চাঁদে তৈরী হচ্ছে বৃহত্তর বিদ্যুত প্লান্ট

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:৫৩:২৯ সকাল



১৯৭২ সালের পরে মানুষ আর চাঁদে যায়নি। কিন্তু তারপরও মানুষ বসে নেই। চাঁদ নিয়ে চলছে নিত্যনতুন গবেষনা। জাপানের বিজ্ঞানী তো চাঁদকে নিয়ে বিশাল এক পরিকল্পনা করে ফেলেছেন। ফুকুশিমায় নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টে দুর্ঘটনা ঘটার পরেই তারা শক্তির বিকল্প উৎস নিয়ে চিন্তা করতে শুরু করেন আর এভাবেই চাঁদকে এক বিশাল শক্তির উৎস হিসেবে দেখতে থাকেন তারা।

পরিকল্পনায় অনুযায়ী চাঁদকে ঘিরে তৈরি করা হবে সোলার প্যানেলের এক বিশাল বলয়। ঠিক সূর্য থেকে শক্তি নিয়ে সেই শক্তি মাইক্রোওয়েভ এবং লেজার হিসেবে পৃথিবীতে থাকা 'রিসিভিং স্টেশন' এ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। শিমিজু কর্পোরেশন নামের এক জাপানি প্রকৌশলী এবং এনজিনিয়ারিং কোম্পানি এই পরিকল্পনা করেছে।

সোলার প্যানেল জোড়া দিয়ে ১২ মাইল প্রস্থ এবং ৬,৮০০ মাইল দীর্ঘ অর্থাৎ অতিকায় এক 'লুনা রিং' তৈরি করা হবে চাঁদের পৃষ্ঠে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩,০০০ টেরাওয়াট নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাবে এই 'পাওয়ার প্ল্যান্ট' থেকে যা মানুষের মাঝে বিতরন করা হবে। NASA থেকে যেহেতু এখন আর মানুষ পাঠানো হচ্ছে না চাঁদে, তাই শিমিজু কর্পোরেশন রোবট ব্যবহার করার চিন্তা করছে। এই কাঠামো গঠনে মানুষ কেবলই দেখাশোনার দায়িত্বে থাকবে।

এই প্রক্রিয়ার বড় দুইটি সুবিধা থাকবে। পৃথিবীতে সৌরশক্তি প্যানেল ব্যবহারের একটি অসুবিধে হলো খারাপ আবহাওয়া বা বায়ু দূষণের কারণে সব সময় সৌর শক্তি উৎপাদন করা যায় না। চাঁদে কোনও আবহাওয়া নেই বা দূষণ নেই। আর সূর্যের রশ্মি সরাসরি এখানে এসে পড়ে তাই শক্তি উৎপাদন হবে অনেক বেশী। আর তাছাড়া এই প্রযুক্তি ব্যবহারেও কোনও দূষণ সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা নেই।

একটি বিবৃতিতে শিমিজু কর্পোরেশন বলে, 'মানবজাতির স্বপ্ন হলো সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে অসীম পরিমাণে শক্তি উৎপাদন। লুনা রিং এর পরিকল্পনা সেই স্বপ্নকেই বাস্তব রূপ দিতে দিতে সক্ষম হবে উদ্ভাবনি ধারণা এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। সৌর শক্তি অফুরন্ত এবং পরিচ্ছন্ন শক্তি উৎপাদন করবে, তাই শুধু মানুষের জীবনই নয় বরং প্রকৃতির উন্নতি করার ক্ষেত্রেও এই পরিকল্পনা কার্যকরী হবে। মানুষ এবং প্রকৃতি যেন পৃথিবীতে সহাবস্থান করতে পারে তারই জন্য শিমিজু কর্পোরেশন লুনা রিং এর ধারণা উপস্থাপন করছে।'

এই ধারনাটি প্রায় অসম্ভব এবং উচ্চাভিলাষী বলে অনেকেই একে উড়িয়ে দিচ্ছেন। অনেকে বলছেন রোবট দিয়ে বর্তমানে মানুষের গাড়িই চালানো যায় না, তারা এত বিশাল একটি কাঠামো কি করে তৈরি করবে? তবে এটাও সত্যি, যে এই পরিকল্পনা যদি আসলেই বাস্তবে রূপ নেয় তবে পৃথিবী দূষণমুক্ত হবার পথে অনেক বড় একটি পদক্ষেপ হবে এটি।

বিষয়: বিবিধ

১০৭৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File