বৃটেনের নীরব ভোট কেন্দ্র ও পরীক্ষা কেন্দ্র

লিখেছেন লিখেছেন ডঃ আবুল কালাম আজাদ ২৩ মে, ২০১৪, ০২:৫১:৩৮ দুপুর

(আমি একজন শিক্ষক; একটা মুসলিম কলেজে ফুল-টাইম পড়াই, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল্ডস্মিথস এর একজন ভিজিটিং টিউটর, কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও এডেক্সেল বোর্ডের জিসিএসই রিলিজিয়াস স্টাডিজের টীম-লীডার পরীক্ষক। এতে গর্বের কিছু নেই আমার, আল-হামদুলিল্লাহ)।

আমি নিজের কথাগুলো বললাম এ জন্যে যে, আমি এ দেশের বিভিন্ন স্তরের পরীক্ষার সাথে সরাসরি জড়িত। তাই, এখানকার পরিক্ষার ভেতর-বাহির সম্পর্কে আমি নিজেই সাক্ষী।

আমাদের কলেজই হলো পরীক্ষা বোর্ডগুলোর অনুমোদিত কেদ্রীয় পরীক্ষা কেন্দ্র। জিসিএসই (ম্যাট্রিক) ও এ লেভেল পরীক্ষার প্রশ্ন পত্রগুলো পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রায় তিন সপ্তাহ আগেই সাধারণ ডাকযোগে কলেজের পরীক্ষা-অফিসারের নামে চলে আসে। তিনি তা লগ-ইন করে প্রশ্ন-পত্রের কক্ষে তালা বদ্ধ করে রাখেন।



কোন শিক্ষক বা ছাত্র-ছাত্রী কেউ কোনদিন পরীক্ষার আগে সে প্রশ্ন ছুঁইয়ে দেখার চিন্তাও করেন না।

পরীক্ষার সময় স্কুল বা কলেজে স্বাভাবিক ক্লাস চলে। হল রুমে পরীক্ষা হয়। মাত্র এক জন বা দুইজন শিক্ষক বা স্টাফ ইনভিজিলেশনে থাকেন। কোন বাবা-মা বা পরিবারের অন্য কেউ পরীক্ষা হলে কোনদিন আসেন না। পরীক্ষার হলে নকলের চিন্তাও কেউ করে বলে মনে হয় না। পরীক্ষার হলে কোন পুলিশের কথা কেউ ভাবতেও পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও পরীক্ষা হয় খুব সাধারণভাবে। নকলের কোন চিন্তাও কেউ করেন বলে মনে হয় না। সকল ধর্ম ও বিশ্বাসের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে একই কালচার দেখা যায়।





ঠিক এমন ভাব হলো এদেশের ভোট কেন্দ্রগুলোতে। স্কুল-কলেজ বা কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে ভোট হয়। ভোট কেন্দ্রে থাকে না কোন পুলিশ বা কোন দলে এজেন্ট। মাত্র দুই-তিন জন অফিসার থাকেন। ভোটের সময় তারা সাধারণত ভোটারের কোন আইডিও দেখতে চান না; শুধু নাম ও ঠিকানা জানতে চান। এরপর ব্যালট পেপার দিয়ে দেন। আমার মত অনেকেই পোস্টের মাধ্যমেও ভোট দিয়ে দেন। ভোট কেন্দ্রগুলোর বাইরে সাধারণত কোন লাইন দেখা যায় না। সকাল সাতটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত ভোট গ্রহন চলে।

কোথাও কোন কারচুপি নেই, নেই ঠেলাঠেলি বা চিল্লাচিল্লি।

বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা নাকি বৃটেনের গণতন্ত্রের মডেল মত বা মদীনার সনদ মোতাবেক চলেন। তাহলে তারা কি এগুলো থেকে একটু শিক্ষা নিতে পারেন না?

আমার আগের লেখা ছিলোঃ এক গ্রাম্য গরীব মুয়াজ্জিনের অনেক লম্বা-উচু ঘাড়

বিষয়: বিবিধ

১৬৬১ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

225037
২৩ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:০১
আবদুল্লাহ বাংলাদেশী লিখেছেন : এই জিনিসগুলো আমাদের গণমাধ্যমে প্রচার হয় না। আমাদের দেশে প্রচার হয়, কে কাকে কী অভিনব উপায়ে খুন করলো, কিভাবে লুকিয়ে নকল সাপ্লাই দেয়া হয়েছে, কিভাবে জাল ভোট দেয়া হয়েছে ইত্যাদি। মন্দ কাজের প্রচার করলে সমাজে মন্দ কাজ বাড়বে, ভালো কাজের প্রচার হলে ভালো কাজ বাড়বে। ব্রিটেনের ভালো ভালো বিষয় নিয়ে আরও লিখুন, যাতে আমরা শিখতে পারি, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
২৩ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:০৭
172201
ডঃ আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন : ভাই, যাদের শেখার দরকার তারা তো চোখ-কান বুজে আছেন। আপনারা তো এমনিতেই শিক্ষিত।
225038
২৩ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:০১
ভিশু লিখেছেন : বাংলাদেশের মানুষ এগুলো না > মদ খাওয়া, কম কাপড় পড়া, ফ্রি-ফ্রি ভাব, বেহায়াপনা নকলে ওস্তাদ! ভ্রষ্ট সমাজপতিরাও এর সরাসরি বেনিফিশিয়ারী!
২৩ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:০৯
172202
ডঃ আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন : বাংলাদেশের অনেকেই মনে করেন বৃটেন মানে হলো শুধুই মদ খাওয়া আর ল্যাংটা হওয়া বা মেয়েবাজী করা।
এদের অনেক ভালোগুণ আছে যেগুলো আসলে মুসলমানদের থাকা ফরজ ছিলো।
আফসোস,আমরা কামে ভালো মুসলমান হতে পারলাম না।
225046
২৩ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:২০
পললব লিখেছেন : গতকাল আমার এক বন্ধু বলল আজ নাকি ভোট! কিন্তু কোন উপায় নাই কাজে যেতে হলো। ভোট আর এবার দেওয়া হলো না। কবে হবে আমাদের দেশে এই পদ্ধতি। ভালো লাগলো।
২৩ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:২২
172207
ডঃ আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন : কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। আশা কম !!
225048
২৩ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:২৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : শিক্ষনিয় পোষ্টটির জন্য ধন্যবাদ। আমরা যোগ্যতার থেকে ফলাফল আর ডিগ্রি কে বেশি গুরুত্ব দিই যার ফলে পরিক্ষা বা ভোটে নকল করে হলেও জিতততে চাই।
২৩ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:২৯
172212
ডঃ আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন : বেশী বুদ্ধি বলেই তো আমরা এখনো এক ফকীর জাতি !!
225059
২৩ মে ২০১৪ বিকাল ০৪:০১
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
২৩ মে ২০১৪ বিকাল ০৪:৩০
172260
ডঃ আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন : Happy Happy
225068
২৩ মে ২০১৪ বিকাল ০৪:১৬
হারিয়ে যাবো তোমার মাঝে লিখেছেন : এটাই সভ্য আর অসভ্যদের পার্থক্য ভাইজান। ওরা আমাদের মেরে ধরে সভ্য হয়েছে আর মারে শিকার হয়ে নিজেদের ভিতর মারামারি করি।
২৩ মে ২০১৪ বিকাল ০৪:৩১
172261
ডঃ আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন : আমাদের জাতির জনক আছে, আছে স্বাধীনতার চেতনা, প্রগতি ও ধর্ম নিরপেক্ষতা। তারপরও আমাদের চরিত্র দিন দিন এতো নিচে নেমে যাচ্ছে কেন? কবে সভ্য হবো আমরা? আর সভ্য বানাবেই বা কে?
225130
২৩ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৩
হতভাগা লিখেছেন : বাংলাদেশ কোন কিছুর ভালটা গ্রহন করতে পারে না । সব সময়ই নেগেটিভ জিনিস গ্রহন করে ।
২৩ মে ২০১৪ রাত ০৮:০০
172311
ডঃ আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন : Crying Crying
225628
২৪ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৫
আহমদ মুসা লিখেছেন : নাইন/এলাভেন এর সময়ে অধ্যাপক গিয়াসউদ্দীন তালুকদার সাহেব লন্ডন সফর করেছিলেন। তার একটি অভিজ্ঞার কাছে আমাদের কাছে শেয়ার করেছিলেন। তিনি তার গন্তব্যেস্থলে যাওয়ার জন্য ট্রেন স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন কাংখিত ট্রেন আসার জন্য। ট্রেনের অপেক্ষায় থাকার সময়ে স্টেশনের সরকারী পাবলিক টিভি স্ক্রীনে দাড়ানো অবস্থায় দেখতেছিলেন। তার সামনে দিয়ে এক ব্রিটিশ নাগরিক গমন করে বেশ কিছু দুর অগ্রসর হয়ে পূনরায় পিছনে এসে অধ্যাপক তালুকদার সাহেবের কাছে i m sorry বলে দুঃখ প্রকাশ করলেন। তালুকদার সাহেব বুঝতেই পারেনকি কি কারণে বৃটিশ নাগরিকটি তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন। জানতে চাইলে বৃটিশ নাগরিক বললেন জনাব তালুকদার সাহেবের দৃষ্টির বেঘাত ঘটিয়ে তিনি তার সামনে দিয়ে ভূলবসত গমন করেছিলেন যা কিছু দুর যাওয়ার পরে লোকটি বুঝতে পেরে স্বলজ্ব দুঃখ প্রকাশ করার কারণ।
এই যেখানে বৃটিশদের কার্টিসির নমুনা সেখানে যদি আমার বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাপারটা চিন্তা করি তাহলে কেমন পরিস্থিতি হবে পারে?
২৫ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৫৩
172981
ডঃ আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন : Happy Happy
241982
০৫ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৪
Anwarulhaque67 লিখেছেন : অজানা অনেক কিছু জানা গেল। এধরনের আরো অনেক অনেক লিখা চাই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File