বিশ্বনবী (সা.)’র হিজরত ও হিজরি সনের প্রকৃত সূচনার তারিখ।
লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ০৪ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৪:৫৩:৩৫ বিকাল
আজ থেকে ১৪৩৫ চন্দ্র বছর আগে পয়লা রবিউল আউয়াল মক্কার কাফিররা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র করলে মহান আল্লাহ তাকে ইয়াসরেব তথা মদীনায় হিজরত করার নির্দেশ দেন।
রাসূল (সা.) এই শহরে হিজরত করার কারণেই শহরটির নাম হয়েছে মাদিনাতুন্নাবী বা নবীর শহর এবং বর্তমানে তা মদীনা নামেই পরিচিত।
প্রথম রবিউল আউয়ালের রাতে বিশ্বনবী (সা.) তাঁর আপন চাচাতো ভাই হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ) -কে নিজের তথা রাসূল (সা.)’র বিছানায় শুয়ে থাকতে বলেন যাতে ওহী নাজেলের এই কেন্দ্রকে ঘিরে রাখা কাফির ঘাতকরা এটা মনে করে যে, শিকার এখনও নিজ ঘরেই রয়েছে; আর এই সুযোগে অচিহ্নিত অবস্থায় মক্কা ত্যাগ করতে সক্ষম হবেন।
যুবক আলী (আ.) অত্যন্ত আনন্দচিত্তে এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন নিজের জীবন ও অঙ্গহানির ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও।
ভোরবেলা কাফির ঘাতকরা যখন রাসূল (সা.)-কে হত্যা করতে উদ্যত হল তখন তারা সবিস্ময়ে দেখল: একি! মুহাম্মাদের (সা.) কম্বলের নিচ থেকে বের হয়ে এসেছে বীর আলী এবং খোদ মুহাম্মাদকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
হতাশ হয়ে পড়া মক্কার কাফিররা ইমাম আলী (রাঃ)-কে মোকাবেলা করতে ভয় পেল এবং রাসূল (সা.)-কে খুঁজে বের করার জন্য চারদিকে লোক পাঠালো। কিন্তু বিশ্বনবী (সা.) ততক্ষণে আশ্রয় নিয়েছেন মক্কা থেকে বেশ দূরে অবস্থিত ‘সুউর’ নামক গিরি গুহায়।
একদল কাফির মুহাম্মাদ (সা.)’র পায়ের চিহ্ন অনুসরণ করে এই গুহার কাছে। কিন্তু যখন তারা এখানে আসে তখন দেখতে পায় যে গুহার মুখে রয়েছে মাকড়শার জাল এবং একটি পাখী বা কবুতর সেখানে ডিম পেড়েছে। এইসব দৃশ্য থেকে কাফিররা ভাবল যে খুব সম্প্রতি এখানে কেউ আসেনি এবং তারা হতাশ হয়ে চলে যায়। বিপদ কমে গেলে বিশ্বনবী (সা.) মদীনার দিকে যাত্রা অব্যাহত রাখেন।
এদিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিশ্বনবী (সা.) বিছানায় শুয়ে থাকার জন্য আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী (রাঃ)’র প্রশংসায় নাজেল হয় সুরা বাকারার এই আয়াত:
‘আর মানুষের মাঝে একজন রয়েছে যে আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে নিজের জীবন বাজি রাখে। আল্লাহ হলেন তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান। (বাকারা: ২০৭)
হিজরতের পর মজলুম ইসলাম গতিশীল ও রাষ্ট্রধর্মের বাহক হয়ে ওঠে এবং মানব জাতির কাছে এই ধর্মের বিশ্বজনীনতা আলোর মত স্পষ্ট হয়ে উঠতে থাকে।
মহানবী (সা.)’র ওফাতের পর হযরত আলী (রাঃ)’র পরামর্শে এই মাস থেকেই ইসলামী পঞ্জিকা বা বর্ষক্রম চালু করা হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে জাহেলি যুগের মুশরিকদের সঙ্গে মিল রেখে পয়লা রবিউল আউয়ালের পরিবর্তে পয়লা মহররমকেই আরবি বছরের প্রথম দিন হিসেবে বহাল রাখে ক্ষমতাধর মহলের প্রধান। অথচ পয়লা রবিউল আউয়ালই ছিল হিজরতের ও হিজরি সনের প্রকৃত সূচনার তারিখ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৯৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন