রক্তাক্ত পাজামা দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘মৃত্যুকে পরোয়া করি না। নাগরিক সমাজের প্রতি শুধু এতোটুকু বলবো, তিনটি দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবো। আমৃত্যু অনশন চলবে।’
লিখেছেন লিখেছেন কথার_খই ২১ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:৪৮:০৩ বিকাল
কপি পোষ্ট.........
আমার দেশ’র সম্পাদক মাহমুদুর রহমান তার সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন জামায়াতের অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
রোববার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে তার অনশন ভাঙ্গানোর জন্য জামায়াতের দুই আইনজীবীর অনুরোধের পরও তিনি তার দৃঢ় সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন তাজুল ইসলাম।
এ সময় সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও ট্রাইব্যুনালে ডিফেন্সের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
প্রিজন সেলে সাক্ষাতের সময় অনশন ভাঙ্গার জন্য তারা মাহমুদুর রহমানকে অনুরোধ করলে তিনি খুব মৃদুস্বরে তার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তার শারীরিক অবস্থা খুবই দুর্বল। তবে তিনি তার সিদ্ধান্তে অনঢ়। এ কথাগুলো তিনি খুব আস্তে আস্তে আমাদের কাছে বলেছেন।’
অন্যদিকে, রোববার মাহমুদুর রহমানের রিমান্ডের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার স্ত্রীর দায়ের করা রিটের আদেশ খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এর আগে ১৭ এপ্রিল দুপুরে মাহমুদুর রহমানকে সিএমএম কোর্টে নেওয়া হলে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিক ও আইনজীবীদের সঙ্গে তিনি ডিবি কার্যালয়ে রিমান্ডে বিভিন্ন নির্যাতনের অভিযোগ করেন।
নির্যাতিত মাহমুদুর রহমান তার বৃদ্ধা মায়ের শারীরিক অসুস্থতা বিবেচনা করে নির্যাতনের বিবরণ না দিয়ে কেবল বলেন, ‘নির্যাতনের বিবরণ দেওয়ার ভাষা আমার জানা নেই। বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।’
রক্তাক্ত পাজামা দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘মৃত্যুকে পরোয়া করি না। নাগরিক সমাজের প্রতি শুধু এতোটুকু বলবো, তিনটি দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবো। আমৃত্যু অনশন চলবে।’
১১ এপ্রিল আমার দেশ কার্যালয় থেকে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তিনটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১৩ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে তার ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে।
অনশনের ব্যাখ্যায় মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘অনশনের মাধ্যমে শরীরকে কষ্ট দেওয়া ইসলামে বৈধ নয়। কিন্তু সরকারের জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে তিনি না খেয়ে থাকছেন।’
তার মতে, পবিত্র কোরআন ও হাদীস অনুযায়ী জালিম শাসকের বিরুদ্ধে মুসলমানদের প্রতিবাদ করতে হবে। শক্তি থাকলে হাত দিয়ে, তা না পারলে মুখ দিয়ে এবং তাও না পারলে অন্তর থেকে ঘৃণা করতে হবে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু আমি বন্দী এবং রিমান্ডে নির্যাতনে রয়েছি, সেহেতু আমার প্রতিবাদের সর্বোচ্চ শক্তি হিসেবে অনশন করছি।’
তার অক্ষমতার পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ এই ত্যাগের চেষ্টাকে আল্লাহ ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রের নিপিড়ন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে অনশন গণতান্ত্রিক লড়াই সংগ্রামের একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। জুলুমের বিরুদ্ধে নৈতিক, আদর্শিক ও যার যার ধর্মীয় বিশ্বাসের জায়গা থেকে লড়াই সংগ্রাম চালানো ন্যায়সঙ্গত।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বিধিবিধান থাকা সত্ত্বেও পুলিশের হেফাজতে একজন অসহায় নাগরিকের নির্যাতন মানবিক মর্যাদার চরম লঙ্ঘন। আমি দেশী ও বিদেশি সকল মানবাধিকার কর্মী ও সংগঠনের কাছে এই সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
মাহমুদুর রহমান তিনটি দাবিতে আমরণ অনশন করছেন বলে তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন। ১৫ এপ্রিল সকাল থেকে তিনি কিছুই খাচ্ছেন না।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- আমার দেশ’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও কারাবন্দী সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মা মাহমুদা বেগমের নামে দায়ের করা উদ্দেশ্যমূলক ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
আমার দেশ’র ছাপাখানা খুলে দিতে এবং সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করে পত্রিকা প্রকাশের সুযোগ করে দিতে হবে।
আমার দেশ’র বাইন্ডিং ও প্রেসের গ্রেফতারকৃত ১৯ কর্মচারিকে মুক্তি দিয়ে সব ধরনের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে,
Click this link
বিষয়: বিবিধ
১৮১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন