর লিখার শক্তি আরো বেড়ে যাক দিনে দিনে প্রভুর কাছে থাকলো সেই কামনা
183359
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৬
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : জাজাকাল্লাহুল খাইরান।
183365
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৯
সজল আহমেদ লিখেছেন : যাযাকাল্লাহু খাইরান।
183395
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৯
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : রাসুলের প্রেমে আমার মন
উজালা থাকে সারাক্ষণ
183422
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
187638
০৬ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৭:৫৬
মারুফ_রুসাফি লিখেছেন : এ বেলাল কে?
ইয়ামেনের রাজা আব্রাহা মক্কা আক্রমণ করতে এলে তার সঙ্গে তার পরিবারও ছিলো। আল্লাহ্র গযবে রাজা আব্রাহা সসৈন্যে ধ্বংস হয়ে গেলে আল্লাহ্ চিহ্ন স্বরূপ তার পরিবারের এক মহিলাকে রক্ষা করেন। সে মহিলাই বেলালের মাতা। তাকে মক্কার বর্বর ক্বোরেশীরা দাসীরূপে গ্রহণ করে। এক সময় হিজায্ ও নাজ্দ্সহ পুরো জাযিরাতুল আরব ইয়ামেন রাজ্যের অধীন ছিলো। সে সূত্রে মক্কার ক্বোরেশরা বেলালদের পূর্ব পুরুষেরই প্রজা ছিলো। বেলাল এখন মুস্লিম। খাতামুন্ নাবিয়্যীন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ সঃ এর মুয়ায্যিন। মক্কায় একদা যে তাওহীদের আযান ইব্রাহীম খলীলুল্লাহ্ ও তাঁর পুত্র ইসমাঈল যবীহুল্লাহ উচ্চারণ করে ছিলেন, এবং মক্কার মুশ্রিক ক্বোরাইশরা যে তাওহীদের আযান বন্ধ করে কাবা ঘরে ৩৬০টি মূর্তি বসিয়েছিলো, সে মূর্তি ধ্বংস করে মিল্লাতে ইব্রাহীমের শেষ নবী মুহাম্মাদ সঃ পুনঃ যে আযানকে বুলন্দ করেছেন, সে আযানের মুয়ায্য়িন বেলাল! মিল্লাতে ইব্রাহীম থেকে পুনঃ ক্বোরেশী গোত্রের ইমামত প্রতিষ্ঠাকারীদের জামাতের আযান বেলাল দিতে পারে না। তাই বেলাল সঠিক সময়ে নিজেকে আলাদা করে ফেলে।
রাসূল সঃ এর মৃত্যুর পর তখনো তাঁর লাশ মোবারক দাফন হয়নি। নামাজের সময় হয়েছে। বেলাল অভ্যাস মতো আযান আরম্ভ করেছে। আল্লাহু আক্বার, আল্লাহু আক্বার
الله أكبر، الله أكبر. আল্লাহু আক্বার, আল্লাহু আক্বার
الله أكبر، الله أكبر. আশহাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্
أشهد أن لا إله إلا الله. আশহাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্
أشهد أن لا إله إلا الله. আশহাদু আন্না ------
أشهد أن......... আর শব্দ বের হচ্ছেনা বেলালের কন্ঠ থেকে। বেলাল ফিরে রাসূল সঃ এর ঘরের দুয়ারের দিকে তাকিয়ে দেখছে যে ঐ দরজা দিয়ে তো আর মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ এসে জামাতে ইমামতি করতে আসবেন না। তাই আর তার গলা দিয়ে আযানের “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্” বেরই হচ্ছেনা। আযানের মধ্যেই বেলাল কান্নায় বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। আযান পূর্ণ করণার্থে বেলাল কেঁদে কেঁদে আযান শেষ করে। রাসূল সঃ এর আশেক্ব পতঙ্গরাও বেলালের সাথে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। সে-ই বেলালের শেষ আযান। তারপর পুনঃ আযানের সময়। লোকেরা অপেক্ষা করছে। কিন্তু আযানের কোনো সাড়া শব্দ নেই। তালাশ করে দেখে, বেলাল এক কোনে পাথর হয়ে বসে। তাকে বিভোর দেখে জনৈক বলে ঃ آذان يا بلال
“আযান, ইয়া বেলাল! হে বেলাল আযান দাও।” لن أوذن بعد اليوم، فليوذن غيري “লান্ উযেন্ বা’দাল্ ইয়াউম্, ফাল্ ইউযেন্ গায়রী।” অর্থাৎ “আমি আজ থেকে আর আযান দেবো না, অন্য কাউকে আযান দিতে বলো।” রাসূল সঃ এর পর নতুন ইমাম আবু বকর আসে। জিজ্ঞাসা করে আবু বকর, “বেলাল কোথায়?” তাকিয়ে দেখে বেলাল এক কোনে যেমন ছিলো, তেমনি বসে আছে। আবু বকর গিয়ে বেলালকে বলে ঃ “বেলাল আযান দাও।” বেলাল, “না”। “ওয়া লিমা-লা, ইয়া বেলাল?” কেনো না, হে বেলাল? و لما لا يا بلال؟ “তুমি যদি আমাকে তোমার কথা শোনার জন্য মুক্ত করে থাকো, তা’হলে আমি তোমার হুকুম পালনে বাধ্য। আর যদি তুমি আমাকে আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য মুক্ত করে থাকো, তা’হলে যে জন্য মুক্ত করেছো, সে সওয়াবের আশায় আমার পথ থেকে সরে দাঁড়াও।” বেলালের স্পষ্ট জবাব।
