মোজার উপর মাসেহ করার বিধি-বিধান:

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৬:১২:৩৮ সন্ধ্যা



মোজার উপর মাসেহ করার বিধি-বিধান:

উদ্দেশ্য: কষ্ট লাঘব। অর্থাৎ ঠাণ্ডা, সফর বা জরুরী অবস্থায় যেন ওজুর জন্য বারবার মোজা খুলতে না হয়।

শর্ত: পবিত্র অবস্থায় মোজা পরিধান করতে হবে। মোজাও পবিত্র হতে হবে।

পবিত্রতা অর্জন ছাড়া মোজা পরিধান করলে অথবা মোজা নাপাক থাকলে তার উপর মাসেহ করা জায়েজ হবে না।

কিসের তৈরি মোজা? চামড়া, উল, কাপড় ইত্যাদি থেকে তৈরি সকল প্রকার মোজার উপর মাসেহ করা জায়েজ।

কীভাবে মাসেহ করতে হয়? সম্পূর্ণ ওজু করে পা ধোয়ার পরিবর্তে

ভিজা হাতে দু পায়ের মোজার উপরিভাগে একবার করে হাত বোলালে যথেষ্ট হবে।

সময়-সীমা: মুকীম অবস্থায় (নিজ আবাসে বা এলাকায় থাকা কালীন সময়)

এক দিন এক রাত বা ২৪ ঘণ্টা

আর সফরে থাকা অবস্থায় ৩ দিন ৩ রাত বা ৭২ ঘণ্টা। এই সময়

অতিবাহিত হলে ওজু করার সময়

মোজা খুলে পা ধৌত করা আবশ্যক।

সময়ের হিসেব কখন থেকে শুরু করতে হবে? প্রথমবার মাসেহ

করার পর থেকে। (মোজা পরিধান করার পর থেকে নয়)-

---------------------------------------------------------------

বিস্তারিত পড়ুন নিচে:

----------------------------------------------------------

মোজা প্রভৃতির উপর মাসেহ করা

অনুবাদক: আব্দুল্লাহ আল কাফী

ভুমিকা: ইসলাম একটি মহৎ ও সরল ধর্ম। ইসলামী শরীয়তের মৌলনীতি বলছে ঃ "المشقة تجلب التيسير" “যত বিপদ তত আসান”। এই কারণে ইসলাম অনুমতি দিয়েছে মোজা, চামড়ার জুতা, উলের মোজা বা হালকা সূতার মোজার উপর মাসেহ করার। এরূপ মাসেহ ছোট নাপাকী থেকে পবিত্রতা অজর্নের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। হযরত মুগীরা ইবনে শো’বা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ

كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ سَفَرٍ فَأَهْوَيْتُ لِأَنْزِعَ خُفَّيْهِ فَقَالَ: ( دَعْهُمَا, فَإِنِّيْ أدْخَلْتُهُمَا طَاهِرَتَيْنِ) فَمَسَحَ عَلَيْهِماَ

আমি রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)এর সাথে কোন এক সফরে ছিলাম। তিনি ওযু করলেন। পা ধোয়ার পূর্বে আমি তাঁর মোজাদ্বয় খোলার ইচ্ছা করলাম। তিনি বললেনঃ “মোজা খোলার দরকার নেই। কেননা, পবিত্রাবস্থায় আমি উহা পরিধান করেছি। অতঃপর তিনি স্বীয় মোজার উপর মাসেহ করলেন।” (বুখারী ও মুসলিম)

-------------------------------------------------

মোজা প্রভৃতির উপর মাসেহ করার শর্ত সমূহঃ

কয়েকটি শর্তে মোজার উপর মাসেহ করা বৈধ। শর্তগুলি নিুরূপঃ-

১) পূর্ণ পবিত্রাস্থায় উহা পরিধান করা।

২) পা ধৌত করার করার নির্দিষ্ট স্থান আচ্ছাদিত করে মোজা পরিধান করা। তাতে সামান্য ছেঁড়া থাকলেও তেমন অসুবিধা নেই।

৩) মোজদ্বয় বৈধ হতে হবে। চুরি করা মোজা বা অবৈধ মোজার উপর মাসেহ হবে না।

৪) উহা প্রত্যক্ষ পবিত্র বস্তু থেকে নির্মিত হতে হবে। নাপাক চামড়া বা কোন নাপাক বস্তু হতে নির্মিত হলে তাতে মাসেহ বৈধ হবে না।

৫) মাসেহ ছোট নাপাকী হতে পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে হতে হবে।

৬) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মাসেহ হতে হবে।

--------------------------------------------------

মোজা এবং ক্ষত স্থানে পট্টির উপর মাসেহ করার মধ্যে পার্থক্যঃ

১। মোজার উপর মাসেহ করা সীমাবদ্ধ সময়ের জন্য নির্দিষ্ট। পট্টির জন্য এরূপ সময় নির্দিষ্ট নেই।

২। শুধু মাত্র পায়ের মোজাতে মাসেহ বৈধ। কিন্তু শরীরের যে কোন স্থানে পট্টির উপর মাসেহ করা যাবে।

৩। মোজার জন্য শর্ত হলো-উহা পবিত্রাবস্থায় পরিধান করতে হবে। পট্টির জন্য এরূপ কোন শর্ত নেই।

৪। ছোট নাপাকী থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্যই শুধু মোজার উপর মাসেহ বৈধ। কিন্তু পট্টির উপর মাসেহ ছোট-বড় সকল প্রকার নাপাকী থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্য বৈধ।

মাসেহ্ করার পদ্ধতিঃ

-------------------------------------------

চামড়ার মোজা, কাপড়ের মোজা বা পট্টির উপর মাসেহ করতে চাইলে পবিত্র পানিতে হাত ভিজিয়ে মোজার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট স্থানের অধিকাংশের উপর (উপরের অংশে) হাত ফিরিয়ে মাসেহ্ করবে নীচের অংশে বা পিছনের অংশে নয়। (আবু দাউদ) আর পট্টির ক্ষেত্রে সমস্ত স্থানে মাসেহ্ করবে।

---------------------------------------------------

মাসেহ করার সময় সীমাঃ

মোজা প্রভৃতির উপর মাসেহ করার জন্য মুক্বীমের সময় সীমা হল এক দিন এক রাত। আর মুসাফিরের জন্য তিন দিন তিন রাত। (মুসলিম) এই হিসাব শুরু হবে ওযু বিনষ্ট হওয়ার পর প্রথম মাসেহ থেকে।

তবে পট্টির জন্য কোন সময় সীমা নির্ধারিত নেই। পট্টি খুলে ফেলা বা আরোগ্য লাভ পর্যন্ত তা চলতে থাকবে।

আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।

বিষয়: বিবিধ

৩০৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File