সরকারের সঙ্গে সমঝোতার প্রশ্নই ওঠে না.... জামায়াতকে এখন ছোট দল বলা যাবে না। দেশের মানুষের একটি বিরাট অংশ এ দলকে সমর্থন করে।
লিখেছেন লিখেছেন কথার_খই ২৩ আগস্ট, ২০১৩, ০৮:৪৮:৪৭ রাত
এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ। সংসদ সদস্য। জামায়াতের অন্যতম নীতিনির্ধারণী ফোরাম ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। ১৯৬৫ সালে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তার জন্ম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে পিএইচডি গবেষণা করছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ।
১৯৭৭ সালে ছাত্রশিবিরে যোগ দিয়ে শুরু করেন ছাত্ররাজনীতি। পরে শিবিরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি, ঢাকা মহানগর সভাপতি ও ১৯৯৪ সালে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার। ছাত্ররাজনীতি শেষ করে ১৯৯৫ সালে জামায়াতে যোগ দেন এবং বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে ’৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে দলের রুকন হন। জামায়াতের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি ও ঢাকা মহানগরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি ও ঢাকা মহানগরীর দায়িত্ব পালন করেন। চারদলীয় জোটের ভরাডুবির মধ্যেও ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসন থেকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি জাতীয় সংসদের পানিসম্পাদ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য। ২০১২ সালে তিনি ঢাকা মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমিরের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করছেন।
হামিদুর রহমান আযাদ ১৯৯৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতে গিয়ে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে গ্রেফতার হন। ২০০০ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনে দুবার গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠার আক্রমণে তিনি আহত হন। বর্তমান সরকারের আমলে ২০১২ সালে তিনি তিন মাস কারাবরণ করেন।
তিনি ‘আলোড়ন’ নামের একটি মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করেন। বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করেন তিনি। তার লেখা প্রকাশিত বইগুলো হলো ‘দুঃশাসনের ২৫ বছর’ (১৯৭২-১৯৯৫), ‘দাওয়াতে দ্বীন ও গণভিত্তি রচনা’, ‘দ্বীপ ও উপকূলবাসীর বাঁচার অধিকার’। দ্বীপ উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান হিসেবে জলবায়ুর বৈরী প্রভাব মোকাবেলায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে চার কন্যাসন্তানের জনক হামিদুর রহমান আযাদ পেশায় একজন ব্যবসায়ী।
হামিদুর রহমান আযাদের নামে বর্তমানে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করে আছেন তিনি। সম্প্রতি আত্মগোপনে থেকেই দলের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নতুন বার্তা ডটকমের সঙ্গে কথা বলেছেন হামিদুর রহমান আযাদ। তার সাক্ষাৎকার নেন নতুন বার্তা ডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক নিয়াজ মাখদুম।
নতুন বার্তা: অনেকেই মনে করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে আপনারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছেন। তাদের পুনর্জন্ম দিয়েছেন।
হামিদুর রহমান আযাদ: দেশের শাসনক্ষমতায় কখন কারা আসবে, তা কোনো রাজনৈতিক দল নির্ধারণ করে না; জনগণের ভোটের মাধ্যমে সেটা নির্ধারিত হয়। নব্বইয়ের দশকে জনগণের মৌলিক ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য জামায়াতে ইসলামী তত্ত্বাবধায়ক সরকার-পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করেছিল। সেদিন তৎকালীন ক্ষমতাসীনরা যদি জনগণের দাবি মেনে নিয়ে আওয়ামী লীগকে আন্দোলনে নামার সুযোগ না দিত, তাহলে সেটা সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিত না এবং আওয়ামী লীগও এর সুফল নিয়ে ছিয়ানব্বই সালে ক্ষমতায় যেতে পারে না। একসময় আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকারের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছে এবং এর অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে; এখন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার-পদ্ধতি বাতিল করে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জামায়াতসহ বিরোধী দলের ওপর যে নীপিড়ন চালাচ্ছে, তার জন্য আওয়ামী লীগকে একদিন খেসারত দিতে হবে।
নতুন বার্তা: জানা গেছে, গত বছর তিনেক ধরে জামায়াত-শিবিরে নতুন করে কেউ আসছে না। বিষয়টি আপনারা কীভাবে দেখছেন?
হামিদুর রহমান আযাদ: নতুন লোক না আসার তথ্যটি বোধ হয় সঠিক নয়। প্রতিনিয়তই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে তরুণরা যোগ দিচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির হলো আদর্শবাদী আন্দোলন। দলের আদর্শ, উদ্দেশ্য ও নেতাকর্মীদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে মানুষ আদর্শবাদী এ আন্দোলনে শরিক হয়। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে একটি আধুনিক ইসলামি কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলে জনগণের মৌলিক অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তি ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে জামায়াতের এ আন্দোলন জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতকে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে জুলুম, অত্যাচার ও দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। তা সত্ত্বেও দিন দিন জনসম্পৃক্ততা যেমন বাড়ছে, তেমনি জামায়াতের প্রতি জনগণের সমর্থন, আস্থা ও সমবেদনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে দলের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাফল্য এর প্রতিফলন। সরকারের জুলুম-নির্যাতন যত বাড়বে, জামায়াত তত শক্তিশালী হবে এবং জামায়াতের আন্দোলনে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়বে।
নতুন বার্তা: জামায়াতের কোনো সংস্কার হবে কি?