বেলালের কথা শুনে আবু বকর বলেঃ “আমি শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় তোমাকে মুক্ত করেছি।” উত্তরে বেলাল বলে ঃ “আমি রাসূল সঃ এর ওফাতের পর আর কারো জন্য আযান দিবো না।” বেলালের দৃপ্ত কন্ঠের জবাব শুনে আবু বকর বেলালকে আর কিছু বলতে সাহস পায়নি। কারণ, তারা তো পরস্পরের মর্যাদা বুঝ্তো! রাসূলুল্লাহ্ সঃ এর মৃত্যুর পর বেলালের দৃষ্টিতে রাসূল সঃ এর একটি মাত্র প্রত্যক্ষ চিহ্ন বাকী ছিলো, তা হলো রাসূল সাঃ এর নিয়োগকৃত সেনাপতি উসামাহ্, উসামাহ্র পতাকা ও উসামাহ্র সেনাবাহিনী। উসামাহ্র বাহিনী যাত্রা শুরু করলে বেলাল যুদ্ধের পোষাক ও বর্ম পরে রওয়ানা দেয়। এভাবে বেলাল মাদীনাহ্ ত্যাগ করে। রাসূল সঃ এর নিয়োগের বরকত ও আল্লাহ্র ফজলে উসামাহ্ একতরফা ভাবে পুরো এলাকা জয় করে অঢেল গনিমতের ধন স¤পদ নিয়ে ফিরে। তার মধ্যে উটই ছিলো চল্লিশ হাজার। উসামাহ্র অভিযান ব্যর্থ হলে আরব উপজাতিরা তারপরই চারদিক থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্বোরেশী ইমামত নির্মূল করতো। কারণ ক্বোরেশদের মতো তারাও তো আরব! নবী সঃ এর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাথে মিলে জেহাদ করেছে। তারা খাটো কোথায়? তারা কেনো ক্বোরেশের অধীন হবে! আল্লাহ্র দ্বীন ও তাঁর রাসূল সঃ এর আনুগত্য তো আছেই। এ ছিলো তাদের যুক্তি। কিন্তু উসামাহ্র অভিযানের মুখে রোমান সম্রাটের ময়দান ছেড়ে পলায়ন এবং বুস্রার রাজা ও তার ব্যাপক এলাকার পতন মাদীনায় গড়ে উঠা ক্বোরেশী কর্তৃত্বকে আত্মবিশ্বাস দান করে এবং তাদের বিরোধীদের মনোবল ভেঙ্গে তাদের ভীত ও হীনবল করে দেয়। তাই তারা আর সুবিধা করতে পারেনি। কিন্তু এখানেই সব শেষ। উসামাহ্ ফিরে আসার পর আর কখনো উসামাহ্, আম্মার, ইব্ন্ মাসউদ, সাওবান্ ও সালমানদের নেতৃত্বে দেয়া হয়নি। উসামাহ্র তখন মাত্র আঠারো ঊনিশ বছর বয়স। রাসূল সঃ এর “হাবীব ইব্ন্ আল হাবীবকে” তারা তো ইচ্ছা করলে, আল্লাহ না করুন, ইসলাম বিরোধী কিছু না করলে বহুদিন পর্যন্ত বরকত হিসেবে সেনাপতি করেও তো রাখতে পারতো! কিন্তু বনেদী অভিজাত ক্বোরেশীরা বারাকাহ্ বাঁদী ও যায়দ দাসের সন্তান উসামাহ্কে যেমন পূর্বে প্রধান সেনাপতিরূপে রাসূল সঃ এর জীবদ্দশায়ই মেনে নিতে পারেনি, রাসূল সঃ এর মৃত্যুর পর কেম্নে তাকে সেনাপতি রাখে? এ তো যে কোনো সাধারণ জ্ঞানের মানুষের বোধগম্য? রাসূল সঃ এর মৃত্যুর পর বারাকাহ্, উসামাহ্, আম্মার, ইবন্ মাস্উদ ও সালমান ফারসীদের “তাবাররুক” হিসেবে মোটা ভাতা দেয়া হয়েছে, আবু বকর ও উমরের আমল পর্যন্ত। রাসূল সঃ এর ওফাতের পর আবু বকর ও উমর বারাকাহ্কে দেখতে যেতো এবং জিজ্ঞাসা করতো ঃ يا اُم الرسول الله، كيف حالك؟ “হে রাসূলুল্লাহ্র মাতা, আপনি কেমন আছেন?” তখন বারাকাহ্ বৃদ্ধা। আজীবনের লালিত ধন রাসূল সঃ চলে গিয়েছেন। রাসূল সঃ এর প্রিয় যায়দ, তার স্বামী। যায়দ মুতার যুদ্ধে শহীদ হয়েছে, ছেলে আয়মান হুনাইনের যুদ্ধে শহীদ হয়েছে এবং রাসূলের প্রিয় সেনাপতি উসামাহ্ এখন অবসর প্রাপ্ত। কিছুদিন পরেই তিনি ইন্তেকাল করে তার পুত্র রাসূল সঃ ও ¯¦ামী যায়দের সাথে দারুল আখিরাতে মিলিত হন। উসামাহ্ বিজয়ী হয়ে ফেরত আসার পর মুউতার যুদ্ধে পলায়নকারীদের নেতা খালিদ্ ইব্ন্ ওয়ালিদ সেনাপতি হয়। ধনী, দাম্ভিক ও বহু শক্তিশালী সন্তানের পিতা ওয়ালিদকে ক্বোরেশী আভিজাত্য সত্তে¡ও আল্লাহ্ তা’আলা ক্বোরআনে চরম নিন্দা করেছেন। কারণ, ইস্লাম ও নবী সঃ এর সাথে তার শত্রুতা সকল সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। তার সন্তান খালেদের মধ্যে পিতার কিছু খাস্লত্ থাকাই স্বাভাবিক। ভোগ বিলাসী ঘরে জন্মিয়ে ইসলামের চরম শত্রুতা থেকে মক্কা বিজয়ের কিছুদিন পূর্বে আম্র্ ইব্নুল আস সহ একত্রে ইস্লামের বিজয়ের সম্ভাবনা মেপে মুসলমান হয়েছিলো। নুতন মুসলমান। তারবিয়াত ভালোরূপে হয়ে সারেনি। মক্কা বিজয়ের সময় অন্যায়ভাবে রাসূল সঃ এর নির্ধারিত কারণের বাইরে কয়েকজনকে হত্যা করে। রাসূল সে হত্যাকান্ডে মর্মাহত হয়ে তিনবার আল্লাহ্র দরবারে হাত তুলে বলেন ঃ اللهم إني اُبري نفسي مما صنع خالد “ইয়া আল্লাহ্, আমি খালেদের কর্মের দায়িত্ব থেকে নিজেকে নির্দোষ ঘোষণা করছি।” إن في سيف خالد دما “ খালেদের তরবারী রক্ত