ছদ্ম নামে লেখালেখির ফজিলত
লিখেছেন লিখেছেন ডঃ আবুল কালাম আজাদ ২০ মার্চ, ২০১৪, ০৬:২০:১১ সন্ধ্যা
আমার কাছে একজন জানতে চেয়েছেন যে ছদ্মনামে লেখালেখি করা ঠিক কি-না।
আমি তাকে বলেছি- দুঃখিত, আমি জানিনা।
তবে আমি জানি, ব্লগে অধিকাংশ বা অনেক লেখক ছদ্ম নামে লিখে থাকেন। যেহেতু আমি নিজে কোথাও ছদ্মনামে লিখি না, তাই আমি ভালোভাবে বলতে পারব না ছদ্মনামে লেখালেখি করার কি কি ফজিলত আছে।
তবে, যারা নিজের দ্বৈত সত্ত্বাকে লালন করতে চান এবং বিভিন্ন ভাবে সুবিধা নিতে চান এটা তাদের জন্যে খুব উপকারী বলে শুনেছি। আমি একজনকে জানি যিনি নিজে জন সমক্ষে জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা শুনলে একেবারে তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন। অথচ তিনিই আবার ছদ্মনামে জামায়াতের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করেন।
ছদ্মনামের উপকারিতা নিশ্চয়ই আছে। তবে, আমি বা আমার মত অনেকেই সেই উপকার নিতে পারি নাই।
কারণ, আমরা হয়ত বোকা টাইপের সাহসী মানুষ যারা যা ভাবেন তা প্রকাশ্যভাবে নিজ নামেই প্রকাশ করেন।
যা ভাবি তাই বলি এবং তার দায়-দায়িত্ব নেওয়ার জন্যেও প্রস্তুত। কারো চোখ ফাকি দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে থাকার মত বুদ্ধি আমাদের নেই।
কি বলেন?
আগের লেখা ছিলোঃ খাঁটি কথা বলার জন্যে মুখ খারাপের দরকার নেই
বিষয়: বিবিধ
১৯১৫ বার পঠিত, ৬০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ধন্যবাদ
শুকরিয়া
এ ভাবে তো কখনো ভাবিনি
ছদ্মনামে অনেক ফায়েদা আছে, @প্যারিস থেকে আমি ভাই বলেছেন, "ছদ্মনামে লিখতে কোন বাধা দেখিনা যদি আপনার উদ্দেশ্য ঠিক থাকে।"
আমার কথা বলি, ব্লগ একটি ভার্চুয়াল জগত, এ জগতে ভার্চুয়ালই থাকতে চাই, যতদিন সম্ভব।
মনে করুন @মাটিরলাঠি একটি ভার্চুয়াল ক্যারেক্টার।
সবাই সাহসী নয়। যেমন - আমি। তাই ছদ্মনামের ফায়েদা।
যাযাকাল্লাহু খাইরান।
ধরুন, একজন মানুষ--যার লেখার যোগ্যতা আছে, তিনি এমন জায়গায় থাকেন, যেখানে তার চারিদিকের মানুষগুলো অসহিষ্ণু এবং সহিংস । তাহলে তার ছদ্মনাম ব্যবহারকে কোন দৃষ্টিতে দেখবেন ? ব্লগার আবু তাহের--যিনি নিজ নামে লিখেন, তাকে আট মাস আট দিন হাজত বাস করতে হয়েছে । এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্য যদি কেউ ছদ্মনামে লিখেন, তাহলে তাকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখা কি ববুদ্ধিমান মানুষের কাজ হবে ?
