একমাত্র মুসলিম বলে কথা!
লিখেছেন লিখেছেন স্ফিয়াহ ০৭ জুন, ২০১৩, ১০:১৮:৩৫ রাত
শতকরা ৯০% মুসলিমের দেশ হয়ে আমরা বাঙ্গালী, বাংলাদেশী বলে কি উপহার দিতে পেরেছি, তা ভাবার সময় হয়েছে। আইন-আদালতে স্বেচ্ছাচারিতা করেছি, ক্ষমতা লাভের প্রতিযোগিতা করছি, ন্যায়নিষ্ঠভাবে প্রশাসনিক কার্য পরিচালনা করতে দেই না, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারিনি, ধর্ম বৈষম্য দূর করতে পারিনি, হত্যাকাণ্ড-গুম-নির্যাতন বন্ধ করতে পারিনি, ধনী থেকে আরও ধনী হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছি, নিঃস্ব থেকে আরও নিঃস্ব করেছি।
এজন্য মহান আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীন বলেন :
“সাবধান! সৃষ্টি আল্লাহর, আইনও আল্লাহর।” (সূরাহ্ আল আ‘রাফ ৭ : ৫৪)
“বিধান দেয়ার অধিকার শুধু আল্লাহরই।” (সূরাহ্ ইউসুফ ১২ : ৪০)
“তারা কি জাহিলী যুগের আইন বিধান চায়? দৃঢ় বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য আইন-বিধান প্রদানে আল্লাহ হতে কে বেশী শ্রেষ্ঠ?” (সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ ৫ : ৫০)
অথচ আমরা যা করেছি তা হলো, ইসলামকে সাংঘর্ষিক উত্থাপন করে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছি। যেমন ইসলাম মহিলা নেতৃত্ব হারাম করেছে। অথচ মহিলাদের নারী স্বাধীনতার কথা বলে আমরা তা বাস্তবে মেনে চলছি এবং আগামীতে আরও রাস্তা প্রশস্ত করছি। কুরআনে সুদকে হারাম করা হয়েছে, অথচ ব্যাংকিংসহ সকল বিল-পত্রে সুদী লেনদেনে বাধ্য করছি। ইসলামী শিক্ষা অর্জন করা র্ফায, অথচ মাদরাসা শিক্ষাকে জেনারেল শিক্ষার মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে দিয়ে সমমর্যাদা থেকে বঞ্চিত করছি। এমনিভাবে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতদের তুলনায় আলিম-উলামাদের ন্যায্য অধিকার খর্ব করছি। রসূলুল্লাহ (সঃ)-এর সুন্নাত দাড়িকে অসম্মান করা হচ্ছে। আমরা আজকে যারা সমাজে দাড়ি নিয়ে চলাফেরা করি, তাদের সম্মান তো দূরের কথা বিদ্রƒপ করতে পিছপা হই না এবং হেয় করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকি।
এ সকল শান্তির বদলে অশান্তি কি জন্যে হচ্ছে তা আমাদের ভাবতে হবে। জানতে হবে মুসলিম শাসক হিসেবে এই কাজগুলোর সমর্থন রয়েছে কিনা বা এই কাজগুলো বাস্তবায়নে মুসলিম জনগণের ওপর তা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে কিনা। যদি মুসলিম শাসকের কারণে এই কাজগুলো হয় তাহলে মহান আল্লাহ হুশিয়ার করে বলেছেন :
“আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, সে অনুযায়ী যারা বিচার ফায়সালা করে না তারাই কাফির, ..... তারাই যালিম, ..... তারাই ফাসিক্ব।” (সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ ৫ : ৪৪, ৪৫, ৪৭)
এজন্যই ব্যক্তির চেয়ে শাসনকর্তার হিসাব হবে স্পেশাল। এভাবে যতদিন আমরা ইসলামের অনুশাসন অমান্য করব ততদিন আল্লাহর রহমাত, বারাকাত থেকে বঞ্চিত হব। আপতিত হবে আমাদের উপর আল্লাহর গযব স্বরূপ বিভিন্ন খরা, দুর্যোগ, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছাস, অতি মাত্রায় গরম, অসহনীয় শীত। তাই মহান আল্লাহ সতর্ক করে বলে দিয়েছেন :
“তারা কি লক্ষ্য করে না, প্রতি বছর তারা দু’একবার বিপর্যস্ত হচ্ছে অথচ তারা এরপরও তাওবাহ্ করে না কিংবা উপদেশ গ্রহণ করে না।” (সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ ৯ : ১২৬)
তাই হাশরের ময়দানে ব্যক্তির ‘আমালের কম-বেশির কারণে ব্যক্তিই তার হিসাব দিবে। কিন্তু সারা দেশের জনগণের ওপর মুসলিম শাসন কর্তৃক আল্লাহর দেয়া বিধান লঙ্ঘন করে যে বিধান আরোপিত হয় তার জন্য শাসককেই পুঙ্খনাপুঙ্খভাবে জবাবদিহি করতে হবে। আর মুসলিম শাসক যদি আল্লাহর এই হুকুম জানার পরও সংশোধন না হয়; তাহলে ঐ শাসক মুরতাদ, কাফির বলে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ মুসলিম শাসকরূপে গণ্য হবে না। আর জনগণকেও ভাবতে হবে আমরা কোন্ শাসকের কাছে আবেদন করছি, কল্যাণ প্রত্যাশা করছি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে মুসলিম পরিচয়ে বেঁচে থাকার তাওফীক দান করুন।
বিষয়: বিবিধ
১১৫৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন