কেন আল্লামা সাঈদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারতে চায় ভারত?

লিখেছেন লিখেছেন কথার_খই ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৫:৫৬:২৩ বিকাল

কেন আল্লামা সাঈদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারতে চায় ভারত?



~~~১) আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী অত্যন্ত জনপ্রিয় ও বিজ্ঞ ইসলামী রাজনীতিবিদ্‌। তাঁর প্রজ্ঞা, কুরআনে তাফসীর ও আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্বের কারনে জামায়াত এবং জামাতের চিন্তাধারার বাইরের অন্যান্য মানুষের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা এবং গ্রহনযোগ্যতা আকাশচুম্বী। মতিউর রহমান নিজামীর পর ওনারই জামায়াতের আমীর হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি।ভারতের ক্যালকুলেশন অনুযায়ী, আল্লামা সাঈদী জামায়াতের একটি অত্যন্ত শক্তিশালী স্তম্ভ। তিনি জামায়াতের আমীর হলে এই দলের জনপ্রিয়তা বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে এবং সাধারন মানুষ কাছে দলটির গ্রহনযোগ্যতা বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু হিন্দুস্তানী পলিসি মেকাররা সেটা চায়না কারন জামায়াতকে তারা বাংলাদেশে তাদের স্বার্থের প্রধান প্রতিবন্ধক মনে করে।মনমোহন সিং তো সরাসরি বলেই দিয়েছেন যে বাংলাদেশের ২৫% লোক জামায়াত সমর্থক এবং তারা ভারতের স্বার্থবিরোধী।এজন্যই ভারত তাঁর আজ্ঞাবহ সরকারকে কাজে লাগিয়ে প্রহসনের যুদ্ধাপরাধ মামলায় যেকোন মুল্যে আল্লামা সাঈদীসহ ইসলামী নেতাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের আগ্রাসী আধিপত্যবাদকে বাংলাদেশের মাটিতে চিরস্থায়ী রুপ দিতে চায়।

~~~২) ভারত নামে সেক্যুলার রাষ্ট্র হলেও কার্যত একটা ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র।সেখানকার রাজনীতিবিদ, চলচ্চিত্র অভিনেতাসহ অধিকাংশ মানুষ নিজেদের দেশকে হিন্দুস্তান বলে পরিচয় দিতেই ভালবাসে। গত ২ দশকে ভারতে যতগুলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে তা আর পৃথিবীর কোথাও হয়নি।সাম্প্রদায়িকতার আড়ালে মুসলমানদের উপর ভয়াবহ অত্যাচারের স্টীমরোলার চালাচ্ছে ভারতের উগ্র হিন্দুবাদীরা।ভারতের এসব উগ্র হিন্দুবাদী ও রাজনীতিবিদরা হিন্দুত্ববাদকে কাজে লাগিয়ে পুরো দক্ষিন এশিয়াকে নিয়ে অভিন্ন ভারত মাতা গড়তে বদ্ধ পরিকর। আর তাদের এই ঘৃন্য পরিকল্পনার পথে তারা বাংলাদেশের ভুমিতে আল্লামা সাঈদীকে একটা শক্তিশালী বাঁধা মনে করে। কারন যারা আল্লামা সাঈদীর তাফসীর শুনেছেন বা ওনার সম্বন্ধে ভাল খোজখবর রাখেন তারা ভালই করেই জানেন আদর্শ রাজনীতিবিদের পাশাপাশি তিনি আদর্শ ধর্মপ্রচারকও।গত কয়েক দশকে আল্লামা সাঈদী বাংলাদেশের অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে ইসলামের আলোকিত পতাকার ছায়াতলে নিয়ে এসেছেন যেটা ‘অভিন্ন ভারত’ মাতা গড়ার পথে একটা ভয়াবহ কুঠারাঘাত বলেই বিবেচনা করেছে ভারতের পলিসি মেকাররা।আর এজন্যই তারা যেকোন মুল্যে আল্লামা সাঈদীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে চায় আর যুদ্ধাপরাধে বিচার হচ্ছে সেই ভয়াবহ ভারতীয় এজেন্ডা যার মাধ্যমে তারা ভারত তাদের এই হত্যাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায়।

~~~৩) আল্লামা সাঈদী তাঁর বিভিন্ন বক্তৃতা ও বিবৃতিতে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তিনি ভারতের বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচক ছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘কালো চুক্তির’ বিরুদ্ধে করা লংমার্চে তিনিই নেতৃত্ব দিয়েছেন। আজকের যে ভুমি কমিশন দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাংলা ভাষাভাষী লোকদের বিতারনের চেষ্টা চলছে তাঁর বিরুদ্ধে আল্লামা সাঈদী সেই শুরু থেকেই সোচ্চার ছিলেন। ফারাক্কা বাঁধ, অসম পানি বন্টন নিয়ে চুক্তির বিরুদ্ধেও সাঈদী সোচ্চার ছিলেন। এককথায়, আল্লামা সাঈদী ছিলেন ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী একজন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ্‌। আর এই কারনেই ভারত বাংলাদেশে তাঁর নোংরা ভবিষ্যত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নিমিত্তে আল্লামা সাঈদীসহ জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী রাজনীতিবিদদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারতে চায়।

~~~ভারতের স্বার্থেই সে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনে । এরপর থেকেই ভারত বাংলাদেশকে তাঁর করদরাজ্যে পরিনত করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। সীমান্তে পাখির মত মানুষ হত্যা, সীমান্ত চুক্তির নামে বাংলাদেশ থেকে ভুমি অধিগ্রহন, ৫৭ জন সেনা অফিসার হত্যাসহ চলতে থাকে একের পর এক ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন। সম্প্রতি বাংলাদেশের অহংকার সুন্দরবনের দিকেও ওদের নজর পড়েছে। এদেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, সামরিক সব কিছু ধ্বংসে এখন আড়াল সব কলকাঠি নাড়ছে ভারত আর এই দেশের ক্ষমতাপাগল রাজনীতিবিদরা সেটা চেয়ে চেয়ে দেখছে। লক্ষ্য করুন, যারাই ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে তারাই জেলে। মাহমুদুর রহমান, ইলিয়াস আলী, সাকা চৌধুরী, আল্লামা সাঈদী, নিজামী, কাদের মোল্লাসহ ইসলামী অনেক ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী রাজনীতিবিদ্‌ আজ জেলে। এভাবে চলতে পারেনা। বন্ধুত্বের নামে মা সমতুল্য মাতৃভুমির বুকে একের পর এক ছুরি চালাতে পারেনা ভারত। এখন সময় এসেছে ভারতীয় আধিপত্যবাদ রুখে দেওয়ার।সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে রুখে দাড়াতে হবে আর প্রতিহত করতে হবে যুদ্ধাপরাধ বিচারের নামে ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদদের জুডিশিয়াল কিলিং করার ভয়াবহ চক্রান্ত। যে ভারত পাকিস্তানের সাথে চুক্তি করে বাংলাদেশকে বাধ্য করেছিল ১৯৫জন সত্যিকার পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীকে ছেড়ে দিতে, সে ভারত যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে নিজেদের সম্পৃক্ত করে আমাদের দেশের নিরপরাধ দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদদের হত্যা করবে - এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায়না।Click this link

বিষয়: বিবিধ

১৬০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File