জিয়া........
লিখেছেন লিখেছেন কথার_খই ১৯ জানুয়ারি, ২০১৫, ১২:২৩:১১ দুপুর
যে ক্ষাৎকার গ্রহনে মুগ্ধ হয়েছিলেন নিউ ইয়র্ক টাইমস সাংবাদিক কেভিন র্যাফাটি
ණ☛ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম)-এর ৭৯তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আমার চিন্তা চেতনায় সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান একজন মহান নেতা ছিলেন কিন্তু রাজনীতিবিদ ছিলেন না।
ණ☛ বাংলাদেশের উন্নয়নে ও মানব অধিকার রক্ষায় আমরা তার মতো একজন মহান নেতা চাই, আর কোন রাজনীতিবিদ চাই না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান , একটি দেশপ্রেমের অনুপ্রেরণার নাম। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেন বাংলাদেশের ইতিহাসে দেশপ্রেমের প্রতিফলনের একটি উদাহরণ।
ණ☛ দেশপ্রেম একদিনে হঠাৎ করে কারো উপর ভর করে না। এই প্রেমের অনুভূতি ধীরে ধীরে জাগ্রত হয় তবে এই দেশপ্রেম যখন কারো উপর জাগ্রত হয় তখন তার বহিঃ প্রকাশ ঘটে বহুভাবে। যেভাবে জিয়াউর রহমানের বহিঃ প্রকাশ ঘটেছিলো।
ණ☛ প্রথমত তিনি দেশের সেবা করতে অর্থাৎ শত্রুর হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে নাম লিখিয়েছিলেন তৎকালীন সেনাবাহিনীতে। যারা সেনাবাহিনীতে আছেন তারা ভালো বলতে পারবেন , যখন কেউ সুযোগ পায় সেনাবাহিনীতে যোগদানের তখন তাদের একটি ফরমে বরণ সই দিতে হয় এই মর্মে যে যদি তারা যুদ্ধ ক্ষেত্রে শহীদ হন তাহলে তাদের লাশ ফেরত দিতে সেনাবাহিনী কতৃপক্ষ বাধ্য থাকবে না। অতএব শুরুতেই জীবনের শেষ অবস্থানের কথা মাথায় রেখে সেনাবাহিনীতে যোগদান করতে হয়।
ණ☛ অর্থাৎ দেশপ্রেম ছাড়া কেউই সেনাবাহিনীকে পেশা হিসেবে বাছাই করে না। তারপর জিয়াউর রহমানের পরিবার তৎকালীন সময়ে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল ছিল। সুতরাং জিয়াউর রহমান জীবিকা নির্বাহের জন্য সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন নি বরং মধ্যপ্রাচ্য থেকে যুদ্ধ ফেরত তার চাচা ক্যাপ্টেন ডঃ মোনতাজুর রহমানকে দেখে সামরিক বাহিনী নিয়ম-কানুন শৃংঙ্খলা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মহান আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে জিয়াউর রহমান নিজেকে নিয়ে সেনাবাহিনীর স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।
ණ☛ দ্বিতীয়ত যথেষ্ট মেধাবী এই জিয়াউর রহমান হয়ে উঠে প্রথম থেকেই তৎকালীন পাকিস্থানী সেনাবাহিনীর মধ্যে আলোচিত একটি নাম। পাকিস্থানী সেনাবাহিনীরা ঐ সময় বাংলাদেশী সেনাবাহিনীদেরকে অবহেলা ও হীনভাবে দেখতো। জিয়াউর রহমানকে এই অবহেলা নাড়া দিত। তিনি ভর্তি হন ১৯৫৩ সালে পাকিস্থানের কাকুল মিলিটারি একাডেমীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন প্রাপ্ত হন।
ණ☛ সামরিক বাহিনীতে তিনি একজন সুদক্ষ প্যারাসুটার ও কমান্ডো হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেন এবং স্পেশাল ইন্টেলিজেন্স কোর্সে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। করাচীতে দুই বছর চাকুরি করার পর ১৯৫৭ সালে তিনি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বদলি হয়ে আসেন। তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন।
ණ☛ ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে একটি কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে খেমকারান সেক্টরে তিনি অসীম বীরত্বের পরিচয় দেন। যুদ্ধে দুর্ধর্ষ সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য যেসব কোম্পানি সর্বাধিক বীরত্বসূচক পুরস্কার লাভ করে, জিয়াউর রহমানের কোম্পানি ছিল এদের অন্যতম। এই যুদ্ধে বীরত্বের জন্য পাকিস্তান সরকার জিয়াউর রহমানকে হিলাল-ই-জুরাত খেতাবে ভূষিত করে। এছাড়াও তিনি সেনাবাহিনীতে যোগদান করার পর থেকেই একের পর এক সুদক্ষ বীরত্বের পরিচয় দেন।
ණ☛ ১৯৭১ সালের আগেই জিয়াউর রহমান হয়ে উঠে পাক-সেনাদের কাছে সুপরিচিত এবং তাদের কাছে জিয়া একটি আতঙ্কের নামও হয়ে উঠে কারন সে ছিল বাংলাদেশী। আর সেই আতঙ্কের নাম জিয়াউর রহমানই এনে দিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
ණ☛ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ সময়ের প্রয়োজনে ঘটেছিলো। অবশ্যই ৭১'এর যুদ্ধে বাংলার কিছু অপরিচিত মুখ শুধুমাত্র দেশ প্রেমের টানে এগিয়ে এসে যে ভূমিকা রেখেছিলো সেই ভূমিকা যাদের রাখার কথা ছিল তারা রাখেনি। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে পাকহানাদার বাহিনী যদি বাংলাদেশীদের উপর হানা না দিতো আর ১৯৭১ - এর ২৬ শে মার্চ নিজ উদ্যোগে মেজর জিয়াউর রহমান যদি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিতেন এবং পরবর্তীতে শেখ মুজিবর রহমানের দাবী গুলো যদি পাকিস্থান মেনে নিত তাহলে আর যাইহোক ঐ যাত্রায় বাংলাদেশ আর স্বাধীন হতো না।
ණ☛ ১৯৭১ সালের ঐ সময়ে বাংলাদেশের মুক্তির জন্য যারা বাংঙ্গালি জাতিকে জাগ্রত করেছিলেন , যারা শেখ মুজিবর রহমানকে বাংলাদেশ মুক্তির আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার উদার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন এবং ৭ ই মার্চ ১৯৭১ এ তাঁরা পরিপূর্ণ স্বাধীনতার ঘোষণা ঐ রেসকোর্স ময়দানেই চেয়েছিলেন। ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ যার পাঠক ছিলেন শেখ মুজিবর রহমান আর ঐ ঐতিহাসিক ভাষণের রচয়িতা ছিলেন দুই জন দেশ প্রেমিক নূরে আলম সিদ্দিক্কী ও সিরাজুল আলম খান।
ණ☛ তারা প্রতিবাদী বাঙালি জাতির প্রতিবাদের প্রতিফলন তুলে ধরেছিলেন ঐ ভাষণে এবং ঐ দিন ৭ই মার্চেই শেখ মুজিবর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া কথা ছিল কিন্তু কোন এক পিছু টানে শেখ মুজিবর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন না।
ණ☛ একটি কথা স্পষ্ট বলতে চাই অনেকে বলেন শেখ মুজিবর রহমান কিভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা করতেন বা করলে শেখ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র দ্রোহের মামলা হত তাই জিয়াউর রহমানকে দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করিয়েছিলেন। শেখ মুজিবর রহমান তো একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের গুরু দায়িত্ব জাতি শেখ মুজিবর রহমানকে দিয়েছিলেন।
ණ☛ মেজর জিয়াউর রহমান তো ঐ সময় অর্থাৎ ১৯৭১ সালে পাকিস্থানী সেনাবাহিনীর মেজর ছিলেন, আর মেজর জিয়াউর রহমান তো চাকুরী করতেন পাকিস্থানিদের শেখ মুজিবর রহমানের না, তিনি কোন রাজনৈতিক নেতাও ছিলেন না তাহলে কি প্রয়োজন ছিলো মেজর জিয়াউর রহমানের নিজের চাকুরীর মায়া ত্যাগ করে তৎকালীন সরকারের সাথে শত্রুতা কিনে দেশে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার ?
