আগামীকাল ৫ ই মের ঢাকা অবরোধে কি হবে? লন্ডন প্রবাসীদের ভাবনা

লিখেছেন লিখেছেন ডঃ আবুল কালাম আজাদ ০৪ মে, ২০১৩, ০৫:০০:১১ বিকাল

দেশে যারা আছেন তাদের চেয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ৫ ই মে নিয়ে চরমভাবে উদ্বিগ্ন। আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সাথে লন্ডনের রাস্তায়, বাজারে, মসজিদে বা ফোনালাপে এই চরম মানসিক অস্থিরতার চিত্র দেখতে পাচ্ছি।

সবার প্রশ্ন কি হতে যাচ্ছে ৫ ই মে? আমি জানতে চেয়েছি- আপনি কি মনে করেন?

উত্তরে ভিন্ন ভিন্ন মতামত পেয়েছি। তার কিছু আপনাদের সাথে শেয়ার করছিঃ

১- অনেকেরই ধারণা, এর মাধ্যমে নাস্তিকরা একটূ ভয় পেয়ে যাবেন। একটা মুসলিম দেশে বাস করে মুসলমান বা ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা যে শুধু চরম অরাজকতাই নয়, বরং তা এক ধরণের চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী কাজ তা তারা বুঝে গিয়েছেন। যে কারণে চরম উদ্ধত নষ্ট নাস্তিক ডা ইমরান সরকার পাঞ্জাবী, টুপি পরে গলায় তাসবীহ ঝুলিয়ে ভন্ডামী করে বেড়াচ্ছেন। তবে, ৫ ই মে রাজনৈতিক কোন ওলোট-পাল্লট হবে না। এর অনেকগুলো কারণ আছে। যেমনঃ সেনাবাহিনীর সিনিয়র অফিসাররা সরকারের অনুগত। ভারত সবকিছু দিয়ে সরকারকে টেকানোর চেষ্টা করছে। তাছাড়া হেফাজত অবশ্যই আওয়ামীলীগকে নামিয়ে বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতায় বসাতে চায় না। কারণ কি? কারণ হিসাবে কেউ কেউ বলেছেন যে হেফাজতের সাথে জামায়াতের চিরকালীন বিরোধ। তারা আন্দোলন করে জামায়াতকে এই সুযোগ করে দিবেন না। এ ছাড়া হেজাজতের ভেতরেও আওয়ামীলীগের প্রতি সহানুভূতিশীল কিছু নেতা আছেন যারা হেফাজতের ভেতরে থেকেই লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করছেন। (এটা আমার জানা নেই, বা কোন প্রমাণও আমার কাছে নেই)।

২- বিএনপিও চায় না তারা ইসলামীদের কাধে ভর করে ক্ষমতায় আসুক। তাতে আমেরিকা, বৃটেন এমনকি ভারতও নাখোশ হবে তাদের ওপর। তবে, কেউ যদি কলা ছুলে দেয় বিএনপি তা খেতে রাজী আছে। নিজেরা কলা ছুলে খাওয়ার মত অবস্থানে বি এনপি এখনো নেই। তারা আওয়ামী লীগের মত এতোটা সুযোগ সন্ধানী নন, বা মোক্ষম রাজনৈতিক ইস্যুকে কাজে লাগাতেও খুব পারদর্শী নন। অতএব, তারাও চান না ৫ ই মে বিশাল কিছু হোক।

৩- জামায়াতের লোকজন খুব চিন্তিত আছে্ন। তাদের অনেকের ধারণা- এই দিনে বড় কিছু না হলে সরকার তাদের নেতাদের ফাসি দিয়ে দিতে পারেন। ফলে, তাদের আরো অনেক রক্তপাত হয়ে যেতে পারে। তারা আশা করছেন, হেফাজত বা বিএনপি একটা চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু একটা করুক এবার। কারণ, এখন একটা পাবলিক সেন্টিমেন্ট তৈরী হয়ে আছে। এটা হাত ছাড়া হলে আবার নতুন ফ্লো তৈরী করা কঠিন হবে বা সময় লাগবে।

৪- সাধারণ মানুষ খুব অসহায়। তারা বুঝে উঠতে পারছেন না আসলেই কি হবে। তাই সারাদিন তারা টিভির পর্দায় চোখ মেলে আছেন, মোবাইলে বা ইন্টারনেটে অনলাইন পত্রিকা খুলে বারবার দেখে নিচ্ছেন।

তবে, তারা মনে করেন- দেশে একটা মারাত্মক অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে আছে। দেশের স্বার্থেই বিএনপি, হেফাজত ও জামায়াতের সাথে আলোচনায় বসুন। কারণ আমাদের রাজনৈতিক সংঘাতের সুবাদে দেশ দিন দিন তলিয়ে যাচ্ছে। ভারত চাচ্ছে আমরা মুসলিম দেশগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই। আর এই সুযোগে তারা আরবদের সাথে ব্যবসা বানিজ্যের নতুন ক্ষেত্রে তৈরী করে এবং ওদেশগুলোর শ্রমবাজার দখল করে নিবে। আর আমাদেরকে আরো দরিদ্র করে রাখবে।

মন্তব্যঃ

তবে একটা ব্যাপারে দেশের সকল দলের সকল সচেতন নাগরিক একমত-

আমরা কোন রাজনৈতিক সংঘাত চাই না। চাই জাতীয় ঐক্য। আর এই ঐক্যের জন্যে প্রয়োজন দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখে পারস্পারিক আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যাগুলোর আশু সমাধান করা।

বিরোধীদলকে আলোচনার টেবিলে আনতে হলে একটা সম্মানজনক পরিবেশ তৈরী করতে হবে। বিরোধীদলের নেতাদেরকে জেলেভরে বা ফাসি দিয়ে সমস্যার সমাধান তো হবেই না, বরং দেশের জন্যে একটা স্থায়ী সমস্যা হয়ে থাকবে। যা সরকার সামাল দিতে পারবেন না। আর যুগ যুগ ধরে সেই সমস্যার আগুনে সাধারণ জনগণ পুড়ে মরবেন।

===== আগের লেখা ছিলোঃ সাভারে ভবন ধ্বসঃ চরম মর্যদার ধ্বস এবং নিয়ে আসছে মারাত্মক বানিজ্যিক ধ্বস, দেখুন সি এন এন'র সংবাদ রিপোর্ট Click this link

বিষয়: বিবিধ

১৭৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File