হামিদুর রহমান আযাদ: সংস্কার-সংশোধন একটি গতিশীল আন্দোলনের নিয়মিত কাজের অংশ। জামায়াত দল পরিচালনার ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং সব সময় দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা করে আসছে। কাজের গতিশীলতা বাড়ানোর জন্য যখন যেখানে সংস্কার প্রয়োজন, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে গঠনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন কোনো সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা জামায়াতের নেই।
নতুন বার্তা: জামায়াত নিষিদ্ধ হলে কী করবেন?
হামিদুর রহমান আযাদ: সংবিধানের ৩৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জামায়াত একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে কাজ করার অধিকার রাখে। সংবিধান এ অধিকার দিয়েছে। সরকার যদি জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তা হবে সংবিধান ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা গণতান্ত্রিক কাজ হতে পারে না। সরকার যদি এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করে, তাহলে জামায়াত আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি জনগণকে নিয়ে সরকারের অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। জনগণই তাদের সাংবিধানিক অধিকার আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় করবে।
‘সার্বভৌমত্বের মালিক আল্লাহ’- এটা যদি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে ‘রাষ্টধর্ম ইসলাম’ কথাটিও বর্তমান সংশোধিত সংবিধানের অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটাও জনগণকে ধোঁকা দেয়ার একটি অপকৌশল ছাড়া আর কিছু নয়। এ ছাড়া গঠনতন্ত্রের ত্রুটির কারণে যদি জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয় এবং বিরোধী দল দমনে যদি জামায়াতকে নিষিদ্ধের ষড়যন্ত্র করা হয়, তাহলে এটাই প্রতীয়মান হবে যে, আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশালি নীতিতে বিশ্বাস করে।
জামায়াত ছাড়া আরও ১০টি দলের গঠনতন্ত্রে যে ত্রুটির কথা বলা হয়েছে, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের সূত্র ধরে সরকার ওই দলগুলোর বিরুদ্ধেও একই ষড়যন্ত্র করতে পারে। এ আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। আর এটা হলে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত হবে; দেশ একটি মহাসংকটে পড়বে।
নতুন বার্তা: অনেকেই বলছেন, জামায়াত আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাবে। কারণ, স্বাধীনতার পরপর আন্ডারগ্রাউন্ডে সাংগঠনিক কাজ চালানোর নজির আছে জামায়াতের।
হামিদুর রহমান আযাদ: জামায়াতে ইসলামী জনগণের দল। জামায়াত এ দেশের জনগণের সঙ্গে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক অধিকারের ভিত্তিতেই জামায়াত গঠনতান্ত্রিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
নতুন বার্তা: আন্ডারগ্রাউন্ডে যাবে কি না?
হামিদুর রহমান আযাদ: মনে রাখতে হবে, সেই সময়কাল ও আজকের দিন এক নয়। জামায়াতকে এখন ছোট দল বলা যাবে না। দেশের মানুষের একটি বিরাট অংশ এ দলকে সমর্থন করে। ইতিমধ্যে রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সংসদে প্রতিনিধিত্বও রয়েছে। সুতরাং এই অবস্থায় আন্ডারগ্রাউন্ডে যাওয়ার প্রশ্ন ওঠা অবান্তর।
নতুন বার্তা: দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দেয়া রায় যদি কার্যকর হয়, তখন জামায়াত কী করবে?
হামিদুর রহমান আযাদ: আমরা মনে করি, আমাদের নেতারা নির্দোষ। সরকার অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে পরে একটি কালো আইনের অধীনে সাজানো বিচারের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছি। আশা করছি, সেখানে তারা ন্যায়বিচার পাবেন এবং সসম্মানে জনগণের কাছে ফিরে আসবেন।
নতুন বার্তা: যদি রায় কার্যকর হয়?
হামিদুর রহমান আযাদ: বিষয়টি এখনো বিচারাধীন। আমরা মহামান্য আদালতের কাছে ন্যায়বিচার-প্রত্যাশী। যদি এ ক্ষেত্রে সরকার অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে দেশে এমন অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে যা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। আশা করি, সরকার সে ভুল করবে না।
নতুন বার্তা: অভিযোগ উঠেছে, জামায়াতের কেউ কেউ সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আসলে বিষয়টি কী?
হামিদুর রহমান আযাদ: এটা জামায়াতের বিরুদ্ধে সরকারের ষড়যন্ত্রের একটা অংশ। এর মাধ্যমে সরকার ১৮ দলীয় জোটের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি করতে চায়। সে জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। বর্তমান সরকার জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ২৪০ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে; গুম করেছে বেশ কয়েকজনকে; সরকারের নির্দেশে পুলিশ আর দলীয় সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়ে পঙ্গু হয়েছে শত শত নেতাকর্মী; কয়েক হাজার নেতাকর্মী কারাগারে আটক। এই ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে সমঝোতার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। এটা জামায়াতের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র।
নতুন বার্তা: আপনাদের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি কী?
হামিদুর রহমান আযাদ: ১৮ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিসহ সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে জামায়াতের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হবে। আর আমাদের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে এবং জামায়াত-শিবিরের ওপর দমন-পীড়নসহ সরকারের অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামী নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে কর্মসূচি পালন করে আসছে। জোটের কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় রেখে আগামী দিনে সরকার পতনের আন্দোলন আরো জোরদার করা হবে।
নতুন বার্তা: আপনাকে ধন্যবাদ।
হামিদুর রহমান আযাদ: নতুন বার্তা ডটকমকেও ধন্যবাদ।
Click this link
বিষয়: বিবিধ
১২৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন