এই রায়ের সবচেয়ে বিপদজনক দিক হল এখানে জামায়াত-শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকে সরকারী-বেসরকারী কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি না দিতে সুপারিশ করা হয়েছে যা সম্পুর্ন সংবিধানবিরোধী।জামায়াত-শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।
লিখেছেন লিখেছেন কথার_খই ১৬ জুলাই, ২০১৩, ০৯:০৩:০১ রাত
~~ক) এই রায়ের সবচেয়ে বিপদজনক দিক হল এখানে জামায়াত-শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকে সরকারী-বেসরকারী কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি না দিতে সুপারিশ করা হয়েছে যা সম্পুর্ন সংবিধানবিরোধী।জামায়াত-শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।
আর সংবিধানে পরিস্কারভাবে লেখা আছে রাষ্ট্র ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করবে। কিন্তু তা না করে সরকার তার নিজের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভিন্নমতাবলম্বী জামায়াত-শিবিরের নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল।তাছাড়া জামায়াত-শিবির তো কোন নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। তাই এটা সুস্পষ্টতঃ সংবিধান লঙ্ঘন। এরপর, পেট বাচানোর তাগিদে, অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে জামায়াত-শিবিরের সামনে যুদ্ধ ছাড়া আর কোন বিকল্প কি রইল? এই কথা সর্বজনস্বীকৃত যে রাষ্ট্রের শোষন,বঞ্চনা নাগরিকদের চরমপন্থার দিকে ঠেলে দেয়।পৃথিবীর সব দেশেই এর ভুড়ি ভুড়ি প্রমান আছে।৭১’এ ও আমরা এই শোষন, বঞ্চনার কারনেই পাকিস্তান থেকে আলাদা হতে লড়াই করেছিলাম। আজকের এই রায়ের ফলে ভবিষ্যতে জামায়াত-শিবির যদি আত্নরক্ষার্থে চরমপন্থার আশ্রয় নেয় তাহলে কি তাদের খুব বেশি দোষ দেওয়া যাবে? এর উত্তর ‘না’ কারন আত্নরক্ষার অধিকার সবার আছে। আর দেশে যদি চরমপন্থার বিস্তার ঘটে তাহলে সবার আগে এর শিকার তো বাম-লীগের চেতনাধারীরাই হবে।(vp)এই রায়ের বিচারক বা রাষ্ট্রযন্ত্র কি তাদের বাঁচাতে পারবে? এই রায় হয় বেলজয়াম না হয় হিন্দুস্তান থেকে এসেছে। তা না হলে, কোন বিচারক যার ন্যুনতম নৈতিক মুল্যবোধ ও সংবিধান জ্ঞান আছে সে কিভাবে সে এই জঘন্য ও ভয়াবহ রায় লিখতে পারে?
~~খ) গতকালের গোলাম আজমের রায় জামায়াত ধ্বংসে ভয়াবহ একটা পদক্ষেপ। কোনভাবেই গোলাম আজমকে ফাঁসাতে না পেরে আদালত সরকারের নীলনকশার রায়ে এখতিয়ার বহিভূতভাবে জামায়াতকে ‘ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন’ বলে আখ্যায়িত করল।আর এভাবেই তারা ভবিষ্যতে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের একটা গ্রাউন্ড তৈরী করল।বিচার হয়েছে গোলাম আজমের, প্রমানিত হলোনা কোন কিছু অথচ রায় ঘোষনার নামে জামায়াতকেই ফাঁসানো হলো।ট্রাইবুনালের আইনে কি আছে সেটা জানা আমাদের মত সাধারন নাগরিকদের নৈতিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়েনা।নৈতিক অবস্থান থেকে যে প্রশ্নটা স্বাভাবিকভাবেই আসবে তা হল, বিচারটা কার হচ্ছে? গোলাম আজমের নাকি জামায়াতের? যদি জামায়াতের বিচার না হয়, তাহলে এই রায়ে অন্যায়ভাবে জামায়াতকে টেনে আনা হবে কেন? কোন সংগঠনকে আত্নপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ না দিয়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ‘ক্রিমিনাল অর্গানেইজেশন’ বলতে কোন বিচারপতি কি পারে?
~~গ) গতকালের রায় পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্যতম যে প্রহসন তৈরী করেছে তা হল একদিকে এই রায়ে বিচারক বলেছে যে প্রসিকিউশন গোলাম আজমের বিরুদ্ধে কোন কিছু প্রমান করতে ব্যর্থ হয়েছে।এরপর সেই বিচারকই আবার বলল, তারা নাকি নিজ থেকেই তথ্য উপাত্ত যোগাড় করে রায় দিয়েছেন। আর এভাবেই অন্যায়ভাবে তারা গোলাম আজমকে ৯০ বছর সাজা দিয়েছেন। কি বর্বর,হাস্যকর বিচার!!পৃথিবীতে কোন সভ্য আদালতে এটা কি হয়েছে? বিচারের নিয়ম হচ্ছে মাননীয় বিচারকগন আদালতে সরকার পক্ষ, তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং আসামী পক্ষের যুক্তিতর্কের উপর ভিত্তি করে রায় দেবেন –এটাই আইনের নিয়ম।এখন বিচারক যদি প্রমান, যুক্তিতর্কের বাইরে গিয়ে নিজের বিবেচনায় পছন্দমত পক্ষপাতমুলক রায় দিয়ে কোন নির্দোষ মানুষকে জুডিশিয়াল কিলিং এর বন্দোবস্ত করেন, তাহলে এত মাস ধরে কোর্টে আইনজীবীদের এসব বিচারিক কার্যক্রমের কি দরকার ছিল? কোন সভ্য মানুষের পক্ষে একে প্রহসন ছাড়া আর কিছু বলা সম্ভব নয়।
~~ঘ)আরেকটা জিনিস না বললেই নয় , আমাদের তরুন সমাজের একটা বড় অংশের সমস্যা হল তাদের চিন্তাধারা মিডিয়া দ্বারা অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত। তারা সত্য উদ্ঘাটনে মহান স্রষ্টা আল্লাহ প্রদত্ত মেধাকে কাজে না লাগিয়ে মিডিয়ার প্রপাগান্ডাকেই নিজস্ব মেধার উপর চাপিয়ে নিজেদের স্বাধীন স্বকীয়তাকে অবমুল্যায়ন করে। এজন্য রায়ে কি আছে সেটা না পড়ে তারা গতানুগতিক প্রপাগান্ডায় গা ভাসিয়ে রায়কে ‘আঁতাত’, ‘ভেতরের খেলা’ ইত্যাদি বলে অভিহিত করে যেটা জাতির মেধাবী তরুণদের কাছে কাম্য নয়। আঁতাত বলে যেটা ছড়ানো হচ্ছে সেটা সরকারের একটা অপকৌশল যাতে করে ১৮দলীয় জোটে জামায়াতের সম্বন্ধে সংশয়ের জন্ম হয়।
~~ঙ) উপসংহারে বলা যায়, এসব প্রহসনের বিচারের নামে যে খারাপ উদাহরন তৈরী হচ্ছে তার বলী ভবিষ্যতে আমি,আপনি এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যে কেউ হতে পারি। তরুনদের বলব, আজ হয়ত আপনাদের কারো রাজনৈতিক বিশ্বাসের অনুগত কোর্ট, পুলিশ, সরকার।এজন্য আপনি সত্যকে জেনেও অস্বীকার করছন। কিন্তু হাওয়াটা যেদিন দক্ষিন দিক থেকে না এসে উত্তর দিক থেকে আসবে সেদিন আপনার অন্ধ বিবেচনাবোধই আপনাকে বিষাক্ত সাপের মত ছোবল মারবে।অন্যায় আগুনের মত।একে প্রশ্রয় দিলে সেটা যে একদিন আপনাদেরও গ্রাস করবে না সেটা কি আপনি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারেন? উৎস..... Click this link
বিষয়: বিবিধ
১৫২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন