ক্বিয়ামতের ময়দানের লম্বা লাইনে আমি কোথায় থাকব?
লিখেছেন লিখেছেন ডঃ আবুল কালাম আজাদ ২৯ এপ্রিল, ২০১৪, ০৫:৩৫:২২ বিকাল
এবার ওমরা করতে গিয়ে ১৫ই এপ্রিল মসজিদে নববীতে রাসূলুল্লাহ (স) সালাম করার জন্যে গেলাম। বাবে জিব্রীলের বাইরে থেকেই অনেক লম্বা লাইন শুরু হয়েছে। মানুষের গাদাগাদি নিয়ে লাইনটে মনে হচ্ছিলো একটা বয়স্ক নদীর বুড়ো স্রোত। মোটেই এগুতে চায় না। প্রচন্ড ঠেলাঠেলি।
আমি এমন ঠেলাঠেলি করি আর কোনদিন সালাম করি নি।
তখন আমার মাথায় প্রশ্ন এলোঃ
ক্বিয়ামতের ময়দানে রাসূলুল্লাহ (স) হাত থেকে হাওজে কাওসারের এক কাপ পানি নেওয়ার জন্যেও তো এমন লম্বা লাইন পড়ে যাবে। সে লাইনটা হবে কোটি কোটি মানুষের।
সেই লাইনে আমার অবস্থানটা কোথায় হবে?
এক কাপ পানি নিতে কতকাল লাইনে দাঁড়াতে হবে? :
উত্তর হলোঃ যারা রাসূলুল্লাহ (স) এর যত কাছাকাছি ও প্রিয় পাত্র/পাত্রী তারা তত আগে তার কাছ থেকে কাওসারের পানি পিয়ে নিজেদের তৃষ্ণা নিবারণ করতে পারবেন।
ও আল্লাহ, আমাদেরকে লম্বা লাইনে রেখে কষ্ট দিও না। তাড়াতাড়ি তাঁর হাতের পানি পান করার সৌভাগ্য দিও।
আগের লেখা ছিলোঃ নারীরা আমার ভালোবাসার পাত্র
বিষয়: বিবিধ
১৮০৪ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সে দিনটা কত দীর্ঘ-
আলকুরআন বলে
একহাজার বছর / পঞ্চাশহাজার বছর
অপেক্ষার এক-আধঘন্টা কারো জন্য যন্ত্রনা,
আর কারো জন্য নেয়ামত
ক্বালবুন-সালীম অর্জনকারী হতে পারলে ঐ লাইনে দীর্ঘসময় অপেক্ষার সুযোগ পাওয়া আনন্দদায়ক ও সৌভাগ্যের ব্যাপার হতে পারে!!
আল্লাহতায়ালা যেন আমাদের ক্বালবুন-সালীম অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করেন (আমীন)
আমনে মাইজভান্ডারের মুরিদ হইলে লাইনে দাড়াইতে হইবে না। পীর বাবা পুলসেরাতের ঐ পাড়ে বইসা বরশী ফেলাইব হাশরের মাঠে। আমনে বরশীর উপর উইঠা বসবেন, পীর সাহেব হ্যাচকা টানে আমনেরে ঐ পারে লইয়া যাইব। কুন চিন্তা নাই।
আমি আমাদের আবু সাইফের দার্শনিক ব্যাখ্যার সাথে একমত।
আল্লাহ যেন আমাদের সাবার জন্য সেই মুহর্তটা আনন্দের করেন। আমীন।
লক্ষ্য আর উপলক্ষ্য নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেললে যা হয় !
মসজিদে নববীর বিভিন্ন স্তম্ভের কাছে নফল নামায আদায় করে অতিরিক্ত সওয়াব অর্জন এবং মহানবীর (সাঃ) প্রতি মহব্বত হেতু তাঁর রওজা মুবারক-এ সশরীরে হাজির হয়ে তা দর্শনপূর্বক সালাম প্রদান করার উদগ্র প্রচেষ্টা থেকে মূলত: এইসব ঠেলাঠেলির সূত্রপাত ।
এসব দেখে মাঝে-মধ্যে আমার মনে হয় - ইসলামে এই ধরণের কিছু আচার অনুষ্ঠান যদি না থাকতো, তবে এইসব অবাঞ্চিত ভোগান্তি থেকে রেহাই পাওয়া যেতো - মানুষ-ও প্রকৃত লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্তে অত্যাবশকীয় আনুষ্ঠানিক ইবাদতগুলো সুচারুরূপে সম্পন্ন করার ব্যাপারে হয়তো আরো যত্নবান হতো ।
উপরোক্ত কাজগুলো করতে তো মহানবী (সাঃ) আমাদের নির্দেশ দিয়ে যাননি । তাহলে কেনো এসব প্রান্তিক বিষয়গুলোর পেছনে পড়ি-মরি করে ছুটোছুটি ? মহানবীকে (সাঃ) পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে-ই সালাম দিলে তো তাঁর কাছে পৌঁছে দেয়া হয় ।
হাউজে কাউসারের পানি পান করতে অপেক্ষার সময় নিয়ে তাফসীরকরা বিভিন্ন কথা বলেছেন যা মূলত: অনুমাননির্ভর । আপনি বলেছেন,
এটা-ও কি একটা অনুমানভিত্তিক কথা নয় ?
আমি এসব বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষ একটা চিন্তা করতে-ও যাই না । আল্লাহপাক কিভাবে এগুলো সামলাবেন তা তিনি-ই ভালো জানেন । আমার কাজ কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী সঠিক নিয়তে নেক আমল করে যাওয়া । ব্যাস ! ধন্যবাদ ।
কোরআন থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে চায় কাফের
বেইমান মুশরেকেরা। ও আমার ভাই-বোনেরা,
যারা আমাদেরকে কোরআন থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়
আমরা কি তাদের সাথে জেহাদের জন্য প্রস্তুত আছি ?
আই আ'শেকে রাব্বুল উলা, মাশুকে বে সদ হাজার!!
বরতু দরুদ বে শুমার, বরতু সালাম সদ হাজার।
আমার পাশে সম্ভবত পাকিস্তানী অথবা ইন্ডিয়ান হবে এক ভদ্র লোক অনুরোধ করলেন আমার গাওয়া দরুদটি রিপিট করতে। তিনিও আমার মুখে মুখে পড়তে লাগলেন উক্ত কবিতাটি। এতোক্ষণ ভালই সময়টা যাচ্ছিল। কিন্তু যখন মসজিদে নববীর দক্ষিণ পাশ দিয়ে বের হয়ে গেলাম তখনই গ্যাঞ্জামটা আমার চোখে এসে ধরা দিল।
গ্যাঞ্জামটা বাধাইলো আরেকজন খাটি আশেকে রাসুল! তিনি কি বাংগালী নাকি পাকিস্তানী তা বুঝতে পারলাম না। ভদ্রলোক নিজের দু'পাশে দু'জন অনুসারীকে নিয়ে মসজিদে ননবীর দক্ষিণ পাশে, কিছুটা দুরুত্বে দাড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ আমাদের দেশীয় স্টাইলে মিলাদ কিয়াম করলেন। অবশেষে নবী (সা) এর শানে বেআদবী না হওয়ার জন্য যেখানে তিনি দাড়িয়ে এসব করছিলেন সেখান থেকে পিছনে হাঠতে শুরু করলেন! সাথে তার সঙ্গী দু'জনও! জান্নাতুল বাকীর নিকটবর্তী যাওয়ার আগেই ভদ্রলোক সম্ভবত পিলারের সাথে ধাক্কা খেয়েছিলেন!!!
আমি তখন ভাবতেছিলাম এসব আশেকে রাসুলদের নিয়ন্ত্রণে যদি মক্কা-মদিনা থাকতো তবে কিয়ামত হয়তো অতি নিকটে চলে আসতো। কারণ তারা যে হারে ভারতীয় উপমাহাদেশে মানুষের কবরকে মাজার বানিয়ে যেভাবে শিরক বেদআতের প্রচলন করেছেন তা যদি হারামাইন শরীফাইনে বাসা বাধলে ইসলামের সঠিক মর্ম তো আর থাকলো না!!!!
মাসজিদে নববী। এ যেন অন্যরকম অনুভুতি। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন