হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ ঠেকাতে সর্বশেষ আওয়ামী কৌশল ।
লিখেছেন লিখেছেন জেড ইসলাম ০৩ এপ্রিল, ২০১৩, ১২:২০:২৭ দুপুর
আংশিক কপিপেষ্ট নিউজ- দৈনিক মানবজমিন থেকে।
ডেটলাইন ৬ই এপ্রিল। হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ। এই লংমার্চ ঘিরে এখন সরগরম রাজনীতির ময়দান। সারা দেশ থেকে ব্যাপক লোক সমাগমের টার্গেট হেফাজতের। এই লংমার্চের মাধ্যমে নিজেদের শক্তির জানান দিতে চাইছে হেফাজত।
সরকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, শর্ত মানলে কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হবে না। হেফাজত যাতে এই লংমার্চ না করে সেজন্য সব চেষ্টাই করে যাচ্ছে সরকার।
৩ ব্লগারকে গ্রেপ্তার, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের শাস্তি বাড়ানোর সরকারি ঘোষণা আমলে নিচ্ছে না হেফাজতে ইসলাম। সরকারের এসব ঘোষণা ও তৎপরতাকে আন্দোলন বানচাল এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার কৌশল হিসাবে দেখছে সংঘটনটি। এদিকে দিন যত ঘনিয়ে আসছে লংমার্চ নিয়ে উদ্বেগ উত্তেজনা ততই বাড়ছে।
গতকাল র্যাব, পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্রমতে, সমঝোতার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আজ-কালের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে। সমঝোতায় পৌঁছতে সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক প্রভাবশালী মন্ত্রী চট্টগ্রামের হেফাজতে ইসলামের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও বৈঠক শুরু করেছেন।
সূত্রমতে, গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় ব্লগারদের নিয়ে আপাতত ঘাঁটাঘাঁটি করবে না পুলিশ। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে তাদের বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ে রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় চিহ্নিত ব্লগারদের গ্রেপ্তার করে সরকার ঝুঁকি নিতে নারাজ।
অন্যদিকে হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্য বেশ কয়েকজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে গ্রেপ্তার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সরকার বিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি থেকে কৌশলে বিরত রাখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন এক ছাত্রসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। নজরদারিতে রাখা হয়েছে আরও একাধিক ব্লগারকে। শীর্ষ পর্যায়ের সিগন্যাল পাওয়ার পরপরই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
সূত্র জানায়, ৬ই মার্চের লংমার্চ ঘিরে নানা কৌশলে এগোচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কৌশলের অংশ হিসেবে হেফাজতে ইসলামসহ বিরোধীদলীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হানা দিচ্ছেন পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে বিভিন্ন মসজিদ ও কওমি মাদরাসা। প্রয়োজনে বিজিবি মোতায়েনের চিন্তা-ভাবনা চলছে বলে পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে বিএনপি, জামায়াত-শিবিরসহ ১৮দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা একযোগে ঢাকায় গণজমায়েতের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যে সরকারি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে এ সংক্রান্তে একাধিক প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে। তাতে সারা দেশে থেকে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করার আশঙ্কা করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই লংমার্চ থেকেই সরকার পতনের এক দফা দাবির ঘোষণা আসতে পারে তথ্য দেয়া হয়েছে। এছাড়া ওইসব প্রতিবেদনে একটি রাজনৈতিক দলের বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কাও করা হয়েছে। সরকার বিরোধী ওই পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য গোয়েন্দা রিপোর্টে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, প্রতিবেদনের সুপারিশ মোতাবেক ৬ই মার্চ সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তল্লাশির কথা বলা হয়েছে সকল যানবাহনে। প্রয়োজনে যান চলাচল সীমিত করার কথা বলা হয়েছে। বাস টার্মিনাল ও লঞ্চঘাট বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও বাস স্ট্যান্ডে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে ঢাকামুখী জনস্রোত প্রতিহত করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ৬ই মার্চের ঢাকামুখী লংমার্চ কর্মসূচি পালনের জন্য এখন পর্যন্ত কোন সংগঠন পুলিশের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেনি। কেউ আবেদন করলে নগরবাসীর নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন চলাচলের বিষয়টি আগে গুরুত্ব দিয়ে সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে পুলিশকে সর্বদাই সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়।
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন