শাসন করা তারই সাজে, আদর করে যে।

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ০৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ০১:০৮:৪১ দুপুর



সঠিক ও ভ্রান্ত, ন্যায় ও অন্যায়, অধিকার এবং দায়িত্ব ইত্যাদি নির্ণয়ের মানদ- একই রূপ হওয়া উচিত। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সুবিধামতো দাঁড়িপাল্লা বিচার ও পরিমাপের জন্য নির্ণয় করা হয়। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে জোর যার মুল্লুক তার। ইংরেজিতে অনুরূপ প্রবাদটি হলো Might is Right. অর্থাৎ যার হাতে ক্ষমতা আছে তিনি যা বলেন তাই সঠিক এবং সঙ্গত। যা ন্যায় এবং সঙ্গত তাই ক্ষমতা ও শক্তির উৎস হওয়া উচিত। কিন্তু তা অনেক ক্ষেত্রেই হয় না।

কোনো সিদ্ধান্ত বা অভিমত যে সঙ্গত, তা কে নির্ধারণ করবে? কী মানদন্ডে নির্ধারণ করবে? যা আমাদের সুন্দর জীবনের জন্য সহায়ক, তা সঙ্গত হতে পারে। মন যা সঙ্গত বলে এবং যা করার জন্য ব্যক্তি ত্যাগ স্বীকার করতে পারে সেগুলোর দিকেই তাদের আকর্ষণ বেশি।

অপরাধীরা এবং দুষ্কৃতকারীরা যা করে, তা করতে তারা ভালোবাসে। তা করে আনন্দ পায়। এত আনন্দ যে, এর জন্য তারা জীবনের ঝুঁকি নেয়। যে অধিকারগুলো সাধারণত অধিকতর লঙ্ঘিত হয় সে অধিকারের কথা বলা এবং সমর্থন করা স্বাভাবিক এবং সঙ্গত। অধিকাংশ মানুষের মন এবং বিবেক তার নিজের অধিকারটির কথাই তাকে স্মরণ করিয়ে দেবে। কিন্তু তার প্রতি অন্যের অধিকার ভুলিয়ে দেয়া স্বাভাবিক। যে ব্যক্তিরা জীবনে এবং নিজের পরিবেশে অন্যের অধিকার বেশি লঙ্ঘন করে, অনেক ক্ষেত্রে বৃহত্তর পরিবেশে তাদের অনেকেই অপরের অধিকার এবং মানবাধিকারের কথা বেশি বলে। যে পাপ ব্যক্তি করে সে পাপের বিরুদ্ধে কথা বলে। এর দ্বারা যারা তাকে জানে না তাদের কাছে সে নিজের ভাবমূর্তি উন্নত করতে পারে হয়তো।

কোনটা সত্য এবং ন্যায়, তা সর্বক্ষেত্রে ব্যক্তির হাতে ছেড়ে দেয়া হলে ন্যায়-অন্যায় নির্ধারণে কোনো সরল রৈখিক মানদ- পাওয়া যাবে না। যখন নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য হয় মতানৈক্যকারীরা তাদের থেকে বিজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে সালিশ নির্ধারণ করেন। মানুষের জন্য সঙ্গত-অসঙ্গত নির্ধারণের সহজতম পদ্ধতি হলো মানব স্রষ্টার কোনো ইঙ্গিত আছে কিনা তা খুঁজে বের করা।

শিক্ষিত এবং উন্নত সমাজে গণতন্ত্রের চাষ ভালো হয়। ফলনও বেশি হয়। যে সমাজে গণতান্ত্রিক চেতনা উন্নত নয়, সে সমাজে গণতান্ত্রিক দ্বার মুক্ত করে দেয়া হলে স্বৈরাচারী ও প্রতারকের আবির্ভাব হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

কোনো সমাজে যে অধিকার আগে স্বীকৃত ছিল না, সে সমাজে বিপ্লবাত্মক পদ্ধতিতে একসঙ্গে সব অধিকর প্রবর্তন করা হলে বদ হজম হয়। সামাজিক শৃঙ্খলা যা আছে, ভেঙে পড়ে। বিবর্তনের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে নতুনত্বের আমদানি করা যায়। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যখন অসহনীয় হয়, পিছু হটলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকলেও আনন্দিত চিত্তে সম্মুখে অগ্রসর হওয়া যায়।

যে অধিকার আমি চাই, সে অধিকার যে অন্যদেরও আছে তা ভুলে যাওয়া ভুল এবং অন্যায়। যদি কোনো অধিকার আমি চাই অপরের অনুরূপ অধিকার সম্পর্কে আমাদের সতর্ক হতে হবে।

বিষয়: বিবিধ

২০০৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

159567
০৬ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৩৬
পত্রিকার পাতা থেকে লিখেছেন : গায়েবি ভোট, ময়লা লাগলো হাসিনার গায়ে
অমিত রহমান | ৬ জানুয়ারি ২০১৪, সোমবার, ১:১৬

একতরফাভাবে গায়েবি ভোটের দৌড়ে হাসিনা এগিয়ে থাকলেন। এরশাদ ছিলেন প্রথম। দ্বিতীয় খালেদা। এবার হাসিনা নয়া রেকর্ড তৈরি করে সবাইকে টেক্কা মারলেন। গায়ে লাগলো ময়লা। তিনিও তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী। খালেদা এখন আর সেটা দাবি করতে পারবেন না। এখন যদি কিছু হয়। অর্থাৎ সমঝোতা। যেহেতু তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছেন শেখ হাসিনা সেখানে সমঝোতা হতে আপত্তি কোথায়? আসলে কি তা হবে? বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। ভোটার বিহীন নির্বাচন করে যারা উল্লাস করছে তাদের কাছে এই প্রত্যাশা আসলে কতটুকু বাস্তবসম্মত! দেশ জ্বলছে। মানুষ মরছে। চারদিকে শুধু নাই আর নেই। ব্যবসা-বাণিজ্য পঙ্গু। দিনমজুরদের মুখের হাসি কেড়ে নেয়া হয়েছে। এবার যদি তারা ঘুরে দাঁড়ায়। আর আমজনতা! তারা মার খাবে দু’দলের। ভোটে না গিয়ে তারা অবশ্য প্রতিবাদ জানিয়েছে। কেউ কেউ বলেন নীরব। আসলে এটা ছিল সরব প্রতিবাদ। জনগণের সম্মিলিত প্রতিবাদ গণতন্ত্রের খোলসটাকে রক্ষা করেছে। শাসকরা যদি এখন এই খোলসটাকেও শেষ করে দিতে চান তাহলে যা হবার তাই হবে। গণতন্ত্র নির্বাসিত হবে। একনায়কতন্ত্রের কাছে বন্দি হবে দেশ। সে পথে হাঁটার জন্য বড্ড তাগিদ।
159568
০৬ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৩৭
পত্রিকার পাতা থেকে লিখেছেন : গায়েবি ভোট, ময়লা লাগলো হাসিনার গায়ে
অমিত রহমান | ৬ জানুয়ারি ২০১৪, সোমবার, ১:১৬


গায়েবি ভোট। শব্দটা পুরনো। আমরা ভুলেই গিয়েছিলাম। ১৭ বছর আগের কাহিনী মনে থাকবার কথা নয়। ৫ই জানুয়ারি ভোটে আবার শোনা গেল, ভোটের ইতিহাসে এটা নয়া এক অধ্যায়। নির্বাচন কমিশন লজ্জা পায়নি। শাসকরা উল্লসিত। তবুও তো ভোট হয়েছে। কলঙ্কিত হোক, তাতে কি যায়-আসে। ভোটাররা ভোট না দিলেও যখন ভোট হয় তখন এতো কসরত কেন? এমন ভোটই হয়ে গেল রোববার। গায়েবি ভোটে বোঝাই হয়ে গেল বাক্স। সকালে শূন্য, দুপুরে সামান্য, বিকেলে একদম বোঝাই। এমন বোঝাই হয়ে গেল- নৌকা ডুবে ডুবে ভাব। কোনমতে তীরে পৌঁছালো বটে। তবে নৌকার হাল নেই। আর চলবে না। নয়া নৌকা বানাতে হবে। শেখ হাসিনা হয়তো বলবেন, ভাল লোক নৌকায় ওঠেনি। তাই বলে তো খালি নৌকা চালিয়ে আনা যায় না। ভেজাল তো থাকবেই। খালি মাঠে গোল দেয়ার মতো আর কি? গোলপোস্ট যেখানে নেই সেখানে চারদিকেই মনে হয় গোলপোস্ট।
159572
০৬ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:১৬
বুড়া মিয়া লিখেছেন : শাসন কিন্তু খালি বদ-দের জন্য প্রযোজ্য। ভালোদের শুধু পরিচালনা করতে হয় বা শুধু দেখিয়ে দিলেই তারা পথে চলে। এখন যে পরিস্থিতি তাতে ভালো থাকাইতো মুশকিল, ভালোগুলোকেও বাধ্য করে খারাপ হইতে।

এমনভাবে বাধ্য করলে - যারা না পারতে বাধ্য হইছে তাদের আল্লাহ মাফ করবেন বলে দিছেন, কিন্তু যারা বাধ্য করাচ্ছে তাদের শাসন কে করবে?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File