তাহরির স্কয়ারে অন্ধকার অধ্যায়

লিখেছেন লিখেছেন রাশেদুল কবির ০৫ জুলাই, ২০১৩, ০২:৪৩:৩০ দুপুর



মুরসি নাটকে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে কাদিয়ে তাহরির স্কয়ারে নিত্য করছে নিতঙ্গিনীরা

মিশরের ঐতিহাসিক তাহরির স্কয়ার। এখানকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় পর পর দু’জন প্রেসিডেন্টের পতন ঘটলো। কিন্তু এ আন্দোলনের রয়েছে অন্ধকারময় একটি অধ্যায়। তাহলো গণধর্ষণ। সেখানে মুরসিবিরোধী আন্দোলন চলাকালে মাত্র চার দিনে

কমপক্ষে ৯১ জন নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাদের কাউকে কাউকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। কোন কোন মিডিয়ার হিসাবে এ সংখ্যা শতাধিক। তবে অনলাইন সিএনএন জানায়, তাহরির স্কয়ারে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২২ বছর বয়সী ডাচ সাংবাদিক। তাকে পরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তার দেহে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। এসব ঘটনায় প্রথমেই টার্গেট করা হয়েছে মিশরীয় নারীদের। এই ধারা শুরু হয়েছে ২০১১ সাল থেকে। তখন সাবেক স্বৈরশাসক হোসনি মুবারককে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে তাহরির স্কয়ারে ডেকেছিল মানুষের বান। সেই সময়ই সেখানে গণধর্ষণের শিকার হন মার্কিন সাংবাদিক লারা লোগান। এ সময় তাকে প্রচণ্ড প্রহার করা হয়। তাকেও ডাচ ওই সাংবাদিকের মতো হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। লারা লোগানের ঘটনা এখন সহিংস বিক্ষোভের জের হিসেবে ধরা হয়। যারা তাকে ধর্ষণ করে তাদের হুঁশিয়ারি ছিল- নারীদের থাকতে হবে ঘরের ভিতর। তাহরির স্কয়ারে এখন যে কোন আন্দোলন মানে সেখানে ধর্ষণ বা যৌন হয়রানির দিকে দৃষ্টি নিয়ে যায়। দলবদ্ধ কিছু পুরুষ সেখানে নিয়মিতভাবে নারীদের টার্গেট করে। তাদেরকে কৌশলে আলাদা করে ফেলে। তারপর জোর করে তাদেরকে বিবস্ত্র করে। তারপর তার শরীর নিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে। এ জন্য এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার বা বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। এক্ষেত্রে অনেক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি কাঁধ ঝাঁকান। তারা নির্যাতিত নারীদের ওপরই উল্টো দোষ চাপান। এ জন্য পর্যবেক্ষণকারী একটি সংস্থা সেখানে এসব ঘটনার দিকে নজর রাখে। তারা হলো- অপারেশন অ্যান্টি-সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট। এই গ্রুপটি শুধু রোববার রাতে ৪৬টি যৌন হয়রানির ঘটনা রেকর্ড করেছে। তাদের হিসাবে সোমবার এমন ঘটনা ঘটেছে আরও ১৭টি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে মিশরীয় নারীদের প্রথমে বাছাই করা হয় সহিংসতার মধ্যে। এক্ষেত্রে অনেক সময় দায়ী করা হয় মুসলিম ব্রাদারহুডকে। তবে মিশরের সেনাবাহিনী ও পুলিশের কিছু সদস্যও নারীদের বিরুদ্ধে এমন অপরাধ সংগঠন করে থাকে। তাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন সাংবাদিক মোনা এলআহাওয়ি, যুবতী প্রতিবাদী সামিরা ইব্রাহিম। এর মধ্যে প্রথমজনের হাত ভেঙে দেয় সেনারা। দ্বিতীয় জন অভিযোগ করেছেন সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি বলেছেন, সেনাবাহিনীর এক চিকিৎসক তাকে কৌমার্যের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছে। মিশরীয় সাংবাদিক দিনা জাকারিয়া রিপোর্টে বলেছেন, যারা ডাচ সাংবাদিককে ধর্ষণ করেছে তারা নিজেদের বিপ্লবী বলে পরিচয় দিয়েছে। তবে অনেক বেশি আগের কথা নয়। মিশরের সালাফি মতাবলম্বী ধর্মীয় নেতা আহমাদ মাহমুদ আবদুল্লাহ বলেছেন, তাহরির স্কয়ারে যেসব নারী প্রতিবাদ করেন তাদের কোন লজ্জা নেই। তারা চান ধর্ষিত হতে। ওদিকে মে মাসে একটি জরিপ পরিচালনা করে জাতিসংঘের ইনটিটি ফর জেন্ডার ইকুইটি। তাতে যেসব নারী অংশ নিয়েছিলেন তার মধ্যে শতকরা ৯৯ দশমিক ৩ ভাগই বলেছেন তারা কোন না কোনভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ধর্ষিতারা কখনই হাসপাতালে যান না। যান না অবশ্যই কোন পুলিশ স্টেশনে। ধর্ষিতার জন্য নেই কোন মেডিকেল প্রটোকল। ধর্ষিতা বা নির্যাতিত নারীকে পুলিশ দেখে দেহকর্মী হিসেবে।

বিষয়: বিবিধ

১৭০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File