যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সর্বশেষ রায়ে দেশটির অনেক সমস্যার চিত্র ফুটে উঠেছে। শোনা সাক্ষী ও ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে অভিযুক্তদের মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে।

লিখেছেন লিখেছেন কথার_খই ২৬ জুলাই, ২০১৩, ০৬:১১:৪৬ সকাল

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সকল প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ

বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে আল জাজিরা



বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সর্বশেষ রায়ে দেশটির অনেক সমস্যার চিত্র ফুটে উঠেছে। শোনা সাক্ষী ও ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে অভিযুক্তদের মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে। এ ধরনের অবিচার নতুন করে অবিশ্বাস, বিভক্তি ও ঘৃণার জন্ম দেবে যা এখনই বাংলাদেশে বিরাজ করছে। এ বেদনা বাংলাদেশকে বয়ে বেড়াতে হবে। গত সোমবার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার অনলাইনে প্রকাশিত এক মন্তব্যে এ কথা বলা হয়েছে। তালহা আহমেদের লেখা এই মন্তব্যে গত সপ্তাহে ট্রাইব্যুনালের রায়, সহিংসতা, জামায়াতে ইসলামীর অবস্থা, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমসহ নানা বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর আরো দুইজন নেতাকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিয়েছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া বাংলাদেশে জন্ম নেয়া বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে তাদের অবর্তমানেই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে নির্বাচন আসন্ন। আর এ সময় বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নিতে সরকার আগ্রহী হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশ্ন হলো এর মাধ্যমে ন্যায় বিচার ও জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে কতটুকু মূল্য দিতে হবে। এ বিচারের ফলে দেশটিতে বিভক্তি বেড়েছে। দেশটির প্রতিষ্ঠা ও পরিচিতি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিচ্ছে। যদিও ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রচারণায় যুদ্ধাপরাধের বিচার বড় কোনো অঙ্গীকার ছিলো না।

মন্তব্য প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিলো রক্তক্ষয়ী এবং দুই পক্ষই সহিংসতার জন্য সমানভাবে দায়ী ছিলো। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইনে গঠিত ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনো ইনস্টিটিউটের সংযোগ নেই। এছাড়া স্বাধীনতাপন্থী যারা অপরাধ করেছিলো তাদেরও বিচারের কোনো ক্ষমতা ট্রাইব্যুনালকে দেয়া হয়নি। এটা ন্যায় বিচারের মূলনীতির চরম লঙ্ঘন। আর এটা স্পষ্ট যে, এই বিচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। হয়তো এ বিষয়ে অনেকেই ভিন্নমত পোষণ করবে। অভিযুক্ত সবাই বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দ। যাদের বেশির ভাগই জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সকল বিচার সফলভাবে শেষ হলে সকলের হয় মৃত্যুদণ্ড নইলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। যার ফলে জামায়াতে ইসলামী শীর্ষ নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়বে। যদিও ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী একটি ছোট এবং কম তাত্পর্যপূর্ণ রাজনৈতিক দল ছিলো।

মন্তব্যে বলা হয়, ট্রাইব্যুনালের সকল প্রক্রিয়ায় ঘাটতি, অযথার্থতা ও অসম্পূর্ণতা রয়েছে। এ আদালতের লিগ্যাল স্টান্ডার্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক বার এসোসিয়েশন ও অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। তাদের মতে, এ আদালতে অভিযুক্তরা যথাযথভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে সক্ষম হবে না। আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষীর সংখ্যাও হাস্যকরভাবে কমানো হয়েছে। সাক্ষীর সংখ্যা এতো পরিমাণে কমানোর জন্য প্রাসঙ্গিকতা নেই। কারণ এটা সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের পূর্বশর্ত।

মন্তব্যে আরো বলা হয়, বর্তমান সরকার ন্যায় বিচারের চেয়ে পত্রিকার শিরোনামে জয়টাকেই বেশি দেখতে আগ্রহী হবে। ট্রাইব্যুনাল দেশটির পুরানো ক্ষত সারিয়ে তুলছে না বরং বাড়াচ্ছে। বাঙালিদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করছে। রাস্তায় বিক্ষোভ, সহিংসতায় মৃত্যু, জখম, শত শত মানুষের জেলে যাওয়া সেই বিভক্তিরই প্রমাণ দেয়। অভিযোগের বিষয়ে যেসব প্রমাণ আনা হচ্ছে তার বিশ্বাসযোগ্যতা খুবই কম। শোনা সাক্ষী ও ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে অভিযুক্তদের মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে। এ ধরনের অবিচার নতুন করে অবিশ্বাস, বিভক্তি ও ঘৃণার জন্ম দেবে যা এখনো বাংলাদেশে বিরাজ করছে। এ বেদনা বাংলাদেশকে বয়ে বেড়াতে হবে,

Click this link

বিষয়: বিবিধ

১৬৫৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File