সেই সবচেয়ে নি:স্ব যে ইবাদত করেও জান্নাত লাভ করতে পারলো না
লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০২:১৬:৫৪ দুপুর
একদা নবীজী সাহাবীদের জিজ্ঞেস করলেন, মানুষের মধ্যে কে একেবারে নি:স্ব। তখন জবাবে সাহাবীরা বললো- ‘যার কোন জায়গা জমি নেই। বা কোন সম্পত্তি নেই সে সবচাইতে নি:স্ব। অত:পর নবীজী বললেন-না হয়নি!’
যে সারাজীবন ইবাদত বন্দেগী করলো, নামাজ পড়লো, রমজানে রোজা রাখলো, যাকাত আদায় করলো: এবং মৃত্যুর পর যখন হিসেব করা হবে তখন তার নেকীর পরিমান হবে পাহাড় সমান। কিন্তু তখন তাকে একজন এসে বলবে তুমি আমাকে একদিন গালি দিয়েছ আমি তোমাকে ক্ষমা করিনি।
তুমি যদি আমাকে তোমার অর্জিত নেক থেকে কিছু অংশ দেও ও আমার কিছু পাপ তোমার আমলনামায় নাও তাহলে আমি তোমাকে ক্ষমা করবো। এভাবে একেক করে কেউ এসে বলবে- সে আমার ওপর জুলুম করেছে, কেউ বলবে আমাকে চড় দিয়েছে, আমার গীবত করেছে, আমার প্রতি অবিচার করেছে, কেউ বলবে আমার প্রতি মানসিক নির্যাতন করেছে। এভাবে সে ক্ষমা লাভের জন্যে সবাইকে তার নেকী থেকে কিছু অংশ করে দিয়ে দিবে এবং তাদের পাপের একটা অংশ নিজের আমল নামায় চলে আসবে। এভাবে তার আমলনামা নেকীর বদলে পাপে পূর্ণ হয়ে যাবে। তার পাহাড় পরিমান নেকির পাল্লা একেবারে খালি হয়ে যাবে। অত:পর সে নি:স্ব হয়ে যাবে। এবং তাকে জাহান্নামে প্রেরণ করা হবে।
নবীজী বলেন, সেই সবচেয়ে নি:স্ব যে জীবনভর ইবাদত করেও জান্নাত লাভ করতে পারলো না। এর কারণ সম্পর্কে নবীজী বলেন, আল্লাহ তার প্রতি নির্ধরিত দায়িত্ব পালন করা না করার ব্যাপারে যে কাউকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। তবে কেউ যদি কোন বান্দার প্রতি অবিচার করে, জুলুম করে দায়িত্ব এড়িয়ে চলে তবে সে ব্যাপারে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না। কারণ যার প্রতি অবিচার করা হয়েছে তার কাছেই ক্ষমা চাইতে হবে। তাছাড়া আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না। বান্দার হক নষ্ট করার জন্যে বান্দার কাছেই ক্ষমা চাইতে হবে। এ ক্ষমা আল্লাহর কাছে নেই।
অন্য এ হাদীসে আছে যার ঠোট ও হাত থেকে অন্যরা নিরাপদ নয় সে প্রকৃত মুমিন নয়। তাই তোমরা রূঢ় কণ্ঠে কথা বলো না। অন্যকে কষ্ট দিওনা।
রাসুলুল্লাহ (সাবলেন, “কোন ব্যক্তির ওপর তার অপর ভাইয়ের যদি কোন দাবি থাকে, তা যদি তার মান-ইজ্জতের ওপর অথবা অন্য কিছুর ওপর জুলুম সম্পর্কিত হয়, তবে সে যেন আজই কপর্দকহীন নিঃস্ব হওয়ার পূর্বে তার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করে নেয়। অন্যথায় (কিয়ামতের দিন) তার জুলুমের সমপরিমাণ নেকী তার কাছ থেকে নিয়ে নেয়া হবে। যদি তার কোন নেকী না থাকে তবে তার প্রতিপক্ষের গুনাহ থেকে (জুলুমের সমপরিমাণ) তার হিসাবের অন্তভূক্ত করে দেয়া হবে।”
[বুখারী শরীফ থেকে নেয়া]
বিষয়: বিবিধ
১০৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন