" হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে মানুষকে আপনার রবের পথে ডাকুন "
লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ০৪ মার্চ, ২০১৪, ০২:৫৩:৩০ দুপুর
দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে কৌশলী হওয়া জরুরী। যাকে দাওয়াত দিব তার উপর এক সাথে নিজের সমস্ত জ্ঞান ঢেলে দেওয়া দাওয়াতের ক্ষেত্রে কোন বিচক্ষণতা প্রকাশ করে না। বরং এই জিনিস বিরক্তির সৃষ্টি করে। এরপর হতে সে দায়ীকে দেখলেই পলায়ন করবে।
এবং দাওয়াতের ক্ষেত্রে সময়টাও বাছাই করা দরকার। যেমন ধরুন, আপনি একজন লোককে দ্বীনের কিছু জরুরী জিনিস বুঝাবেন। কিন্ত সে ব্যাক্তির পেটে ক্ষুধা। এমতাবস্থায় আপনি তাকে যতই মধুর কথা বুঝান না কেন, সে কিন্ত মনে মনে ইয়া নাফসী, ইয়া নাফসী পাঠ করছে শুধুমাত্র আপনার হাত থেকে বাচার জন্য। এখানে প্রশ্ন আসতে পারে, তার পেটে ক্ষুধা তা আমি কি করে বুঝব , এটা বুঝা একজন বিচক্ষণ দায়ীর জন্য কোন কষ্টকর কিছু নয়। তার চেহারার দিকে তাকালেই আপনি ব্যাপারটা বুঝতে পারবেন।
আবার অনেক ক্ষেত্রে এক কথা বারবার বলার দ্বারাও বিরক্তির সৃষ্টি হয়। হাদিসে এসেছে আল্লাহর রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম কোন জিনিসের গুরত্ব বুঝানোর জন্য তিনবার বলতেন। বিষয়টা কিন্ত এরকম নয় যে সে এ দ্বারা কারো বিরক্তি সৃষ্টি হত। এখানে দুটো ব্যাপার একটা হল, একটা জিনিসের গুরত্ব বুঝানো যা প্রশংসনীয় কিন্ত তাও যদি তিনবারের বেশি হয় তা যত ভালো শ্রোতাই হোক তার বিরক্তির কারণ হবে। আর একটি হল, কোন নতুন কথা বা নতুন কোন আঙ্গিক খুঁজে না পাওয়ার জন্য একই কথা বারবার বলা। এ জিনিস নি সন্দেহে বিরক্তির সৃষ্টি করে। এ ক্ষেত্রে দায়ীর উচিত হবে, তার নির্দিষ্ট কথা শেষ করে চুপ হয়ে যাওয়া বা নতুন কোন শ্রোতা খুঁজে বের করা যার নিকট এখনো দাওয়াতের বানীগুলো পৌছানো হয় নি।
হা যদি কোন মজমা বা বৈঠক এ উদ্দেশ্যে শুরু হয় সেখানে চর্চার জন্য শুধুমাত্র নির্দিষ্ট একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তাহলে তা হতে পারে।
দাওয়াতের ক্ষেত্রে এই হিকমাগুলো এমন নয় যে এগুলো নতুনভাবে বলা হচ্ছে, এগুলো আমাদের সালাফদের নিকট থেকে প্রাপ্ত।
যেমন, বর্ণিত আছে যে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বীয়াল্লাহু আনহু প্রতি বৃহস্পতিবার কিছু সময়ের জন্য মানুষকে উপদেশ দিতেন। এক লোক একদিন তাকে বলল, ' হে আবূ আবদুর রহমান ! আমি চাই, আপনি প্রতিদিনই আমাদেরকে শেখান, উপদেশ দিন। '
তখন তিনি বললেন,
' প্রতিদিন উপদেশ না দেওয়ার কারণ হল, আমি তোমাদেরকে বিরক্ত করে ফেলতে চাই না। তোমাদেরকে উপদেশ দেওয়ার জন্য কিছুদিন বিরতি রেখে সময় নির্ধারণ করেছি, যেমনটা রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম আমাদের ক্ষেত্রে করতেন। আমাদের মাঝে বিরক্তি এসে পড়ে কি না, এ আশঙ্কায় তিনি এমনটি করেছেন। ' (বুখারী ও মুসলিম)
অর্থাৎ কোন ভালো ও কল্যাণকর জিনিসের ব্যাপারেও বিরক্তি চলে আসাটা স্বাভাবিক ব্যাপার। যে ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করাটা পুরোপুরি দায়ীর উপর নির্ভর করছে। অর্থাৎ তাকে প্রতিনিয়ত এটা খেয়াল রাখতে হবে যে, আমার কথার শোনার দ্বারা কারো বিরক্তি বা একঘেয়েমি সৃষ্টি হচ্ছে না তো ?
আর একটা জিনিস খেয়াল করা নিজের বক্তব্যকে অল্পের মধ্যে নিয়ে আসা। কারণ বলা আছে, " ব্যক্তির সালাতের দীর্ঘতা এবং আলোচনার সংক্ষিপ্ততা তার বিচিক্ষণতা ও প্রজ্ঞার প্রমাণ "
আর এগুলোকেই হিকমাহ বলা হয়। আর এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালার আদেশ, " হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে মানুষকে আপনার রবের পথে ডাকুন " । সূরা নাহল : ১২৫
বিষয়: বিবিধ
১১২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন