কৃষক, শ্রমিক, মজুরের রক্তে, ঘামে ভেজা অর্থে আর কত বিদেশ ভ্রমন হবে ? এটা কি এক ধরণের দুর্নীতি নয় ?

লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ২৯ জুলাই, ২০১৩, ০২:১৫:৩৪ দুপুর



বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে নিয়ে অন্য মন্ত্রীর দল এবং সব ধরনের আমলা-ফায়লা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় প্রায়ই বিদেশ সফর করে থাকেন, যার অধিকাংশই নিষ্প্রয়োজন এবং আনন্দ ভ্রমণ ছাড়া আর কিছু নয়। মাত্র কয়েক দিন আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজের বোনঝির বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ৪২ জন সরকারি লোক ও আÍত্নীয়স্বজন নিয়ে সরকারি খরচে লন্ডন গিয়ে বিলাসবহুল হোটেলে থেকে দেশের জনগণের পকেট কেটে কোটি কোটি টাকা খরচ করে এসেছেন। এটাকে তারা চরম দুর্নীতি মনে করেন না। আসলে বাংলাদেশে চুরি, ঘুষখোরি, দুর্নীতি এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে, এসবই পরিণত হয়েছে স্বাভাবিক ব্যাপারে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া অন্য যে মন্ত্রীরা কারণে-অকারণে বিদেশ সফর করেন, তাদের মধ্যে বিদেশমন্ত্রী শীর্ষস্থানীয়। বিদেশ সফরের বিষয়ে তার কোনো নীতিজ্ঞান, কাণ্ডজ্ঞান অথবা প্রয়োজনের বোধ আছে বলে মনে হয় না। কাজেই যে কোনো ছুঁতো ধরে বা ছুঁতো তৈরি করে বিদেশ সফরের তাড়নায় তিনি অস্থির থাকেন। বাংলাদেশে ১৯৭২ সাল থেকে যে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম হয়েছে, সেই লুটপাটের ঐতিহ্য এ ধরনের সফরের মাধ্যমেও রক্ষিত হচ্ছে।

বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এখন ভারতে গেছেন সেখানকার প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতাদের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি এবং দ্বিপক্ষীয় ভূমি সীমান্ত চুক্তি বিষয়ে আলোচনার জন্য। অবধারিতভাবে বিদেশমন্ত্রীর এই সফর ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু এদের কাছে সফর ব্যর্থ বা সফল হওয়া আসল ব্যাপার নয়। আসল ব্যাপার হল সফর করা। যে বিষয়ে মন্ত্রী ভারত সফরে গেছেন তা নিয়ে অসংখ্যবার আলোচনা হয়েছে এবং এ বিষয়ে ভারত তার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছে। কাজেই এ মুহূর্তে ওই সফর বাংলাদেশের জন্য নিষ্প্রয়োজন। তিস্তা চুক্তি সম্পর্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সফররত বাংলাদেশী বিদেশমন্ত্রীকে যা বলেছেন, তার মধ্যে নতুনত্ব কিছু নেই। নতুনত্ব যে থাকার কথা নয় এটাও জানা কথা। ভারত-বাংলাদেশ ভূমি সীমান্ত চুক্তি কার্যকর শুধু সরকারি প্রভাব ও সিদ্ধান্তের ব্যাপার নয়। তার জন্য প্রয়োজন ভারতের সংসদের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট। যেহেতু বিজেপি এবং অন্য কয়েকটি দল এর বিরোধী, সে কারণে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের কোনো সম্ভাবনা নেই। কাজেই এই চুক্তি বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত একটি বাংলাদেশ ঠকানো ব্যাপার ছাড়া আর কিছুই নয়। বিজেপি এই চুক্তির বিরোধিতা করতে গিয়ে বলেছে, এই চুক্তি হলে ভারতের অধিকৃত ভূমির পরিমাণ কম হবে। এটা ঠিক। কারণ ভারত ইতিপূর্বেই বাংলাদেশের ভূমির অনেকটা অংশ দখল করে রেখেছে। চুক্তির মাধ্যমে সেই দখল ছাড়ার বিষয়টি তাদের কাছে ‘ভারতের ভূমি হারানোর’ ব্যাপার! এই পরিস্থিতিতে কোনো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই ভারত-বাংলাদেশ ভূমি সীমান্ত চুক্তি সম্পাদনের কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু সে সম্ভাবনা একেবারেই না থাকা সত্ত্বেও এ নিয়ে বিদেশ সফরে বিদেশমন্ত্রীর উৎসাহের কোনো অভাব নেই!!

বিষয়: বিবিধ

১৩০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File