মানুষ কখনও তার নিজের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার গণ্ডি অতিক্রম করতে পারে না । যিনি আপনাকে প্রশ্ন করেছেন, তার কাছে আমার জিজ্ঞাসা, ছদ্মনামে লিখা ঠিক না বেঠিক তার নির্ধারণ হবে কোন মাপকাঠিতে ? কে কোন নিয়তে, কোন পরিস্থিতে ছদ্মনামে লিখে সেটা তিনি এবংব তার অন্তর্যামীই ভাল বলকতে পারবেন । অন্যের সম্বন্ধে অযথা খারাপ ধারণা পোষণ করে গোনাহ কামাই করতে চাই না ।
(যিনি কোনদিন দাদা হবেন না, বা হবেন না চাচা)।
অবশ্য ছদ্মনামের অপকারিতা যে নেই তাও অশ্বীকার করার সুযোগ নেই। ব্লগসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে নগন্য সংখ্যাক নাস্তিক একাদিক আইডি ব্যবহার করে শুধু মাত্র একটি ধর্ম তথা ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে মিথ্যা কুৎসা রটানোসহ সাম্প্রদায়িক উস্কানী দেয়ার সুযোগ গ্রহণ করে। অনেক সময় কোন কোন সম্মানিত ব্যক্তিদের ইজ্জতের বারোটা বাজানোর জন্যও ছদ্মনামের ব্যবহার লক্ষ্যনীয়।
স্যারকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর এবং গঠনমুলক একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
খুব ভালো বলেছেন।
ফাজায়েলে ছদ্মনামা
১ গ্যাঞ্জাম লাগানো যায়।
২ আচাঁইছ্যা ভাইরগা বাশঁ দেওন যায়। এক্ষেত্রে ধরা খাওনের জো নাই।
৩ কারো পাছায় গু লাগানো যায়।
৪ বেত্তমিজ আবালগুলানরে পড়নের কাপড় খুইল্যা কথার তীর মেরে শায়েস্তা করণ যায়।
৫ কেউ যদি আচার আচারণ ও লেখা লেখির মাধ্যমে ন্যংটো হয়ে হুশ হারিয়ে গন্তব্যহীন অন্ধকার পথের যাত্রী হয় তারে চারিদিক থেকে আজাইরা বাশ দেওনের মাধ্যমে আলোর পথে না আসলেও অন্তত অন্যন্যাদের যেন অন্ধকারের সঙ্গী করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক করণ যায়।
৬ রাষ্ট্রীয় কুরসিতে বসে আরাম কেদায় হেলান দিয়ে লুন্টন আর ব্যবিচারের বিভিন্ন সূত্রের আবিস্কারকদের মুখোষ উন্মোচন করণ যায়।
৭.
৮.
৯.
ইত্যাদি নাম্বারগুলানরে অন্যদের জন্য বরাদ্ধ রাখা হলো।
ধারেকাছে পেলে একটা পাকা তাল পুরস্কার দিতাম আপনাকে।
পাকা কই তাহারে....
আমি ছদ্মনামে নোংরা রাজনীতি করতে আসিনি। যা সত্য তাই বলব। কাজী নজরুল এজন্য বিদ্রোহী নয় শুধূ, সময়ের বিবর্তে জাতির সাহসী সন্তান। ছদ্মনামে লিখা আপনার সৃস্টিশীল লিখাগুলো কিভাবে আপনাকে পরিচিত করে দেবে?
হযরত ওমরের আদর্শে লালিত ভীতুর ডিম বিরোধীতা করার জন্য আলাদা নিক থাকলে কোন কথা নয়। কিন্তু যে বিরোধীতায় ভয় লাগে সেটি না করাই উত্তম।
ধন্যবাদ।
খুব শক্ত ভূমিকা নিয়েছেন, ভাইজান।
আমার নামটা নিয়ে হয়েছে সমস্যা। এই নামে মন্ত্রী পর্যন্ত আছেন বাংলাদেশে। তবুও আমি--- নাম ছাড়ি নাই। আমার সুবিধা হলো আমি কোন বিখ্যাত কেউ না।
তাদের দেখাদেখি অনেকেই ছদ্মনামে লেখা লেখি করতে উৎসাহিত হয়েছেন হয়তোবা। আবার অনেকেই নিজের বা পরিবারের প্রয়োজনে ছদ্মনাম নিয়েছেন।
আমি ১৯৮৬ সাল থেকে এই ছদ্মনামটি ব্যবহার করছি কারণ তখন আমি সরকারী চাকুরীতে ছিলাম। এই নামে আমাকে অনেকেই চিনে বলে পরবর্তিতেও এই নামটা রেখে দিয়েছি যদিও নিজের পরিচয় লুকাবার প্রয়োজন এখন আর নাই। এজন্য অন্যত্র এখন নিজের নামেই পরিচয় দেই।
ভাল লাগলো প্রসঙ্গটা সামনে এনেছেন বলে।
আশা করি ছদ্মনামে লিখার পক্ষে আমি যুক্তিগুলো যথাযথভাবে তুলে ধরতে পেরেছি...
ধন্যবাদ লিখক ভাইকে এবং সব মন্তব্যকারীদেরকে।
তবে ব্যক্তিগতভাবে লিখতে গিয়ে আমি এটা অনুভব করছি, কোন একটা লিখা পড়া মাত্র মনের ভিতর যে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হয় - ছদ্ম নামে তা যতটা সরাসরি, দ্বিধাহীন চিত্তে লিখতে পারি - নিজ নামে তা কোন দিন লিখতাম না। নিজ নামে হলে রাগ ক্ষোভ ও রিএ্যাকশান সমূহকে আরো নিয়ন্ত্রন করেই লিখতাম - এবং সে লিখা আমাকে যতটা না প্রকাশ করতো - তারচেয়ে পাঠক সেনসিটিভিটি, পরিচিতজন, ডিপ্লোমেসী সহ রাখ ডাক করে লিখা হত।
১। স্পষ্টবাদীতার যন্ত্রণামুক্তিঃ - আপনি স্পষ্টবাদী, স্পষ্ট কথা বলতে পছন্দ করেন। আপনিও অনেক সময় তিক্ত সত্য পরিহার করবেন; কারণ তা অন্যকে আঘাত দিতে পারে বা আপনিও নোংরা প্রতি-আক্রমনের শিকার হতে পারেন। ছদ্মনাম এতে সাহায্য করে।
২। অনেক বড় লেখকদের অনূকরন, লেখার মূল্যে না হলেও, নামে মাত্র!~
৩। কল্পনা বিলাসঃ অনেক সময় বাস্তবের চাইতে কল্পনা বেশি দরকারি। স্পষ্ট কথায় সাহিত্য হয় না, অনেক সময় একটু কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ– একটু ধোঁয়াশা, কল্পনাবিলাসীদের জন্য ভাল। ছদ্মনাম তাতে একটু তুলির আঁচড় দিয়ে যায়।
৪। সাহিত্য রচনার জন্য একটা ক্যামফ্লাজ – হতে পারে। একটা রোমান্টিক রচনায় ডঃ আজাদ নামে আপনি যতটুকু লিখবেন বা বর্ণনা করবেন, তিমির মুস্তাফা তার চেয়ে আর এক দুধাপ সামনে যেতে পারবে!
৫। হাসিনা বা বাকশালীদের মত ক্ষমতাসীনদের আক্রোশ থেকে নিরীহ ‘লেখকদের আত্মরক্ষার এক ‘দুর্বল প্রচেষ্টা হতে পারে ।
৬। নোংরা গালাগালি করার উদ্দেশ্যে কেউ কলম ধরলে - স্বীয় নাম ব্যবহার তার জন্য বিপদ জনক হবে বিধায় ধুরন্ধর শ্বাপদ বা হিংস্র আক্রমণকারী– ছদ্মনামের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে। উল্টোভাবে – আত্মরক্ষার জন্যও কেউ কেউ একই তরীকা ধরতে পারে।
৭। একজনের উদ্দেশ্য আরেক জনের সাথে অবশ্যই মিলবে না, যিনি ছদ্মনাম ব্যবহার করছেন- তিনিই ভাল বলতে পারবেন তার উদ্দেশ্য কত খানি মহৎ! ইন্নামাল আমালূ বিন নিয়ত!
মন্তব্য করতে লগইন করুন