পিপাসু।” রাসূল সঃ যায়দ ও উসামাহ্দের সেনাধ্যক্ষের দায়িত্বে যোগ্য মনে করে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সমরাভিযানে পাঠান। তাঁর গোত্রবাদী শিষ্যরা তাদের নেতৃত্ব পছন্দ করেনি। রাসূল সঃ বিদায় নেয়ার পর হঠাৎ করে তাঁর নির্বাচিতদের গুণাবলী দূর হয়ে গেলো? না রাসূল সঃ থেকে তাঁর সাহাবীদের বুদ্ধি বেশী হয়ে গিয়েছিলো? নাউযুবিল্লাহি মিন্ যালেক। এতো কখনো হতে পারে না যে, “এও ঠিক”, “সেও ঠিক”। তাও যদি হয়, তা হলেও তা প্রথম “ঠিকটা” পরবর্তী “ঠিকের” চেয়ে উত্তম। কারণ, সেটা যে স্বয়ং রাসূল সঃ এর “ঠিক”? আবু বকর কর্তৃক প্রধান সেনাপতি নির্বাচিত হয়ে খালেদ বেশ কতগুলো অন্যায় হত্যাকান্ড ঘটায়, ক্বোরআনে স্পষ্ট বর্ণিত আল্লাহ্র মৌলিক নির্দেশ অমান্য করে। যেমন, সন্দেহের বশ্ হয়ে মুস্লিমদের হত্যা করা, এবং ইদ্দত পূর্তির পূর্বেই তাদের স্ত্রীদের নিজের মালিকানায় নিয়ে তাদের সাথে সহবাস করা ইত্যাদি। এসব হত্যার জন্য খলিফা আবু বকরকে নিহতদের রক্তপণ প্রদানে ক্ষতিপূরণও দিতে হয়েছে। “না জেনে ভুল করেছে” বলে আবু বকর খালেদকে ক্ষমা করেছে। কিন্তু উমর, আবু ওবায়দা, সাআদ বিন্ আবী ওয়াক্বকাস্ ও আলী প্রভৃতিরা আবু বকরের সাথে একমত হয়নি। তাই খলিফা হয়েই উমর যুদ্ধের ময়দানেই খালেদকে বরখাস্ত করে! বিশ্বের সকল মানুষের জন্য রহ্মত, রাহ্মাতুল্লিল্ আলামীন, জাতি, গোত্র, বংশ ও বর্ণের ভেদাভেদ নির্মূলকারী নবী সঃ এর বিদায়ের পর ক্বোরেশদের “এক বংশীয়” খেলাফত আরম্ভ হলেও রাসূল সঃ এর দেয়া সংস্কারের ঢেউএ আবু বকর ও উমরের শাসন কাল মোটামুটি কোনো প্রকার চলেছিলো। আল্লাহ্ ও রাসূল সঃ এর প্রেমাস্পদ আম্মার, ইব্ন্ মাসউদ, উসামাহ্, আবু যার ও সালেমরা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব থেকে নির্বাসিত হলেও “তার্বারুকান্” তাদের বাহ্যিক সম্মান ছিলো। তাদেরকে মোটা ভাতাও দেয়া হতো অন্যান্যদের তুলনায়। আবু বকর ও উমরের আমলে রাসূল সঃ ক্বোরেশের যে সমস্ত দুষ্কৃতিকারীদের নির্বাসনে পাঠিয়েছিলেন, তাদের আর মাদীনায় আস্তে দেয়া হয়নি। তাই মাদীনাহ্ সে সমস্ত কুচক্রীদের ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত ছিলো। দ্বিতীয় খলিফা উমরের আমলে চার দিকে রাজ্যজয় আরম্ভ হলে, বিজিত এলাকা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিজিত জাতিসমূহের চালাক ও ধূর্তদের মোকাবিলায় উমরের দৃষ্টিতে ধূর্তলোকের প্রয়োজন দেখা দেয়। ইসলামে বুদ্ধি ও জ্ঞানের উৎস ও উৎপত্তি আল্লাহ্র ভয় বা তাক্বওয়া। তাইতো রাসূল সঃ এর তাক্ওয়ার প্রশিক্ষণে যায়দ, বেলাল, আম্মার, ইব্ন্ মাস্উদ ও উসামাহ্রা ইস্লামী জ্ঞানের দিকপাল হয়। রাসূলের জীবনে ঈমান ও তাক্বওয়ায় পশ্চাদপদ হওয়ায়, আবু সুফ্য়ান, আব্বাস, মুগিরা, মারওয়ান ও মুয়াবিয়ারা রাসূল সঃ এর বিচারে কোনো দায়িত্ব পাওয়ার যোগ্য ছিলো না। যোগ্য ছিলো যায়দ ও আম্মাররা। পারস্য জয়ের পর উমর হয়তো তার সরল বিচারে রাসূল সঃ এর পরীক্ষিত ও প্রিয়পাত্র আম্মারকে বাগদাদে গভর্নর করে পাঠায় এবং আব্দুল্লাহ্ ইব্ন্ মাস্উদকে বিশেষ ইস্লামী প্রশিক্ষকরূপে নিয়োগ করে। ভালো করে বুঝ্তে হবে যে রাসূল সঃ এর আবির্ভাব কালে আরবরা, বিশেষ করে হিজায্ ও নাজদের বাসিন্দারা তখনকার বিশ্বে দরিদ্রতম ও পশ্চাদপদ ছিলো। পারস্য ও রোমান সাম্রাজ্য দুটি উন্নততরো পরাশক্তি ছিলো। সে দু’ পরাশক্তির চলাচল ও সাংস্কৃতিক এবং বানিজ্যিক যোগাযোগের কেন্দ্র বিন্দু ছিলো ইরাকের বাগদাদ। আরবদের হাতে পারস্য সাম্রাজ্যের পতন ঘটার পর সে জাতিকে দলে মথে তাদের তাগুতী ধ্যান ধারণা এবং জাহিলিয়্যাত থেকে ধুয়ে মুছে পূনর্জন্মের মতো পবিত্র করার মতো চরিত্র আরবরা রাসূল সঃ এর ইন্তেকালের পর সংকীর্ণ আরব জাতীয়তায় প্রত্যাবর্তন করে হারিয়ে ফেলে ছিলো। তার ফলে ইসলামের নামে জয় করা নতুন জাতি গুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনা ও রাখা মাদীনায় প্রতিষ্ঠিত নুতন আরবদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠছিলো। ফলে উমর তাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মুয়াবিয়া, মুগিরা ও আমর ইব্নুল আস্দের মতো জাতীয়তাবাদী কুটনীতিকদের সে সমস্ত জায়গায় গভর্ণররূপে নিয়োগ করা আরম্ভ করে। রাসূল সঃ এর তারবিয়াত ও প্রশিক্ষণে গড়া আম্মার ইব্ন ইয়ার্সিরা রিসালাত ও নবুওতের মাদ্রাসায় শিক্ষা প্রাপ্ত মু’মিন। ঈমান ও ইস্লাম দ্বারা পরিচালিত সমাজ পরিচালনার জন্য আল্লাহ্ তাদের তাঁর নবীকে দিয়ে মানুষ করেছেন। আরবী জুব্বা পরে পারস্য ও রোমান সাম্রাজ্যের আদলে আরবী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার জন্য যেমন আল্লাহ্ তাঁর নবীকে পাঠাননি, তেমনি আল্লাহ্র রাসূল সঃ‘ও যায়দ, বেলাল, উসামাহ্ ও আম্মারদের আরবী সাম্রাজ্য পরিচালনার জন্য গড়ে যাননি। আম্মার ইব্ন্ ইয়াসিরকে বাদ দিয়ে উমর যেমন ইরাকে মুগিরাকে পাঠায়, তদ্রূপ রোমান সাম্রাজ্যের আওতাভূক্ত সিরিয়ায় মুয়াবিয়া এবং ফেরআউনের দেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য আমর ইব্নুল আস্কে মিশরের গভর্নর নিয়োগ করে। উমর ভিন্ন অর্থে এদেরকে তিরস্কার করে فرعون هذه الأمة অর্থাৎ “এ উম্মতের ফিরআউন” বলে অন্তরে ফেরআউন, ক্বায়সার ও খস্রু হওয়ার বাসনাই জাগিয়েছিলো। পরে “নামকা ওয়াস্তের” ইস্লামী খেলাফত নির্মূল করে এরাই মূল ফেরআউনের “আনা রাব্বুকুমুল্ আ‘লার” মতো “আনা ক্বায়সারুল আরব” ও “আনা কিস্রাল আরব” অবশ্যই বলেছিলো। “আমি আরবী সিজার, আমি আরবী খস্রু।” তৃতীয় ক্বোরেশী ও উমাইয়্যা খলিফা ওস্মানের আমলে মাদীনায় প্রতিষ্ঠিত মক্কার ক্বোরেশী মুহাজিরদের রাজত্বের চেহারা আরো স্পষ্ট হয়ে যায়। রাসূল সঃ যাদের মাদীনাহ্ থেকে নির্বাসিত করেছিলেন, তৃতীয় খলিফা শুধু তাদের মাদীনায় এনে পুনর্বাসিতই করেনি, তা‘দের এনে প্রধানমন্ত্রীর পদ ও বিভিন্ন জায়গায় সাআদ্ ইব্ন্ আবী ওয়াক্কাসের মতো রাসূল সঃ এর ঘনিষ্ঠ সাহাবীদের বরখাস্ত করে গভর্ণর নিযুক্ত করে। তারা নিজ নিজ এলাকায় বসেই ঘোষণা করে ঃ سواد اللامصار بستان لقريش، سواد العراق بستان لقريش “বিজিত রাজ্যের উর্বর ভূমি ক্বোরেশদের বাগান বাড়ী”। তারা কেউ কেউ রাতভর মদ ও বাঈজীদের আড্ডা করে ফজরের নামাজ নেশার ঘোরে তিন রাকাত পড়ালেও ইমামতি ছাড়েনি। কারণ, ইমামত্ যে ক্বোরেশের! মাত্লামী করলে ঈমান যায়, “ক্বেরেশী” তো আর যায় না! রাসূলের মাদীনায় এদের দাপটে আম্মার, উসামাহ্, ইব্ন্ মাস্উদ, সালমান ও সালেমরা এমন কোনঠাসা যে, তাদের মক্কার কাফেরদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার যে শক্তি ছিলো, তাও তাদের আর রইলো না। মক্কায় নির্যাতিত হলে রাসূল সঃ তাদের আশ্রয় ও ভরসার স্থল ছিলেন। এখানে উপরে আল্লাহ্ ছাড়া তাদের আর কেউ রইলো না। খাতামুন নাবিয়্যীন ও রাহ্মাতুল্লিল্ আলামীন নবী সঃ কে জান, মাল ও ঘরবাড়ী ছেড়ে দিয়ে যারা আশ্রয় দিয়ে গ্রহণ করেছিলো, সে মাদিনাহ্বাসিদেরও নিরুপায় হয়ে মোহাজেরদের কান্ড দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না। মক্কাহ্ ও মাদীনার বাইরে ক্বোরেশী রাজপুত্রদের অত্যাচারের ইতিহাস পড়লে বর্গীর শাসনের কথা মনে আসে। তাদের ভোগবিলাসের যোগান দিতে মানুষের উপর এমন কর ও জিয্ইয়্যা আরোপ করা হয়, যা আদায় করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিলো না। মুশ্রিক ক্বোরেশী রক্তে জন্ম নেয়া মুহাম্মাদকে আল্লাহ্ শৈশবে পিতৃমাতৃ হারা করে তাঁর বিশেষভাবে পাঠানো পালিকা মাতা বারাকাহ্কে দিয়ে দীর্ঘ চল্লিশ বছর লালন করে পবিত্র করেছেন ও পরে নবী বানিয়েছেন। তাঁর ওফাতের পর তাঁর হাতে গড়া বিশেষ দল বেলাল, আম্মার ইব্ন্ ইয়াসির, ইব্ন মাসউদ ও সালমানদের এমন দুর্দিন আসলো যে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আদর্শ আকড়ে ধরে তা প্রচার করার পাপে আব্দুল্লাহ্ ইব্ন মাসউদকে মস্জিদে নববীর চত্বরে পায়ের নীচে পিষ্ট করে বুক ও পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে হত্যা করা হয়। নবী সঃ এর সাক্ষ্য অনুযায়ী “ধরা পৃষ্ঠের সবচেয়ে বড় সত্যবাদী” আবু যারকে সত্য বলার অপরাধে অত্যাচার করে নির্বাসনে পাঠানো হয় এবং নবী সঃ কর্তৃক নির্বাসিতদের ফেরৎ এনে ক্ষমতায় বসানো হয়। ইসলামের প্রথম শহীদ পিতামাতার সন্তান আম্মার ইব্ন্ ইয়াসিরকে পিটিয়ে আধমরা করে রাস্তায় ফেলে দেয়া হয়। যেমন একদা মক্কায় তাঁকে ও তাঁর পিতা-মাতাকে আবু জেহ্লরা করেছিলো। এরপর আর ইসলামের ও রাসূল সঃ এর