অসত্যের পথে বেঁচে থাকার চাইতে মুসলমান হয়ে মৃত্যুকে বরণ করা শতগুণে শ্রেয়।
লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ০৭ অক্টোবর, ২০১৩, ০২:৪৮:৩৫ দুপুর
৬২৩ খ্রীস্টাব্দের ২রা হিজরী সনের কথা। ইসলামী রাষ্ট্র তখন সবেমাত্র শিশু।
একজন আরব শেখ রাসূল (সা-এর কাছে এক দূত পাঠিয়ে বললেন, "আমার দলের লোক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে উৎসুক, কিন্তু এখানে উপযুক্ত কোন ধর্ম প্রচারক নেই। আপনি যদি কয়েকজন জ্ঞানী ব্যক্তিকে এই উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেন তবে আমরা বিশেষ বাধিত হবো।"
আল্লাহর রাসূল (সা) কয়েকজন ধর্মপ্রচারক পাঠিয়ে দিলেন। তাঁরা আরব শেখের অঞ্চলসীমায় পৌঁছামাত্র সেখানের কয়েকজন গোত্রপতি দলবল নিয়ে তাঁদের ঘিরে ফেললো এবং হয় আত্মসমর্পণ নয় তো মৃত্যু এ দুটোর মধ্যে যে কোন একটা বেছে নিতে বললো। খ- যুদ্ধ হলো। একে একে অনেকেই শহীদ হলেন। বন্দী হলেন খুবাইব (রা), তাঁকে তুলে দেয়া হলো মক্কার কুরাইশদের হাতে। নৃশংসতম উপায়ে তাঁকে হত্যা করা হবে ঠিক হলো।
নির্দিষ্ট দিনে খুবাইবকে বধ্যভূমিতে নিয়ে যাওয়া হলো। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার জন্য তিনি শেষ অনুরোধ জানালেন। অনুমতি পেয়ে তিনি একটু তাড়াতাড়ি-ই নামায শেষ করলেন। তারপর উপস্থিত সকলকে লক্ষ্য করে বললেন, "জীবনের শেষ নামায একটু দীর্ঘতর করতেই মৃত্যু পথযাত্রীর ইচ্ছা হয়। কিন্তু আমি তা অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ করলাম, পাছে তোমরা মনে কর আমি ভীত হয়ে কালহরণ করছি।"
বধ্যমঞ্চে পাঠাবার পূর্বে তাঁকে শেষ বারের জন্য বলা হলো, "এখনও সময় আছে ইসলাম ত্যাগ করে আবার এক নবজীবন লাভ কর।" ধীর শান্ত ও দৃঢ় স্বরে খুবাইব বললেন, "অসত্যের পথে বেঁচে থাকার চাইতে মুসলমান হয়ে মৃত্যুকে বরণ করা শতগুণে শ্রেয়। ইসলামে আত্মসমর্পিত জীবনই আমার কাছে সর্বাধিক মুল্যবান।"
উঁচু বধ্যমঞ্চে দৃঢ় পদক্ষেপে খুবাইব উঠে গেলেন। চার দিক থেকে নির্মমভাবে বর্শা ও তীর বর্ষিত হতে লাগলো। নির্ভীক খুবাইব নির্বিকার চিত্তে হাসিমুখে রক্তদান করলেন, শহীদ হলেন। দেহ পড়ে রইলো- মৃত্যুঞ্জয়ী অমর আত্মার যাত্রা শুরু হলো- লোক হতে আনন্দলোকে।
সত্যাশ্রয়ী মানুষ যাঁরা জীবন-মৃত্যু তাঁদের পায়ের ভৃত্য। তাই তাঁরাই বহন করেন সত্যের আলো, সত্যের পতাকা। প্রেরণার আগুন হয়ে ছড়িয়ে পড়েন প্রাণে প্রাণে, সৃষ্টি করেন নব নব প্রাণলোক।
বিষয়: বিবিধ
১০৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন