জার্মান মহাকবি গ্যাটের দৃষ্টিতে ইসলাম, কুরআন ও বিশ্বনবী (সা.)'র শ্রেষ্ঠত্ব

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ২৯ আগস্ট, ২০১৩, ১১:০৮:৪৩ সকাল



আজ থেকে ২৬৪ সৌর বছর আগে ১৭৪৯ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন প্রখ্যাত জার্মান কবি ও লেখক উলফগঙ্গ গ্যাটে।

ইসলাম, পবিত্র কুরআন ও বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)'র প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধাবোধ ইতিহাসে এই মহাকবিকে আরো মহীয়ান করে রেখেছে।

গ্যাটে বিশ্বনবী (সা.)’র অসাধারণ নানা সাফল্য ও মর্যাদার প্রাচুর্যে বিমুগ্ধ হয়ে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেছেন,

“আমরা ইউরোপীয়রা আমাদের সব ধ্যান-ধারণা নিয়েও এখনও সেইসব বিষয় অর্জন করতে পারিনি যা অর্জন করেছেন মুহাম্মাদ এবং কেউই তাঁকে কখনও অতিক্রম করতে পারবে না। আমি ইতিহাসে অনুকরণীয় মানুষের সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত খুঁজতে গিয়ে এ ক্ষেত্রে কেবল নবী মুহাম্মাদকেই খুঁজে পেয়েছি; আর এভাবেই সত্য অবশ্যই বিজয়ী হবে ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসন গ্রহণ করবে, কারণ, মুহাম্মাদ সারা বিশ্বকে বশ করেছেন স্বর্গীয় বা ঐশী একত্ববাদের বাণীর মাধ্যমে।”

পবিত্র কুরআন সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, "ইসলামের অনুপম অলৌকিক বিস্ময় হল পবিত্র কুরআন। এর মাধ্যমে এক ধারাবাহিক ও অবিরাম প্রথা পরম বা চরম নিশ্চিত এক বিষয়ের তথ্য আমাদের কাছে পৌঁছে দেয়। এ এমন এক বই যার সমকক্ষ কোনো বই লেখা সম্ভব নয়। এর প্রতিটি বার্তা সার্বজনীন ও পূর্ণাঙ্গ বা পরিপূর্ণ।"

তিনি আরো লিখেছেন, "কোরআন এক বিস্ময়কর গ্রন্থ। প্রথমদিকে এর বাণীকে সহজ মনে হয় না, কিন্তু পাঠক খুব শিগগিরই নিজের অজান্তেই কোরআনের অসীম সৌন্দর্যে অভিভূত ও বিমুগ্ধ হয়। বহু বছর ধরে খৃষ্টান ধর্মযাজক বা পাদ্রীরা পবিত্র কোরআনের বাস্তবতা বা সত্যতা ও এর মহত্ত্ব উপলব্ধি করার প্রচেষ্টা থেকে দূরে রেখেছে। কিন্তু আমরা যতই জ্ঞান ও প্রজ্ঞার পথে অগ্রসর হচ্ছি এবং সংকীর্ণতা বা বিদ্বেষের পর্দা সরাচ্ছি ততই পবিত্র কোরআনের বিধানগুলোর মহত্ত্ব আমাদের মধ্যে অদ্ভুত বিস্ময় জাগাচ্ছে। অবর্ণনীয় এই গ্রন্থ শিগগিরই মানুষের চিন্তার মূল কেন্দ্রে পরিণত হবে। পবিত্র কোরআনের লক্ষ্য মহান, অর্থ গভীর এবং এর ভিত্তি বা যুক্তি এতো সুদৃঢ় যে প্রতি মুহূর্তে এর মহত্ত্ব আরো প্রোজ্জ্বল হয়ে উঠে।"

গ্যাটের কাব্যে রয়েছে ইসলাম ও মুসলিম সভ্যতার গভীর প্রভাব। আরবী ও ফার্সি সাহিত্যের প্রতি তার ছিল অসাধারণ অনুরাগ। বিশেষ করে, ইরানের বিশ্ববিশ্রুত মরমী কবি হাফিজ গ্যাটেকে আকৃষ্ট করেছিল দারুণভাবে। হাফিজের কবিতায় অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি রচনা করেছেন ইস্টার্ন ওয়েস্টার্ন ডিভান বা 'প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের কাব্য'। 'ফস্ট' ও 'ইফিজিনি' তার আরো দুটি বিখ্যাত সাহিত্য-গ্রন্থ।

কবি গ্যাটে কবি হাফিজকে তাঁর বই উৎসর্গ করেছেন এবং তাঁর কবি সত্ত্বার ওপর হাফিজের প্রভাবের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। গ্যাটে ১৮৩২ সালে পরলোকে পাড়ি জমান।

বিষয়: বিবিধ

২০২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File