অধ্যাপক গোলাম আযমকে শাহবাগ মঞ্চে ফাঁসি দিন...... শনিবার প্রধনমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে দেয়া এক খোলা চিঠিতে অধ্যাপক আযমের স্ত্রী সৈয়দা আফিফা আযম এই আহ্বান জানান

লিখেছেন লিখেছেন কথার_খই ০৫ মে, ২০১৩, ০১:৩৭:২৩ রাত

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমকে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মিসেস আযম।



শনিবার প্রধনমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে দেয়া এক খোলা চিঠিতে অধ্যাপক আযমের স্ত্রী সৈয়দা আফিফা আযম এই আহ্বান জানান।

চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মিসেস আযম বলেন, ‘আর কত নাটক করবেন? অনেক তো হলো! প্রহসনের এক ‘ট্রাইব্যুনাল’ নাটক করে সমগ্র বিশ্বের কাছে দেশের মান সম্মান সব খুইয়েও আপনার আত্মা তৃপ্ত হয়নি! ফাঁসিতেই যখন ঝুলাবেন, তাহলে এত তামাশা না করে আপনার সৃষ্ট ‘শাহবাগ মঞ্চে’ (যেখানে আপনার মন পড়ে থাকে বলে আপনি সংসদে আবেগ সহকারে বক্তব্য দিয়েছেন) প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিন।’

এতে বলা হয়, ‘গত সপ্তাহে এক প্রতিমন্ত্রী একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে বলেছেন- আরও ফাঁসির রায় আসছে। পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো ব্যক্তি বিচার বিভাগের রায় সম্পর্কে এমন আগাম বক্তব্য প্রদান করলে তার কি পরিণতি হতো তা বুঝার ক্ষমতা আপনার না থাকলে আপনার জন্য করুণা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।’

‘যদি এবারই প্রথম সরকারের কোনো কর্তা ব্যক্তি কর্তৃক এ ধরনের বক্তব্য প্রদান করা হতো তাহলে হয়তো ধরে নেয়া যেতো যে, তিনি মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন। কিন্তু, বিগত ৪ বছসর থেকে আপনার দল/জোটের প্রায় ডজনখানেক মন্ত্রী/শীর্ষ নেতা এই ফাঁসিতে ঝুলানোর বক্তব্য দিয়ে আসছেন’ অভিযোগ করেন মিসেস আযম।

তিনি বলেন, ‘বিচারের দরকার নেই, ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিলেই হলো, দু-চারটাকে লটকিয়ে দিলেই আর এত লাফালাফি হতো না। -- তারিখের মধ্যে ফাঁসির রায় আসছে। গোলাম আযমকে পাঁজাকোলা করে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাবো। আরও ফাঁসির রায় আসছে, ইত্যাদি কথা আপনার মন্ত্রী/ নেতাদের মুখে মুখে।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মিসেস আযম বলেন, ‘১৯৭৩ সালের আইন ২০১০ সালে সংশোধন করে বেসামরিক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করলেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল সাজালেন নিজের মন মতো। দলীয় আইনজীবিদেরকে প্রসিকিউটর নিয়োগ দিয়ে সাজানো নাটক শুরু করলেন।’

‘সেই নাটকের এক অধ্যায় শেষ হয়েছিল স্কাইপ কেলেঙ্কারির মাধ্যমে। সমগ্র বিশ্ব আশা করেছিল যে, অস্বচ্ছ, পক্ষপতদুষ্ট এবং অগ্রহণযোগ্য এই ট্রাইব্যুনাল বাতিল করা হবে’ যোগ করেন তিনি।

মিসেস আযম অভিযোগ করেন, ‘ট্রাইব্যুনাল আপনার পছন্দমত রায় না দেয়ার ফলে এই নাটকে নতুন মাত্রা যোগ করার জন্য আপনি নাস্তিক ব্লগার বামদেরকে দিয়ে শাহবাগে এক আন্দোলন শুরু করে, মন্ত্রী/এমপিদের পাঠিয়ে একাত্মতা ঘোষণা করলেন। এরপর সংসদে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে আপনি ট্রাইব্যুনালের বিচারকদেরকে আহবান জানালেন (যা পরোক্ষভাবে তাদের জন্য হুকুম) যেন, রায়ে ‘ফাঁসি চাই’ দাবির প্রতিফলন ঘটানো হয়।’

‘এর অর্থ দাঁড়ালো- স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী আদালতের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নয়, বরং উনার ইচ্ছা অনুযায়ী যেন আদালত রায় প্রদান করে তার নির্দেশ প্রদান করছেন। এটা কি কোনো সভ্য, গণতান্ত্রিক দেশে সম্ভব? হ্যাঁ, শুধু আপনাদের দ্বারাই সম্ভব’ বলেন তিনি।

চিঠিতে বলা হয়, ‘জাতিসংঘ, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও আইনজীবীদের সংগঠন এবং আন্তির্জাতিক খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব প্রথম থেকেই এই ট্রাইব্যুনালের নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দৃঢ়ভাবে সন্দেহ পোষণ করলেও আপনি তোয়াক্কা করেননি। কারণ, আপনি জানেন যে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করতে না পারলে আপনার পক্ষে ক্ষমতার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত সম্ভব নয়।’

মিসেস আযম বলেন, ‘সমগ্র বিশ্বের দিকে চেয়ে দেখুন- কোথাও ইসলামি আন্দোলনকে জেল-জুলুম, মামলা-হামলা, হত্যা, ফাঁসি ইত্যাদি দিয়ে দমিয়ে রাখা যায়নি। বাংলাদেশেও যাবে না। এদেশের মাটিতে ইসলামের শিকড় অতি শক্ত।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘জীবন ও মৃত্যুর ফয়সালা আসমানে হয়, জমিনে নয়। আপনাদের লক্ষ্য দুনিয়া, তাই এই দুনিয়াতেই ক্ষমতা পেয়েছেন এবং এর দাপটে আখেরাত বিস্মৃত হয়ে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে এই নিরীহ, বৃদ্ধ ও সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকে এত জুলুম করছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে আখেরাতে বিশ্বাস করি, এবং সকল জুলুমের প্রতিফল আল্লাহর কাছেই কামনা করি।’

‘সময়ই বলে দেবে কে সঠিক আর কে বেঠিক। আমার বৃদ্ধ নিরীহ স্বামীর ওপর আপনার নির্যাতন আর সইতে পারছি না। তাই, সত্ত্বর অধ্যাপক আযমকে আপনার শাহবাগ মঞ্চে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে উনাকে তাড়াতাড়ি জান্নাতে যাবার পথ সুগম করে দিন’ যোগ করেন মিসেস আযম।

কপি পোষ্ট

Click this link

বিষয়: বিবিধ

২২১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File