হুজুররা বেশী বিয়ে করে কেন?
লিখেছেন লিখেছেন ডঃ আবুল কালাম আজাদ ০৫ নভেম্বর, ২০১৫, ০৫:২৬:০১ বিকাল
আমার একদর্শক-শ্রোতা বোন প্রশ্ন করেছেন- আচ্ছা ভাই, বলুন তো, হুজুররা বেশী বিয়ে করেন কেন?
আমি বললাম- তা তো জানি না। কারণ, যদি মনে করেন আমি একজন হুজুর, তাহলে জেনে রাখুন- আমার একটা বউ এবং এর বেশী এখনো নিয়ত নেই। এবং আমার আশে পাশে যত হুজুর দেখি তাদেরও তো একটা বউ। আপনি কোথায় পেলেন হুজুরদের বেশী বউ?
উনি বললেন- ঐ যে আরব দেশে দেখা যায়। আমি বললাম- আরব হলেই কি সবাই হুজুর হয়ে যায়? আরবদের মধ্যে টুপি পরা বহু লোক আছেন যাদেরকে দেখতে বিরাট হুজুর মনে হয় কিন্তু তারা আসলে হুজুর নন; সাধারণ শিক্ষিত। টুপি-রুমাল পরা তাদের জাতীয় সংস্কৃতি।
আর বিয়ে করলেও তারা তা হালাল উপায়ে ঘোষনা দিয়েই করেন। গোপনে গোপনে চুরি করে তো আর খান না। হুজুররা 'ফাউ', 'ফালতু' বা গোপনে খেতে চান না তাই তারা প্রকাশ্যে ঘোষনা দিয়ে হালাল করে বৈধভাবেই খান এবং পয়সা খরচ করেন। এরা সাহসী ও সৎ।
বহু লোক আছেন যারা চুরি করে অনেক কিছু করেন, তাদের নিয়ে তো প্রশ্ন কর না !!
তাহলে রাসুলুল্লাহ (স) এতো বিয়ে করেছিলেন কেন?
আমি বললাম- দেখুন, রাসূলুল্লাহ (স) এর বউরা কেউ এতে আপত্তি করেন নি। বরং রাসূলের (স) বউ হওয়ার জন্যে আরো অনেক মহিলা আগ্রহী ছিলেন। যেখানে তাঁর সকল স্ত্রী তাঁর প্রতি খুশী ছিলেন, ১৪০০ পর এসে তাঁর স্ত্রীদের পক্ষ নিয়ে এমন দরদের প্রশ্নটা অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। তবে, বুঝার জন্যে হলে ভাল। আরো জানলে দেখবেন, তার প্রতিটা বিয়ের পেছনে কারণ ছিলো এবং সবগুলোই ছিলো সফল ও সুখী বিয়ে।
তিনি বললেন- আসলেই তো তাই। আগে এভাবে চিন্তা করিনি তো।
আমি বললাম- চিন্তা করিয়া মন্তব্য করিবেন। অযৌক্তিক মন্তব্য করিলে নিজের ওজন কমিয়া যায়।
---- আগের লেখা ছিলোঃ ১৪৩৭-ইসলামী নববর্ষ হাসবেন? না কাদবেন? না কি অন্য কিছু?
বিষয়: সাহিত্য
৬৮৯২ বার পঠিত, ৩৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর বিয়ে করেছেন বলেও মনে হয় না।
সেটা হুজুরও হতে পারে বা কোন ব্যবসায়ীও হতে পারে।
এরপর প্রশ্ন করবেন- পুরুষরা কেন চারটে বিয়ে আর মেয়েরা কেন একটা বিয়ে?
পরের ব্লগে লিখলে কেমন হয়?
ঐ মিয়া, কুরআনে ৪ বিয়ের কথা কোথায় লেখা আছে? তার আগে পিছে আর কিছু আছে কি? মাঝখান থেকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে একটা বক্তব্য নিয়ে এত সমালোচনার কি আছে? আগে পুুরো ঘটনা জানুন, বুঝুন তারপর মন্তব্য করুন।
আর বিয়ে করলেও তারা তা হালাল উপায়ে ঘোষনা দিয়েই করেন। গোপনে গোপনে চুরি করে তো আর খান না। হুজুররা 'ফাউ', 'ফালতু' বা গোপনে খেতে চান না তাই তারা প্রকাশ্যে ঘোষনা দিয়ে হালাল করে বৈধভাবেই খান এবং পয়সা খরচ করেন। এরা সাহসী ও সৎ।
-অসাধারণ, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে...
অধুনা সময়ে এ বিষয়ে যা কিছু লিখা ও বক্তব্য পাওয়া যায় - তার সবই - লিটারেলী এমন একটা ডিফেন্সিভ এ্যাংগেল থেকে দেওয়া হয় কিংবা হয়েছে যে -
আমাদের মত সাধারন মানুষদের মনে ও মননে এটাই স্টাবলিশ হয়েছে যেঃ
১। একের অধিক বিয়ে করা বুঝিবা একটা অপরাধ, একটা সেইম, একটা অসামাজিক এ্যাক্ট।
২। একের অধিক বিয়ে করা বুঝিবা বউয়ের প্রতি কিংবা মেয়ে জাতির প্রতি অবিচার।
৩। হুজুররা নিজের একটা বিয়ের কথা এমনভাবে প্রকাশ করে যে তিনি সে লজ্জা, সে অপরাধের একজন নন।
বরং আমার মনে হয় সময় হয়েছে - বিষয়টিকে অন্য এ্যাংগেল থেকে প্রচার করার। আশা করি এ বিষয়ে আলেম ওলামারা এক বিকালে চায়ের কাপে একটু আলাপ আলোচনা করবেন।
১। একের অধিক বিয়ে করা পৃথিবীর সেরা মানুষগুলোর সুন্নাহ, নবীদের সুন্নাহ, সাহাবা দের জন্য সুন্নাহ এবং আমার ও আপনার জন্য ও সুন্নাহ, উপকারি, দায়িত্ব। সামর্থ্য থাকলে একের অধিক বিয়ে করুন - কিন্তু এক্সট্রা ম্যারিটাল এক্সারসাইজে যাবেন না।
২। একের অধিক সতীন (সাহিত্য শব্দটাকে নেগেটিভ বানিয়ে ফেলেছে, পারলে এর জন্য একটা যথার্থ প্রতিশব্দ আমাদেরকে জানান) পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মহিলা ও মনীষীদের সংগী, সহযোগী। সো মহিলাদের উচিত তাদের সামর্থ্যবান স্বামীর কাছে 'কাজের মেয়ে' ওয়াশিং মেশিন, কুক, ন্যানী ইত্যাদির জন্য বায়না না ধরে, সতীনের জন্য বায়না ধরুন।
৩। ভাইদের জন্য মাল্টি বৌ আর বোনদের জন্য সতীন মূলতঃ পরিবারের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ, বারাকাহ স্বরূপ। আজকের ভেজাল খাবার দাবার, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্ট্রেস সমূহ ইত্যাদি - সব কিছু মিলেই - ইসলাম অনুযায়ী একজন স্বামীর প্রাপ্য দেওয়া, স্বামীকে সন্তুষ্ট রাখা একজন বোনের জন্য প্রায় অসম্ভব, কষ্টকর। একের অধিক বউ নিশ্চিত করা - মানে সে দায়িত্ব ও কষ্ট শেয়ার করা। নিজের দুনিয়াবী ও আখেরাতে প্রাপ্তি বাড়ানো বই অন্য কিছুই নয়। অন্যদিকে সংসারের কাজের বাহিরে, আড্ডা দেওয়া, বাচ্ছা কাচ্চা দেখা শোনা করা, নিজের নিজের বাবামা, ভাইবোনদের কে দেখতে যাওয়া, বেড়াতে যাওয়া, পড়ালিখা ইবাদাত বন্দেগী করা - ইত্যাদি অধিকতর সহজ হয় - যদি আমরা একের অধিক বোন একজন স্বামীর বাড়িতে থাকি।
আশা করি আপনার লিখার বিপরীত হয়ে যাওয়ায় মাইন্ড করবেন না।
আপনি আমার বিপক্ষেও বলেন নি। আমার এই ক্ষুদ্র সংলাপে দুইটা বিষয় এসেছেঃ
১- এখনকার বাস্তবতা ও
২- ইতিহাসের বাস্তবতা
দেখুন, রাসূলুল্লাহ (স) এর বউরা কেউ এতে আপত্তি করেন নি। বরং রাসূলের (স) বউ হওয়ার জন্যে আরো অনেক মহিলা আগ্রহী ছিলেন। যেখানে তাঁর সকল স্ত্রী তাঁর প্রতি খুশী ছিলেন, ১৪০০ পর এসে তাঁর স্ত্রীদের পক্ষ নিয়ে এমন দরদের প্রশ্নটা অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। তবে, বুঝার জন্যে হলে ভাল। আরো জানলে দেখবেন, তার প্রতিটা বিয়ের পেছনে কারণ ছিলো এবং সবগুলোই ছিলো সফল ও সুখী বিয়ে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন