৬৭ টি কবিরা গুনাহ.... জেনে নিন..... এক সাথে...
লিখেছেন লিখেছেন কথার_খই ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০২:২২:১৩ রাত
মুসলিমকে কাফির বলার ফিতনা, এটি একটি বড় ও প্রাচীন ফিতনা। এই ফিতনার সৃষ্টি করেছিল অনেক নামধারী মুসলিমের মধ্যেই কুফর ও শিরক বিদ্যমান। সমাজের অনেক মানুষই নিজেকে মুমিন ও তাওহীদে বিশ্বাসী বলে দাবী করার পরও বিভিন্ন প্রকার শিরক ও কুফরে লিপ্ত থাকেন। তাদের এ সকল কর্ম শিরক অথবা কুফর বলে নিশ্চিত জানার পরও এদেরকে কাফির বা মুশরিক বলার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা ইসলামের নির্দেশ। উগ্রপন্থীরা গুনাহগার মুসলিম ব্যক্তিকে কাফির বলে ফতওয়া দিয়ে থাকে। কোন কর্মকে কুফর বা শিরক বলা এবং কোন ব্যক্তিকে কাফির বা মুশরিক বলার মধ্যে রয়েছে আকাশ-পাতাল পার্থক্য।
চরমপন্থী খারেজীদের মতো বর্তমানেও মুসলিম ব্যক্তিকে কাফির বলার প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। চরমপন্থীরা কুরআন ও হাদীসের অপব্যাখা করে দেশের সরকার, আলেম-ওলামা থেকে শুরু করে সাধারন মুসলিমদেরকেও ঢালাওভাবে কাফির বলে ফতওয়া প্রদান করে। মূলত যারা তাদের মত ও পথের অনুসারী নয় তাদেরকেই চরমপন্থীরা কাফির মনে করে। অথচ মুসলিম ব্যক্তি কবীরা গুনাহ করলেও তাকে কাফির বলা যাবে না, কৃত গুনাহের জন্য সে ফাসিক, ফাজির তথা পাপাচারী হিসাবে গণ্য হবে, কিন্তু সে কাফির হবে না। শায়েখ আলবানি এই ফিতনার অন্যতম কারন হিসাবে দুটি বিষয়কে চিহ্নিত করেছেন। প্রথমঃ ইলমের অগভীরতা এবং দ্বিতীয়তঃ শরীয়তের আইন-কানুন সম্পর্কে তাদের গভীর জ্ঞান না থাকা। অথচ আকাঙ্ক্ষা করে সহীহ ইসলামী দাওয়াতের।
ঈমানের ঘোষণাদানকারী ব্যক্তির মর্যাদাঃ
উসামাহ ইবন যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) আমাদেরকে এক জিহাদে পাঠালেন। আমরা প্রত্যুষে ‘জুহাইনার’ (একটি শাখা গোত্র) ‘আল-হুরাকায় গিয়ে পৌঁছলাম। এ সময়ে আমি এক ব্যক্তির পশ্চাদ্ধাবন করে তাকে ধরে ফেলি। অবস্থা বেগতিক দেখে সে বল্লঃ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’; কিন্তু আমি তাকে বর্শা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে ফেললাম। কালেমা পড়ার পর আমি তাকে হত্যা করেছি বিধায়, আমার মনে সংশয়ের উদ্রেক হল। তাই ঘটনাটি আমি নাবী (সাঃ)-এর নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি বললেনঃ ‘’তুমি তাকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার পর হত্যা করেছে! আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সে অস্ত্রের ভয়ে জান বাঁচানোর জন্যই এরুপ বলেছে। তিনি রাগান্বিত হয়ে বললেনঃ ‘তুমি কি তার অন্তর চিরে দেখেছ, যাতে তুমি জানতে পারলে যে, সে এ কথাটি ভয়ে বলেছিল?’’
সহীহ মুসলিমঃ ৯৬।
আল-মিকদাদ ইবন আসওয়াদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসুল রাসুল (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! যদি আমি কোন কাফিরের মুকাবেলায় লড়তে গিয়ে তার তরবারির আঘাতে একটি হাত কেটে যায়। তারপর সে আমার পাল্টা আক্রমন থেকে আত্মরক্ষার জন্য কোন গাছের আড়ালে আশ্রয় নিয়ে বলে, ‘আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মুসলিম হয়েছি’- এ কথা বলার পর হে আল্লাহর রাসুল! আমি কি তাকে হত্যা করবে?তিনি বললেনঃ না, তাকে হত্যা করো না। আমি আবার বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সে তো আমার হাত কেটে ফেলেছে।রাসুল (সাঃ) বললেনঃ তাকে হত্যা করো না।কেননা তুমি তাকে হত্যা করলে এ হত্যার পূর্বে তুমি (ঈমান আনার কারনে) যে মর্যাদায় ছিলে, সে ঐ মর্যাদায় চলে যাবে। আর এ কালেমা পাঠ করার পূর্বে সে যে অবস্থায় ছিল (অর্থাৎ কাফির), তুমি তার অবস্থায় চলে যাবে’’
আবু দাউদঃ ২৬৪৪, শায়খ আলবানি সহীহ বলেছেন।
জারীর ইবন আবদুল্লাহ (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) খাস’আম গোত্রের বিরুদ্ধে একটি ক্ষুদ্র বাহিনী প্রেরন করলেন। সৈন্যদল সেখানে পৌঁছে দেখল যে, ঐ গোত্রের কিছু লোক সিজদায় পরে আছে। কিন্তু এ সত্ত্বেও তাদেরকে হত্যা করা হল। নাবী (সাঃ)-এর কাছে এ সংবাদ পৌঁছলে তিনি তাদের ওয়ারিশদেরকে দিয়াত (রক্তপন) প্রদানের নির্দেশ দিলেন’’।
আবু দাউদঃ ২৬৪৫, শায়খ আলবানি সহীহ বলেছেন।
ঈমানের দাবীদারকে কাফির বলার নিষেধাজ্ঞাঃ
মুসলিম ব্যক্তিকে নিজের খেয়াল-খুশি মতো ‘কাফির’ বলার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ সকলকে সতর্ক করেছেন। কুরআন মাজিদে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ ‘’হে মুমিনগণ! যখন তোমরা আল্লাহর পথে যাত্রা করবে তখন কে বন্ধু আর কে শত্রু তা পরীক্ষা করে নেবে।কেউ তোমাদেরকে সালাম করলে তাকে বলো না, ‘তুমি মুমিন নও’; তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ আকাঙ্ক্ষা করো, বস্তুত আল্লাহর নিকট তোমাদের জন্য প্রচুর সম্পদ রয়েছে। তোমরাও এর পূর্বে এ রকমই ছিলে (অর্থাৎ তোমরাও তাদের মতই তোমাদের ঈমানকে গোপন করতে), অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব এখন অনুসন্ধান করে নিবে। তোমরা যা কিছু করো, সে বিষয়ে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত’’।
সুরা নিসা, ৪/৯৪।
এ আয়াত নাযিলের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তাফসীর ইবন কাসীরে উল্লেখ করা হয়েছেঃ
ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সুলাইম বংশের এক লোক তার এক পাল ছাগল নিয়ে রাসুল (সাঃ)-এর একদল সাহাবীর সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। সে তাদেরকে সালাম দিল। সাহাবীরা পরস্পর বলল, এ লোক তোমাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য তোমাদেরকে সালাম দিয়েছে। এই বলে তারা উঠে গিয়ে লোকটিকে হত্যা করলো এবং তার ছাগলগুলো নিয়ে রাসুল (সাঃ)-এর নিকট হাজির হল। তখন আল্লাহ তায়ালা এই আয়াত নাযিল করেনঃ হে ইমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহ তায়ালার পথে (জিহাদের জন্য) বের হবে, তখন অবশ্যই পরীক্ষা করে নেবে এবংকেউ তোমাদের সালাম দিলে (পার্থিব সম্পদের আকাংখায়) তাকে বলবে না যে, তুমি মুমিন নও’’
নিসা ৪/৯৪, তিরমিযিঃ ৩০৩০, শায়খ আলবানি হাসান সহীহ বলেছেন।
আলোচ্য আয়াতে সালাম প্রদানকারী ব্যক্তিকে মুমিন নয় বলতে নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং বাহ্যিকভাবে কোন ব্যক্তি সালাম দিলে তাকে মুসলিম বলে গণ্য করতে হবে। ব্যাপক তদন্ত ও যাচাই-বাছাই ব্যতীত এ ধরনের কোন ব্যক্তিকে কাফির বলা এবং তাকে হত্যা করা হারাম।
কাফির আখ্যাদান সম্পর্কে রাসুল (সাঃ)-এর সতর্কবাণীঃ
উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’যখন কেউ তার মুসলিম ভাইকে ‘কাফির’ বলে, তখন তাদের উভয়ের মধ্যে একজনের উপর তা বর্তায়। যা বলেছে, তা যদি সঠিক হয়, তাহলে তো ভালো। নচেৎ (যে বলেছে) তার উপর ঐ কথা ফিরে যায় (অর্থাৎ সে কাফির হয়ে যায়)’’বুখারী ৬১০৪; মুসলিম ৬১
আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’যে কাউকে ‘হে কাফির’ বলে অথবা ‘হে আল্লাহর দুশমন’ বলে ডাকে অথচ বাস্তবিক ক্ষেত্রে যদি সে তা না হয়, তাহলে তার (বক্তার) উপর তা বর্তায়’’।
রিয়াদুস সালিহীনঃ ১৭৪২।
সাবিত ইবন যাহহাক (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসুল (সাঃ) বলেনঃ ‘’ইমানদারকে লা’নাত করা, তাকে হত্যা করা সমতুল্য। আর কেউ কোন ইমানদারকে কুফরির অপবাদ দিলে তাও তাকে হত্যা করার সমতুল্য হবে’’।
বুখারীঃ ৬১০৫।
কাফির আখ্যাদান সম্পর্কে বিদ্বানগনের সতর্কবাণীঃ
চার ইমাম ও প্রথম যুগের অন্যান্য ইমাম খারেজী, শীআ, মুতাযিলি, মুজাসসিমা, মুশাব্বিহা, কাদারিয়া ও অন্যান্য বিভ্রান্ত সম্প্রদায়ের অনেক কর্মকে কুফর বলে আখ্যায়িত করেছেন। তবে এ সকল ফিরকার অনুসারীদের কাফির বলে গণ্য করেননি।
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বারবার বলেছেন, কুরআনকে মাখলুক বা সৃষ্ট বলে বিশ্বাস করা কুফর। পাশাপাশি তিনি এ কুফরী মতের প্রধান অনুসারী, প্রচারক ও পৃষ্ঠপোষক খলীফা মামুন, মুতাসিম ও ওয়াসিককে মুমিন বলে গণ্য করেছেন এবং কুফরী আকিদা ও পাপ ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে তাদের আনুগত্যের জন্য জনগণকে নির্দেশ দিয়েছেন, তাদের ও তাদের অনুসারী ইমামদের পিছনে জুম’আ ও ঈদের সলাত আদায় করতে নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যান্য ইমামও একই পথ অনুসরণ করেছেন। বিভ্রান্ত ফিরকাগুলোর অনেক বিশ্বাস ও কর্ম কুফর বলে গণ্য হলেও এ সকল ফিরকার অনুসারী ব্যক্তিকে কাফির বলে গণ্য করেননি।
ইমাম মালিক (রহঃ) বলেনঃ
‘’নিরানব্বই দিক থেকে যদি কোন মুসলিম ব্যক্তিকে কাফির আখ্যাদানের সম্ভাবনা থাকে আর এক দিক থেকে তার ইমানদার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে মুসলমানদের উপর ভালো ধারনা পোষণ করার লক্ষ্যে তাকে ইমানদার হিসাবেই আমি গণ্য করবো’’।
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) বলেনঃ
ঈমানের দাবীদার জেনে শুনে কুফরী করবেন না বলেই ধরে নিতে হবে। কারো কথা বা কর্ম বাহ্যত কুফরী হলেও যদি তার কোনরূপ ইসলাম সম্মত ব্যাখ্যা দেয়া যায় তবে দূরবর্তী হলেও ইসলামী ব্যাখ্যা গ্রহন করে তাকে মুমিন বলে ধরে নিতে হবে। সর্বোপরি ঈমানের দাবীদার কোন ব্যক্তি যদি সুস্পষ্ট কোন কুফরী বা শিরকী কাজে লিপ্ত হয়, তবে তার কর্মকে কুফরী বলা হলেও ব্যক্তিগতভাবে তাকে কাফির বলার আগে এ বিষয়ে তার কোন ওজর আছে কিনা তা জানতে হবে। সেই ব্যক্তি অজ্ঞতা, ভয় বা অন্য কোন ওজরের কথা উল্লেখ করলে তা গ্রহন করা হবে। আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা’আত বা মূলধারার উম্মাহর দৃষ্টিতে এ হল ইসলামের অন্যতম মূলনীতি।
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেনঃ
জাহমিয়া সম্প্রদায়ের বিচারক ও আলেমদের উদ্যেশ্যে তিনি বলেনঃ তোমরা যে সব কথা বল, আমি যদি তা বলতাম তাহলে অবশ্যই কাফির হয়ে যেতাম। কিন্তু আমি তোমাদেরকে কাফির আখ্যা দিতে পারছি না। কারন তোমরা আমার দৃষ্টিতে অজ্ঞ।
ইমাম নববী (রহঃ) বলেনঃ
জেনে রাখুন! হকপন্থীদের মাজহাব এই যে, গুনাহের কারনে কিবলাপন্থী কোন ব্যক্তিকে কাফির আখ্যা দেয়া যায় না। এমনকি প্রবৃত্ত ও বিদা’আতের অনুসারী খারেজী, মুতাযিলা ও অন্যান্য সম্প্রদায়কেও কাফির আখ্যা দেয়া যায় না। যে ব্যক্তি ইসলাম ধর্মের কোন কিছুকে জেনে শুনে অস্বীকার করবে, সে ধর্মত্যাগী ও কাফির। তবে যদি নব মুসলিম হহয় অথবা দূরবর্তী এমন কোন গ্রাম্য এলাকায় বসবাসকারী হয় যার নিকট ইসলামের সমস্ত নিয়ম কানুন পৌঁছেনি, সে কাফির হবে না। তাকে ইসলামের বিধান সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। অবহিত অরার পরও যদি অস্বীকার করে তাহলে তাকে কাফির বলা যাবে। অনুরুপভাবে যদি যিনা অথবা মদ পান অথবা হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের হারাম কর্মকে জেনে শুনে হালাল মনে করে তাহলে সেও কাফির হয়ে যাবে।
ইবন তাইমিয়া (রহঃ) বলেনঃ
কখনো কখনো মৌখিক কথা কুফরীর পর্যায়ভুক্ত হয়। এর ফলে এ কথার প্রবক্তাকে কাফির আখ্যা দেয়া যেতে পারে এভাবে যে, যে ব্যক্তি এরুপ বলবে সে কাফির। কিন্তু কোন ব্যক্তি যদি কুফরী কথা বলে তাহলে নির্দিষ্ট করে তাকে কাফির আখ্যা দেয়া যাবে না- যতক্ষন পর্যন্ত তার বিপক্ষে এমন দলীল প্রতিষ্ঠিত হবে না যা তাকে কাফির হিসাবে প্রমান করে।
তিনি আরও বলেনঃ কোন পাপের কারনে বা আকিদাগত মতভেদের কারনে কোন মুসলিমকে কাফির বলা বৈধ নয়।
তিনি আরও বলেনঃ কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে কাফির বলা, ফাসিক বলা বা পাপী বলা আমি কঠোরভাবে নিষেধ করি। কেবল মাত্র যদি কারো বিষয়ে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সুনিশ্চিতভাবে কুফর, ফিসক বা পাপাচার প্রমানিত হয় তবেই বলা যাবে। আমি নিশ্চিত যে, মহান আল্লাহ এ উম্মাতের ভুলভ্রান্তি ক্ষমা করেছেন। আর ফিকহী মাস’আলার ভুল এবং আকিদা বিষয়ক ভুল উভয় প্রকার ভুলই এ ক্ষমার অন্তর্ভুক্ত।
মুহাম্মাদ ইবন আবদুল ওয়াহাব (রহঃ) বলেনঃ
কোন ব্যক্তি যদি ইসলামী বিধান সম্পর্কে না জেনে আবদুল কাদির জিলানী অথবা সাইয়েদ বাদাবীর (অথবা যে কোন কবরে) সিজদাহ করে, তাহলে তাকে কাফির আখ্যা দেয়া যাবে না। তবে ইসলামের বিধান ও দলীল সম্পর্কে জানার পরেও যদি সিজদাহ করে তাহলে সে কাফির।
নাসিরুদ্দিন আলবানী (রহঃ) বলেনঃ
সে সব মুসলিমদেরকে আমরা কাফির আখ্যা দিতে পারি না, কারন তাদের নিকট আখ্যাদানের দলীলগুলো স্পষ্ট করে উপস্থাপন করা হয়নি। কেননা তাদের নিকট যথেষ্ট পরিমান দাঈ নেই, যারা জনগনের দ্বারপ্রান্তে নির্ভেজাল তাওহীদের দাওয়াত পৌঁছাতে সক্ষম।
আবদুল আযীয ইবন বায (রহঃ) বলেনঃ
খারেজী সম্প্রদায় গুনাহের কারনে কাফির আখ্যা দিয়েছে এবং গুনাহগারদের চিরস্থায়ী জাহান্নামী বলেছে। মুতাযিলা সম্প্রদায়ও শাস্তির দিক থেকে (অর্থাৎ তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী) খারেজীদের সাথে ঐক্যমত পোষণ করেছে। কিন্তু তারা তাদেরকে কুফর এবং ঈমান উভয়ের মধ্যবর্তী স্থানের অন্তর্ভুক্ত করেছে। নিঃসন্দেহে এ সবই ভ্রষ্টতা। আহলুস সুন্নাহগন যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তা চির সত্য। আর তা হচ্ছে এই যে, কোন মুসলিমকে গুনাহের কারনে কাফির আখ্যা দেয়া যায় না যতক্ষণ পর্যন্ত সে গুনাহকে হালাল বলে জানবে।
ইবন হাযম আন্দালুসি (রহঃ) বলেনঃ
আমরা বলি যারাই কুফরী করে তারা ফাসেক, জালেম, অবাধ্য পাপী। আর প্রত্যেক ফাসেক, জালেম, পাপী কাফির নয়; বরং আল্লাহর মর্জি অনুযায়ী কিছুটা হলেও মুমিন থাকে।
সিদ্দিক হাসান খান ভুপালী (রহঃ) বলেনঃ
কবীরা গুনাহ বা অন্যান্য পাপের কারনে আহলে কিবলার কাউকে কাফের আখ্যায়িত করা যায় না।
ইমাম ত্বাহাবী (রহঃ) বলেনঃ
আমরা এমন কোন অপরাধের কারনে আহলে কিবলার কাউকে কাফির আখ্যায়িত করি না, যে অপরাধ তার (জান-মাল) হালাল করে না। আবার এটাও বলি না যে, সে যে অপরাধ করে তা তার ঈমানের ক্ষতি করে না।
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ)-এর ছাত্র ইমাম মুহাম্মাদ (রহঃ) বলেনঃ
কোন মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে, কোন মুসলিমকে কোন পাপের কারনে কাফির বলে সাক্ষ্য দিবে, সে পাপ যত বড়ই হোক না কেন। এটিই আবু হানিফার মত এবং আমাদের ফকীহগনের সকলের মত।
তথ্য সুত্রঃ
১. ফিতনাতুত তাকফীর- আলবানী
২. আল-ফিকহুল আকবর- আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর (অনুবাদ ও ব্যাখ্যা)
৩. তাওহীদের মুল নীতিমালা- আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপস
৪. ইসলামী আকীদা- আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর
৫. ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ- আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর
৬. জিহাদ ও জঙ্গীবাদ প্রেক্ষিত বাংলাদেশ- মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম https://m.facebook.com/Back.to.Allah.bangla/photos/a.130928300273259.14132.125167817515974/892932090739539/?type=1&source=48]
বিষয়: বিবিধ
১৩৩১ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুরা নামল, আয়াত- ৮৩,৮৪
৮৩.) আর সেদিনের কথা একবার চিন্তা করো, যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্য থেকে এমন সব লোকদের এক একটি দলকে ঘেরাও করে আনবো যারা আমার আয়াত অস্বীকার করতো। তারপর তাদেরকে (তাদের শ্রেণী অনুসারে স্তরে স্তরে) বিন্যস্ত করা হবে।
৮৪.) অবশেষে যখন সবাই এসে যাবে তখন (তাদের রব তাদেরকে) জিজ্ঞেস করবেন, “তোমরা আমার আয়াত অস্বীকার করেছো অথচ তোমরা জ্ঞানগতভাবে তা আয়ত্ত করো নি? যদি এ না হয়ে থাকে তাহলে তোমরা আর কি করেছিলে।”
সুরা যুখরুফ, আয়াত ৪৩,৪৪
৪৩.) অহীর মাধ্যমে তোমার কাছে যে কিতাব পাঠানো হয়েছে সর্বাবস্থায় তুমি দৃঢ়ভাবে তা আঁকড়ে থাকো । ( যদি আঁকড়ে ধরে থাক, তহলে)নিশ্চয়ই তুমি সোজা পথে আছো।
৪৪.) নিশ্চয়ই এ কিতাব তোমার জন্য পাঠ্য এবং তোমার কওমের জন্য পাঠ্য এবং শীঘ্রই তোমাদেরকে জিজ্ঞস করা হবে (এ কিতাব পড়েছো কি না)।
আপনার কাছে আমার একটি প্রশ্নঃ সৃষ্টিকর্তা আমাদের মাঝে তার কিছু কথা রেখেছেন। আপনি কি আপনার সৃষ্টি কর্তার প্রতিটি কথা বুঝে বুঝে পড়েছেন ?
আমার পক্ষ থেকে আপনার কাছে একটি নিবেদনঃ কুরআনের আলোকে কাফের ও মুসলিম এ বিষয়ের উপর একটি পোস্ট লিখবেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন