চট্টগ্রামের লালখান বাজার জমিয়াতুল আল ইসলামিয়া মাদ্রসায় সোমবারের বিস্ফোরণে আহত ছাত্রদের একজনের শরীরেও গ্রেনেড বা বোমায় ব্যবহার করা কোন উপাদান মেলেনি।

লিখেছেন লিখেছেন কথার_খই ০৯ অক্টোবর, ২০১৩, ০৩:২১:৪১ রাত



চট্টগ্রামের লালখান বাজার জমিয়াতুল আল ইসলামিয়া মাদ্রসায় সোমবারের বিস্ফোরণে আহত ছাত্রদের একজনের শরীরেও গ্রেনেড বা বোমায় ব্যবহার করা কোন উপাদান মেলেনি। মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক মোতাহার হোসেন। পরিবর্তন ডটকমকে তিনি বলেন, "আহতদের শরীরে স্প্লিন্টার কিংবা ওই ধরণের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। এমনকি এই ধরণের কোন ক্ষতও তাদের শরীরেও নেই।" ডা. মোতাহার হোসেন বলেন, “গতরাতে (সোমবার) যে ছেলেটা মারা গেলো তার শরীরের নব্বই শতাংশই পুড়ে গেছে, তাকে ঢাকা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলাম কিন্তু আত্মীয়-স্বজন না থাকায় সে এখানেই ছিলো।" ডা. মোতাহার আরো জানান, “অন্যান্য যারা আছেন তারাও আগুনে পুড়েছেন। কারো শরীরেই স্প্লিন্টার বা এ ধরণের কোন উপাদান পা্ওয়া যায় নাই। জীবিত একজনের শরীর আশিভাগ পুড়ে গেছে। অন্যদের অবস্থাও প্রায় একই।" এদিকে বিস্ফোরণের পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা অপরাধ দমন বিভাগ সিআইডির চট্টগ্রাম জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হ্লাচিং প্রু জানান, "সেখানে মানুষের শরীরের কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আমাদের চোখে পড়েনি। তাছাড়া আমরা সেখানে বিশেষ কিছু করিনি, যা করার থানা পুলিশই করেছে।" বিস্ফোরণের ধরণ নিয়ে নানা প্রশ্ন: লালখান মাদ্রাসায় সোমবার ঠিক কি ধরণের বিস্ফোরণ হয়েছিলো সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। যদিও ঘটনার পরপর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেছিলেন সেখানে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। পুলিশ কমিশনারের এই বক্তব্যের ২৪ ঘন্টা পার হলেও বিস্ফোরণের ধরণ সম্পর্কে প্রাথমিক কোন সিদ্ধান্তেই আসতে পারেনি পুলিশ। হেফাজতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয় হিসেবে পরিচিত এই মাদ্রাসার ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে সোমবার বিস্ফোরণে পাঁচজন গুরুতর আহত হন। এর মধ্যে হাবিব নামের আহত ছাত্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সোমবার বিকালে বিস্ফোরণস্থল থেকে তিনটি গ্রেনেড ও বেশকিছু গ্রেনেড তৈরীর মালামাল উদ্ধার করেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। সিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলামও বলেছিলেন বড় ধরণের বিস্ফোরণের আলামত পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় পুলিশ চট্টগ্রামের খুলশী থানায় দুটি মামলা করেছে, যার মধ্যে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে। মামলাটির ব্যাপারে খুলশী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএমপির পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার শাহ মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেছেন, "এই ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন, গোয়েন্দা পুলিশের বোমা নিস্ক্রিয়করণ ইউনিট কাজ করছে।" মামলাটির ব্যাপারে খুলশী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএমপির পাচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার শাহ মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেছেন, এই ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন, গোয়েন্দা পুলিশের বোমা নিস্ক্রিয়করণ ইউনিট কাজ করছে, সেখানে কি ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে তা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তদন্ত করে দেখছেন। ঘটনাস্থলে গোয়েন্দা পুলিশ ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডি টিম পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে। এছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম পরিদর্শন করেছে ঘটনাস্থল। অগ্নিকান্ডের কারন অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও ঘটনা করা হয়েছে। ফায়ার বিগ্রেডের বক্তব্য: ফায়ার বিগ্রেড তদন্ত কমিটির প্রধান আবদুল মালেক বলেছেন, “কিভাবে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে এখনো আমরা নিশ্চিত হতে পারেনি, ঘটনাস্থলে গিয়ে আমি যা দেখেছি তাতে মনে হয়েছে খুব বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে, তবে এই বিস্ফোরণের কারন অনুসন্ধানে আরো তদন্তের প্রয়োজন আছে।” “প্রায় ২০বছর ধরে ফায়ার সার্ভিসে আছি, কিন্তু এই ধরণের বিস্ফোরণের সাথে এই প্রথম মুখোমুখি হলাম,” জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, “কারন অনুসন্ধানে আগামী বৃহস্পতিবার আবারো আমরা ঘটনাস্থলে যাবোএবং শিগগিরই রিপোর্ট দেয়ার চেষ্টা করবো।” চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপ কমিশনার কুসুম দেওয়ান জানিয়েছেন, “বিস্ফোরণের ধরণ নিয়ে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছেনা। ঘটনাস্থল থেকে যেসব আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে সেসব বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে।” হেফাজতের প্রতিবাদ: বিস্ফোরণের পরপরই লালখান বাজার মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি ইজহারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ল্যাপটপের চার্জার থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে ঘটেছে। তাছাড়া সেখানে ছেলেদের রান্নার জন্য কেরোসিনের চুলা থাকায় আগুন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। একই সময়ে মাদ্রাসার ইসলামি আইন বিভাগের ছাত্র মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেছিলেন, মাদ্রসার এই কক্ষটিতে কম্পিউটারে কাজ করা হতো, মাদ্রসার বিভিন্ন প্রচার প্রকাশনার কাজে কক্ষটি ব্যবহৃত হতো। আবদুল্লাহ আরো জানায়, “দুইদিন আগে ছাত্রদের জন্য দশটি তোষক তৈরী করে আনা হয়েছিলো। অগ্নিকান্ডের সময় সেগুলো সেখানে ছিলো। লালখান বাজার মাদ্রাসায় বিস্ফোরণকে ‘সাজানো নাটক’ হিসেবে অভিযোগ করে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বিভিন্ন মাদ্রাসায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেছেন, আসন্ন আন্দোলনকে ঠেকানোর জন্য সরকার নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। সেজন্য তারা বোমা উদ্ধারের নামে নাটক করেছে, Click this link

বিষয়: বিবিধ

১৩৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File