কয়েকটি সহজ কিন্তু অত্যন্ত ফদ্বীলতপূর্ণ ‘আমল

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ৩০ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:৫০:২৮ সকাল



বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর পরিবারবর্গ, সকল সাহাবায়ে কেরাম ও কেয়ামত পর্যন্ত আগত তাঁর সকল অনুসারীর উপর।

১। অযুর পর কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ: অযুর পর কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ জান্নাতে যাওয়ার উপায়। উকবাহ ইবন আমের ( রা: ) বলেন: আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ সুন্দর করে অযু করার পর যদি বলে:

أشهد أن لا إله إلا الله وحده لا شريك له وأن محمدا عبده ورسوله

তার জন্য জান্নাতের ৮টি দরজাই উন্মুক্ত করে দেয়া হবে, সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করবে। [মুসলিম]

২। আযানের জবাব দেয়া: দিনরাতে পাঁচবার মুয়াযযিনের আযানের জবাব দেয়া জান্নাতে প্রবেশের একটি কারণ। উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘‘মুয়াযযিন যখন আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার (২বার) বলে, তখন তার উত্তরে কেউ যদি অনুরূপ বলে; অতঃপর মুয়াযযিন (أشهد أن لا إله إلا الله) বললে সে তার মতো (أشهد أن لا إله إلا الله) বলে। মুয়াযযিন যখন (أشهد أن محمدا رسول الله) বলে, সেও তাই বলে। তারপর(حي على الصلاة) বললে সে (لا حول ولا قوة إلا بالله) বলে এবং (حي على الفلاح) বললেও সে (لاحول ولا قوة إلا بالله) বলে। তারপর মুয়াযযিন আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বললে সেও আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বলে। এরপর মুয়াযযিন যখন বলে (لا إله إلا الله) তখন সেও (لا إله إلا الله) আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে বললে জান্নাতে প্রবেশ করবে’’। [মুসলিম]

৩। প্রতি সলাতের পর আল্লাহর যিক্‌র পাঠ: আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: কোন ব্যক্তি যদি প্রত্যেক সলাতের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ আর ৩৩ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করে এবং ১০০বার পূর্ণ করতে বলে “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা-শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়্যীন ক্বদীর” তাহলে তার সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়। [মুসলিম, মিশকাত]

৪। لا حول ولا قوة إلا بالله এ দো‘আ হল জান্নাতের ভান্ডার: আবু মুসা ( রা: ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: আমি কি তোমাকে জান্নাতের ভান্ডার সমূহের একটি ভান্ডার সম্পর্কে অবহিত করব? আমি বললাম: হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বলেন, বলো: لا حول ولا قوة إلا بالله অর্থ্যাৎ: ‘‘আল্লাহর আশ্রয় ও শক্তি ছাড়া আর কারো কোন ক্ষমতা নাই’’। [বুখারী, মুসলিম]

৫। গুনাহ মাফের প্রধান দো’আঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাগফেরাত কামনার দো‘আকে সাইয়্যেদুল্ ইসস্তিগফার বা গুনাহ মাফ চাওয়ার প্রধান দো‘আ বলে অভিহিত করেছেন এবং জান্নাতে প্রবেশের কারণ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সুতরাং প্রিয় পাঠক! দো‘আটি মুখস্থ করুন এবং সকাল সন্ধ্যা পাঠ করুন।

শাদ্দাদ ইবন আওস রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ননা করেন তিনি বলেন, ইস্তেগফারের প্রধান দো‘আ হলো:

اللهم أنت ربي لا إله إلا أنت خلقتني وأنا عبدك وأنا على عهدك ووعدك ما استطعت، أعوذ بكمن شر ما صنعت، أبوء لك بنعمتك عليَّ وأبوء لك بذنبي فاغفر لي فإنه لا يغفر الذنوب إلا أنت

‘আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানি ওয়া আনা ’আবদিকা ওয়া আন্না ’আলা ’আহদিকা ওয়া ওয়া’দিকা মাস্তাতা’তু আবু’উ লাকা বিনি’মাতিকা ওয়া আবু’উ লাকা বিযাম্বি, ফাগফিরলী ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুযযুনুবা ইল্লা আনতা। আ’উযুবিকা মিন শাররী মা সানা’তু, আবু’উ লাকা বিনি’মাতিকা ’আলাইয়া, ওয়া আবু লাকা বিযাম্বি ফাগফিরলী ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুযযুনুবা ইল্লা আনতা।”(বুখারী)

‘‘হে আল্লাহ! তুমি আমার রব। তুমি ছাড়া আর কোন সত্য মা’বুদ নাই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ, আমি তোমার বান্দা। আমি তোমার ওয়াদা ও অঙ্গিকারের উপর সাধ্যানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত। আমি অনিষ্টকর যা কিছু করেছি তা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমার উপর তোমার যে নেয়ামত আছে তার স্বীকৃতি দিচ্ছি। তোমার নিকট আমার গুনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও;কেননা তুমি ছাড়া আর কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারে না’’।

যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সাথে দিনে এ দো‘আ পাঠ করে, সন্ধ্যা হওয়ার পূর্বেই যদি তার মৃত্যু হয়, তাহলে সে জান্নাতবাসী হবে। আর যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সাথে রাতে পাঠ করে এবং সকাল হওয়ার পূর্বেই মারা যায়, সে জান্নাতবাসী হয়’’। [বুখারী]

বিষয়: বিবিধ

১০১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File