ইসলাম মানবতার ধর্ম
লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৪:৩৬:১৫ বিকাল
মানবতা ও মানবিকতার ধর্ম ইসলাম। ধর্ম হিসেবে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ধর্মটি অন্য সব ধর্মের তুলনায় মানবধর্মী ও মানববান্ধব। ইসলামের দৃষ্টিতে মানবজাতি পৃথিবীতে মহান আল্লাহর প্রতিনিধি। মানবজাতিকে মহান স্রষ্টা সর্বোত্তম আকৃতিতে সৃষ্টি করছেন এবং তাদের সর্ব সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে আসমান-জমিন ও এগুলোর মধ্যকার সব সৃষ্টিকে তাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন। ইসলাম ধর্মের বিশ্বাস হচ্ছে, মানুষ পাপহীন (পবিত্র) হয়ে জন্মগ্রহণ করে। পক্ষান্তরে প্রচলিত খ্রিস্টধর্র্মের বিশ্বাস হচ্ছে, পাপের কারণেই জন্ম হয়েছে মানুষের (গধহ রং নড়ৎহ ংরহভঁষ)। হিন্দুধর্মের মূলকথাও হচ্ছে, মানুষ মূলত অত্যন্ত হীন ও অপবিত্র। প্রচলিত খ্রিস্টবাদ যেখানে মানব জীবনের ভোগবিলাসকে ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিকতার অন্তরায় মনে করে থাকে এবং মানবীয় জীবনকে হতাশা ও মন্দ হিসেবে শনাক্ত করে, ইসলাম সেখানে ধার্মিকতা ও আধ্যাত্মিকতার প্রয়োজনে জাগতিক বৈধ আরাম-আনন্দ ও অনাবিল ভোগ-ভক্ষণকে অনুমোদন করে থাকে।
ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মের মধ্যে রয়েছে মানুষের মর্যাদা ও সম্মানের ব্যবধান। এ ব্যবধান ও বৈশিষ্ট্যের কারণেই ইসলাম মানবজাতির একমাত্র পরিপূর্ণ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ জীবন ব্যবস্থা।
ইসলামে মানবজাতির এ শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি আছে বলেই বিশ্বব্যাপী হাজারো প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও ইসলাম তার অবস্থানকে সমুন্নত রাখতে সক্ষম হচ্ছে এবং বিশ্বের সর্বাধিক ক্রমবর্ধনশীল ধর্ম হিসেবে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। ধর্ম হিসেবে যে জীবন ব্যবস্থা মানব জাতির শ্রেষ্ঠত্ব ও জয়গান করে থাকে; সে জীবন ব্যবস্থা ইসলামে কোনোভাবেই মানবাধিকার উপেক্ষিত হতে পারে না। বরং এ কথা খুব জোর করেই বলা যায় যে, অন্য সব ধর্মের জ্ঞানী-সাধারণ নির্বিশেষে ইসলামের প্রতি অদম্য আকর্র্ষণের মূল কারণটি দিচ্ছে এ ধর্মটিতে মানবাধিকারের সুস্পষ্ট অবস্থান। মানবাধিকারের রক্ষাকবচ হিসেবে ইসলামই হচ্ছে মানবাধিকারের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি। মানব মর্যাদা ও অধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতিশীল ধর্ম হিসেবে আজ ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে যাচ্ছে পৃথিবীর আনাচে-কানাচে।
ইসলাম মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার স্বীকৃতির পাশাপাশি মানুষের অধিকারের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেছে। সৃষ্টির মধ্যে মানবজাতির সর্বোচ্চ মর্যাদার বিষয়টি মূলত সর্বোচ্চ অধিকারের স্বীকৃতির ওপরই নির্ভরশীল। কেননা, ব্যক্তির অধিকারের বিষয়টি দ্বারা তার শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা নিরূপিত হয়ে থাকে। মর্যাদা ও অধিকার শব্দ দুটি সমার্থক বা কাছাকাছি অর্থ নির্দেশক। বিষয় দুটি একটির সঙ্গে অন্যটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং পরস্পর একটি অন্যাটির সম্পূরক।
ইসলামে মানবাধিকার প্রশ্নে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে; চৌর্যবৃত্তির শাস্তি হিসেবে হস্তকর্তন করা, মাদকাসক্তির শাস্তি হিসেবে মদ্যপকে ৮০ বেত্রাঘাত, জেনা-ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে অবস্থাভেদে ১০০ বেত্রাঘাত অথবা প্রস্তরাঘাতে প্রাণদ- ইত্যাদি। এসব অভিযোগের জবাবে বলা যায়, একান্ত যৌক্তিক কারণেই এবং মানুষের জীবন-সম্পদ ও মানইজ্জত রক্ষার মাধ্যমে তার মানবাধিকার সংরক্ষণের উদ্দেশ্যেই ইসলাম এসব শাস্তি নির্ধারণ করেছে। এসব আইন কঠোর মনে হলেও মানব অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়োজনেই এসব আইন একান্ত যৌক্তিক ও অনিবার্য। সমাজ থেকে চুরি-ডাকাতি, খুনখারাবি ইত্যাদি জঘন্য অপরাধ অঙ্কুরে মূলোৎপাটনের মাধ্যমে সামাজিক স্থায়ী শান্তি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে, সমাজব্যাপী স্থায়ীভাবে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই এসব বিধান কার্যকর করা হয়েছে। এসব আইন যেসব সমাজ ও রাষ্ট্রে বলবৎ আছে; সেসব দেশে চুরি-ডাকাতি ও খুনখারাবি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। বর্তমানে সৌদি আরব, ইরানসহ যেসব রাষ্ট্রে ইসলামী আইনের শাস্তি কার্যকর রয়েছে, সেসব রাষ্ট্রের তুলনায় শিক্ষা-সভ্যতা নিয়ে গর্বকারী দেশ আমেরিকা, ব্রিটেনে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, হত্যার ঘটনা শতগুণে বেশি।
বিষয়: বিবিধ
১৮৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন