৭৩টি ফের্কার একটিমাত্র ফের্কাই কি জান্নাতি হবে?

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ২৫ আগস্ট, ২০১৩, ০১:১৭:৫৩ দুপুর



রাসূলুল্লাহ (সা.) ২৩ বছরের (১৩ বছর মক্কায় ও ১০ বছর মদীনায়) নিরলস চেষ্টা-প্রচেষ্টার পর একটি ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে যখন জীবনের শেষ দিনগুলো অতিবাহিত করছিলেন তখন তিনি ইসলাম এবং মুসলিম সমাজের ভবিষ্যত নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন ছিলেন। কারণ, তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করছিলেন এর আগে যেসব কাফের, মুশরিক, ইহুদি, মোনাফিক এবং গুপ্তচরদের তিনি মোকাবিলা করেছিলেন আজ বাহ্যিকভাবে তারা মুসলমান বলে দাবী করলেও তারা আবার অতীতের অন্ধকারে ফিরে গিয়ে আগের মতোই রক্তপাত, হানাহানি, দ্বন্দ্ব-সংঘাতে লিপ্ত হবে। ফলে সমাজে আবারো বিচ্যুতি দেখা দেবে, গোত্রীয় দ্বন্দ্বের শেকড়গুলো আবারো মাথাচাড়া দেবে, আবারো বিভেদ সৃষ্টি হবে এবং বিভিন্ন ফেরকায় ভাগ হয়ে যাবে মুসলমানরা।

রাসূলুল্লাহ (সা.) মুসলমানদের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা হিসেবে উম্মতকে সতর্ক করার জন্য চিন্তা করবেন ও তাদের সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করবেন ‌এটাই স্বাভাবিক। তিনি বিভিন্ন উপলক্ষে স্পষ্ট ভাষণের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে তাদের ভবিষ্যতের নানা বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করতেন এবং এ ধরনের বিপদে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করতেন।

এ ধরনের একটি ভবিষ্যদ্বাণীতে তিনি বলেছিলেন: “আমার উম্মতদের ৭৩টি ফেরকা হবে, তাদের মধ্য থেকে একটিমাত্র ফেরকা হেদায়েতপ্রাপ্ত, অন্য ফেরকাগুলো বিভ্রান্ত এবং ধ্বংস হবে।”

এ হাদিসটি শিয়া-সুন্নি উভয় মাজহাবের আলেমদের বর্ণনাতেই এসেছে। অবশ্য আল্লাহর রাসূল (সা.) যে বলেছেন আমার উম্মত ৭৩টি ফেরকায় বিভক্ত হবে, এটা ফেরকার আধিক্যের রূপক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এর মানে এই নয় যে মুসলমানরা গুনে গুনে ঠিক ৭৩টি ফেরকাতেই বিভক্ত হবে। পবিত্র কুরআনেও এরকম আধিক্য অর্থে ৭০ সংখ্যাটিকে ব্যবহার করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কুরআনে এসেছে: “হে পয়গাম্বর তুমি যদি মুনাফিকদের জন্য আল্লাহর কাছে ৭০ বারও ক্ষমা চাও তবুও আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন না।”

রাসূলুল্লাহ (সা.) এটা বলে বুঝাতে চেয়েছেন যে, মুসলমানরা ভবিষ্যতে বিভিন্ন ঘটনা, দুর্ঘটনা, ফেতনা-ফ্যাসাদ ইত্যাদির কারণে অসংখ্য দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে যাবে। তখন ধর্মকে টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হয়ে যাবে। সেই পরিস্থিতিতে যেসব মুসলমান কোনোরকম বিচ্যুতিতে নিমজ্জিত না হয়ে এবং বিভেদের মধ্যে না জড়িয়ে সঠিক দ্বীনের ওপর অটল থাকবে তারাই মূলত সত্যিকারের দ্বীনের অনুসারী হিসেবে পরিগণিত হবে।#

সূত্র:

১.কুরআন, সূরা তওবা ৮০

২.সুনানে ইবনে দাউদ, ৪র্থ খ:, পৃ:১৯৮ কিতাবুস সুন্নাহ

৩.মোসতাদরাকুস আলাস সাহিহিন, ৩য় খ:,পৃ:১৫১

বিষয়: বিবিধ

১০০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File