রইলো কী? ইসলামের পর ইসলামের নামে চালানো ক্বোরেশদের কুফরী দেখে বারাকাহ্ ও যায়দের শেষ স্মৃতি চিহ্ন রাসূল সঃ এর “হাবীব ইব্নুল হাবীব” উসামাহ্ও হারিয়ে গেলো। ক্বোরেশী ও বনি হাশিমের হয়েও নবী সঃ এর নবুওতী শিক্ষার ‘সিংহদ্বার’ হওয়া আলীর কোনো স্থানই রইলো না। রাসূল সঃ এর নাতি হাসান হোসেনও তখন আর কেউ নয়। ইরাক মিশর ও সিরিয়ায় অমুস্লিমদের মতো অক্বোরেশী অ-আরব নবদিক্ষিত মুসলমানদের উপরও জিয্ইয়্যা ধার্য্য করা হয়। ইসলামের বিধান অনুযায়ী তারা জিয্ইয়্যা দিতে অ¯¦ীকার করলে রাতে আগুন দিয়ে তাদের ঘরবাড়ী পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হতো, আর তারা “ওয়া মুহাম্মাদা ওয়া মুহাম্মাদা” হায় মুহাম্মাদ, হায় মুহাম্মাদ, বলে ফরিয়াদ করতো। কিন্তু ক্বোরেশী উমাইয়্যা পাষন্ডদের তাতে দয়া না হয়ে আনন্দই হতো। কারণ, তারা যে মুহাম্মাদ সঃ এর উম্মত ধ্বংস করে আরবী উম্মতের স্রষ্টা! আরবী সাম্রাজ্যের রাজা ও যুবরাজ! আবু সুফ্য়ানের বংশধরদের রাজত্বের অন্ধকার যুগে উমর ইব্ন্ আবদুল আযীয এসে কুফরের অমানিশায় এক পূর্নিমার ঝলক দেখিয়ে যায়। আল্লাহ্র সে “গোবরে পদ্মফুল” সাফ্ সাফ্ উমাইয়্যা রাজত্বকে কুফরী বলে ঘোষণা করে নবী সঃ এর আদর্শকে দু’বছর পাঁচ মাসের জন্য পুনরুদ্ধার ও পুনরুজ্জীবিত করে যায়। সে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করে ঃ ولم يبعث جابيا بعث الله محمدهاديا
“আল্লাহ্ মুহাম্মাদ সঃকে পথ প্রদর্শকরূপে প্রেরণ করেছেন, করারোপ ও কর উসুলকারীরূপে পাঠাননি।” তার আমলে কেউ উমাইয়্যা রাজাদের “আমীরুল্ মোমেনীন” বললে সে তাকে বিশটি চাবুক মারার আদেশ দেয়। তার সময়ে মুস্লিম সমাজে এমন সুদিন আসে যে গোটা দেশ খুুঁজেও যাকাত সাদ্কা গ্রহণ করার মতো কোনো দরিদ্র পাওয়া যেতো না। রাজ্যময় ঘোষণা করে দেয়া হয়, “যারা ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম হবে তাদের যাকাত ও খুমস্ ছাড়া অন্য কোনো কর দিতে হবে না”। ফলে লাখে লাখে লোক ইসলাম গ্রহণ করে ¯¦তঃস্ফূর্তভাবে যাকাত, ওশর ও খুম্স্ দিয়ে বাইতুলমাল ভাসিয়ে দেয়। এখনো তা’ করলে বাংলাদেশের মতো ভিক্ষুক দেশও প্রাচুর্য্যের ¯¦র্গের রূপ নিবে। ইসলামের চিরশত্রু আবু সুফ্য়ানের বংশধরদের আল্লাহ্ আব্বাসের বংশধর দিয়ে এমন ভাবে নির্মূল করেন যে, আব্বাসীরা উমাইয়াদের ক্ববর খুঁড়ে তাদের হাড়গোড় জ্বালিয়ে দেয়। আবার আব্বাসীদের চেঙ্গিস খান ও হালাকু খানকে দিয়ে আল্লাহ্ হালাক ও নিশ্চিহ্ন করে দেন। তাদের প্রেতাত্মা চেঙ্গিস্ খানের বংশধরদের ঘাড়ে ভর করে ইসলামের নামে ভারতবর্ষে মোঘল নাম ধারণ করে আটশ বছর লুটতরাজ করে নিঃশেষ হয়েছে। এখন আরব নামে যে প্রাণীগুলো নিজেদের মধ্যপ্রাচ্যে ইয়াহুদী-খৃষ্টান চক্রের হাতে বিকিয়ে দিয়েছে, ওদের মুক্তির সকল দ্বার রুদ্ধ হয়ে আছে। বিশ্বময় মুস্লিম নামধারী দেশগুলোতে গণতন্ত্রের মাধ্যমে সে সমস্ত ইসলামী আন্দোলনকারীদের সংগ্রামীদল রয়েছে, এরা কেউ ইব্রাহীম খলীলূল্লাহ্র ও মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সঃদের অনুসারী, ইস্লাম ও ঈমানের জাত বা জাতি নয়। এরা সবাই ইব্রাহীম খলীলের পরিবর্তে আব্রাহাম লিঙ্কনের গণতন্ত্রের উম্মত। এরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলদের নামে প্রতারক বিধায়, মিশরে, আলজেরিয়ায়, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও তুরস্কে নিশ্চিত বিলুপ্তির পথে। ইসলাম ইব্রাহীম নবী ও মুহাম্মাদ নবী সঃদের পথ ও মত। ইরাক্বী ইব্রাহীম ও ক্বোরেশী মুহাম্মাদদের দ্বীন নয়। বংশ, বর্ণ, ভৌগোলিক সীমা রেখাকে মুছে এক আল্লাহ্র তাওহীদের উপর “সিবগাতুল্লাহ” আল্লাহ্র এক রঙ্গের উপর, এক মানব জাতি গড়ার জামাত ইস্লাম। জামাত একমনা ইমাম, হানীফ্ ইব্রাহীমীদের পেছনে “সীসা ঢালাই” ঐক্যের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। ইস্লামে বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী ও রাষ্ট্রীয় ধ্যান ধারণায় বিশ্বাসী বিভক্ত পেশাদার ও সাম্প্রদায়িক ইমামদের পেছনে সালাত হয় না। ইসলামে বিভিন্ন গোত্রের নামে তৈরী মসজিদ, যেমন ক্বোরেশী কা’বাহ্, উমাইয়া মসজিদ ও আব্বাসী মসজিদে সালাত হয় না। বিভিন্ন ব্যক্তি বিশেষ, গোত্র বিশেষ ও বর্ণ বিশেষের নামে প্রতিষ্ঠিত মস্জিদ, আল্লাহ্র ঘর মস্জিদ নয়। এগুলো “মসজিদে দেরার” বা ক্ষতিকর বিভক্তি, ফেরক্বা, কুফর, র্শিক্ ও মুনাফিক্বদের, ইসলাম ও, মুস্লিমদের বিরুদ্ধে ভাঙ্গন সৃষ্টি, গুপ্তচর বৃত্তি ও ষড়যন্ত্রের আড্ডা। যেমন রাসূল সঃ এর জীবনের শেষ বছরে মাদীনায় এক মসজিদ নামের আড্ডা তৈরী হয়েছিলো। আল্লাহ্ তাঁর রাসূলকে হুকুম করে তা মাটির সাথে গুড়য়ে দিয়েছিলেন।
ইসলামে মুস্লিম জাতির মাত্র একজন ইমাম হয়। বাকী সকল ইমামরা সে ইমামের নিয়োগকৃত তার “নায়েবীন” মাত্র। সে ইমামদের পেছনে, তাদের পূর্ণ নেতৃত্বে, যেখানে, যখন যে দেশে নামাজ ও সমাজ চলে, সে দেশ, সে সমাজ এবং সে যুগই একমাত্র ইসলামী দেশ, ইসলামী সমাজ এবং ইস্লামী যুগ। যে সমাজে, যে দেশে, এবং যে যুগে, সমাজের কথা মতো ইমাম নিয়োগ ও নামাজ পড়া হয়, সে সমাজই কাফেরী সমাজ, তাদের দ্বীনই র্শিক এবং তাদের নামাজই দেবদেবীর পূজা। মক্কায়, মস্জিদ, ইমাম, নামাজ ও জামাত সবই ছিলো। উপরে বর্ণিত ইব্রাহীম খলীল আঃ এর ইমামত ছিলোনা। তাই আল্লাহ্ ক্বোরেশী মুহাম্মাদকে মক্কার সকল শির্ক ও কুফ্র্ থেকে মুক্ত করার জন্য বারাকাহ্কে দিয়ে পালন করে পাক করে রিসালাত দান করেন। রিসালাত দান করেই মক্কায় প্রচলিত নামাজ ও তার জামাত থেকে তাঁকে ও তাঁর সঙ্গীদের আলাদা করেন। মক্কাহ্ থেকে মাদীনায় হিজরতের মাধ্যমে শির্কমুক্ত একক ইমামের পেছনে সামাজিক নেতৃত্ব দানের কাঠামো দাঁড় করে তারপর জামাত ও নামাজের পুনঃ প্রচলন করা হয়। এ নামাজই ইসলামের নামাজ। আজ যে দেশে দেশে অলিতে গলিতে হাযার হাযার নয়, লক্ষ লক্ষ ও কোটি কোটি মসজিদে রয়েছে, রয়েছে তাতে লক্ষ লক্ষ পেশাদার সা¤প্রদায়িক ও গোত্রীয় ইমাম নামক সমাজপতিদের চাকর ও ভৃত্যরা, এরা কেউ ইমাম নয়, এদের ঘরগুলো মসজিদ নয় এবং এতে জড়ো হয়ে যা করা হয়, তা নামাজ নয়। তা আল্লাহ্র ভাষায় “মুকাআঁও ওয়াতাস্ দিয়াহ” আড্ডা ও তামাশা।
وَمَا كَانَ صَلَاتُهُمْ عِندَ الْبَيْتِ إِلَّا مُكَاءً وَتَصْدِيَةً (সুরা আন্ফাল-৩৫) ১। “মস্জিদ্ শুধুমাত্র আল্লাহ্র ঘর, তাতে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো কর্তৃত্ব চলবেনা। সেখানে অন্য কারো আনুগত্যে ইবাদত করা চলবেনা।” وَأَنَّ الْمَسَاجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدْعُوا مَعَ اللَّهِ أَحَدًا(সুরা জিন্ন্- ১৮) ২। ইমাম মাত্র একজন হবে। তার পরিচয়ে সকল ঈমানদেরকে ক্বেয়ামতের দিন ডেকে সত্যায়িত করা হবে। সে দিন প্রত্যেক জনগোষ্ঠীদের তাদের একক ইমামের পরিচয়ে ডাকা হবে। يَوْمَ نَدْعُو كُلَّ أُنَاسٍ بِإِمَامِهِمْ (সুরা বনী ইস্রাঈল-৭১) এ এক কেন্দ্রীয় মস্জিদ, কা’বাকে কেন্দ্র করে এক ও একক ইমামের হাতে বায়আত হয়ে নামাজ ক্বায়েমই ইসলাম। সে সালাত বা নামাজকে চূড়ান্ত রূপ দিয়ে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সঃ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। তাঁর জামাতের ইমাম একক তিনি, তাঁর জামাতের আযান ও ইক্বামত দানকারী বেলাল অক্বোরেশী আরব, তাঁর জামাতের প্রথম কাতার যায়দ, বেলাল, আম্মার, সুহাইব, সালমান, ইব্ন্ মাসউদ, সালেম, সাওবান ও উসামাহ্রা। তারাও সবাই বর্ণবাদী আরবদের হাতে নির্যাতিত আরবী ভাষা-ভাষী আরব ছিলো। বর্তমান নির্যাতিত আরব জনসাধারণ তাদের বংশধর, মজলুম উত্তরাধিকারী। রাসূল সঃ এর মৃত্যুর পর এরা বর্ণ ও গোত্রবাদীদের দ্বারা নামাজ ও সমাজের নেতৃত্ব থেকে উৎখাত হয়েছে। তাদের রাজশক্তি ছিলো না। ঈমানী ও রুহানী শক্তি রাসূল সঃ এর মতো খাঁটি ছিলো। গোত্রবাদীরা রাজ শক্তি ছিন্তাই করে ঈমানী ও রুহানী শক্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়। বলা চলে যে এরা মুর্তাদ্ হয়ে যায়। আজ আরব বিশ্বে সে গোত্রীয় বর্ণবাদের প্রেতাত্মাদের হাতে শাসন ক্ষমতা। কিন্তু তাদের ভাগ্য স¤পূর্ণ রূপে আব্রাহাম লিঙ্কনের অনুসারী দাজ্জালদের পদতলে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হলেও এদের সংখ্যা আনুপাতিক হারে খুব কম। বন্দুকের সাহায্যে এরা বর্তমানে টিকে থেকে এদের শেষ দিন গুনছে। ওদের স্বৈর শাসনে পিষ্ট জনগণের শতকরা ৮০% জনই যায়দ, বেলাল, আম্মার, উসামাহ্দের উত্তর পুরুষ, নির্যাতিত, “মুস্তাদ্আফীন”। এদের রুহানী সম্পদ চাপাপড়া। তবে অনুক্ষণ আগ্নেয়গিরির মতো ভিতরে ভিতরে পাক্ছে। উদ্গিরণের সময় সন্নিকট। মিল্লাতে ইব্রাহীমের মুহাম্মাদী ইমামতের অপেক্ষায় এদের বিস্ফোরণ। আলে সঊদ, আলে সাবাহ্, আলে সাদ্দাম ও আলে হুসনি মুবারকদের শাসনাধীন আরব সমাজ, আলে ইয়াহুদ ও নাসারদের পশ্চিমা মানবতাবাদী মূল্যবোধও বর্জিত। ওদের সমাজে মুসলমানরা তৃতীয় শ্রেণীর প্রাণী। সমমানের চাকুরীতে অ-আরব মুসলমান হলে তার বেতন এক হাজার ডলার, আরব হলে তিন হাজার ডলার, আর ইউরোপ আমেরিকান হলে তার বেতন দশ হাজার ডলার। কিন্তু এ ইউরোপ আমেরিকানদের কেউ ইস্লাম গ্রহণ করে মুসলমান হলেই তার বেতন কমে এক দু’হাজার ডলারে নেমে আসে। এ কি কোনো মানব সভ্যতার দেশ? এ তো রাসূল সঃ এর আবির্ভাবের সময়ে বেলাল, আম্মার ও যায়দদের অবস্থান সাদৃশ্য! ওদের এ নিয়মের অধীনে মক্কাহ্ ও মদীনায় কী ইব্রাহীম ও মুহাম্মাদ সঃদের হজ্জ, ঈদ ও জামাত হয়? তাঁদের হজ্জ ও জামাতের প্রথম ও শেষ শর্ত হলো, “সে মাটিতে মুস্লিমরা সব সমান অধিকারী হতে হবে। যারা সেখানকার বাসিন্দা, যারা বহিরাগত সবাই সমান”। ইব্রাহীম খলীল আঃ কে দিয়ে আল্লাহ্ ঘোষণা করিয়েছেন, سَوَاءً الْعَاكِفُ فِيهِ وَالْبَادِ “বাসিন্দা ও প্রবাসী সবাই সমান।” শেষ নবী সঃ কে দিয়ে আল্লাহ্ তার আরো ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, বিশ্ববাসীরা পরস্পর চিরুনীর কাটার মতো সমান। সোজা। কোনো আঁকাবাঁকা নেই। ক্বোরেশী মুশরিক ও মুশ্রিকাহ্ আব্দুল্লাহ্ ও আমিনার ছেলে মুহাম্মাদ বারাকাহ্র্ প্রতিপালনে যায়দ, বেলাল, আম্মার, সুহাইব আল্ রুমী, সালমান আল্ ফারসী ও আবু যারদের সাথে যেমন এক হয়েছিলেন। রোমান সুহাইব্ আল্ রুমী মক্কায় তার নিজ গুনে ব্যবসা করে বিত্তশালী হয়। বাপ দাদা খৃষ্টান ছিলো বিধায় আহ্লে কিতাব্ ছিলো। তাওরাত ও বাইবেলের ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর আবির্ভাব হলে সুহাইব ইসলাম গ্রহণ করে। যেমন বেলাল ও আম্মাররা করেছিলো। মক্কার ক্বোরেশী ইমাম আবু জেহ্ল সুহাইবকে বন্দী করে বলেছিলো “তুমি রোমান ক্রীতদাস ছিলে। আমার দেশ মক্কায় এসে ধনী হয়েছো। আরবী ধর্ম ত্যাগ করে মুহাম্মাদের ধর্ম গ্রহণ করেছো। অতএব, আমাদের সম্পদ নিয়ে মুস্লিম হতে পারবেনা। সম্পদ রাখতে হলে ইস্লাম ত্যাগ করতে হবে।” সুহাইব সকল সম্পদ ত্যাগ করে কপর্দকহীন হয়ে হিজরত করে মাদীনাহ্ গিয়ে রাসূল সঃ এর সাথে মিলিত হয়। তাই, ইস্লাম মক্কাবাসীদের বা আরবদের ধর্ম নয়। মুহাম্মাদ সঃ আরবী নবী নন। তাঁর ধর্ম আরবী নয়। তাঁর অনুসারীরা কেউ আরব বা আরবী ছিলোনা। সবাই বিশ্বজনীন মুস্লিম ছিলো। মুস্লিম হলে কেউ আর আরবী, আফ্রিকী, হিন্দি ও ইউরোপীয় থাকেনা। নবী সঃ এর মৃত্যুর পর ক্রমে যে ক্বোরেশী ও আরবী ধর্মের প্রবর্তন হয়, তা সম্পূর্ণ ইসলাম বহির্ভূত এক নতুন ফিৎনা। বর্তমানের সাউদী, ইরাক্বী, কুয়েতী, আমীরাতী, মিশরী, সিরিয়ান ও লিবিয়ান গংরা মুস্লিম নয়। এরা আরবী মুশরিক ও কাফের। এদের আদর্শ আবু জেহ্ল, আবু তালিব, আবু সুফ্ইয়ান ও আব্বাসরা। ইব্রাহীম, মূসা ও মুহাম্মাদ সঃ রা নন। এদের দেশে মুসলিমরা বিদেশী, “আজ্নবী।” অর্থাৎ “ফরেনার”। অথচ মুস্লিমরা পরস্পর এক মায়ের পেটের ভাই। ভাই কি ভাইর বাড়ীতে বিদেশী হয়? কখনো হয় না। বর্তমান আরবরা, বিশেষ করে শাসক শ্রেণী ও তাদের সমর্থকরা নিঃসন্দেহে আবু জেহেলের ধর্মাবল¤¦ী। সুহাইবদের মতো যারা আরবী ও ক্বোরেশী জাতীয়তাবাদ ত্যাগকারী মুহাম্মাদ ও ইব্রাহীম সঃদের অনুসারী, আরব বিশ্বে একমাত্র তারা মুস্লিম।
নবী সঃ এর জন্ম উপলক্ষে প্রত্যেক বছর, বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে রবিউল আউয়াল মাসে মিলাদের নামে অনুষ্ঠানাদী হয়, সীরাত সভা হয়। মোল্লারা মিলাদ পড়ে বিরিয়ানী মিষ্টি খায়। ধর্মব্যবসায়ী মোল্লা ও ধর্মবেসাতী মুসলমান নামধারীরা তাদের অজ্ঞতা ও মুর্খতার ফলে বিশ্বনবী সঃকে আরবী আব্দুল্লাহ্ ও আমিনার পুত্র হিসেবে হাশেমী, ক্বোরেশী ও আরবী নবীরূপে গান-গীত গেয়ে মিলাদ পড়ে। এখন তাদের বুঝতে হবে, এবং বুঝাতে হবে যে হাশেম ৩৬০ মূর্তির মন্দিরের ঠাকুর ছিলো। ক্বোরেশরা, সারা আরব বিশ্বের ধর্মীয় মোল্লা ছিলো এবং আরবদের ধর্ম কুফর, র্শিক ও মুনাফেক্বী ছিলো। মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ সঃ এসে বনী হাশেমের ঠাকুরগিরি, ক্বোরেশদের ধর্মব্যবসা এবং আরবদের কুফ্র ও শিরক নির্মূল করে বিশ্বমানবের কল্যাণ ও মুক্তির ধর্ম ইসলামকে পূর্ণ করে গিয়েছেন। তাঁর আদর্শ হাব্শী বেলাল, রোমান সুহাইব, ফার্সী সাল্মান, ইয়ামেনী আম্মার, আরবী আবু যার ও মাদানী আরবী আনসারদের একত্র ও অভিন্ন করে মক্কা বিজয় করে, কাবাহ্কে মূর্তিমুক্ত করে ও মক্কাবাসীকে পরাজিত করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাঁর আসল মা বারাকাহ্, তাঁর আসল স্ত্রী খাদিজাহ্, তাঁর ঘরের মানুষ যায়দ ও উসামাহ্ এবং তার নিঃস্বার্থ অনুসারী বেলাল, আম্মার, সুহাইব, সালমান, আবু যার, আবু দারদা, ইব্ন্ মাসউদ, সালেম, সাওবান, প্রভৃতি, এবং ক্বোরেশীদের মধ্যে সৌভাগ্যবান আবু বকর ও উমরদের মতো গুটি কয়েকজন, যারা রাসূল সঃ এর আহ্বানে ইস্লামের বিজয়ের কোনো সম্ভাবনা দেখার পূর্বেই তাঁর সঙ্গী হয়েছিলো। বাকীরা যারা বিজয়ের সম্ভাবনা দেখে যোগ দিয়ে ছিলো, তারাই নবী সঃ এর বিদায়ের পর ইসলামের নামে গোত্রীয় সমাজ ও সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলো। উমাইয়া, আব্বাসী, তুর্কী, মুঘল, পাঠান, সাইয়েদ ও বর্তমান পাকিস্তানী, বাংগালী, সাউদী ও আরবীরা ওদেরই ধর্মাবল¤¦ী উম্মত। মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ কর্তৃক পুনঃপ্রবর্তিত মিল্লাতে ইব্রাহীমের সাথে এদের অতটুকুই সম্পর্ক, যতটুকু ইব্রাহীম আঃ এর নম্রুদের সাথে এবং মুহাম্মাদ সঃ এর আবু লাহ্ব্ ও আবু জেহ্লদের সাথে ছিলো। মিলাদুন্নবী ও সীরাতুন্নবীর অনুষ্ঠানাদি দ্বারা অনতিবিল¤ে¦ রাসূল সঃ এর সত্যিকারের জীবন, তাঁর আদর্শ ও তার সত্যিকারের অনুসারী, নির্যাতিতদের জীবনী তুলে ধরতে হবে। তবেই মিলাদ ও সীরাত সার্থক হবে। প্রায়শঃ পত্র পত্রিকায় দেখা যায় যে, আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া প্রফেসররা ইস্লাম ও নবী সঃ সম্পর্কে বিরূপ উক্তি করে থাকে, এবং মৌলভী মোল্লারা তাদের কাফের ও মুর্তাদ বলে আখ্যায়ীত করে বিবৃতি দেয়। আসলে কি কেউ একটিবার ভেবে দেখেছে যে মূল ব্যাপার কি? কোনো ঈমানদার ব্যক্তিবিশেষ ইসলামের মূলনীতি বিরোধী উক্তি করলে, বা কাজ করলেই কাফের বা মুর্তাদ হয়। কিন্তু যারা কোনো কালেই আদৌ ঈমানদার ছিলোনা, তারা ইস্লাম বিরোধী কথা বল্লে নুতন করে কিভাবে কাফের হয়? এ প্রফেসর ও বুদ্ধিজীবীদের পূর্ব পুরুষরা অধিকাংশ নমশুদ্র ছিলো। ব্রাহ্মণদের গরুচুরি করে খেয়ে ওরা “মোচলমান” হয়েছিলো। হারামখোর নিকাহ রেজিষ্ট্রাররা এদের মা বাপকে পয়সার বিনিময়ে ধর্মের নামে একত্রে থাকার কাগজ “কাবিন নামা” তৈরী করে দিয়েছে। এদের বাপদাদারা কোনো মোহ্রানাও আদায় করেনি। কাজীরা ঈমানদার হলে এদের বিবাহও পড়াতো না। কারণ, কোনো ঈমানদার ব্যক্তি বর ও কনে খাঁটি ঈমানদার না হলে তাদের বিয়েতে সাক্ষীও হতে পারে না। কোনো ঈমানদার বর যেমন বেঈমান কনের জন্য অবৈধ, তেমনি ঈমানদার কনে বেঈমান বরের জন্য হারাম। আল্ ক্বোরআনে স্পষ্ট করে আল্লাহ্ বলেছেন ঃ لَا هُنَّ حِلٌّ لَّهُمْ وَلَا هُمْ يَحِلُّونَ لَهُنَّ এরা ওদের জন্য বৈধ নয়, ওরাও এদের জন্য বৈধ নয়। (সূরা মুম্তাহিনা-১০) কাজী নামের পেশাদার লোকেরা বর্তমানে মূলতঃ পয়সার বিনিময়ে ধর্মের নামে নরনারীর ব্যভিচারের লাইসেন্স প্রদান করে থাকে। তাদের এ লাইসেন্সের ফসলই ঐ সমস্ত মুসলমান নামধারী বুদ্ধিজীবী ও প্রফেসর। তাদের নুতন করে কাফের বা মুর্তাদ হওয়ার সুযোগ কোথায়! তা ছাড়া এ সমস্ত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ূয়াদের সত্যিকারের ইসলাম ও তার নবী সঃ সম্পর্কে সঠিক জানার সুযোগ কোথায়? ইস্লামের ইতিহাস বল্তে আরব ও মুসলমান নামধারী মধ্যযুগীয় বর্বর ¯ৈ¦রাচারী রাজা বাদশাহ্দের কুকীর্তির বর্ণনা বুঝায়। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ইস্লামী ইতিহাস পড়ে ও পড়ায়, ওরা নাস্তিক হতে বাধ্য। তাইতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্লামের ইতিহাস বিভাগকে নাস্তিক তৈরীর কারখানা বলা হয়। খৃষ্টান বৃটিশ উপনিবেশবাদের প্রতিষ্ঠিত আবর্জনার “ডাষ্টবিন” এ বিশ্ব

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File