বিশ্ব ইজতেমার ইতিহাসঃ

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ১৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:৪২:৩৯ সকাল



রাজধানী ঢাকার পাশেই টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমাকে উপলক্ষ করে যে লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের সমাগম ঘটে তা হটাৎ করে হয়ে উঠেনি। নিবেদিত প্রাণ তাবলীগ অনুসারীদের নিরলস প্রচেষ্টায় বিশ্ব ইজতেমা আজকের রুপ লাভ করেছে। যতটুকু জানা যায়, বিশ্ব ইজতেমা সর্ব প্রথম শুরু হয় আজ থেকে ষাট বছর পূর্বে ১৯৪৬ইং সালে কাকরাইল মসজিদে। এরপর ১৯৪৮ইং সালে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামের তৎকালীন হাজী ক্যাম্পে। এরপর ১৯৫৮সালে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় বর্তমান নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে।

তখন এটা কেবল ইজতেমা হিসেবেই পরিচিত ছিল। কিন্তু প্রতি বছর ইজতেমায় অংশগ্রহনকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ১৯৬৬সালে টঙ্গীর পাগার গ্রামের খেলার মাঠে ইজতেমার আয়োজন করা হয়। ঐ বছরই প্রথম শুধু বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগন অংশ গ্রহন করায় বিশ্ব ইজতেমা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

পরবর্তীতে ১৯৬৭ সাল থেকে এ যাবত পর্যন্ত স্থায়ীভাবে বিশ্ব ইজতেমা নামে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন মানুষের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে তুরাগ নদীর উত্তর-পূর্ব তীরে রাজউকের প্রায় ১৬০ একর (এখন প্রায় ১৭৫ একর) বিশাল ভুমির উপরে সামিয়ানা টাঙ্গিয়ে নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিগত ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সরকার উল্লেখিত জায়গায় বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবার লিখিত অনুমতি প্রদান করেন।

বিভিন্ন পত্রিকা/ পরিসংখ্যানের হিসাবে দুই পর্ব মিলিয়ে প্রায় ষাট থেকে সত্তর লাখ মানুষ এতে অংশ গ্রহন করেন। এবং প্রায় ১০০টিরও বেশী দেশের প্রায় অর্ধ লক্ষ বিদেশি মেহমান এতে অংশ গ্রহন করেন।

তিন দিনের ইজতেমা শেষে আখেরী মুনাজাতে বিশাল জন সমুদ্রে পরিনত হয় ইজতেমা ময়দান! ঐ দিন সরকার কর্তৃক ঐচ্ছিক ছুটি ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষ আখেরি মুনাজাতে শরীক হন। আখেরি মুনাজাতে বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করে মুনাজাত করা হয়।

এই বিশ্ব ইজতেমা সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য বেশ কয়েক মাস ধরে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সর্বস্তরের মানুষ পালাক্রমে মাঠ প্রস্তুতের কাজে অংশগ্রহন করে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য আল্লাহর অশেষ কুদরতে পুরো ব্যাবস্থাপনা ব্যায় বহুল ও সময় সাপেক্ষ হলেও অত্তন্ত নিখুঁত ভাবে পুরো কাজ সম্পন্ন হয় আলহামদুলিল্লাহ।

প্রতি বছরই ইজতেমা শেষে হাজার হাজার জামাত দেশের অভ্যন্তরে ও সারা বিশ্বব্যাপী দাওয়াতী কাজের আঞ্জাম দেয়ার জন্য বের হন নিজের জান মালের কোরবানির দ্বারা। আল্লাহ আমাদের সবাকেই এই মোবারক মেহনতের সাথে পরিপূর্ণ ভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন।

বিষয়: বিবিধ

৪২১৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

163103
১৬ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৩০
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : আল্লাহ তাদের মেহনত কবুল করুন , দেশের শান্তি ফিরে আসুক এই দোয়া করি। মুরুব্বিদের প্রতি বিনীত অনুরুধ ফাজায়েলে আমাল বইতে বেদায়াতি শিরিক মার্কা কথাবার্তা বাদ দিয়ে বইটাকে যুগউপযোগি করার প্রতি নজর দিতে।

যাজ্জাকাল্লাহ খায়ের

১৬ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৪০
117414
ইমরান ভাই লিখেছেন : একমত আমিন।Praying Praying
163114
১৬ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯
আবরার আদিব লিখেছেন : ভালো লাগল!
163164
১৬ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৭
বড়মামা লিখেছেন : তাবলিগ জামায়াত তৈরী করেন ভারতের আলেম ইলিয়াছ ঐ সময় ইংরেজ সরকর ছিলো আলেমদের বড় শত্রু তাই কমছে কম মুসলিমদের একটু আমল ঠিক রাখার জন্য তারা সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলবে না অন্যায়ের বিরুদ্ধে কিছু বলবে না এইশর্তে তাদের তাবলিগের কাজ করার অনুমতি দেয়। ইংরেজ সরকার দেখলো তারা শুধু মসজিদে থাকবে দেশ নিয়ে চিন্তা করবেনা ।ঐসময় অসহায় আলেমদের এই রাস্তা ছারা কোন উপায় ছিলো না। ভালো কথা তাবলীগ ওয়ালারা যে বলে এটা নবী ওয়ালা কাজ, মানে নবীর অনুসরন ।আমার যানতে ইচ্ছা হয় এইটা কোন নবীর কাজ।ইতিহাস দেখলে যানাযায় প্রায় সব নবীরাই দ্বীনের দাওয়াতী কাজ করতে গিয়ে বাধার সমুখিন হয়েছেন এবং মার খেয়েছেন,বিভিন্ন উপায়ে তাঁদের উপর কয়েমী শাসক বা শক্তি জুলুম করেছে কাউকে হত্তাও করেছে।কোন নবীরাই জালিমের বিরুদ্ধে নত শিকার করেনি ।বর্তমানে তাবলিগ জামায়াতের কাজে কোন শক্তি বা কোন শাসক বাধা দেয়না কারন তারা অন্যায়ের পতিবাদও করেনা।তাহলে কিভাবে এইটা নবীওয়ালা কাজ বা রাস্তা হয় ।কেউ যদি বড় একটা পাহাড়ে উঠে বলে আমি হিমালয়ে চরেছি কোন বরফ বা কোন কস্টই হয় নাই তাহলে আপনারা ঐ লোকটিকে কি বলবেন ।বিশ্ব ইস্তেমা ,বিশ্ব জাকের মন্জিল আরো অনেক বিশ্ব আছে সব বাংলাদেশে। সৌদিআরব মক্কতেযে আল্লাহর হুকুমে হজ্জ পালন করা হয়। এখানে সারা দুনিয়া থেকে লোক আসে কই এখানেতো এতো বিশ্ব,বিশ্ব করেনা ।আবার কিছু অজ্ঞ সাংগাতিক বলে হজ্জের পরেই এই ইসতেমার স্থান ।এইসব জাহেলদেরকে কে বলেছে যে তাবলিগের ইস্তেমাকে হজ্জে সাথে তুলনা করতে। আবার বলে এখানে বিশ্ব ইস্তেমায় দোয়া কবুল হয় সাধারন মুর্খ মানুষ সারা বছর আল্লাহর নাফরমানী করে কিছু টাকা করছ করে ইস্তেমায় যায় এই আসায় যে তার পাপ সব মাফ হয়ে যাবে।অনেককে বলতে শুনি ইস্তেমায় দোয়া কবল হয় তাই আসি ।মুরুব্বিরাও এব্যপারে কিছু পরিস্কার করে বলেনা।মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা ভাল কাজ তাই বলে ফজিলত বয়ান করতে করতে একেবারে হজ্জের কাছে চলে যাবে এইটাতো ঠিক না ।অনেকে বউ বাচ্ছার খরছ ঘরে না দিয়া তাবলিগে চলে যায় ৪০ দিনের জন্য প্রশ্ন করলে বলে আল্লায় চালাইবো।বউ বাচ্ছারা মানুষর কাছ থেকে দেনা করে চলে ছেলে মেয়েরা খারাপ হয়ে যায়।আবার সাহাবীদের সাথে তুলনা করে।আসলে তাবলিগ পুর্নাঙ্গ নবীওয়ালা কাজ নয়।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File