বিরোধীজোটের আন্দোলন প্রতিহতের সরকারি নীল নক্সা ফাঁস... ভয়ংকর পরিকল্পনা.....
লিখেছেন লিখেছেন কথার_খই ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৩:৪৩:৫৫ রাত
বিএনপিসহ বিরোধীজোটের নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলন প্রতিহত করতে আওয়ামীলীগ বিভিন্নধরণের নীল নক্সা প্রণোয়ন করেছে। সেই নীল নক্সার কিছু তথ্য নিউজবিডিসেভেনের হাতে এসে পৌঁছেছে। তবে সূত্র ও সোর্সগুলো বলছে নীল নক্সা স্থায়ী নয়। সময় ও পরিবেশ পরিস্থিতির আলোকে পরিবর্তিত হবে নীল নক্সার গতিবিধির প্রকৃতি ও ধরণও। কয়েকটি ধাপে বিন্যস্ত করা হয়েছে নীল নক্সাটি। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে ধারাবাহিকভাবে সেই নীল নক্সাগুলো তুলে ধরা হবে। আজকের পর্বে থাকছে নিউজবিডিসেভেনের অনুসন্ধানী একটি রিপোর্ট। নীল নক্সার পাওয়া তথ্য থেকে তার সত্যতা অনুসন্ধানে নামে নিউজবিডিসেভেনের কয়েকটি বিশেষ টিম। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকাগুলোর সরেজমীনে ঘুড়ে এই অনুসন্ধানী রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে মহাজোট একটি অগণতান্ত্রিক, অবৈধ, একপক্ষীয় ও ভোটারবিহীন নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসে। নির্বাচনটি দেশে বিদেশে বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তারপরও বিরোধীজোট এক বছর সময় দিয়েছে আওয়ামীলীগকে। কিন্তু দলটি আন্তর্জাতিক আহ্বান ও বিরোধীজোটের কোন আহ্বানকেই কানে নিচ্ছেন না। যে কারণে বিরোধীজোট ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে অবৈধ সরকারের পতনের জন্য রাজপথে নামছে এটা এখন নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
তবে শেখ হাসিনার সরকারও বসে নেই। আন্দোলন প্রতিহত করতে তারা বেশকিছু কূট পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তারমধ্যে একটি হলো দেশে বড় ধরণের নাশকতার পরিকল্পনা। লতিফ সিদ্দিকীকে বাংলাদেশে এনে ইসলামি দলগুলোকে রাজপথে নামিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট দিয়ে নাশকতা করে ইসলামি দলগুলোর ঘাড়ে দোষ চাপানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নিউজবিডিসেভেন সরকারের সেই নীল নক্সা ফাঁস করে দিলে ইসলামি দলগুলোকে জঙ্গি প্রমাণের এবং সেই জঙ্গি দমনের নামে আরও কয়েকবছর ক্ষমতায় থাকার পরিবেশ সৃষ্টি করার পরিকল্পনাটি ভেস্তে যায়। গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, সরকারের লতিফ ইস্যু ভেস্তে গেলেও নাশকতার পরিকল্পনায় এখনো তারা অটল রয়েছে। যেহেতু আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রগুলো নির্বাচন দিয়ে গণতান্ত্রিক ও জনগণের ভোটে নির্বাচিত বৈধ সরকারের জন্য চাপ দিচ্ছে সেহেতু সরকার চাচ্ছে দেশে এরকম একটা পরিবেশ সৃষ্টি করা যাতে বিদেশি রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলো সেই পরিবেশ থেকে উত্তরণের জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে আরও কয়েক বছর ক্ষমতায় থাকার সুযোগ দেয়। সে লক্ষে নাশকতা সৃষ্টির ততোধিক পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছে সরকার।
পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হবে যেভাবে …
১. বিরোধীদলের আন্দোলন শুরু হলে সরকারীদলের ক্যাডার বা গোয়েন্দা সংস্থার ভারতপ্রেমী একদল সদস্য সরকারী সম্পদে বা স্থাপনায় হামলা চালাবে। হামলায় নিহতের সংখ্যা অনেক হবে। পরে আওয়ামী মিডিয়ার কল্যাণে বিরোধীদলের নামে প্রচার করা হবে।
২. যে কোনো মাদ্রাসায় বড় রকমের বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। এমন ঘটনায় শতাধিক শিক্ষক ছাত্র নিহত হতে পারে। এর পর বিদেশে প্রচার করা হবে প্রতিটি মাদ্রাসায় বিএনপি জামায়াতের মদদে জঙ্গিরা বোমা বানাতো। যা গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে সিরিজ আকারে প্রচার হবে।
৩. জামায়াত বা বিএনপির সিনিয়র কোনো নেতার বাসা থেকে প্রচুর পরিমাণে বোমা বানানোর সরঞ্জাম, গুলি বা বন্দুক উদ্ধার করার নাটক করা হতে পারে। যেখানে সরকারের অনেক নেতা উপদেষ্টার নামের তালিকা দিয়ে হত্যার লিস্ট আগে থেকে তৈরি করে রাখা হবে। অথবা বোমা হামলার পরিকল্পনার সরকারের তৈরি কোনো তথ্য পাওয়া যাবে।
৪. শেখ হাসিনা বা তার নেতাদের উপর সাজানো হামলা হতে পারে। সেখান থেকে আটক করা হবে সাজানো বিএনপি বা জামাতের কর্মী। তারা পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেবে যে, নাশকতার এ পরিকল্পনা বিএনপি জামায়াতের কয়েকজন সিনিয়র নেতার। যারা বেগম জিয়ার বিশ্বস্থ। এই ঘটনার সাথে তারেক রহমানকেও জড়ানো হতে পারে। ঘটনার পর আটক অভিযান শুরু হবে সারাদেশ ব্যাপী।
৫. বেগম জিয়ার উপর বড় রকমের হামলা হতে পারে। এতে বেগম জিয়া ও অনেক সিনিয়র নেতা নিহত হওয়ার মত ঘটনা ঘটতে পারে। যার দায় দায়িত্ব চাপানো হবে জামায়াত বা কোনো জঙ্গি সংগঠনের উপর।
উপরোক্ত পরিকল্পনার নেপথ্যে কাজ করছে চারদলীয় জোট আমলে বোমা হামলার পরিকল্পনাকারীদেরও একটি অংশ। সে সময়ে দলের নেতাদের আত্মীয়দের দিয়ে সারাদেশে জঙ্গি হামলা বা বোমা হামলা চালিয়ে চারদলীয় জোট সরকারকে জঙ্গি মদদদাতা প্রচার করে সেই জঙ্গি দমনে পশ্চিমাদের সমর্থন চেয়েছিল এবং পেয়েওছিল আওয়ামীলীগ। যেহেতু পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো জঙ্গিদের বিষয়ে বেশি এলার্জিপ্রবণ সে সুযোগটাকে আবার কাজে লাগাতে চাচ্ছিলো সরকার। জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দিয়ে দলটিকে মাঠে নামিয়ে সে পরিবেশ সৃষ্টির পরিকল্পনাও ভেস্তে গেছে। কারণ পশ্চিমারাষ্ট্রগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সাথে দলটির সম্পর্ক জোরালো। আর বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ থাকায় দলটিকে মডারেট ইসলামি দল হিসেবে জানে পশ্চিমারা। যে কারণে বিরোধীজোট নেত্রী খালেদা জিয়া যখন রাজপথে নামার ঘোষণা দিবে, বিরোধীজোট যখন কঠোর আন্দোলনে যাবে ঠিক সেসময় দেশে বিশেষ করে রাজধানীতে বড়ধরণের নাশকতা চালাবে সরকার।
নাশকতার লক্ষ …
সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা, মানুষ হত্যা, মসজিদ মাদ্রাসায় বোমা হামলাসহ বিভিন্ন নাশকতার পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। এবং যার দায় দেয়া হবে খালেদা জিয়া এবং বিরোধীজোটকে। তারপর দেশের চরম নাজুক অবস্থায় এখনই নির্বাচন নয় বরঞ্চ দেশটাকে উদ্ধারে ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় শেখ হাসিনার সরকারকে আরও সময় সরকারে রাখা প্রয়োজন এরকম একটি ম্যাসেজ বিদেশে পাঠানো হবে। মার্চ থেকে জুনের মধ্যে যে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি রয়েছে সেটাকে এড়িয়ে যাওয়াই এর লক্ষ। অর্থাৎ বর্তমান সঙ্কট নির্বাচন নয়, সন্ত্রাস বা জঙ্গি দমন অথবা আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বা সঙ্কট নিরসন না হওয়া পর্যন্ত কোন নির্বাচন নয় এরকম একটি পরিবেশ সৃষ্টি করে মধ্যবর্তী নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে। গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ সূত্র বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন।
অনুসন্ধান যা বলছে …
বাংলাদেশ- ভারত সীমান্ত এলাকাগুলোতে সরেজমীনে ঘুড়ে দেখা গেছে সীমান্তের বিভিন্ন হোটেল, মোটেল, সরকারি-বেসরকারি ডাকবাংলা ও রেস্ট হাউজগুলো নতুন নতুন মানুষের আনাগোনা দেখা গেছে। পঞ্চগড় বাংলাবান্ধা সীমান্তেও অপিরচিতদের আনাগোনা বেড়েছে। সীমান্তবর্তী স্থানীয় একজন অটোচালক জানায়, ইদানিং তারা এমন কিছু মানুষকে দেখছে যারা এখানে নতুন। ভাষাও ভিন্ন। এদেশের জাতীয় সনদ নেই। একই তথ্য পাওয়া গেছে একাধিক স্থানীয়দের কাছ থেকে।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াবাসী জানান, ইদানিং তারা নতুন নতুন ও অপরিচিতদের সীমান্তের আশপাশে ঘুড়াঘুড়ি করতে দেখেছেন। নো ম্যানস ল্যান্ডের মোহানন্দা নদীর পাথর শ্রমিক কলিমুদ্দিন জানান, বিজিবি এখন সীমান্তে তেমন শক্ত অবস্থানে নেই। যে কারণে ভয়ে ভয়ে পাথর তুলতে হচ্ছে। নো ম্যাস ল্যান্ডে অবস্থিত ফাস্ট ফুড দোকানী জানান, সীমান্তের ওপারের লোকজন এপারে এসে কারও না কারও আত্মীয় পরিচয় দিয়ে অবস্থান করছে। তাদের চলার গতিবিধি সন্দেহজনক বলেও জানান তিনি।
সরেজমীনে ঘুড়ে বিজিবির তেমন কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি যেরকমটি চোখে পড়েছে বিএসএফের তৎপরতা। কারণ হিসেবে তেঁতুলিয়ার একজন সাংবাদিক জানান, বিষয়টি সন্দেহজনক। পিলখানার মতো কোন ট্র্যাজিক ঘটনার আলামত নয়তো?
এছাড়াও, রংপুর, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ঘুড়েও সন্দেহজনক আলামত পরিলক্ষিত করা গেছে। ২০ ডিসেম্বর খালেদার জনসভা স্থগিত করার পেছনে গোয়েন্দা সংস্থার নো সিগনাল রয়েছে বলেও জানা গেছে।
নাশকতার ধরণ সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হওয়া গেলেও সূত্রগুলো ধারণা করে বলছে, ভারত থেকে সন্ত্রাসীরা সীমান্ত দিয়ে ঢুকে নাশকতা চালিয়ে পালিয়ে যাবে অথবা বাংলাদেশের সন্ত্রাসীরা নাশকতা চালিয়ে সীমান্তের ওপারে চলে যাবে। অবশ্য কোন কোন গোয়েন্দা সূত্র মতে, গোয়েন্দা সংস্থার আস্থাভাজনদের দিয়েও এ নাশকতা সৃষ্টি করা হতে পারে। যাদের উপর শেষ পর্যন্ত বেশি আস্থা রাখবে হাসিনা তাদের দিয়েই নাশকতার পরিকল্পনা এঁটেছেন।
বিস্তারিত এখানে
http://newsbd7.com/main/detail/1845
বিষয়: বিবিধ
১২৮০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কেও সেই অবস্তায় দেখতে চায়।
স্পেনের ইতিহাস তাই বলে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন