আহ! মুহাম্মাদ (সা) যদি আমাদের ধর্মদ্রোহী না হতেন, তাঁর পদানত দাস হয়ে থাকতেও আমাদের কিছুমাত্র আপত্তি ছিলনা

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ০২ অক্টোবর, ২০১৩, ০৫:৪৪:১৩ বিকাল



সেদিন গভীর নিশীথে মহানবী (সা) হিজরত করেছেন। তাঁর ঘরে তাঁর বিছানায় শুয়ে আছেন হযরত আলী (রা), মহানবীর কাছে গচ্ছিত রাখা কিছু জিনিস মালিকদের ফেরত দেবার জন্য মহানবী (সা) হযরত আলী (রা)-কে রেখে গেছেন। হযরতকে হত্যা করতে আসা কুরাইশরা আলীকে মহানবী মনে করে সারারাত পাহারা দিয়ে কাটালো। ভোরে তারা হযরতের শয্যায় আলীকে দেখে ক্রোধে ফেটে পড়লো। তারা হযরত আলীকে তরবারির খোঁচায় জাগিয়ে বললো, "এই, মুহাম্মাদ কোথায়?"

নির্ভীক তরুণ হযরত আলী উত্তর দিলেন, "আমি সারারাত ঘুমিয়েছি, আর তোমরা পাহারা দিয়েছো। সুতরাং আমার চেয়ে তোমরাই সেটা ভালো জানো।"

হযরত আলীর উত্তর তাদের ক্রোধে ঘৃতাহূতি দিল। তারা তাঁকে শাসিয়ে বললো, "মুহাম্মাদের সন্ধান তাড়াতাড়ি বল, নতুবা তোর রক্ষা নেই।"

হযরত আলীও কঠোর কন্ঠে বললেন, "আমি কি তোমাদের চাকর যে তোমাদের শত্রুর গতিবিধি লক্ষ্য রেখেছি? কেন তোমরা আমাকে বিরক্ত করছো?" একটু থেমে আলী কয়েকজনের নাম ধরে ডেকে বললেন, "তোমরা আমার সাথে এস। তোমাদের জন্য শুভ সংবাদ আছে।" কথা শেষ করে হযরত আলী পথ ধরলেন।

যাদের নাম উল্লেখ করলেন তিনি, তারাও তাঁর পিছু পিছু চললো। তাদের হাতে উলংগ তরবারি। তাদের মনে একটি ক্ষীণ আশা, হয়ত হযরত আলী তাদেরকে মুহাম্মাদের (সা) সন্ধান দিতে নিয়ে চলেছেন।

হযরত আলী এক গৃহদ্বারে গিয়ে দাঁড়ালেন। পিছনে ফিরে ওদের বললেন, "দাঁড়াও আমি নিয়ে আসছি।" বলে তিনি ভিতরে চলে গেলেন। পেছনের কয়েকজনের অন্তরে তখন 'কি হবে না হবে' অপরিসীম দোলা। তাদের মনে আশঙ্কাও। উলংগ তরবারি হাতে তারা পরিস্থিতির মুকাবিলার জন্য প্রস্তুত।

এমন সময় হযরত আলী (রা) বেরিয়ে এলেন। তাঁর হাতে কয়েকটি ধন-রত্নের তোড়া। তিনি তাদের সামনে উপস্থিত হয়ে ধন-রত্নের তোড়া তাদের সামনে ধরে বললেন, "নাও, তোমরা নাকি বহুদিন পূর্বে তোমাদের ধন-রত্নাদি হযরত মুহাম্মাদ (সা)-এর কাছে গচ্ছিত রেখেছিলে? ভেবেছিলে, গচ্ছিত ধন আর পাবে না। আজ তিনি তোমাদের অত্যাচারেই দেশত্যাগী হয়েছেন। কিন্তু তোমাদের গচ্ছিত সম্পদ তোমাদের হাতে পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করে গেছেন। এই নাও তোমাদের গচ্ছিত ধন।"

এই কুরাইশরা যে এত শত্রুতার পরও তাদের ধন-রত্ন ফিরে পাবে, সে কথা কল্পনাও করেনি। তাই তারা বিস্ময় বিমূঢ় হয়ে পরস্পর বলাবলি করতে লাগলঃ 'সত্যই কি আল-আমীনের ন্যায় বিশ্বাসী ও সত্যবাদী লোক বিশ্বে আর নেই? তবে কি তিনি সত্য পথেই আছেন? আমরাই ভ্রান্ত পথে আছি? তাঁকে আঘাতের পর আঘাত দিয়ে পেয়েছি নিঃস্বার্থ প্রেমের আহবান-মানুষ হবার উপদেশ। আজ তাঁর প্রাণ নিতে এসেছিলাম, প্রাণ দিতে না পেরে দিয়ে গেলেন গচ্ছিত ধন-রত্ন? আহ! মুহাম্মাদ (সা) যদি আমাদের ধর্মদ্রোহী না হতেন, তাঁর পদানত দাস হয়ে থাকতেও আমাদের কিছুমাত্র আপত্তি ছিলনা

•|• আসুন আমরা নিজে ইসলাম কে জানার ও সহীহ ভাবে আমল করার চেষ্টা করি আর অপর ভাইকেও আহবান জানাই।

বিষয়: বিবিধ

১০৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File