ණ☛ শুধুমাত্র, কেবলমাত্র, একমাত্র উপর আল্লাহর ভরসায় দেশের ক্লান্তিলগ্নে দেশ ও জাতির ভালোবাসায় ও দেশপ্রেমে পাগল হয়ে মেজর জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। জিয়াউর রহমান শুধু স্বাধীনতার ঘোষণাই দেন নি বরং ভারতে পলায়ন না করে শত্রুর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে দেশে থেকে যুদ্ধও করেছেন। এরপরও তার ভূমিকা নিয়ে কেউ বা কাহারা যদি প্রশ্ন করেন তাদেরকে সরাসরি রাজাকার বলতে দেরী হবার কোন কারন নেই।
ණ☛ একই ভাবে আবার বাংলাদেশে এক নায়কতন্ত্রের পতন হওয়ার পর যখন ক্ষমতার পালা পরিবর্তন হচ্ছিলো দিনে রাতে ঠিক সেই মুহূর্তে ৭ই নভেম্বরে সিপাহী জনতা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে মেজর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় উঠে আসেন ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়েই মূলত বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পূর্ণতা অর্জন করে উন্নতির দিকে ঘুরে দাঁড়ায়।
ණ☛ ১৯৭৬ সালের অক্টোবরে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাক্ষাৎকার নিতে আসলেন এক সাংবাদিক কেভিন র্যাফাটি। কেভিন পুরো বাংলাদেশকে দেখলেন যেই দেশটি মাত্র এক বছর আগে এক দুর্ভিক্ষে বিধস্ত হয়ে পড়েছিলো। যেই দেশে অর্থনীতি বলতে কিছুই ছিল না। সবই চলতো বিদেশী সাহায্যে। যেই দেশে ক্ষমতায় অধিষ্টিত হওয়ার অর্থ হচ্ছে ডেথ স্কোয়াডের সামনে দাঁড়ানো। সেই দেশে এসে তিনি জিয়াউর রহমানের সাক্ষাৎকার নিয়ে জানলেন তার কর্ম পরিকল্পনা।
এবং দেশে ফিরে The New York Times পত্রিকায় প্রতিবেদন করলেন,
" Economic Hope for Bangladesh "
ණ☛ - "মাত্র এক বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিশ্বয়কর অগ্রগতি নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বাংলাদেশকে "এশিয়ার চ্যাম্পিয়ান" আখ্যা দিয়ে বলেন এই এক বছরে অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিক থেকে দেশটি পেছনে ফেলে দিয়েছে জাপান, সিঙ্গাপুর, মালায়েশিয়াকেও। সেই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান অন্য গরীব দেশগুলোর মতো সাহায্যের আশায় বসে থাকে না।
ණ☛ তিনি বাংলাদেশের মানবসম্পদ কাজে লাগাতে চান। আরববিশ্বের দেশগুলোতে মানবসম্পদ রপ্তানি করার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সৌদি আরবসহ বহু আরব দেশে মানবসম্পদ রপ্তানি শুরু করতে সফল হন। বাংলাদেশের মানুষ ভিক্ষা করে নয়, বরং কাজের বিনিময়ে অর্থ আদায় শুরু করে।
ණ☛ এই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ভর করে উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ " - সাংবাদিক কেভিন র্যাফাটি রাজনৈতিক কোন নেতা ছিলেন না জিয়াউর রহমান তবে নিজের দল জাতীয়তাবাদী দলকে গড়ে তুলেছিলেন জনপ্রিয় দল হিসেবে যে জনপ্রিয়তা আজো রয়ে গিয়েছে বাংলাদেশে।
ණ☛ বাংলাদেশের ইতিহাসে সৎ, আদর্শবান, শিক্ষিত, মেধাবী, ধর্মভীরু, দেশপ্রেমিক হিসেবে জিয়াউর রহমান ছিলেন ও হয়ে থাকবেন অদ্বিতীয়। আশাকরি বর্তমানে ও ভবিষ্যতে বাংলাদেশের তরুণরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অনুসারী হয়ে দেশ ও জাতিকে উন্নতি বয়ে এনে দিবে।
রাকেশ রহমান ( লেখক, কলামিস্ট প্রবাস থেকে )।
- বিস্তারিত: http://newsorgan24.com/detail/7777#sthash.LtGWLX8x.k4UfOo8A.dpuf
বিষয়: বিবিধ
৮৯৬ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন