বিয়ে করে ১৯ স্ত্রীকে পাচার!

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ২৭ আগস্ট, ২০১৩, ০১:২৭:৫২ দুপুর



পাচারকারী বলে কথা! প্রতিদিনই বাজপাখির মতো দৃষ্টি রাখতে হয় চারপাশে। কখন, কোথায় পাওয়া যাবে অসহায় কোনো তরুণী কিংবা কিশোরী। নানা ছলছুতোয় ফেলতে হবে ফাঁদে। তারপর শকুনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে পাঠিয়ে দিতে হবে ওপারে। তারপর হাতে আসবে কচকচে টাকা। প্রতি মুহূর্তে পাচারকারীদের এসব টেনশন লেগেই থাকে।

তবে নারী পাচারের ব্যবসার এসব টেনশন থেকে মুক্তি পেতে অভিনব কৌশল বের করেছেন সোহেল রানা নামে এক পাচারকারী। কিছুটা প্রেমে পটিয়ে কিংবা অর্থের প্রলোভনে বিয়ে করেন অসহায় অথচ সুন্দরী কিশোরী কিংবা তরুণীকে। তারপর সুযোগ বুঝে স্ত্রীকে তুলে দেন পাচারকারী চক্রের হোতাদের হাতে। স্ত্রীরা হারিয়ে যায় চিরদিনের জন্য। হাত বদল হয়ে হয়তো চলে যায় দেশের বাইরে- পতিতালয়, বারে বা হোটেলে। কিংবা কোনো দেশে গিয়ে কারো সেবাদাসী হয়ে নির্মম নির্যাতনে কাটাতে হয় আমৃত্যু।

পাচারকারী চক্রের খলনায়ক সোহেল রানা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। কখনও চিকিৎসক, কখনও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন তিনি। তার স্মার্ট কথাবার্তা আর অভিজাত চলাফেরায় সহজেই পটে যায় কিশোরী ও তরুণীরা। এরপর বিবাহিত স্ত্রী হিসেবে তার ঘরে আসে। তবে বেশিদিন ঘর করা হয়না।

সম্প্রতি প্রতারক সোহেল রানা তার ১৯ নম্বর স্ত্রী রানী আকতার সোনালীকে পাচার করতে গিয়ে পড়েন বিপাকে। সোনালী আঁচ করতে পারে তার প্রতারক স্বামীর প্রতারণা। কৌশলে নিজেকে রক্ষা করেন।

পাচারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সোনালী জানান, ২০১১ সালের ৮ ডিসেম্বর একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় সুদর্শন সোহেল নিজেকে অবিবাহিত হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ে করেন। এরপর তার রহস্যমূলক আচরণ আর কর্মকাণ্ডে কিছুটা সন্দেহ হয় সোনালীর। কিন্তু ধুর্ত সোহেল কিছু বুঝতে দেয়না তাকে।

সোনালী জানান, এক পর্যায়ে গত ১৮ আগস্ট তাকে যশোরের শার্শার গোগা সীমান্ত দিয়ে ভারত পাচারের চেষ্টা করে সোহেল। বাবার বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সীমান্তে নিয়ে যায় তাকে। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয়দের জানাই। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে অন্য পাচারকারীদের সঙ্গে সটকে পড়ে সোহেল রানা।

স্বামী সোহেল রানা সম্পর্কে সোনালী জানান, এর আগেও বিভিন্ন সময় নাম পরিচয় গোপন করে সে বিয়ে করে। পরে স্ত্রীদের ভারতে পাচার করে বিভিন্ন অবৈধ কাজে লিপ্ত করাতে বাধ্য করে। এজন্য সে একেক সময় একেক নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে। কখনও ছোট বাবু, কখনও ডা. সানজিদ আহম্মেদ কিংবা অন্য অনেক নামে পরিচয় দিয়ে প্রকৃত পরিচয় গোপন করে।

এ ঘটনায় বুধবার যশোর জেলা জজ আদালতের মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে স্বামী সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সোনালী। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে এজাহারভুক্ত করতে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। মামলায় সোহেল রানা, তার ভাই জাকির হোসেন, এক স্ত্রী রিক্তা সাদিয়া রূপা এবং দুই সহযোগী সাতক্ষীরার শ্যামনগরের হাবিবুর রহমান ও নারগিস খাতুনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার পর বিষয়টি জানাজানি হয়েছে। বহু বিবাহের খলনায়ক সোহেল রানা সম্পর্কে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসছে। নারী পাচারকারী সিন্ডিকেটের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

সূত্র : বাংলামেইল।

বিষয়: বিবিধ

১৪১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File