কিছু কথা, কিছু জিজ্ঞাসা
লিখেছেন লিখেছেন নাকিব ১৩ মে, ২০১৩, ০৫:৫৩:২২ বিকাল
আমাদের দেশের ৯০% লোক মুসলমান। এদের অধিকাংশই ধর্মপ্রাণ। ধর্মীয় জ্ঞান কম বেশী যাই থাক, আমলের ব্যাপারে আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। এমন কি অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও যারা আছেন, তারাও নিজ নিজ ধর্ম পালনে আন্তরিক এবং অন্যের ধর্মের প্রতি প্রদ্ধাশীল। অর্থাত্ ধর্মীয় সহনশীলতা সর্ব্বোচ্চ মাত্রায় বিদ্যমান আমাদের এই প্রিয় মাতৃ ভূমি বাংলাদেশে। এখানে ধর্মীয় কারনে কারো সাথে কারো বিরোধ আছে বলে আমার জানা নেই। এক কথায় ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ হিসেবে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম এবং সুখ্যাতি রয়েছে।
৯০% মুসলমানের দেশে ইসলাম রক্ষার্থে আন্দোলন চলছে, ইসলামিক নাম ধারী লোক দ্বারা পরিচালিত সরকারের বিরুদ্ধে। যে সরকারের বিরুদ্ধে মুসলমানদের অভিযোগ হলো, তারা কতিপয় নাস্তিক/মুরতাদ ব্লোগার দ্বারা শাহবাগে গনজাগরন মঞ্চ নামে একটি নাটক মঞ্চাস্থ করাচ্ছে। যেখানে বসে নাস্তিকরা এদেশের আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে বিষোদ্ গার করছে এবং আমাদের প্রিয় নবী বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মাদ (স) এর কিরুদ্ধে ব্লোগের মাধ্যমে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। গুটি কয়েক নাস্তিকদের রক্ষা করতে গিয়ে সরকার পুরো জাতিকে বিভক্ত করে ফেলেছে।
নাস্তিক/মুরতাদ ব্লোগারদের বিচারের দাবীতে সোচ্চার হয়ে মাঠে নেমেছে হেফাজতে ইসলাম। তারা ১৩ দফা দাবী পেশ করেছে সরকারের কাছে। সরকার প্রথম দিকে তাদের দাবীর প্রতি নমনীয় হলেও পর্যায়ক্রমে কঠোর অবস্থানে চলে যায়। সরকারের নমনীয় নীতির কারনে হেফাজতে ইসলাম ৬ই এপ্রিল শাপলা চত্বরের মহা সমাবেশ থেকে ঢিলে ঢালা কর্ম সূচী ঘোষনা করে এবং সরকারকে এক মাসের সময় দিয়ে ৫ই মে ঢাকা অবরোধের ঘোষনা দেয়। সরকার পর্যায়ক্রমে কঠোর অবস্থানে চলে যাওয়ার কারনে হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্বরে তাদের দাবী না মানা পর্যন্ত অবস্থানের ঘোষনা দেয় এবং জিকির আজকার করতে থাকে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলতে থাকে আমাদের বড় হুজুর না আসা পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করবো। হুজুর এসে পরবর্তী কর্ম সূচী ঘোষনা করবেন এবং দোয়া মুনাজাতের মাধ্যমে প্রোগ্রাম শেষ করবেন।
অবশেষে যা ঘটল তা আমরা সবাই কম বেশী জানি। এখন আমার প্রশ্ন হলো-সরকার শাপলা চত্বরে যে নারকীয় তান্ডব/হত্যা কান্ড চালালো এবং শাহবাগে যে নিরাপত্তা বেস্টনীর মধ্যে নাস্তিক/মুরতাদ ব্লোগারদের ইসলাম বিদ্বেষী আন্দোলন পরিচালনায় সহোযোগীতা করছে তা এদেশের মুসলিম জনগন মানবে কি না?
শাহবাগ আন্দোলরে অর্থের উত্স খোজা হচ্ছে না, তারা দীর্ঘ কয়েক মাস যাবত্ শাহবাগে আছে, কোথা থেকে খাবার আসে? কোথা থেকে পানি আসে? কোথা থেকে টাকা আসে? কোন মিডিয়া এ সব নিয়ে প্রশ্ন করে না। মিডিয়া গুলো সরাসরি শাহবাগ থেকে সম্প্রচার করে ঘন্টার পর ঘন্টা। টাকা পায় কোথায়?
অথচ সরকার শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অর্থের উত্স খোজছে। যদি নাস্তিকদের কেউ অর্থ দিয়ে সহোযোগীতা করলে দোষ না হয়, তাহলে হেফাজতে ইসলাম কে অর্থ দিয়ে সহোযোগীতা করলে দোষ কোথায়?
শাহবাগীদের এ্যালিট ফোর্স দিয়ে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে আর সেই এ্যালিট ফোর্স দিয়েই হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের পাখীর মতো গুলি করে মারা হলো কেন?
আমরা সংখ্যা গরিস্ট লোক মুসলমান হওয়া সত্বেও আমাদের অধিকার পদধলিত হচ্ছে কেন? সাভারে রানা প্লাজায় প্রায় ১২০০ মৃত দেহ পাওয়া গেছে, ২৫০০ মত জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, নিখোজের সংখ্য কত? যারা নিহত হয়েছেন তাদের মৃত দেহের সাথে আরো সম্মান জনক আচরণ করা যেত কিনা? যারা জীবিত আছেন তাদের সুচিকিত্সা এবং পূনর্বাসনের যথাযথ ব্যবস্থা হবে কিনা?
১৭ তম দিনে রেশমাকে জীবিত উদ্ধার দেশবাসীকে আনন্দিত করলেও অতিমাত্রায় রাজনীতি তা ম্লান করে দিয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন