দ্বীন শিখব কার কাছে ?
লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ০২ এপ্রিল, ২০১৪, ০২:৪১:২১ দুপুর
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অতএব জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা করো, যদি তোমাদের জানা না থাকে।’ (সূরা নাহল : ৪৩)। আলেম-ওলামা যারা দ্বীন ও ইসলাম সম্পর্কে অবগত তাদের কাছে যেতে হবে এবং তাদের থেকে মাসলা-মাসায়েল জানতে হবে এবং তদনুযায়ী আমল করতে হবে। তাই বলে যার তার কাছে গিয়ে মুরিদ হওয়া যাবে না। যার তার ওয়াজ শুনে বেহুঁশ হলে চলবে না।
রোগীর জন্য উচিত যাচাই-বাছাই করে ভালো ডাক্তারের কাছে যাওয়া, অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া। হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে গেলে তো বিভিন্ন ডাক্তার বিভিন্ন কথা বলবেন। কিন্তু যারা স্পেশালিস্ট, ডিগ্রিধারী তাদের কাছে গেলে আসল রোগ নির্ণয় হবে। সঠিক চিকিৎসা হবে। ঠিক এমনিভাবে আপনার দ্বীন, আপনার ঈমান, আপনার ইসলাম, আপনার শরিয়ত সুরক্ষায় এবং সঠিক বিষয় জানতে আপনাকে যাচাই-বাছাই করে একজন ভালো হক্কানি পীর, হক্কানি আলেম, হক্কানি বক্তা, হক্কানি ইমামের কাছে যেতে হবে। তার কাছে মাসলা-মাসায়েল জিজ্ঞেস করতে হবে। তার লিখিত বই আপনাকে পড়তে হবে। তার কথা আপনাকে শুনতে হবে।
ধর্মীয় বই-পুস্তক পড়া, ওয়াজ-নসিহত শোনা হালকা মনে করা চলবে না। এটা ভাবা চলবে না যে, তাদের যা ইচ্ছা তাই বলুক, আমি শুনতে থাকি। ভুল বললে সেই বুঝবে, আমি তার জন্য দায়ী থাকব না। এমনটি বললে চলবে না। এমনটি বললে দ্বীন ও ইসলামকে হালকা করে দেখা হলো। এটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
দ্বীনের সব বিষয় জানার জন্য হক্কানি আলেমের কাছে যেতে হবে। তার কথা শুনতে হবে, বুঝতে হবে। ধর্মীয় বই-পুস্তক পড়তে হবে। ইসলাম সম্পর্কে বক্তৃতা শুনতে হবে। আমল করতে হবে। হক্কানি পীর ধরতে হবে। ‘তাজকিয়ায়ে নাফস’ ও আত্মার পরিশুদ্ধি করতে হবে। এসব বিষয়কে হালকা করে দেখলে চলবে না।
মুহাম্মাদ ইবনে সিরিন (রহ.) বলেন, (যার ভাবার্থ এমন) এই যে তোমরা ওয়াজ-নসিহত শুনছ, মাসলা-মাসায়েল শুনছ, এটা কিন্তু ইলম, এটা কিন্তু দ্বীন। এটা একটা ধর্মীয় ব্যাপার। সুতরাং তোমরা দেখ! যার কাছ থেকে তোমরা দ্বীন গ্রহণ করছ, যার কাছ থেকে তোমরা ঈমান গ্রহণ করছ, যার কাছ থেকে তোমরা শরিয়ত নিচ্ছ, এই দ্বীন, ঈমান ও ইসলাম গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। সুতরাং যেই সেই ব্যক্তি থেকে গ্রহণ করা যাবে না। (মোকাদ্দিমা মুসলিম)।
একটা দামি জিনিস আপনি কিনবেন। সোনা, রূপা বা ভালো মাছ কিনবেন এসব তো যেই-সেই দোকান থেকে কিনবেন না। মূল্যবান জিনিস হলে বগুড়ার নিউমার্কেট অথবা ঢাকা-চিটাগাং গিয়ে কিনে নিয়ে আসবেন। মূল্যবান জিনিস বড় দোকান থেকে, ভালো দোকান থেকে নিয়ে আসবেন। রাস্তার ধারের দোকান থেকে কিনবেন না। তেমনি এসব ওয়াজ-নসিহত মাসলা-মাসায়েল দ্বীনের অংশ। সুতরাং দেখে-শুনে যাচাই-বাছাই করে এই দ্বীন-ইলম গ্রহণ করুন। দ্বীন-ঈমান অত্যন্ত মূল্যবান। এর ওপর মানুষের জান্নাত-জাহান্নাম নির্ভর করে। এর ওপর মানুষের সফলতা নির্ভর করে। সুতরাং আমি যখন দ্বীন গ্রহণ করব, আমাকে দেখতে হবে যে, কার কাছ থেকে গ্রহণ করছি! যাচাই-বাছাই করে তারপর গ্রহণ করতে হবে।
তা না করায় আমরা ইসলাম বিষয়ে নানা বিভ্রান্তির শিকার হই। ফলে যাচাই-বাছাই করা ছাড়া যার তার কাছ থেকে যা-তা শুনি ও আমল করি আর বিভ্রান্তিতে পড়ে ঈমান নষ্ট করি। এতে করে আমার দুনিয়াও ধ্বংস হয়, আখেরাতও ধ্বংস হয়।
এখন প্রশ্ন হলো, যাচাই-বাছাই করবেন কী করে? যাচাই-বাছাই করার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আপনাকে সর্বপ্রথম জানতে হবে, প্রকৃত অর্থে তিনি আলেম কিনা? তিনি নিজে শরিয়ত অনুযায়ী জীবনযাপন করেন কিনা। এসব বিষয়ে যাচাই-বাছাই না করে শুধু সাদা ধবধবে পাগড়ি, জামা ও আলখেল্লা দেখে, সুন্দর চেহারা দেখে তাকে বুজুর্গ মনে করে গলে গেলে হবে না। বক্তার সুমিষ্ট সুর শুনে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যাবে না। ভেজাল থেকে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন