গিনেজ বুক রেকর্ড জয়ী হালিম

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০২:৫৬:৩৮ দুপুর



মাথায় বল নিয়ে টানা ১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার হাটার জন্য গিনেজ বুক অফ ওয়াল্ড রেকর্ডসে আব্দুল হালিমের নাম উঠার খবর এখন দেশের সীমানা পেরিয়ে পৃথিবীর কোটি মানুষের কাছে পৌছে গেছে। হালিমের এই রেকর্ডের স্পন্সর ছিল দেশ সেরা ইলেট্রনিক্স সামগ্রী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপ।

হালিম জানান, তার এই রেকর্ডের পিছনে ওয়ালটন গ্রুপের সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে। তাদের আর্থিক সহায়তা ও সহযোগিতার জন্য তিনি আজ এখানে আসতে পেরেছেন। ওয়ালটনের সহযোগিতা নিয়ে তিনি আরো নতুন রেকর্ড গড়ার জন্য কঠোর অনুশীলন করে যাচ্ছেন।

অচিরেই এসব রের্কডের জন্য চূড়ান্ত পরীক্ষা দেবেন বলে জানান। আব্দুল হালিমের বাড়ি মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালি ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামে।

হালিমের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, সামান্য কয়েত শতক জমির উপর তার ছোট ঝুপড়ি বসত ঘর। স্ত্রী নাছিমা বেগম, দুই সন্তান সুমন ও শাহিন এবং বৃদ্ধ বাবা ছানাউলকে নিয়ে হালিমের সংসার।

ফুটবলের কসরতকে ঘিরেই তার পরিবারে এসছে সামান্য স্বচ্ছলতা । তার বাড়িতে এখন প্রতিদিন মানুষের ভিড়। যারা গিনেজ রের্কডের কথা জীবনেও শোনেননি, তারাও আসছেন তাকে দেখতে।

অভাব-অনটনের মধ্যেই ফুটবলের নানা কৌশল রপ্ত করেছেন হালিম। মাত্র দশ বছর বয়সে মাকে হারান। দারিদ্র্রকে সঙ্গে নিয়ে তার বেড়ে উঠা। দু’মুঠো খাবার যোগাড় করতে বাবার সাথে অন্যের জমিতে শ্রমিকের কাজ করেছেন। কখনো কাজ করেছেন রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে।

কঠিন সময়েও ফুটবলের প্রতি তার প্রবল আকর্ষণে ভাঁটা পড়েনি। ‘স্বপ্ন ছিল বড় ফুটবলার হওয়ার। সুযোগ পেলেই স্থানীয় মাঠে ফুটবল খেলা দেখতে যেতাম। ৯২ সাল থেকে মাথায় ফুটবল রাখার চেষ্টা শুরু করি। দু’বছরের চেষ্টায় অনেকটা সফলও হই।’ ফুটবলকে নিজের বশে আনার গল্প এভাবেই শুনালেন হালিম।



কাজের ফাঁকে ফাঁকে চলতে থাকে অনুশীলন। এক সময় ফুটবল মাথায় নিয়ে হাঁটা, সাঁতার কাটা, সাইকেল-মোটর সাইকেল চালানো, খাবার খাওয়া ও গাছে উঠাসহ সব কাজ করতে পারেন। এরপর একসঙ্গে এগারোটি বল নিয়ে নানা কসরতসহ অর্ধশতাধিক খেলা আয়ত্ব করেন হালিম।

মাথায় বল নিয়ে হাটার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার ই মিং লুর গড়া রেকর্ড ভাঙতে হয়েছে হালিমকে। ই মিং বল নিয়ে ১১ দশমিক ১২ কিলোমিটার হেঁটে গিনেজ বইয়ে নাম তুলেছিলেন। হালিম ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে গত বছরের ১৩ জানুয়ারি মাথায় বল নিয়ে টানা ১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার হাটার ভিডিও দৃশ্য ধারণ করে গিনেজ বুক অফ ওয়াল্ড রেকর্ডসে জমা দেওয়া হয়।

১৫ জানুয়ারি গিনেজ বুক অফ ওয়াল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষ হালিমকে তাদের ওয়েবসাইটে বিশ্বজয়ের স্বীকৃতি প্রদান করে।

গিনেজ বুকে নাম উঠার পর এখন হালিমের চোখে নতুন স্বপ্ন। আর তা হলো বল মাথায় নিয়ে দ্রুত যাওয়া। বল মাথায় নিয়ে তিনি ১৮ দশমিক ৫৩ সেকেন্ডে ১০০ মিটার রাস্তা অতিক্রম করবেন।

এছাড়া বল মাথায় তিনি স্কেটিং করার জন্য অনুশীলন করছেন। যেন সহজে কেউ ছুঁতে না পারে সেই রেকর্ড।

আব্দুল হালিম বলেন, এ ধরণের কঠোর অনুশীলনের জন্য অনেক অর্থ ব্যয় হয়। প্রয়োজন হয় কারিগরী সহোযোগিতা। ওয়ালটন তাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছে। বিশেষ করে ওয়ালটনের ডেপুটি ডাইরেক্টর (স্পোর্টস এ্যান্ডগেম) জনাব ইকবাল বিন আনোয়ারের কাছে তিনি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

হালিম বিশ্বাস করেন, একদিন তার নতুন এই স্বপ্নটাও পূরণ হবে। নিজের বুদ্ধি আর সামর্থ্য দিয়ে বাংলাদেশকে তিনি বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে তুলে ধরতে চান।

হালিমের জন্য শুভকামনা।

বিষয়: বিবিধ

২৩০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File