তোমার প্রতিদিনের ছোট ছোট ভালো কাজগুলো কখনো অর্থহীন হয়ে যায় না। সেগুলোর প্রতিদান তুমি অবশ্যই একদিন পাবে।
লিখেছেন লিখেছেন েনেসাঁ ১৫ মার্চ, ২০১৪, ০৫:৪৫:২৭ বিকাল
অনেক দিন আগে কেনিয়ার একটি গ্রামে এক ছেলে থাকতো ।সে থাকতো তার সৎ মায়ের সাথে। তাদের গ্রামে পানির খুব অভাব ছিলো।তাই সেই ছেলেটিকে প্রতিদিন সকালে উঠে দূরের ঝর্ণা থেকে পানি আনতে যেতে হতো।তার সৎ ভাইয়েরা যখন আরামে ঘুমিয়ে থাকতো সেই ভোরবেলায় উঠে তাকে মাথায় পানির পাত্র নিয়ে ছুটতে হতো। কিন্তু তবু সে কোনো অভিযোগ করতো না। কারন তার পরিবারকে সে ভালোবাসতো।পরিবারের প্রতি নিজের দায়িত্ব সে পালন করতো।
সেদিন পানি নিয়ে ফেরার সময় সে একজন বৃদ্ধ তার কাছে পানি খেতে চাইলো। সে তাকে পানি ঢেলে দিলো। কিছুদূর পর এক মহিলাও পানি চাইলো। ছেলেটি তাকেও পানি দিলো। প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটতো। লোকেদের এভাবে পানি দিতে দিতে দেখা যেতো বাড়িতে ফিরে প্রায় অর্ধেক পানি শেষ হয়ে গিয়েছে। তখন তার সৎ মা তাকে মারধোর করতো।এভাবে চলতে চলতে যখন সৎ মায়ের অত্যাচার অসহ্য হয়ে উঠলো, তখন সে মনে মনে শপথ করলো- আর কাউকে পানি দেবে না।
কিন্তু একদিন পানি নিয়ে ফেরার পথে একটা ঘটনা ঘটলো। ছেলেটি একটা অদ্ভুত পোশাকের লোককে রাস্তায় পরে থাকতে দেখলো। লোকটি আহত ছিলো এবং পানি পিপাসায় কাতরাচ্ছিলো। মুমূর্ষু অবস্থায় সে চোখ মেলে পানি চাইলো। আবার চোখ বন্ধ করে ফেললো। ছেলেটি তার শপথের কথা মনে মনে ভাবলো।সৎ মায়ের মারধোরের কথা ভেবে কিছুক্ষন ইতস্তত করলো এবং শেষে দৌড়ে গিয়ে লোকটিকে পানি খাওয়ালো।
সেদিন সে যখন আবার অর্ধপূর্ণ পানির পাত্র নিয়ে ঘরে ফিরলো-তখন তার সৎ মা আবার তাকে মারধোর করলো। সারা দুপুর সে কাঁদল।কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়লো। ঘুম ভাঙ্গলো দরজা ধাক্কানোর শব্দে। দরজা খুলে দেখলো সেই লোকটি দাঁড়িয়ে আছে যাকে সে পানি নিয়ে জীবন বাঁচিয়েছে।জানা গেলো সে একজন পোষ্টম্যান এবং ছোট ছেলেটির জন্য শহর থেকে একটি চিঠি নিয়ে এসেছে।চিঠিতে দেখা গেলো ছেলেটি শহরের একটি স্কুলে স্কলারশিপ পেয়েছে এবং সেই সাথে প্রতি মাসে কিছু টাকার বৃত্তি!ছেলেটি এই লোকটিকে সাহায্য না করলে সে হয়তো এই সুখবর নিয়ে আসার পথে মারাও যেতে পারতো।
যেখানে ভালোবাসা আছে-সেখানেই জীবন আছে।তোমার প্রতিদিনের ছোট ছোট ভালো কাজগুলো কখনো অর্থহীন হয়ে যায় না। সেগুলোর প্রতিদান তুমি অবশ্যই একদিন পাবে।
বিষয়: বিবিধ
১০০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন